তালাক
তালাক শব্দটি আরবি ‘তালাকুন’ থেকে বাংলায় ব্যবহৃত হচ্ছে। এর আভিধানিক অর্থ- ছেড়ে দেওয়া, অবমুক্ত হওয়া, বিচ্ছিন্ন করা ও বন্ধন খুলে দেওয়া। শরীয়তের পরিভাষায় তালাক মানে বিয়ের বন্ধন খুলে দেওয়া। স্বামী কর্তৃক সরাসরি অথবা প্রতিনিধির মাধ্যমে নির্দিষ্ট বাক্য কিংবা ইঙ্গিতে দাম্পত্য সম্পর্ক ছিন্ন করাকে তালাক বলে।
ইসলামে তালাক প্রথার রহস্য
বিবাহ সারা জীবনের জন্যই সম্পাদন করা হয়ে থাকে। তাই তা ভঙ্গ করার মত কোন পরিস্থিতি যেন না হয়, সেদিকেও বিশেষ লক্ষ্য রাখার তাগিদ দিয়েছে ইসলাম। এই সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পরিণাম শুধু স্বামী-স্ত্রী পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে না, বংশ ও সন্তানদের জীবনেও তার প্রভাব পড়ে। এমনকি উভয় পক্ষের মধ্যে ঝগড়া-বিবাধও সৃষ্টি হয় এবং সংশ্লিষ্ট অনেকেই এর ফলে বহুমুখী ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এগুলো থেকে বেঁচে থাকার জন্য নারী-পুরুষের দাম্পত্য জীবন সুখময়, শান্তিময় ও স্ন্দুর পারিবারিক ও সামাজিক জীবন গড়ে উঠার জন্য ইসলাম প্রয়োজনীয় বিধি-বিধান প্রদান করেছে।
স্বামী-স্ত্রীর পারষ্পরিক সম্পর্ক যখন এতদূর খারাপ হয়ে যায় যে, তারা পরস্পর মিলে মিশে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য সহকারে জীবন যাপন করতে কোন সম্ভাবনাই দেখতে পায়না, এমনকি এরূপ অবস্থার সংশোধন বা পরিবর্তনের শেষ আশাও বিলীন হয়ে যায়, যার ফলে বিয়ের মূল উদ্দেশ্যই সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়ে যায়, কেবল তখনই উভয়ের ভবিষ্যত দ্ব›দ্ব-সংঘাত ও তিক্ততা-বিরক্তির বিষাক্ত পরিণতি থেকে উদ্ধার করার উদ্দেশ্যে উভয়ের মধ্যে চূড়ান্তভাবে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দেওয়াই উভয়ের জন্য কল্যাণকর।
এই তালাকের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রী উভয়ই মস্ত বড় আযাব থেকে মুক্তি পায় এবং উভয়ে স্বস্তি ও নিরাপত্তা লাভ করে।
ইসলামে তালাকের মাধ্যমে বিবাহ বিচ্ছেদের যে ব্যবস্থা রয়েছে তা সম্পূর্ণ যুক্তিযুক্ত ও ভারসাম্যপূর্ণ এবং উভয়ের জন্য মঙ্গলজনক। ভিন্ন ধর্মাবলম্বী বড় বড় মনীষীগণও ইসলামের তালাক ব্যবস্থার প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
ইসলাম তালাক প্রদানকে নিষিদ্ধ করেনি, আবার বল্গাহীনভাবে তুচ্ছ বিষয়ে তালাক প্রদানের অনুমতিও প্রদান করেনি। তালাক প্রদানের ক্ষেত্রে মানুষ ইসলামী বিধি-বিধান মেনে চললে তালাকের হার বহুলাংশে হ্রাস পেতো। ইসলামে তালাক দেওয়াকে অনুৎসাহিত করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- مَا أَحَلَّ اللَّهُ شَيْئًا أَبْغَضَ إِلَيْهِ مِنَ الطَّلَاقِআল্লাহ তালাকের চেয়ে নিকৃষ্ট কোন বস্তুকে হালাল করেন নি। ১৮২
১৮২.ইমাম আবু দাউদ র. (২৭৫হি.) সুনানে আবু দাউদ, খণ্ড ১, পৃ. ৩১২
হযরত ইবনে ওমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (ﷺ) ইরশাদ করেন, أَبْغَضُ الْحَلَالِ إِلَى اللَّهِ الطَّلَاقُ সব হালাল বস্তুর মধ্যে মহান আল্লাহর নিকট তালাক সর্বাপেক্ষা অপছন্দনীয়। ১৮৩
১৮৩.ইমাম আবু দাউদ র (২৭৫ হি.) সুনানে আবু দাউদ, পৃ. ৩১২, সূত্র মিশকাত. পৃ. ২৮৩
অপর হাদিসে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হযরত মুয়ায (رضي الله عنه) কে সম্বোধন করে বলেন, হে মুয়ায!
