ত্রয়শ্চত্বারিংশ অধ্যায়
ঘুমানোর পূর্বে
ঘুমোনোর পূর্বে সুন্নাত সমূহ হচ্ছে-
১। ঘুমোতে যাওয়ার দু‘য়া পাঠ-
بِاسْمِكَ اللَّهُمَّ أَمُوتُ وَأَحْيَا.
অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! তোমার নাম নিয়েই আমি শয়ন করছি এবং তোমার নাম নিয়েই উঠবো।’
حَدَّثَنِي مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ، عَنْ رِبْعِيٍّ، عَنْ حُذَيْفَةَ ـ رضى الله عنه قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَخَذَ مَضْجَعَهُ مِنَ اللَّيْلِ وَضَعَ يَدَهُ تَحْتَ خَدِّهِ ثُمَّ يَقُولُ " اللَّهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوتُ وَأَحْيَا ". وَإِذَا اسْتَيْقَظَ قَالَ " الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وَإِلَيْهِ النُّشُورُ ".
হুযাইফাহ رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, নবী ﷺ রাতে নিজ বিছানায় শোয়ার সময় নিজ হাত গালের নীচে রাখতেন, তারপর বলতেনঃ হে আল্লাহ! আপনার নামেই মরি, আপনার নামেই জীবিত হই। আর যখন জাগতেন তখন বলতেনঃ সে আল্লাহর জন্য প্রশংসা, যিনি মৃত্যুর পর আমাদের জীবন দান করলেন এবং তাঁরই দিকে আমাদের পুনরুত্থান।
(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৩১৪) (ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৬২)
২। ইখলাস, ফালাক্ব পাঠ করে তিনবার দেহকে মাসেহ করা।
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي فُدَيْكٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْبَرَّادِ، عَنْ مُعَاذِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خُبَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ خَرَجْنَا فِي لَيْلَةٍ مَطِيرَةٍ وَظُلْمَةٍ شَدِيدَةٍ نَطْلُبُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي لَنَا - قَالَ - فَأَدْرَكْتُهُ فَقَالَ " قُلْ " . فَلَمْ أَقُلْ شَيْئًا ثُمَّ قَالَ " قُلْ " . فَلَمْ أَقُلْ شَيْئًا . قَالَ " قُلْ " . قُلْتُ مَا أَقُولُ قَالَ " قُلْ : ( هوَ اللَّهُ أَحَدٌ ) وَالْمُعَوِّذَتَيْنِ حِينَ تُمْسِي وَتُصْبِحُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ تَكْفِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ وَأَبُو سَعِيدٍ الْبَرَّادُ هُوَ أَسِيدُ بْنُ أَبِي أَسِيدٍ مَدَنِيٌّ .
আবদুল্লাহ ইবনু খুবাইব رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, এক ঘুটঘুটে অন্ধকার ও বৃষ্টিমুখর রাতে আমাদের নামায আদায় করানোর জন্য আমরা রাসুলুল্লাহ ﷺ এর সন্ধানে বের হলাম। আমি তাঁর দেখা পেলে তিনি বললেনঃ বল। কিন্তু আমি কিছুই বললাম না। তিনি পুণরায় বললেনঃ বল। এবারও আমি কিছুই বললাম না। তিনি আবার বললেন, বল। এবার আমি প্রশ্ন করলাম, আমি কি বলব? তিনি বললেনঃ তুমি প্রতি দিন বিকালে ও সকালে উপনীত হয়ে তিনবার করে সূরা কুল হুআল্লাহু আহাদ (সূরা আল -ইখলাস) ও আল –মুআওবিযাতাইন (সূরা আল –ফালাক্ব ও সুলা আন -নাস) পাঠ করবে, আর তা প্রত্যেকটি ব্যাপারে তোমার জন্য যথেষ্ট হবে।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৫৭৫, তালীকুর রাগীব (১/২২৪), আল –কালিমুত তাইয়্যিব ১৯/৭)
৩। সূরা বাক্বারাহ এর শেষ দুই আয়াত পাঠ করা। যে এগুলো পাঠ করবে তা তার জন্য যথেষ্ট হবে।
الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيْدَ عَنْ أَبِيْ مَسْعُوْدٍ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَنْ قَرَأَ بِالْآيَتَيْنِ مِنْ آخِرِ سُوْرَةِ الْبَقَرَةِ فِيْ لَيْلَةٍ كَفَتَاهُ.
