১০- بَابُ مَا جَاءَ فِيْ فَضْلِ أَيَامِ عَشْرِ الْأَضْحَىٰ
٤٠٨- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ مُخَوَّلِ بْنِ رَاشِدٍ، عَنْ مُسْلِمٍ الْبَطِيْنِ، عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : مَا مِنْ أَيَّامٍ أَفْضَلُ عِنْدَ اللهِ مِنْ أَيَّامِ عَشْرِ الْأَضْحَىٰ، فَأَكْثِرُوْا فِيْهِنَّ مِنْ ذِكْرِ اللهِ تَعَالَىٰ .
বাব নং ২০৭. ১০. যিলহজ্ব মাসের প্রথম দশদিনের ফযীলত
৪০৮. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা মুখাওয়াল ইবনে রাশেদ থেকে, তিনি মুসলিম আল বাতিন থেকে, তিনি সাঈদ ইবনে জুবাইর থেকে, তিনি ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) এরশাদ করেন, আল্লাহর কাছে যিলহজ্বের প্রথম দশ দিনের চেয়ে উত্তম কোন দিন নেই। সুতরাং উক্ত দিনসমূহে বেশী বেশী আল্লাহর যিকির কর।
(জামেউল কবীর, সুয়ূতী, ১/২১১৯৪/১০৩৬)
ব্যাখ্যা: তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ শরীফে হযরত আবু হোরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে যে, আল্লাহ তায়ালার নিকট যিলহজ্ব মাসের প্রথম দশ দিনের চেয়ে বেশী কোন দিনের ইবাদত পছন্দনীয় নয়। এর প্রত্যেক দিনের রোযা সারা বছরের রোযার সমান এবং এর এক রাতের তাহাজ্জুদের নামায লায়লাতুল কদরের কিয়ামের (নামাযের) সমান মর্যাদা রাখে।
٤٠٩- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنِ الْـهَيْثَمِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ سَابِطٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ، أَنَّ النَّبِيَّ ضَحَّىٰ بِكَبْشَيْنِ أَشْعَرَيْنِ أَمْلَحَيْنِ، أَحَدُهُمَا عَنْ نَفْسِهِ، وَالْآخَرُ عَنْ مَنْ شَهِدَ أَنْ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ مِنْ أُمَّتِهِ. وَفِيْ رِوَايَةٍ نَحْوُهُ، وَلَـمْ يَذْكُرْ جَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللهِ.
৪০৯. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা হায়শাম থেকে, তিনি আব্দুর রহমান ইবনে সাবিত থেকে, তিনি জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, নবী করমি (ﷺ) অধিক পশম বিশিষ্ট সাদা-কালো মিশ্রিত রঙের দু’টি দুব্বা কুরবানী করেছেন। একটি নিজের পক্ষ থেকে, অপরটি স্বীয় উম্মতের কালিমা পাঠকারীদের পক্ষ থেকে। অন্য বর্ণনায় অনুরূপ রয়েছে তবে হযরত জাবির (رضي الله عنه)’র উলেখ নেই।
(আবু দাউদ, ৩/৫২/২৭৯৬)
ব্যাখ্যা: এ হাদিস বিশুদ্ধ গ্রন্থসমূহের প্রায় সাতজন সাহাবী থেকে বর্ণিত আছে। হয়ত সামান্য একটু শব্দের পার্থক্য থাকতে পারে, বাকী বিষয় অভিন্ন ও এক।
٤١٠- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ حَمَّادٍ، عَنْ إِبْرَاهِيْمَ، وَالشَّعْبِيِّ، عَنْ أَبِيْ بُرْدَةَ بْنِ نِيَارٍ، أَنَّهُ ذَبَحَ شَاةً قَبْلَ الصَّلَاةِ، فَذَكَرَ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ ، فَقَالَ: تُجْزِيْ عَنْكَ وَلَا تُجْزِيْ عَنْ أَحَدٍ بَعْدَكَ .
