পঞ্চম অধ্যায়: বায়‘আত ও বেলায়াত প্রসঙ্গ:



বিষয় নং-০১: খোদাভীরুগণের  জন্য দুনিয়া ও আখিরাত সবই হারাম: 


‘‘হাদীসের নামে জালিয়াতি’’ গ্রন্থের ৪২৮ পৃষ্ঠায় এ হাদিসটি প্রসঙ্গে লিখেছেন-‘‘আরেকটি বানোয়াট কথা।’’ সনদ নিয়ে গবেষণা ছাড়াই এভাবে একটি হাদিসের শুরুতেই এ ধরনের লিখা কতটুকু যুক্তিযুক্ত তার বিচার করার ভার আপনাদেরই হাতেই। আহলে হাদিস নাসিরুদ্দীন আলবানী তার ‘সিলসিলাতুল আহাদিসিদ দ্বঈফাহ’ ১/১৪০ পৃ. হাদিস নং ৩২ এ বলেছেন উক্ত হাদিসটিকে জাল বলেছেন। দলীল বিহীনভাবে তাদের এ ধরনের মিথ্যা কথা কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। ইমাম দায়লামী (رحمة الله)সহ আরও অনেকে সংকলন করেন-


عن ابن عباس ؓ قال قال رسول الله ﷺ الدُّنْيا حَرَامٌ على أهْلِ الآخِرَةِ والآخِرَةُ حَرَامٌ عَلى أهْلِ الدُّنْيا والدُّنْيا والآخِرَةُ حَرَامٌ على أهْلِ الله-


 -‘‘হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ ফরমান, আখিরাত ওয়ালাদের জন্য দুনিয়া হারাম, আর দুনিয়া ওয়ালাদের জন্য আখিরাত হারাম। আর আল্লাহ্ ওয়ালাদের জন্য দুনিয়া ও আখিরাত উভয়ই হারাম।’’  ১

১ . ইমাম দায়লামী : আল-ফিরদাউস : ২/২৩০ পৃ: হা/৩১১০, ইমাম জালালুদ্দীন সূয়তী : জামেউস সগীর : ১/৬৫৬ পৃ., হা/৪২৬৯, সুয়ূতি : জামিউল আহাদিস ১৩/৬ পৃষ্ঠা, হা/১২৪২৩, শায়খ ইউসুফ নাবহানী,  ফতহুল কাবীর,  ২/১১০ পৃ. হা/৬৩৯৬, মুত্তাকী হিন্দী,  কানযুল উম্মাল,  ৩/১৮৪ পৃ.হাদিস,  ৬০৭১, আজলূনী,  কাশফুল খাফা, ১/৪৬৯ পৃ.হা/১৩১৪, মানাভী, ফয়যুল কাদীর, ৩/৫৪৪ পৃ., মোল্লা আলী ক্বারী,  শরহে শিফা,  ২/২৮৬ পৃ., ইমাম আহমদ রেযা খাঁন : ফতোয়ায়ে রেজভীয়া : ৩/২৮৩ পৃ.


পর্যালোচনা:


ইমাম সুয়ূতি  তার জামিউস সগীর” গ্রন্থে বর্ণনা করে এটাকে “হাসান’’ বলেছেন, তবে আল্লামা মানাভী (رحمة الله) বলেন- بِإِسْنَاد ضَعِيف -‘‘সনদটি যঈফ।’’ (মানাভী, তাইসীর বিশারহে জামেউস সগীর, ২/১২ পৃ.)


তবে আল্লামা মানাভী  সনদটিকে ‘জিবলাত ইবনে সুলাইমান’ রাবীর কারনে দ্বঈফ বলেছেন। (মানাভী, ফয়যুল কাদীর, ৩/৫৪৪ পৃ. হা/৬৭৫৪) 


তিনি কারণ উলে­খ করেছেন যে, ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মাঈন  তাকে গায়রে সিকাহ বলেছেন। আমি বলবো, আল্লামা মানাভী (رحمة الله)-এর এ তাহকীক ভুল বলে বিবেচিত। কারণ উক্ত রাবীর বিষয়ে ইমাম যাহাবী (رحمة الله) তাঁর জীবনীতে লিখেন-


وذَكَره ابن حِبَّان في الثقات. وقال العقيلي في ترجمة عاصم بن مضرس: جبلة بن سليمان لا بأس به.


-‘‘ইমাম ইবনে হিব্বান (رحمة الله) তাকে সিকাহ রাবীর তালিকায় স্থান দিয়েছেন, ইমাম উকাইলী (رحمة الله) রাবী ‘আসেম বিন মাদ্বরাশ’ নামক রাবীর জীবনীতে লিখেন, এ রাবীর হাদিস গ্রহণ করতে কোনো অসুবিধা নেই।’’ (ইমাম যাহাবী, মিযানুল ই‘তিদাল, ২/৪২০ পৃ. ক্রমিক. ১৭৬৪)

Top