শাস্তির বিধানের ক্ষেত্রে সমমর্যাদা


ইসলামে শাস্তির বিধানের ক্ষেত্রেও নারীকে পুরুষের সমমর্যাদা দেয়া হয়েছে। পুরুষের শাস্তির বিধান একরকম এবং নারীর শাস্তির বিধান অন্য রকম এরূপ নয়। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-

 الزَّانِيَةُ وَالزَّانِي فَاجْلِدُوا كُلَّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا مِائَةَ جَلْدَةٍ وَلَا تَأْخُذْكُمْ بِهِمَا رَأْفَةٌ فِي دِينِ اللهِ 

ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারী, তাদের প্রত্যেককে একশত বেত্রাঘাত করো। আল্লাহর বিধান কার্যকর করণে তাদের প্রতি দয়া যেন তোমাদেরকে অভিভূত না করে। ৩০

৩০.সূরা নূর, আয়াত: ২


অনুরূপ পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে-

 وَالسَّارِقُ وَالسَّارِقَةُ فَاقْطَعُوا أَيْدِيَهُمَا

যে পুরুষ ও নারী চুরি করবে তাদের হাত কেটে দাও। ৩১

৩১.সূরা মায়িদাহ, আয়াত: ৩৮

 

গোনাহের কাজ থেকে বেঁচে থাকার জন্যে নর-নারী উভয়কে পাশাপাশি আদেশ দিয়েছেন মহান আল্লাহ। তিনি ইরশাদ করেন- 

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ذَلِكَ أَزْكَى لَهُمْ إِنَّ اللّٰهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ 

হে নবী! আপনি মু’মিন পুরুষদেরকে আদেশ দিন, যেন তারা তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গ সংরক্ষণ করে। এটাই তাদের জন্য অধিক পবিত্রতা। তারা যা করে সে বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা অবহিত। আর আপনি আদেশ দিন, মু’মিন রমনীদেরকে তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে ও তাদের লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করে। তারা সাধারণত যা প্রকাশ করে থাকে, তা ব্যতিত তাদের আবরণ প্রদর্শন না করে তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ যেন মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত থাকে। ৩২

৩২.সূরা নূর, আয়াত: ৩০-৩১

 

ঈমান, আমল ও ইবাদতে সমমর্যাদা


ইসলামে ঈমান, আমল ও ইবাদতেও নর-নারীকে সমানভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। আল্লাহ, ফেরেশতা, আসমানী কিতাব, সকল নবী-রাসূল, পরকাল, তাকদীর, মৃত্যুর পর পুণঃজীবনলাভ, জান্নাত, জাহান্নাম, কবর আযাব ইত্যাদি ঈমান-আকীদা এবং নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাতসহ যাবতীয় আমল-ইবাদতের বেলায়ও নারী-পুরুষ সমানভাবে আদিষ্ট। ঈমান, আমল ও ইবাদত দ্বারা অনেক সময় একজন নারী একজন পুরুষকেও অতিক্রম করে যেতে পারে। আল্লাহর কাছে উত্তম কর্ম তথা ইবাদতই গ্রহণযোগ্য। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে- 

الَّذِي خَلَقَ الْمَوْتَ وَالْحَيَاةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا 

তিনিই আল্লাহ, যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃজন করেছেন যেন তোমাদের কার কর্ম উত্তম তা জেনে নিতে পারেন। ৩৩

৩৩.সূরা মূলক, আয়াত: ২

 

কুরআন-হাদিসে যেসব স্থানে আদেশ-নিষেধ সূচক শব্দে কিংবা যেসব শব্দ দ্বারা বিধি-বিধান আবশ্যক হয় তা যদিও পুংলিঙ্গ ব্যবহৃত হয়েছে তবুও তাতে স্ত্রী লিঙ্গ নিহিত রয়েছে। অলংকার শাস্ত্রের নিয়ামানুযায়ী তাগলীবের ভিত্তিতে পুংলিঙ্গ ব্যবহার হয়েছে মাত্র। নতুবা বিধি-বিধানের ক্ষেত্রে উভয় অন্তর্ভূক্ত। অতএব, ইসলাম ঈমান, আমল ও বিধি-বিধানের ক্ষেত্রে নারীকে পুরুষের সমমর্যাদায় আসীন করেছে। অবশ্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে নারীর প্রকৃতিগত কারণে এবং নারীর স্বার্থে কিছুটা ব্যতিক্রম পরিলক্ষিত হয় যা পরে আলোচনা করা হবে।

Top