ولا خلق الله شيئا على وجه الارض ابغض اليه من الطلاق
আল্লাহ তা‘আলা ভূপৃষ্ঠে তালাকের চেয়ে অতি নিকৃষ্ট কোন বস্তু সৃষ্টি করেননি।১৮৪
১৮৪.দারে কুতুনী, সূত্র. মিশকাত; পৃ. ২৮৪
হযরত আলী (رضي الله عنه) বলেন, তোমরা বিয়ে কর কিন্তু তালাক দিওনা। কেননা, তালাক দিলে তার দরুণ আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠে। ১৮৫
১৮৫.তাফসীরে কুরতুবী, খণ্ড. ১৮, পৃ. ১৪৯, সূত্র. দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম, ই.ফ.বা.পৃ. ৪১৩
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, তোমরা বিয়ে কর তবে তালাক দিয়োনা। কেননা, আল্লাহ তা‘আলা সেসব স্বামী-স্ত্রীকে পছন্দ করেন না, যারা নিত্য-নতুন বিয়ে করে স্বাদ গ্রহণ করতে অভ্যস্ত। ১৮৬
১৮৬.আহকামুল কুরআন, খণ্ড, ৩৯, পৃ. ১৩৩, সূত্র. প্রাগুক্ত
আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-
فَإِنْ كَرِهْتُمُوهُنَّ فَعَسَى أَنْ تَكْرَهُوا شَيْئًا وَيَجْعَلَ اللَّهُ فِيهِ خَيْرًا كَثِيرًا
তোমরা (স্বামীরা) যদি তাদের (স্ত্রীদের) অপছন্দ করো, তাহলে হয়ত এমনও হতে পারে যে, তোমরা যাকে অপছন্দ করছো আল্লাহ তা‘আলা তার মধ্যে প্রভূত কল্যাণ রেখে দিয়েছেন। ১৮৭
১৮৭.সূরা নিসা, আয়াত: ১৯
অর্থাৎ স্ত্রীদের কোন একটি বিষয় বা অভ্যাসকে অপছন্দ করে তাকে ঘৃণা করা কিংবা তালাক দেওয়া উচিত নয় কারণ এমনও তো হতে পারে তার মধ্যে আল্লাহ তা‘আলা আরো বহু পছন্দনীয় গুণাবলী ও চরিত্র দান করেছেন। কারণ কোন মানুষের সব অভ্যাস ও চরিত্র মন্দ হয় না; বরং ভাল-মন্দ মিলেই মানুষ। সর্বদিক দিয়ে প্রশংসীত ও ভাল হলে তো সে ফেরেশতা হয়ে যাবে। এরকম স্ত্রী খুঁজে পাওয়া পৃথিবীতে বিরল।
এই পর্যন্ত কুরআন-হাদিসের বর্ণনায় প্রতীয়মান হয় যে, ইসলামে তালাক প্রদান করাকে অনুৎসাহিত করা হয়েছে। এরপরও যদি স্ত্রীর আচার-আচরণ ও কর্ম-কাণ্ড স্বামীর নিকট অসহনীয় হয় এবং ক্ষমা ও উপেক্ষা করার মতও না হয়, সেক্ষেত্রে স্ত্রীকে রাগের মাথায় তালাক না দিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে সে আচরণ সংশোধন করার চেষ্টা চালানোর জন্য উপদেশ প্রদান করা হয়েছে স্বামীকে। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-
وَاللَّاتِي تَخَافُونَ نُشُوزَهُنَّ فَعِظُوهُنَّ وَاهْجُرُوهُنَّ فِي الْمَضَاجِعِ وَاضْرِبُوهُنَّ فَإِنْ أَطَعْنَكُمْ فَلَا تَبْغُوا عَلَيْهِنَّ سَبِيلًا
