পবিত্র কুরআনের আলোকে  


আয়াত ১  

_________


إنما يريد الله لیذهب عنکم الرجس أهل البيت ويطهركم تطهيرا (الأحزاب)


অর্থাৎ “হে নবী-পরিবার। আল্লাহ তা'আলা তাে কেবল তােমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে চান, এবং তােমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পূতঃপবিত্র করতে চান।”


(সূরা আল আহযাব, আয়াত:৩৩)।


❏ বিশ্ববিখ্যাত মুফাসসির আল্লামা ইবনু হাজর আল হাইতমী (র.) বলেন,


قال ابن حجر الهيتمي: هذه الآية منبع فضائل أهل البيت النبوى لاشتمالها على غرر من مآثرهم والاعتناء بشأنهم حيث ابتدأت ب(إنما المفيدة لحصر إرادته تعالی فی أمرهم على إذهاب الرجس الذي هو الإثم أو الشك فيما يجب الإيمان به عنهم، وتطهيرهم من سائر الأخلاق والأحوال المذمومة 


অর্থাৎ, “এই আয়াতে করীমাটি নবী করীম (ﷺ) এর পবিত্র বংশধরদের সম্মান ও মর্যাদার উৎস। কেননা, আয়াতে করীমাটি انما(ইন্নামা) দ্বারা শুরু হয়েছে, যা হাসর তথা সীমাবদ্ধতার উপকারিতা দেয়। এখানে আল্লাহ তায়ালার উদ্দেশ্য হচ্ছে, তাঁদের (নবী করীম (ﷺ) এর পবিত্র বংশধরদের) থেকে গুণাহ ও সন্দেহসহ যেকোন ধরনের অপবিত্রতা দূর করা এবং তাদেরকে যেকোনো চারিত্রিকি ক্রটি ও মন্দ স্বভাব থেকে পবিত্র করা।" (তাফসীরে



আয়াত ২

________


إن الله وملايكته يصلون علی النبی یا ایها الذين آمنوا صلوا عليه وسلمو اتسلیما-


অর্থাৎ, “নিশ্চয় আল্লাহ ও ফেরেশতাগণ নবী করীম (ﷺ)'এর প্রতি সালাত তথা দরুদ পেশ করেন। হে ঈমানদারগণ। তোমরাও তাঁর (নবী করীম (ﷺ)) ওপর সালাত তথা দরুদ এবং সালাম পেশ কর।


(সূরা আল আহযাব, আয়াত:৫৬)


❏ বুখারী শরীফে বর্ণিত হয়েছে যে, 


عن کعب بن عجرة قال:(لما نزلت هذه الآية قلنا يا رسول الله: قد علمنا كيف نسلم عليك، فكيف نصلی عليك؟ فقال: قولوا اللهم صل على محمد وعلى آل محمد.


অর্থাৎ “হযরত কা'ব ইবনু আজরা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন এই অায়াতে কারিমাটি নাযিল হয় তখন আমরা নবী করীম (ﷺ) এর কাছে আবেদন করলাম যে, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আমরা ইতোপূর্বে জেনেছি যে, কীভাবে আপনার ওপর সালাম পেশ করতে হবে। এখন আমরা কীভাবে আপনার ওপর সালাত বা দরুদ পেশ করব? (এর জবাবে) তখন তিনি (ﷺ) ইরশাদ করলেন, তােমরা বল, আল্লাহম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মদিন, ওয়া আ'লা আ-লি মুহাম্মদিন...।



আয়াত ৩  

_________


فمن حاجك فيه من بعد ما جائك من العلم فقل تعالواندع ابنائنا وأبنائکمونسائناونسائکم وأنفسنا وأنفسكم ثم نبتهل فنجعل لعنة الله على الکلذبین-


 অর্থাৎ, “(হে রাসূল (ﷺ)!) আপনার নিকট জ্ঞান আসার পর যে ব্যক্তি এ বিষয়ে আপনার সাথে তর্ক করে তাকে বলুন, আসো, আমরা (মুবাহালা তথা দু'পক্ষ পরস্পকে অভিশাপ দেয়ার জন্য) আহ্বান করি আমাদের পুত্রদেরকে ও তােমাদের পুত্রদেরকে, আমাদের নারীদেরকে ও তােমাদেও নারীদেরকে, আমাদের নিজেদেরকে ও তােমাদের নিজেদেরকে। অতঃপর আমরা মুবাহালা করি এবং মিথ্যাবাদীদের ওপর (আল্লাহর) অভিশাপ কামনা করি।”


(সূরা আলে ইমরান-৬১)


এই আয়াতে আহলু বাইতি রাসূলিল্লাহ তথা নবী করীম (ﷺ) এর পবিত্র বংশধরদের উচ্চ মর্যাদার কথা ঘােষণা করা হয়েছে।


❏ পবিত্র সহীহান তথা সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম শরীফে হযরত সাআদ ইবনু আবি ওয়াক্কাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন,


لما نزلت هذه الآية فقل تعالواندع أبنائنا وأبنائكم دعا رسول الله صلى الله عليه وسلم عليا وفاطمة وحسنا وحسينا فقال: اللهم هؤلاء اهلی


অর্থাৎ “রাসূল (ﷺ) এর ওপর যখন এ আয়াত নাযিল হল যে, “বলুন, আসো, আমরা (মুবাহালা তথা দু’পক্ষ পরস্পকে অভিশাপ দেয়ার জন্য) আহ্বান করি আমাদের পুত্রদেরকে ও তােমাদের পুত্রদেরকে...' তখন রাসূল (ﷺ) হযরত আলী, হযরত ফাতিমা, হযরত হাসান ও হযরত হােসাইন (رضي الله عنه) কে ডাকলেন। অতঃপর বললেন, “হে আল্লাহ! এঁরা আমার আহলে বাইত তথা বংশধর।” 

(সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম শরীফ)


❏ বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা ইবনু হাজার আল-হাইতামী (رحمة الله) বলেছেন,


قال ابن حجر الهيتمی: فعلم أنهم المراد من الآية وأن أولاد فاطمة وذريتهم يسمون أبنائه وينسبون إليه نسبة صحيحة نافعة في الدنيا والآخرة.


অর্থাৎ, “সুতরাং, জানা গেল যে, আয়াতে কারীমায় أبنائنا আমাদের পুত্রদেরকে দ্বারা তাঁরা তথা হযরত হাসান ও হযরত হােসাইন (رضي الله عنه) উদ্দেশ্য। আর রাসুল তনয়া হযরত ফাতেমার সন্তান-সন্ততি এবং তাঁদের পরবর্তী বংশধরদেরকে তাঁর (রাসূল (ﷺ)) সন্তান বলে অভিহিত করা হয়েছে এবং তাঁরা তাঁর (রাসুল (ﷺ)) প্রকৃত এবং দুনিয়া ও পরকালে উপকারী বংশধর হিসেবে সম্বােদিত হবেন।

Top