নবীজির পবিত্র মুখমন্ডল মুবারকঃ
প্রিয় নবী (ﷺ) এর মুখ মুবারক সম্পর্কে হযরত জাবির (رضي الله عنه) থেকে সহীহ মুসলিম শরীফে এসেছে- রাসুলুল্লাহ (ﷺ) প্রশস্ত মুখগহবরের অধিকারী ছিলেন। নবীজির সামনের দাঁত উজ্জ্বল, সাদা ও প্রশস্ত ছিল। হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে এসেছে, হুজুর পাক (ﷺ) এর ঠোট মোবারক প্রশস্ত ছিল। যখন তিনি কথা বলতেন তখন মনে হতো যেনো ঠোট মোবারকের ফাঁক দিয়ে সামনের দাঁত থেকে নূরের ঝিলিক রেরুচ্ছে। আল্লামা শরফুদ্দিন বুসীরি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি কতইনা সুন্দর করে বলেছেন-
كَاَنَّمَا اللُّؤْ لُؤُ الْمَكْنُوْنِ فِي صَدَفٍ
مِنْ مَعْدِنيِ مُنْطَقٍ مِنْهُ وَمُبْتَسَمِ
অর্থাৎ- “নবী করীম (ﷺ) এর দাঁত মুবারক কথা বলার সময় ও মুচকি হাসির সময় দেখলে মনে হতো ঝিনুক পাটি থেকে বেরিয়ে আসা পরিচ্ছন্ন মুক্তা দানা।”
নবী পাক (ﷺ) এর নূরানী হাসি এত সুন্দর ছিল যার তুলনা কোথায় পাওয়া যাবে না। ইমাম বায়হাকী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, “রসুলে আকরাম (ﷺ) যখন হাসতেন তখন পার্শ্ববর্তী দেয়াল আলোকিত হয়ে যেতো এবং তাঁর পবিত্র দাঁতের নূরে দেয়ালে সূর্যরশ্মির ন্যায় ঝিলিক মারতো।”
নবী পাক (ﷺ) কখনো হাই তুলতেন না। আল্লাহ তায়ালা তাঁকে এই কাজটি থেকে সুরক্ষিত রেখেছিলেন। হাই তোলা দৈহিক অবসন্নতার বহিঃপ্রকাশ এবং হাই শয়তানের তরফ থেকে হয়ে থাকে। নবী করীম (ﷺ) সব দিক থেকেই ছিলেন ব্যতিক্রম। ইয়া রাসুলাল্লাহ আপনার শান কত মহান।
প্রিয় নবী (ﷺ) এর পবিত্র মুখনিসৃত ধ্বনি ছিল অত্যন্ত সুন্দর ও চিত্তাকর্ষক। তাঁর চেয়ে সুন্দর আওয়াজ ও মিষ্টি কথার কোন মানুষ পৃথিবীতে আসেনি। নবীজির উচ্চারণ ছিল স্পষ্ট। নবীজির আওয়াজে এমন অলৌকিকতা ছিলো যে লক্ষাধিক মানুষের সমাগমে তাঁর কথা গুলো দূরের ও কাছের সবাই আপন আপন অবস্থানে থেকেই স্পষ্ট শুনতে পেতো।
হুজুরে পাক (ﷺ) এর মুখের লালা রোগীদের জন্য পূর্ণ শেফা ছিল। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে- “খয়বরের যুদ্ধের দিন হযরত আলী (رضي الله عنه)র চোখে যন্ত্রণা হচ্ছিল, তখন হুজুর পাক (ﷺ) স্বীয় মুখের লালা মুবারক তাঁর চোখে লাগিয়ে দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে হযরত আলী (رضي الله عنه) সুস্থ হয়ে গেলেন। আরেক ঘটনায় দেখা যায়- একদা হুজুর (ﷺ) এর কাছে একটি পানির মশক আনা হলো। তিনি সেখান থেকে এক আজলা পানি নিয়ে কুলি করে উক্ত মশকের মধ্যে ফেলে দিলেন। এর পর উক্ত মশকের পানি যখন কূপে ফেলা হলো, তখন পানি থেকে কস্তুরীর সুঘ্রাণ ছড়াতে লাগলো।” সুবহানাল্লাহ! কতইনা পবিত্র ও বরকতময় আমাদের প্রিয় নবীর লালা মুবারক।