আর স্ত্রীদের মধ্যে যাদের অবাধ্যতার তোমরা আশংকা কর তাকে সদুপদেশ দাও। এরপর তাদের শয্যা বর্জন কর এবং তাদেরকে (মৃদু) প্রহার কর। যদি তারা তোমাদের অনুগত হয় তবে তাদের বিরোদ্ধে অন্য কোন বিকল্প পথ অন্বেষণ করো না। ১৮৮
১৮৮.সূরা নিসা, আয়াত: ৩৪
উক্ত আয়াতে স্ত্রীকে সংশোধন করার জন্য পর্যায়ক্রমে তিনটি ধাপ বর্ণনা করা হয়েছে।
১. তাকে উত্তমভাবে সদুপদেশ দিয়ে সংশোধনের প্রচেষ্টা করা। অর্থাৎ স্ত্রীর রাগ চলে গেলে ইসলামের আলোকে যুক্তি-প্রমাণ দিয়ে ঠান্ডা মাথায় উপযুক্ত সময় সুযোগ বুঝে স্ত্রীকে সত্য ও ন্যায়কে বুঝিয়ে দিতে হবে।
২. উপদেশ দ্বারা সংশোধন না হলে সাময়িকভাবে তার শয্যা বর্জন করা হবে। এতে স্বামীর সঙ্গ ও শয্যা যে কত মধুর তা উপলব্দি করতে পারবে। কারণ স্ত্রীর জন্য স্বামীর সঙ্গ থেকে বঞ্চিত হওয়া দুর্বিসহ ও অপমানের বিষয়। এভাবে তাকে ভুল উপলব্দি করে সংশোধনের সুযোগ দিতে হবে।
৩. এতো কিছুর পরও যদি স্ত্রী সংশোধন না হয় তাহলে তাকে আহত না হয় মতো মৃদু প্রহার করা যাবে যাতে চেহারায় বা অন্য কোন অঙ্গের ক্ষতি ও সৌন্দর্য্যহানি না হয়।
উল্লেখিত ব্যবস্থাগুলো অবলম্বন করার পরও যদি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সমঝোতার পরিবেশ সৃষ্টি না হয় তাহলে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের পরিবারের একজন করে সালিস নিযুক্ত করে তাদের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন- وَإِنْ خِفْتُمْ شِقَاقَ بَيْنِهِمَا فَابْعَثُوا حَكَمًا مِنْ أَهْلِهِ وَحَكَمًا مِنْ أَهْلِهَا إِنْ يُرِيدَا إِصْلَاحًا يُوَفِّقِ اللَّهُ بَيْنَهُمَاআর যদি তাদের মধ্যে (স্বামী-স্ত্রী) বিরোধ আশংকা থাকে তাহলে তোমরা তার (স্বামীর) পরিবার হতে একজন আর স্ত্রীর পরিবার হতে একজন সালিস মনোনীত করে মীমাংসার জন্য পাঠাও। তারা উভয়ে নিষ্পত্তি চাইলে আল্লাহ তাদের মধ্যে মীমাংসার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে দেবেন। ১৮৯
১৮৯.সূরা নিসা, আয়াত: ৩৫
অন্য আয়াতে বলা হয়েছে- والصلح خيرআর উভয়ের মধ্যে সমঝোতা করে নেওয়াই উত্তম। ১৯০
১৯০.সূরা নিসা, আয়াত: ১২৮