আবূ মাস’উদ رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কেউ যদি রাতে সূরা বাকারার শেষ দু’টি আয়াত পাঠ করে, সেটাই তার জন্য যথেষ্ট।
(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫০০৯) (ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৪২)
৪। আয়াতুল কুরসী পাঠ করা। যে তা পাঠ করবে সে আল্লাহ ﷻ'র নিকট থেকে নিরাপত্তা পাবে এবং শয়তান তার কাছে আসতে পারবে না।
আয়াতুল কুরসীঃ
اَللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لاَ تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلاَ نَوْمٌ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الأَرْضِ مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلاَّ بِإِذْنِهِ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلاَ يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِنْ عِلْمِهِ إِلاَّ بِمَا شَاءَ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاو ;َاتِ وَالأَرْضَ وَلاَ يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ
এছাড়াও আরও অনেকগুলো দু‘আ রয়েছে যা ঘুমোতে যাওয়ার সময় পাঠ করা জন্য।
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى، عَنِ الْجُرَيْرِيِّ، عَنْ أَبِي السَّلِيلِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ رَبَاحٍ الأَنْصَارِيِّ، عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يَا أَبَا الْمُنْذِرِ أَتَدْرِي أَىُّ آيَةٍ مِنْ كِتَابِ اللَّهِ مَعَكَ أَعْظَمُ " . قَالَ قُلْتُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ " يَا أَبَا الْمُنْذِرِ أَتَدْرِي أَىُّ آيَةٍ مِنْ كِتَابِ اللَّهِ مَعَكَ أَعْظَمُ " . قَالَ قُلْتُ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ . قَالَ فَضَرَبَ فِي صَدْرِي وَقَالَ " وَاللَّهِ لِيَهْنِكَ الْعِلْمُ أَبَا الْمُنْذِرِ " .
উবাই ইবনু কা’ব (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ একদিন আবুল মুনযিরকে লক্ষ্য করে বললেনঃ হে আবুল মুনযির! আল্লাহ ﷻ'র কিতাবের কোন্ আয়াতটি তোমার কাছে সবচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ? আবুল মুনযির বলেন, জবাবে আমি বললাম : এ বিষয়ে আল্লাহ ও আল্লাহ ﷻ'র রাসুলই সর্বাধিক অবগত। তিনি ﷺ আবার বললেনঃ হে আবুল মুনযির! আল্লাহ ﷻ'র কিতাবের কোন্ আয়াতটি তোমার কাছে সবচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ? তখন আমি বললাম, (আরবী) (এ আয়াতটি আমার কাছে বেশী গুরুত্বপূর্ণ)। এ কথা শুনে তিনি আমার বুকের উপর হাত মেরে বললেনঃ হে আবুল মুনযির! তোমার জ্ঞানকে স্বাগতম।
(সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ১৭৭০) (ই.ফা. ১৭৫৫)
১। সহীহ আল বুখারী ও মুসলিমে রয়েছেঃ
بِاسْمِكَ رَبِّ وَضَعْتُ جَنْبِي وَبِكَ أَرْفَعُهُ إِنْ أَمْسَكْتَ نَفْسِي فَارْحَمْهَا وَإِنْ أَرْسَلْتَهَا فَاحْفَظْهَا بِمَا تَحْفَظُ بِهِ عِبَادَكَ الصَّالِحِينَ .
অর্থঃ ‘হে রব! তোমার নামে আমি আমার পার্শ্বদেশকে শয্যায় স্থাপন করছি (আমি শয়ন করছি), আর তোমারই নাম নিয়ে আমি তাকে উঠাব (শয্যা ত্যাগ করবো) যদি তুমি (আমার নিদ্রিত অবস্থায়) আমার প্রাণ কবজ করো, তবে তুমি তাকে ছেড়ে দাও (বাঁচিয়ে রাখো) তাহলে সে অবস্থায় তুমি তার হিফাজত করো যেমনভাবে তুমি তোমার সৎকর্মশীল বান্দাগণকে হিফাজত করে থাকো।’ ৫
২। সহীহ কালিমুত তাইয়্যেব এ রয়েছে-
اَللّّهُمَّ عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ، رَبَّ كُلِّ شَيْءٍ وَمَلِيكَهُ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ نَفْسِي، وَشَرِّ الشَّيْطَانِ وَشِرْكِهِ وَأَقْتَرِفَ عَلَى نَفْسِيْ سُوْءًا، أَوْ أَجُرَّهُ إِلَى مُسْلِمٍ،
অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! তুমি গোপন ও প্রকাশ্য সবকিছুই জান। আকাশ ও পৃথিবীর তুমি সৃষ্টিকর্তা। তুমি সব বস্তুর প্রতিপালক এবং সমস্ত কিছুর মালিক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি তুমি ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোন মাবুদ নেই। আমি আমার প্রবৃত্তির অনিষ্ট হতে আর শয়তান এবং তার শিরকের অনিষ্ট হতে তোমার আশ্রয় প্রার্থণা করছি। আমি নিজের অনিষ্ট হতে এবং কোন মুসলিমের অনিষ্ট করা হতে তোমার আশ্রয় চাচ্ছি।’
৩। সহীহ আল-বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিতঃ
اللَّهُمَّ أَسْلَمْتُ نَفْسِي إليْكَ ، وَوجَّهْتُ وَجْهي إلَيْكَ ، وفَوَّضْتُ أَمْرِي إلَيْكَ ، وَأَلجَأْتُ ظهْري إلَيْكَ ، رَغْبةً وَرهْبَةً إلَيْكَ ، لا مَلْجأ ولا مَنْجى مِنْكَ إلاَّ إلَيْكَ ، آمَنْتُ بِكتَابكَ الذي أَنْزلتَ ، وَنَبيِّكَ الذي أَرْسَلْتَ.
অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! আমি নিজেকে তোমার প্রতি সঁপে দিলাম, আর আমার সমগ্র কার্যক্রম তোমার উদ্দেশেই নিবেদন করলাম, আমার মুখমন্ডল তোমার দিকে স্থাপন করলাম, আমার পৃষ্টদেশকে তোমার দিকেই ঝুকিয়ে দিলাম, আর এ সমস্তই করলাম তোমার রহমতের আশায় এবং তোমার শাস্তির ভয়ে। কোন আশ্রয় নেই এবং মুক্তির কোন উপায় নেই একমাত্র তোমার আশ্রয় এবং উপায় ছাড়া, আমি বিশ্বাস স্থাপন করেছি তোমার সেই কিতাবের প্রতি যা তুমি নাযিল করেছো এবং তোমার সেই নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি যাকে তুমি প্রেরণ করেছো।’
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ بْنُ زِيَادٍ، حَدَّثَنَا الْعَلاَءُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَوَى إِلَى فِرَاشِهِ نَامَ عَلَى شِقِّهِ الأَيْمَنِ ثُمَّ قَالَ " اللَّهُمَّ أَسْلَمْتُ نَفْسِي إِلَيْكَ، وَوَجَّهْتُ وَجْهِي إِلَيْكَ، وَفَوَّضْتُ أَمْرِي إِلَيْكَ، وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِي إِلَيْكَ، رَغْبَةً وَرَهْبَةً إِلَيْكَ، لاَ مَلْجَأَ وَلاَ مَنْجَا مِنْكَ إِلاَّ إِلَيْكَ، آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِي أَنْزَلْتَ، وَنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ. وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ قَالَهُنَّ ثُمَّ مَاتَ تَحْتَ لَيْلَتِهِ مَاتَ عَلَى الْفِطْرَةِ ". {اسْتَرْهَبُوهُمْ} مِنَ الرَّهْبَةِ، مَلَكُوتٌ مُلْكٌ مَثَلُ رَهَبُوتٌ خَيْرٌ مِنْ رَحَمُوتٍ، تَقُولُ تَرْهَبُ خَيْرٌ مِنْ أَنْ تَرْحَمَ.
বারাআ ইবনু 'আযিব رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:
রাসুলুল্লাহ ﷺ যখন নিজ বিছানায় বিশ্রাম নিতে যেতেন, তখন তিনি ডান পাশের উপত নিদ্রা যেতেন এবং বলতেনঃ হে আল্লাহ! আমি আমার সত্তাকে আপনার কাছে সমর্পণ করলাম, আর আমার বিষয় ন্যস্ত করলাম আপনার দিকে এবং আমার চেহারা আপনারই দিকে ফিরিয়ে দিলাম, আপনার রাহমাতের আশায়। রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেন, যে ব্যক্তি শয়নকালে এ দু'আগুলো পড়বে, আর এ রাতেই তার মৃত্যু হবে সে স্বভাব ধর্ম ইসলামের উপরই মরবে।
(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৩১৫) (ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৬৩)
৪। সহীহ মুসলিমে রয়েছে বর্ণিতঃ
اللَّهُمَّ أَنْتَ خَلَقْتَ نَفْسِي وَأَنْتَ تَوَفَّاها ، لَكَ مَمَاتُها وَمَحْيَاهَا ، إِنْ أَحْيَيْتَها فَاحْفَظْهَا ، وَإنْ أَمَتَّها فاغْفِرْ لَها ، اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْألُكَ الْعَافِيَةَ.
অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! নিশ্চয় তুমি আমার আত্মাকে সৃষ্টি করেছো আর তুমি উহার মৃত্যু ঘটাবে ৯অতএব) তার জীবন ও মরণ যেন একমাত্র তোমার জন্য হয়। যদি তাকে বাঁচিয়ে রাখো তাহলে তুমি তার হিফাযত করো, আর যদি তার মৃত্যু ঘটাও নিদ্রাবস্থায় তবে তাকে মাফ করে দিও। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে নিরাপত্তা প্রার্থণা করছি।’
حَدَّثَنَا عُقْبَةُ بْنُ مُكْرَمٍ الْعَمِّيُّ، وَأَبُو بَكْرِ بْنُ نَافِعٍ قَالاَ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ خَالِدٍ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ الْحَارِثِ، يُحَدِّثُ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّهُ أَمَرَ رَجُلاً إِذَا أَخَذَ مَضْجَعَهُ قَالَ " اللَّهُمَّ خَلَقْتَ نَفْسِي وَأَنْتَ تَوَفَّاهَا لَكَ مَمَاتُهَا وَمَحْيَاهَا إِنْ أَحْيَيْتَهَا فَاحْفَظْهَا وَإِنْ أَمَتَّهَا فَاغْفِرْ لَهَا اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَافِيَةَ " . فَقَالَ لَهُ رَجُلٌ أَسَمِعْتَ هَذَا مِنْ عُمَرَ فَقَالَ مِنْ خَيْرٍ مِنْ عُمَرَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ ابْنُ نَافِعٍ فِي رِوَايَتِهِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ . وَلَمْ يَذْكُرْ سَمِعْتُ .
