অষ্টাদশ অধ্যায়


সুতরাকে সামনে রেখে সালাত আদায় 


নবী ﷺ বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ সালাত আদায় করে, সুতরা র দিকে সালাত আদায় কর। এর কাছাকছি দাড়াও এবং তোমার এবং এটির মধ্যে কাউকে অতিক্রম করতে দিওনা।’ 


حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ الْعَبْدِيُّ، حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ مُوسَى بْنِ طَلْحَةَ، عَنْ أَبِيهِ، طَلْحَةَ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ إِذَا جَعَلْتَ بَيْنَ يَدَيْكَ مِثْلَ مُؤَخَّرَةِ الرَّحْلِ فَلاَ يَضُرُّكَ مَنْ مَرَّ بَيْنَ يَدَيْكَ ‏"‏ ‏.‏


ত্বালহা ইবনু উবাইদুল্লাহ رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:


তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ  বলেছেনঃ তুমি (খোলা ময়দানে সলাত আদায়কালে) তোমার সামনে উটের পিঠের হাওদার পিছন দিকের কাষ্ঠ খণ্ড বা অনুরূপ কোন কিছু স্থাপন করলে তোমরা সামনে দিয়ে কারো চলাচলে (সালাতের) কোন ক্ষতি হবে না। 


(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৬৮৫, মুসলিম)

  

 সুতরা  দেয়ার দালীলটি সাধারণ- মসজিদ কিংবা বাড়ি, নারী কিংবা পুরুষ সবার জন্যই। কিছু লোকেরা এই সুন্নাতকে অবলম্বন করে না, সুতরাং তারা সুতরা  ছাড়া সালাত আদায় করে। এই সুন্নাতটি একজন মুসলিম দিনে রাতে বহুবার পুনরাবৃত্তি করে থাকে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত, তাহিয়্যাত আল মসজিদ, বিতর ইত্যাদি সালাতে। জামা‘আতে সালাতের ক্ষেত্রে ইমামের সুতরা ই মুক্তাদীদের জন্য সুতরা ।


 সুতরা সংক্রান্ত বিষয়সমূহ-


 ১। সে সালাত আদায় করে তার সামনে কিবলার দিকে সুতরা  নির্ধারণ করা হয়, যেমন- দেয়াল, লাঠি কিংবা খুঁটি। এর প্রশ্বস্ততার কোন সীমা নেই।


 ২। এটা কমপক্ষে বাহনের পিছনের পিঠের কাঠখন্ড সদৃশ বস্তুর সমান উচু হবে (প্রায় এক বিঘত পরিমান)। ২


حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ الْعَبْدِيُّ، حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ مُوسَى بْنِ طَلْحَةَ، عَنْ أَبِيهِ، طَلْحَةَ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ إِذَا جَعَلْتَ بَيْنَ يَدَيْكَ مِثْلَ مُؤَخَّرَةِ الرَّحْلِ فَلاَ يَضُرُّكَ مَنْ مَرَّ بَيْنَ يَدَيْكَ ‏"‏ ‏.‏


ত্বালহা ইবনু উবাইদুল্লাহ رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:


তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ  বলেছেনঃ তুমি (খোলা ময়দানে সলাত আদায়কালে) তোমার সামনে উটের পিঠের হাওদার পিছন দিকের কাষ্ঠ খণ্ড বা অনুরূপ কোন কিছু স্থাপন করলে তোমরা সামনে দিয়ে কারো চলাচলে (সালাতের) কোন ক্ষতি হবে না। 


(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৬৮৫, মুসলিম)



 ৩। দাঁড়ানোর জায়গা থেকে সুতরা র দুরত্ব হবে তিন হাত।


 ৪। সুতরা  ইমাম, একাকী সালাত আদায়কারী ব্যক্তি, ফরজ কিংবা নফল সব সালাতেই সুতরা র বিধান রয়েছে। 


حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو ضَمْرَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ، عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ، كَانَ إِذَا دَخَلَ الْكَعْبَةَ مَشَى قِبَلَ وَجْهِهِ حِينَ يَدْخُلُ، وَجَعَلَ الْبَابَ قِبَلَ ظَهْرِهِ، فَمَشَى حَتَّى يَكُونَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجِدَارِ الَّذِي قِبَلَ وَجْهِهِ قَرِيبًا مِنْ ثَلاَثَةِ أَذْرُعٍ، صَلَّى يَتَوَخَّى الْمَكَانَ الَّذِي أَخْبَرَهُ بِهِ بِلاَلٌ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صَلَّى فِيهِ‏.‏ قَالَ وَلَيْسَ عَلَى أَحَدِنَا بَأْسٌ إِنْ صَلَّى فِي أَىِّ نَوَاحِي الْبَيْتِ شَاءَ‏.‏


নাফি’ رحمة الله عليه  থেকে বর্ণিতঃ:


আবদুল্লাহ‌ رضي الله عنه যখন কা’বা শরীফে প্রবেশ করতেন তখন সামনের দিকে চলতে থাকতেন এবং দরজা পেছনে রাখতেন। এভাবে এগিয়ে গিয়ে যেখানে তাঁর ও দেওয়ালের মাঝে প্রায় তিন হাত পরিমাণ ব্যবধান থাকতো, সেখানে তিনি সালাত আদায় করতেন। তিনি সে স্থানেই সালাত আদায় করতে চাইতেন, যেখানে নবী ﷺ  সালাত আদায় করেছিলেন বলে বিলাল رضي الله عنه তাঁকে খবর দিযেছিলেন। তিনি বলেনঃ কা’বা ঘরে যে-কোন প্রান্তে ইচ্ছা, সালাত আদায় করাতে আমাদের কোন দোষ নেই। 


(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫০৬) (ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪৮২)



  ৫। ইমামের সুতরা ই মুক্তাদীদের সুতরা।


حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا خَرَجَ يَوْمَ الْعِيدِ أَمَرَ بِالْحَرْبَةِ فَتُوضَعَ بَيْنَ يَدَيْهِ فَيُصَلِّي إِلَيْهَا وَالنَّاسُ وَرَاءَهُ وَكَانَ يَفْعَلُ ذَلِكَ فِي السَّفَرِ فَمِنْ ثَمَّ اتَّخَذَهَا الأُمَرَاءُ ‏.‏


ইবনু ‘উমার رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:


রাসুলুল্লাহ ﷺ  ঈদের দিন বের হওয়ার সময় সঙ্গে বর্শা নেয়ার নির্দেশ দিতেন। সেটি তাঁর সামনে স্থাপন করা হত এবং তিনি সেদিকে ফিরে সলাত আদায় করতেন। আর লোকজন তাঁর পেছনে থাকত। তিনি সফর অবস্থায়ও এরূপ করতেন। এ জন্যই তখন থেকে শাসকরা হাতে বর্শা রেখে থাকেন।  


(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৬৮৭, বুখারী ও মুসলিম) 



 এই সুন্নাতগুলো পালন করার উপকারিতা-


 ‣ এটি সালাত ভংগ হওয়া থেকে রক্ষা করে।


 ‣ এটি ঐ ব্যক্তিকে এদিক সেদিক তাকানো থেকে রক্ষা করে। এটি সালাতকে পরিপূর্ণ করতে সাহায্য করে ।

Top