অর্থাৎ সরকার অথবা স্বামী-স্ত্রীর উভয়ের অভিভাবকগণের পক্ষ থেকেএকজন করে সালিস নিযুক্ত করে স্বামী-স্ত্রীর নিকট পাঠাবেন মীমাংসা করে দেওয়ার জন্য। সালিসদ্বয়ের মধ্যে সৎ উদ্দেশ্য ও মীমাংসা করার মত যোগ্যতা থাকতে হবে। তারা স্বামী-স্ত্রীকে নিয়ে নিরাপদ স্থানে মাঝখানে কয়েক দিনের বিরতি দিয়ে একে একে তিনবার বৈঠক করে সমঝোতা করার চেষ্টা করবেন।
যদি সমঝোতার এই উদ্যোগ ও প্রচেষ্টাও ফলপ্রসূ না হয় তাহলে এর অর্থ হবে- স্বামী-স্ত্রী দাম্পত্য জীবনে থাকা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে এবং স্বামী-স্ত্রী উভয়ই প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে তালাক কামনা করছে তাহলে সেই ক্ষেত্রে তালাকের মাধ্যমে তাদের পৃথক হয়ে যাওয়ার পথ খোলা রয়েছে ইসলামে।
তালাক প্রদানের বেলায়ও স্বামীকে কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় রাখতে বলা হয়েছে। প্রথমত- স্ত্রীকে মাসিক ঋতুস্রাব অবস্থায় তালাক দেওয়া পরিহার করবে এবং যে পবিত্র অবস্থায় সহবাস হয়েছে তাতেও তালাক দিবেনা বরং এমন পবিত্র অবস্থায় তালাক দিবে যাতে স্ত্রীর সাথে সহবাস করা হয়নি।
দ্বিতীয়ত- তালাক দেওয়ার ক্ষেত্রের এক পবিত্র অবস্থায় এক তালাক দিতে বলা হয়েছে। একসাথে তিন তালাক দেওয়াকে অনুত্তম বলা হয়েছে। এভাবে তিন মাসে তিন ‘তুহর’ তথা পবিত্র অবস্থায় তালাক দিলে এই দীর্ঘ সময়ে হয়তো একদিকে যেমন স্বামীর রাগ কমে যেতে পারে তেমনি অন্যদিকে স্ত্রী সংশোধনের সময় ও সুযোগ পাবে। ফলে তালাক প্রত্যাহার করে স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে পারবে।
তৃতীয়ত- তালাক প্রদানের ক্ষমতা ন্যস্ত করা হয়েছে পুরুষকে; নারীকে নয়। কারণ মহিলাদের মধ্যে সাধারণত বুদ্ধি-বিবেচনা ও দূরদৃষ্টির অভাব থাকে এবং তারা কোন কোন ক্ষেত্রে সাময়িক উত্তেজনার বশে তাৎক্ষনিক পদক্ষেপ গ্রহণে অতি দ্রুত এগিয়ে যায়। কাজেই যদি মহিলাদের হাতেও তালাক প্রদানের ক্ষমতা দেওয়া হতো তাহলে অতি তুচ্ছ ঘটনাতে বহু সংসার বিরান হয়ে যেতো।
আবার স্ত্রীর উপর যদি স্বামী কোন প্রকারের যুলুম-অত্যাচার, নির্যাতন-নিপীড়ন করে আর স্বামীর আকদের বন্ধন থেকে মুক্ত হতে চায় তাহলেও ইসলামে এর সুযোগও রাখা হয়েছে। স্ত্রী স্বামীকে কিছুর বিনিময়ে নিজেকে মুক্ত করে নিতে পারে যাকে শরীযতে ‘খুলা’ বলা হয়। তাছাড়া স্বামী থেকে প্রাপ্ত ক্ষমতা বলেও স্ত্রী নিজেকে নিজে তালাক দিতে পারে-শরীয়তে এটাকে ‘তালাকে মুফাওয়াযাহ’ বলা হয়।