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি এক লোককে আদেশ করলেন, যখন শয্যাগ্রহণ করবে তখন বলবে, “আল্ল-হুম্মাখ লাক্তা নাফসী ওয়া আন্তা তা ওয়াফ্ফা-হা লাকা মামা-তুহা ওয়া মাহইয়া-হা ইন্ আহ ইয়াইতাহা- ফাহফাযহা- ওয়া ইন্ আমাত্তাহা- ফাগ্ফির লাহা- আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকাল ‘আ-ফিয়াহ” অর্থাৎ- “হে আল্লাহ! আপনি আমার জীবন সৃষ্টি করেছেন এবং আপনিই তাকে (আমার জীবনকে) মৃত্যুদান করে। আপনার কাছে (নাফ্সের) জীবন ও মরণ। যদি আপনি একে জীবিত রাখেন তাহলে আপনি এর হিফাযাত করুন। আর যদি আপনি এর মৃত্যু দান করেন তাহলে একে ক্ষমা করে দিন। হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে সুস্থতা প্রার্থনা করছি”। তখন সে লোকটি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি তা ‘উমার رضي الله عنه হতে শুনছেন? তিনি বললেন, ‘উমার-এর চেয়ে যিনি উত্তম (অর্থাৎ-) রাসুলুল্লাহ ﷺ হতে শুনেছি।
ইবনু নাফি‘ رحمة الله তার বর্ণনায় বলেছেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু হারিস رحمة الله হতে এবং তিনি (আরবী) (আমাকে শুনেছি) শব্দটি বলেননি।
(সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৬৭৮১) (ই.ফা. ৬৬৪০)
৫। সুনান আবু দাউদ ও তিরমিযি-তে বর্ণিতঃ
اللَّهُمَّ قِنِى عَذَابَكَ يَوْمَ تَجْمَعُ عِبَادَكَ أَوْ تَبْعَثُ عِبَادَكَ.
অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! আমাকে তোমার আযাব হতে রক্ষা করো সেই দিবসে যখন তুমি তোমার বান্দাদিগকে পুনরুত্থান করবে।’
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ رِبْعِيِّ بْنِ حِرَاشٍ، عَنْ حُذَيْفَةَ بْنِ الْيَمَانِ، رضى الله عنهما أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا أَرَادَ أَنْ يَنَامَ وَضَعَ يَدَهُ تَحْتَ رَأْسِهِ ثُمَّ قَالَ " اللَّهُمَّ قِنِي عَذَابَكَ يَوْمَ تَجْمَعُ عِبَادَكَ أَوْ تَبْعَثُ عِبَادَكَ " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
হুযইফাহ ইবনুল ইয়ামান رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:
যখন নবী ﷺ ঘুমানোর ইচ্ছা করতেন, সে সময় তিনি নিজের (ডান) হাত মাথার নীচে রেখে বলতেনঃ "হে আল্লাহ! যেদিন তুমি তোমার বান্দাদেরকে একত্রিত করবে অথবা পুনজীবিত করবে সেদিন আমাকে তোমার আযাব হতে হিফাযাতে রেখ।”
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৩৯৮, সহীহাহ হাঃ ২৭৫৪, আল-কালিমুত তাইয়্যিব হাঃ ৩৭/৩৯)
৬। সহীহ মুসলিম কর্তৃক বর্ণিতঃ
اللَّهُمَّ رَبَّ السَّمَوَاتِ السَّبْعِ وَرَبَّ الْأَرْضِ، وَرَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ، رَبَّنَا وَرَبَّ كُلِّ شَيْءٍ، فَالِقَ الْحَبِّ وَالنَّوَى، وَمُنْزِلَ التَّوْرَاةِ وَالْإِنْجِيلِ وَالْفُرْقَانِ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ شَيْءٍ أَنْتَ آخِذٌ بِنَاصِيَتِهِ، اللَّهُمَّ أَنْتَ الْأَوَّلُ فَلَيْسَ قَبْلَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الْآخِرُ فَلَيْسَ بَعْدَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الظَّاهِرُ فَلَيْسَ فَوْقَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الْبَاطِنُ فَلَيْسَ دُونَكَ شَيْءٌ، اقْضِ عَنَّا الدَّيْنَ وَأَغْنِنَا مِنَ الْفَقْرِ.
অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! তুমি সপ্ত আকাশ মন্ডলরি রব! এহা মহীয়ান আরশের রব এবং প্রত্যেক বস্তুর রব। হে আল্লাহ! বীজ ও আঁটি চিরে চারা ও বৃক্ষের উদ্ভব ঘটাও তুমি! তাওরাত, ইঞ্জিল ও কুরআনের নাযিলকারী তুমি! আমি প্রত্যেক বস্তুর অনিষ্ট হতে তোমার নিকটেই আশ্রয় প্রার্থণা করি, তোমার হাতে রয়েছে সকল বস্তুর ভাগ্য। হে আল্লাহ তুমি অনাদি, তোমার পূর্বে কোন কিছুরই অস্তিত্ব ছিল না, তুমি অনন্ত, তোমার পরে কোন কিছুই থাকবে না, তুমি প্রকাশমান, তোমার উপরে কিছুই নেই, তুমি অপ্রকাশ্য, তোমার চেয়ে নিকটবর্তী কিছুই নেই। হে রব! তুমি আমার সমস্ত ঋণ পরিশোধ করে দাও, আর আমাকে দারিদ্রতা থেকে মুক্ত রাখো।’
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ جَاءَتْ فَاطِمَةُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم تَسْأَلُهُ خَادِمًا فَقَالَ لَهَا " قُولِي اللَّهُمَّ رَبَّ السَّمَوَاتِ السَّبْعِ وَرَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ رَبَّنَا وَرَبَّ كُلِّ شَيْءٍ مُنْزِلَ التَّوْرَاةِ وَالإِنْجِيلِ وَالْقُرْآنِ فَالِقَ الْحَبِّ وَالنَّوَى أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ شَيْءٍ أَنْتَ آخِذٌ بِنَاصِيَتِهِ أَنْتَ الأَوَّلُ فَلَيْسَ قَبْلَكَ شَيْءٌ وَأَنْتَ الآخِرُ فَلَيْسَ بَعْدَكَ شَيْءٌ وَأَنْتَ الظَّاهِرُ فَلَيْسَ فَوْقَكَ شَيْءٌ وَأَنْتَ الْبَاطِنُ فَلَيْسَ دُونَكَ شَيْءٌ اقْضِ عَنِّي الدَّيْنَ وَأَغْنِنِي مِنَ الْفَقْرِ " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَهَكَذَا رَوَى بَعْضُ أَصْحَابِ الأَعْمَشِ عَنِ الأَعْمَشِ نَحْوَ هَذَا . وَرَوَى بَعْضُهُمْ عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ أَبِي صَالِحٍ مُرْسَلٌ وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ .
আবূ হুরাইরাহ رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, নবী ﷺ-এর কাছে এসে ফাতিমাহ رضي الله عنه একটি খাদিম চাইলেন। তিনি তাকে বললেনঃ তুমি বল, “হে আল্লাহ, সাত আকাশের প্রতিপালক এবং মহান আরশের প্রভূ, আমাদের প্রতিপালক এবং প্রতিটি বস্তুর পালনকর্তা, তাওরাত, ইনজীল ও কুরআন অবতীর্ণকারী এবং শস্যবীজ ও আঁটির অংকুর উদগমনকারী! আমি এমন প্রতিটি জিনিসের অনিষ্ট হতে তোমার নিকটে আশ্রয় চাই যার মস্তকের অগ্রভাগের চুলগুলো তুমি ধরে রেখেছ (অর্থাৎ তোমার নিয়ন্ত্রণাধীন)। তুমিই শুরু, তোমার আগে কিছুই নেই। তুমিই শেষ, তোমার পরেও কিছুই নেই। তুমিই প্রবল ও বিজয়ী, তোমার উপর কিছুই নেই। তুমিই লুকানো, তুমি ছাড়া আর কিছুই নেই। অতএব আমার ঋণ তুমি মিটিয়ে দাও এবং দরিদ্রতা হতে আমাকে স্বাবলম্বী করে দাও”।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৪৮১, মুসলিম হাঃ ৮/৭৯)
৭। সহীহ মুসলিম কর্তৃক বর্ণিতঃ
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَطْعَمَنَا وَسَقَانَا، وَكَفَانَا وَآوَانَا، فَكَمْ مِمَّنْ لَا كَافِيَ لَهُ وَلَا مُؤْوِيَ.