৪১০. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা হাম্মাদ থেকে, তিনি ইব্রাহীম ও শা’বী থেকে, তারা আবু বুরদা ইবনে নিয়ার থেকে বর্ণনা করেন, তিনি কুরবানীর ঈদের নামাযের পূর্বে একটি বকরী যবেহ করেন। অতঃপর তিনি তা নবী করমি (ﷺ) ’র নিকট উলেখ করলে তিনি বলেন, এ কুরবানী শুধু তোমার জন্য যথেষ্ট অর্থাৎ শুধু তোমার বেলায় গ্রহণ করা হয়েছে। তোমার পর অন্য কারো জন্য যথেষ্ট বা গ্রহণযোগ্য হবে না।
(শরহে মাআনিউল আসার, ৪/১৭২/৫৭৪০)
ব্যাখ্যা: ইবনে মাজাহ ব্যতীত অবশিষ্ট সব সিহাহ সিত্তাহ গ্রন্থে এ হাদিস বারা ইবনে আযিব (رضي الله عنه) ’র সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যাতে এই খুসুসীয়াত হযরত আবু বুরদা (رضي الله عنه)’র জন্য ছিল। ইবনে মাজাহ অন্য এক সাহাবীকে এ ঘটনার মূল বলে স্বীকৃত দিয়েছেন। বায়হাকীর বর্ণনায় তিনি হলেন উকবা ইবনে আমের (رضي الله عنه), আবু দাউদের বর্ণনায় তিনি হলেন যায়েদ ইবনে খালেদ জুহানী (رضي الله عنه)। অতএব এ সব বর্ণনা অনুযায়ী মোট চারজন সাহাবী এই খুসুসীয়তের সাথে সম্পৃক্ত। আবার কেউ কেউ পাঁচজনের কথা উলেখ করেছেন।
মোটকথা হলো উলেখিত ব্যক্তিবর্গ ছাড়া অন্য কারো জন্য ঈদের নামাযের আগে কুরবানী করা বৈধ নয়। এ সমস্ত হাদিস দ্বারা প্রতীয়মান হয়ে যে, রাসূল (ﷺ) সাহেবে শরীয়ত বা শরীয়ত প্রণেতা। ইতিপূর্বে হাদিস বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি খুযাইমার (رضي الله عنه) একজনের সাক্ষ্যকে দু’জনের স্থলাভিষিক্ত করে দিয়েছেন।
٤١١- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ مَرْثَدٍ، وَحَمَّادٍ، أَنَّهُمَا حَدَّثَاهُ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيْهِ، عَنِ النَّبِيِّ ، أَنَّهُ قَالَ: إِنَّمَا نَهَيْتُكُمْ عَنْ لُـحُوْمِ الْأَضَاحِيْ فَوْقَ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ، لِيُوَسِّعَ مُوْسِعُكُمْ عَلَىٰ فَقِيْرِكُمْ .
৪১১. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা আলকামা ইবনে মারশাদ ও হাম্মাদ থেকে, তারা উভয়ে আব্দুল্লাহ ইবনে বুরাইদা থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি নবী করমি (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি তোমাদেরকে তিনদিনের বেশী কুরবানীর গোশত রেখে দিতে এজন্য নিষেধ করেছি, যেন তোমাদের ধনী ব্যক্তিরা গরীবকে গোশত দান করতে পারে।
(নাসাঈ, ৩/৮০/৪৫৫৬)
ব্যাখ্যা: এই বিধান ইসলামের প্রথম যুগে। যখন কুরবানী দাতার সংখ্যা ছিল খুবই কম। তাই কুরবানীর গোশত জমা না রেখে গরীব-মিসকীনদের দেওয়ার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (رضي الله عنه)’র কাছে কুরবানীর গোশত রেখে দেওয়ার নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন নিষেধ নেই। তাছাড়া বর্তমানে কুরবানীদাতার সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে, সুতরাং বর্তমানে এই নিষেধাজ্ঞা বহাল নেই।