ইসলামে তালাক পছন্দনীয় নয় বলে এবং তালাক সহজে প্রদান না করার জন্য এতগুলো পর্যায় ও ধাপ অতিক্রম করে একেবারে অপারগ হয়ে পড়লে তখনই তালাক প্রদানের কথা বলা হয়েছে। ইসলামের এই পদ্ধতি গ্রহণ করলে সমাজে তালাকের পরিমাণ শুন্যের কোঠায় নেমে আসবে।
তালাক সম্পর্কে ইসলামের এই ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ শোনা ও জানার পরও যদি এ কারণে ইসলামকে দোষারোপ করা হয় তবে তা হবে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষ ও প্রতিহিংসা মূলক আচরণ।
তাছাড়া ইসলামী ফিকহ শাস্ত্রে তালাক সম্পর্কীয় মাসয়ালা-মাসায়েল অত্যন্ত ক্ষুদ্র ও গভীর তাৎপর্যপূর্ণ। ফকীহগণ পারতপক্ষে কোন ঘর-সংসার ভাঙতে চাননি, বরং তালাকের মাসয়ালায় কোন ফাঁক-ফোকর থাকলেই যা দিয়ে বৈবাহিক বন্ধন বহাল রাখা যায় তা দিয়ে বিবাহ বহাল রাখার চেষ্টা করেন।
তালাকের প্রকারভেদ
সময় ও সংখ্যার বিচারে তালাক তিন প্রকার। ক. আহসান; খ. হাসান ও গ.বিদ্্ঈ।
ক. আহসান তালাক: ঋতুস্রাব পরবর্তী যে তুহরে স্ত্রীর সাথে সহবাস করা হয়নি, সেই তুহরে এক তালাকে রাজঈ প্রদান করে ইদ্দতকালীন সময় পর্যন্ত আর কোন তালাক না দেওয়া।
বিধান: এরূপ তালাক প্রদান করা হলে ইদ্দত চলাকালীন সময়ের মধ্যে স্বামী ইচ্ছা করলে স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে পারবে। এক্ষেত্রে স্ত্রীর সম্মতির প্রয়োজন হয়না। আর ইদ্দত অতিবাহিত হয়ে গেলে এক তালাক বাইন পতিত হবে। আকদ নবায়ন করা ব্যতিত স্ত্রীকে আর ফিরিয়ে আনা যাবে না।
খ. হাসান তালাক:সহবাস করা হয়নি এমন তুহরে স্ত্রীকে এক রাজঈ তালাক দেওয়ার পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় তুহরে পর্যায়ক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় তালাক প্রদান করা। এ অবস্থায় স্ত্রী মুগাল্লাযা তথা চুড়ান্ত তালাক প্রাপ্তা হয়ে যাবে।
বিধান: শরয়ী হালাল ব্যতিত স্ত্রীকে আর ফিরিয়ে আনা যাবে না।
গ. বিদঈ তালাক: স্ত্রীকে একই সাথে তিন তালাক দেওয়া বা একই তুহরে তিন তালাক দেওয়া।
বিধান:এরূপ তালাক দেওয়া হলে তিন তালাকই পতিত হয়ে স্ত্রী মুগাল্লাযা হয়ে যাবে। এভাবে তালাক দেওয়া গুনাহের কাজ।ঋতুস্রাবকালীন তালাক দেওয়া কিংবা যে তুহরে সহবাস করা হয়েছে সেই তুহরে তালাক দেওয়াও বিদঈ তালাকের অন্তর্ভুক্ত।