অর্থঃ ‘সকল প্রশংসা সেই আল্লাহ ﷻ'র জন্য যিনি আমাদেরকে আহার করিয়েছেন, পান করিয়েছেন, আমাদের প্রয়োজন পূর্ণ করেছেন এবং আমাদিগকে আশ্রয় প্রদান করেছেন। এমন বহুলোক রয়েছে যাদের পরিতৃপ্ত করার কেউই নেই, যাদের আশ্রয় দানকারী কেউই নেই।’
وَعَنْ أَنَسٍ رضي الله عنه: أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا أَوَى إِلَى فِرَاشِهِ قَالَ: «اَلحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَطْعَمَنَا وَسَقَانَا، وَكَفَانَا وَآوَانَا، فَكَمْ مِمَّنْ لاَ كَافِيَ لَهُ وَلاَ مُؤْوِيَ» . رواه مسلم
আনাস رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন শয্যা গ্রহণ করতেন তখন এই দুআ পড়তেন, ‘আলহামদু লিল্লা-হিল্লাযী আত্বআমানা অ সাক্বা-না অকাফা-না অ আ-ওয়া-না, ফাকাম মিম্মাল লা কা-ফিয়া লাহু অলা মু’বী।’
অর্থাৎ, সেই আল্লাহ ﷻ'র সমস্ত প্রশংসা যিনি আমাদেরকে পানাহার করিয়েছেন, তিনি আমাদের জন্য যথেষ্ট হয়েছেন এবং আশ্রয় দিয়েছেন। অথচ কত এমন লোক আছে যাদের যথেষ্টকারী ও আশ্রয়দাতা নেই।
(মুসলিম ২৭১৫, তিরমিযী ৩৩৯৬, আবূ দাউদ ৫০৫৩, আহমাদ ১২১৪২, ১২৩০১, ১৩২৪১, রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ১৪৭১)
৮। সহীহ আল-বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিতঃ
سُبْحَانَ اللّه
اَلْحَمْدُ للّه
اللّهُ أَكْبَرٌ
৩৩ বার করে পড়তে হবে।
الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ أَبِي يَزِيدَ سَمِعَ مُجَاهِدًا سَمِعْتُ عَبْدَ الرَّحْمٰنِ بْنَ أَبِي لَيْلٰى يُحَدِّثُ عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ أَنَّ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلاَم أَتَتْ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم تَسْأَلُه“ خَادِمًا فَقَالَ أَلاَ أُخْبِرُكِ مَا هُوَ خَيْرٌ لَكِ مِنْه“ تُسَبِّحِينَ اللهَ عِنْدَ مَنَامِكِ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ وَتَحْمَدِينَ اللهَ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ وَتُكَبِّرِينَ اللهَ أَرْبَعًا وَثَلاَثِينَ ثُمَّ قَالَ سُفْيَانُ إِحْدَاهُنَّ أَرْبَعٌ وَثَلاَثُونَ فَمَا تَرَكْتُهَا بَعْدُ قِيلَ وَلاَ لَيْلَةَ صِفِّينَ قَالَ وَلاَ لَيْلَةَ صِفِّينَ.
‘আলী رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:
ফাতিমা رضي الله عنه একটি খাদিম চাইতে নবী ﷺ-এর কাছে আসলেন। তিনি বললেনঃ আমি কি তোমাকে এর চেয়ে অধিক কল্যাণদায়ক বিষয়ে খবর দিব না? তুমি শয়নকালে তেত্রিশবার ‘সুবহানাল্লাহ’, তেত্রিশবার ‘আল্ হাম্দুলিল্লাহ’ এবং চৌত্রিশবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলবে। পরে সুফিয়ান বলেনঃ এর মধ্যে যে কোন একটি চৌত্রিশবার। ‘আলী رضي الله عنه বলেনঃ অতঃপর কখনোও আমি এগুলো ছাড়িনি। জিজ্ঞেস করা হলো সিফ্ফীনের রাতেও না? তিনি বললেনঃ সিফ্ফীনের রাতেও না।
(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫৩৬২) (ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৮)
ঘুমোতে যাওয়ার আদা’ব হচ্ছে-
১। পবিত্র অবস্থায় ওযু করে বিছানায় যাওয়া।
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ، حَدَّثَنِي الْبَرَاءُ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا أَخَذْتَ مَضْجَعَكَ فَتَوَضَّأْ وُضُوءَكَ لِلصَّلاَةِ ثُمَّ اضْطَجِعْ عَلَى شِقِّكَ الأَيْمَنِ ثُمَّ قُلِ اللَّهُمَّ أَسْلَمْتُ وَجْهِي إِلَيْكَ وَفَوَّضْتُ أَمْرِي إِلَيْكَ وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِي إِلَيْكَ رَهْبَةً وَرَغْبَةً إِلَيْكَ لاَ مَلْجَأَ وَلاَ مَنْجَا مِنْكَ إِلاَّ إِلَيْكَ آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِي أَنْزَلْتَ وَبِنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ . فَإِنْ مُتَّ فِي لَيْلَتِكَ مُتَّ عَلَى الْفِطْرَةِ " . قَالَ فَرَدَّدْتُهُنَّ لأَسْتَذْكِرَهُ فَقُلْتُ آمَنْتُ بِرَسُولِكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ فَقَالَ " قُلْ آمَنْتُ بِنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ " . قَالَ وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنِ الْبَرَاءِ وَلاَ نَعْلَمُ فِي شَيْءٍ مِنَ الرِّوَايَاتِ ذُكِرَ الْوُضُوءُ إِلاَّ فِي هَذَا الْحَدِيثِ .
