আল্লাহর পরিপূর্ণ পরিচয় লাভ কারাে পক্ষে সম্ভব নয়ঃ
আমি বলছি-যদি আমরা উক্ত সব বর্ণনা হতে দৃষ্টি বিচ্ছিন্ন করি তবুও অকাট্য প্রমাণ হওয়ার জন্য এ আয়াতই যথেষ্টঃ
(আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক বস্তু পরিবেষ্টন করে আছেন)।
কেননা, আল্লাহর জাত সীমাবদ্ধ নয়, সুতরাং তাঁর সৃষ্টির কারাে পক্ষে সম্ভব নয় যে, আল্লাহ তায়ালাকে তাঁর সত্তার ন্যায় তিনি যেভাবে সেভাবে পরিপূর্ণ পরিচয় লাভ করা। তাই এটা বলা বিশুদ্ধ হবে না। এখন আল্লাহ তায়ালার পরিচয় লাভ হয়ে গেছে, যার পরে তাঁর পরিচয়। লাভের প্রয়ােজন নেই। কারণ, যদি এমন এতাে তাহলে এ জ্ঞান আল্লাহর সত্তাকে পরিবেষ্টনকারী হয়ে যেতাে, তখন আল্লাহ তায়ালা তার পরিবেষ্টনে এসে যেতো।
- তিনি এ থেকে পবিত্র যে, তাকে কোন বস্তু পরিবেষ্টন করতে পারে। বরং তিনি সব বস্তুকে পরিবেষ্টন করে রয়েছেন। আল্লাহর পরিচয় লাভকারী নবী, ওলী, সালিহ ও মুমিনগণের পরস্পর মর্যাদাগতভাবে যে পার্থক্য তা তাঁর পরিচয় লাভের ভিত্তিতেই।
যে যত বেশী আল্লাহর পরিচয় লাভ করেছেন, তিনি ততই নৈকট্যবান ও উচ্চ মর্যাদায় আসীন হয়েছেন। সুতরাং অনন্তকাল পর্যন্ত তাদের। জ্ঞান উত্তরােত্তর বৃদ্ধি পেতেই থাকবে, কিন্তু কখনাে তার জ্ঞান পরিবেষ্টনে সক্ষম ও শক্তিশালী হবেনা বরঞ্চ (টিকা ১) সীমাবদ্ধ জ্ঞানই লাভ করবে। আর সব সময় তাঁর পরিচয় লাভের ক্ষেত্রে অসীমতাই অবশিষ্ট থেকে যাবে। প্রমাণিত হলাে যে, আল্লাহ তায়ালার সকল জ্ঞান পরিপূর্ণ বিস্তারিতভাবে কোন সৃষ্টির পক্ষে পরিবেষ্টন করার দাবী যুক্তি ও শরীয়ত উভয় দৃষ্টিতে অসম্ভব। বরং সৃষ্টির আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত সকল জ্ঞান যদি একত্রিত করা হয় তাহলে জ্ঞানসমূহের সমষ্টির সাথে আল্লাহর জ্ঞানের প্রকৃতপক্ষে কোন সম্পর্কই হবে না। এমনকি একটি বৃষ্টি ফোটাকে দশ লাখ ভাগে বিভক্ত করে তার সাথে দশ লাখ সমুদ্রের যে সম্পর্ক, তাও হতে পারে না। কেননা, বৃষ্টি ফোটার এ অংশও সীমাবদ্ধ। আর সমুদ্রের পানি নিঃশেষ হয়ে যাবে, সমুদ্র শুষ্ক হয়ে যাবে। কেননা এর পানি সীমাবদ্ধ। কিন্তু অসীম হতে সসীমের যত মহান অসীম অংশের উদাহরণই নেয়া হােক না কেন, তা সর্বাবস্থায় সসীমই থাকবে। আর তাতে সব সময় অসীমতা বাকী থেকে যাবে। সুতরাং কখনাে কোন সম্পর্ক হাসিল হতে পারে না।