আল –বারাআ رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ যখন তুমি শোয়ার জন্য বিছানায় যেতে চাও সে সময় নামাযের উযূর মত উযূ কর, অতঃপর তোমার ডান কাতে শয়ন কর, অতঃপর বলঃ “হে আল্লাহ! আমার চেহারা আমি তোমার দিকে সোপর্দ করলাম, আমার সমস্ত বিষয় তোমার কাছে সমর্পণ করলাম, আশা ও ভয় নিয়ে তোমার দিকে আমার পিঠ সপে দিলাম, তোমার হতে (পালিয়ে) আশ্রয় নেয়ার এবং রক্ষা পাওয়ার তুমি ব্যতীত আর কোন জায়গা নেই। আমি ঈমান আনলাম তোমার অবতীর্ণ কিতাবের উপর এবং তোমার পাঠানো নাবীর উপর”। তারপর যদি ঐ রাতে তুমি মারা যাও, তাহলে দ্বীনের (ইসলামের) উপরই মৃত্যুবরণ করবে। বর্ণনাকারী বলেন, আমি এ দু’আর বাক্যগুলো পুণরায় বললাম যাতে তা আমার মুখস্থ হয়ে যায়। আমি তাতে যোগ করলাম, আমি তোমার পাঠানো রাসুলের উপর ঈমান আনলাম। তখন তিনি বললেনঃ তুমি বল, “আমি তোমার পাঠানো নাবীর উপর ঈমান আনলাম”।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৫৭৪, বুখারী ও মুসলিম (৩৩৯৪) নং পূর্বে বর্ণিত হয়েছে)
২। ডান কাতে শয়ন করা।
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا، قَالَتْ: كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ إحْدَى عَشرَةَ رَكْعَةً، فَإِذَا طَلَعَ الفَجْرُ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ، ثُمَّ اضْطَجَعَ عَلَى شِقِّهِ الأَيْمَنِ حَتَّى يَجِيءَ الْمُؤَذِّنُ فَيُؤْذِنَهُ . متفقٌ عَلَيْهِ
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, ‘নবী ﷺ রাতে এগারো রাকআত নামায পড়তেন। যখন ফজর উদয় হত, তখন তিনি দু’রাকআত সংক্ষিপ্ত নামায পড়তেন, তারপর তাঁর ডান পার্শ্বে শয়ন করতেন; শেষ পর্যন্ত মুআয্যিন এসে তাঁকে (জামাআতের সময় হওয়ার) খবর জানাত।’
(রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ৮২০, সহীহুল বুখারী ৬২৬, ৯৯৪, ১১২৩, ১১৩৯, ১১৪০, ১১৬০, ১১৬৫, মুসলিম ৭২৪, ৭৩৬, ৭৩৭, ৭৩৮, তিরমিযী ৪৩৯, ৪৪০, নাসায়ী ৬৮৫, ১৬৯৬, ১৭৪৯, ১৭৬২, আবূ দাউদ ১২৫৪, ১২৫৫, ১২৬২, ১৩৩৪, ১৩৩৮, ১৩৩৯, ১৩৪০, ইবনু মাজাহ ১১৯৮, ১৩৫৮, আহমাদ ২৩৫৩৭, ২৩৫৫৩, ২৩৫৯৬, ২৩৬৬৮, ২৩৬৯৭, ২৩৭০৫, ২৩৯২৫, ২৩৯৪০, মুওয়াত্তা মালিক ২৪৩, ২৬৪, দারেমী ১৪৪৭, ১৪৭৩, ১৪৭৪,১৫৮৫)
৩। ডান হাতকে ডান গালের নীচে স্থাপন করা।
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا أَبَانُ، حَدَّثَنَا عَاصِمٌ، عَنْ مَعْبَدِ بْنِ خَالِدٍ، عَنْ سَوَاءٍ، عَنْ حَفْصَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا أَرَادَ أَنْ يَرْقُدَ وَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى تَحْتَ خَدِّهِ ثُمَّ يَقُولُ " اللَّهُمَّ قِنِي عَذَابَكَ يَوْمَ تَبْعَثُ عِبَادَكَ " . ثَلاَثَ مِرَارٍ .
নাবী ﷺ-এর স্ত্রী হাফসাহ رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:
নবী ﷺ যখন শয়ন করতেন তখন তাঁর ডান হাত গালের নীচে রেখে তিনবার বলতেনঃ “আল্লাহুম্মা ক্বিনী ‘আযাবাকা ইয়াওমা তাব’আসু ইবাদাকা” (অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি যেদিন আপনার বান্দাদেরকে কবর হতে উঠাবেন, সেদিন আমাকে আপনার ‘আযাব হতে রক্ষা করবেন)।
(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৫০৪৫, আহমাদ)
৪। বিছানা ঝাড় দেওয়া।
وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ عِيَاضٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيُّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا أَوَى أَحَدُكُمْ إِلَى فِرَاشِهِ فَلْيَأْخُذْ دَاخِلَةَ إِزَارِهِ فَلْيَنْفُضْ بِهَا فِرَاشَهُ وَلْيُسَمِّ اللَّهَ فَإِنَّهُ لاَ يَعْلَمُ مَا خَلَفَهُ بَعْدَهُ عَلَى فِرَاشِهِ فَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَضْطَجِعَ فَلْيَضْطَجِعْ عَلَى شِقِّهِ الأَيْمَنِ وَلْيَقُلْ سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ رَبِّي بِكَ وَضَعْتُ جَنْبِي وَبِكَ أَرْفَعُهُ إِنْ أَمْسَكْتَ نَفْسِي فَاغْفِرْ لَهَا وَإِنْ أَرْسَلْتَهَا فَاحْفَظْهَا بِمَا تَحْفَظُ بِهِ عِبَادَكَ الصَّالِحِينَ " .
আবূ হুরাইরাহ رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন তার শয্যাগ্রহণ করতে বিছানায় আসে, সে যেন তার কাপড়েরর আঁচল দিয়ে বিছানাটি ঝাড়া দিয়ে নেয় এবং ‘বিসমিল্লাহ’ পাঠ করে নেয়। কেননা সে জানে না যে, বিছানা ছাড়ার পর তার বিছানায় কি আছে। তারপর যখন সে শয্যাগ্রহণ করতে ইচ্ছা করে তখন যেন ডান কাত হয়ে শয্যাগ্রহণ করে। এরপর সে যেন বলে, “সুবহা- নাকাল্লা-হুম্মা রব্বী বিকা ওয়া যা‘তু জামবী ওয়াবিকা আর্ ফা‘উহু ইন্ আম্সাক্তা নাফ্সী ফাগ্ফির্ লাহা- ওয়া ইন্ আর্সাল্তাহা- ফাহফায্হা- বিমা- তাহফাযু বিহি ‘ইবা-দাকাস্ স-লিহীন” অর্থাৎ- “আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি, হে আমার প্রতিপালক! আপনার নামেই আমি আমার পার্শ্ব (দেহ) রাখলাম, আপনার নামেই তা তুলব। আপনি যদি আমার প্রাণ আটকিয়ে রাখেন তাহলে আমাকে মাফ করে দিন। আর যদি আপনি তাকে উঠবার অবকাশ দেন তাহলে তাকে রক্ষা করুন, যেমন আপনি আপনার নেক বান্দাদের রক্ষা করে থাকেন।”
(সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৬৭৮৫) (ই.ফা. ৬৬৪৪)
৫। সুরা কাফিরুন পাঠ করা
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ رَجُلٍ، عَنْ فَرْوَةَ بْنِ نَوْفَلٍ، رضى الله عنه أَنَّهُ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ عَلِّمْنِي شَيْئًا أَقُولُهُ إِذَا أَوَيْتُ إِلَى فِرَاشِي قَالَ " اقْرَأْْ : ( قلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ ) فَإِنَّهَا بَرَاءَةٌ مِنَ الشِّرْكِ " . قَالَ شُعْبَةُ أَحْيَانًا يَقُولُ مَرَّةً وَأَحْيَانًا لاَ يَقُولُهَا .
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ حِزَامٍ، أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ فَرْوَةَ بْنِ نَوْفَلٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ نَحْوَهُ بِمَعْنَاهُ وَهَذَا أَصَحُّ .
قَالَ أَبُو عِيسَى وَرَوَى زُهَيْرٌ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ عَنْ فَرْوَةَ بْنِ نَوْفَلٍ عَنْ أَبِيهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ وَهَذَا أَشْبَهُ وَأَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ شُعْبَةَ . وَقَدِ اضْطَرَبَ أَصْحَابُ أَبِي إِسْحَاقَ فِي هَذَا الْحَدِيثِ .
وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ قَدْ رَوَاهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ نَوْفَلٍ عَنْ أَبِيهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ هُوَ أَخُو فَرْوَةَ بْنِ نَوْفَلٍ .
ফরওয়াহ ইবনু নাওফাল رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি নবী ﷺ এর কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে কিছু শিখিয়ে দিন, যা আমি বিছানাগত হওয়াকালে বলতে পারি। তিনি বললেনঃ তুমি "কুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফিরুন" সূরাটি তিলাওয়াত কর। কারণ তা শিরক হতে মুক্তির ঘোষণা।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৪০৩, তা’লীকুর রাগীব হাঃ ১/২০৯)
— —
والحمد لله وحده والصلاة والسلام على من لانبي بعده سیدنا ومولانا محمد وعلى الھ وأصحابھ واولاده وازواجھ وذریتھ واھل بیتھ رضوان الله تعالى علیھم اجمعین-
والحمد لله رب العالمین-
[কিতাবটি সমাপ্ত হলো এখানেই]
সমাপ্ত
— —