❏ প্রশ্ন : মাদীনা তয়্যিবায় যাওয়ার সময় মাসজিদে নববীর যেয়ারতের নিয়ত করবে, নাকি পবিত্র রওযা যেয়ারতের ইচ্ছাকে আগে রাখবে?


✍ জবাব : حامدا ومصليا ومسلما রওযায়ে আতহারের যেয়ারতের ইচ্ছা আগে রাখা উত্তম। এটাকে আগে রাখবে। তাহহতাবী কিতাবে ৯১২ পৃষ্ঠায় আছে, والأولى في الزيارة تجريد النية لزيارة قبره صلى الله عليه وسلم ‘যেয়ারতের ক্ষেত্রে একমাত্র তার কবর যেয়ারতের নিয়ত রাখাই উত্তম।’ (শামী : ২/২৫৭, ফাতাওয়া মাহমুদিয়া : ৩/১৭৭)


❏ প্রশ্ন : হুযুর (ﷺ) এর পবিত্র রাওযার কাছে কিভাবে দো‘আ করা উচিত? কোন দিকে মুখ করে সালাম দেওয়া উচিত?


✍ জবাব : حامدا ومصليا ومسلما যদিও সাধারণ দোআর আদব হলো, কেবলামুখী হয়ে দোআ করা। কিন্তু রওযায়ে আতহারের মধ্যে কেবলামুখী হতে গেলে রাসূল (ﷺ) এর দিকে পিছ দেওয়া হয়। যা আদবের খেলাফ। বরং পরিপূর্ণ বে আদবী। এ কারণে তার দিকে মুখ করে দোয়া করবে। (ফাযায়েলে হজ্জ, আল্লামা মুহাদ্দিস যাকারিয়া : ২২৩)


ইমাম আযম (رحمة الله) তার কবিতার মধ্যে বলেছেন,

أنت الذي لولاك ما خلق * كلا ولا خلق الورى لولاك

‘ইয়া রাসূলাল্লাহ আপনি তিনি, যিনি না হলে কোনো মানুষ সৃষ্টি হতো না। বরং আপনি না হলে সারা পৃথিবী সৃষ্টি হতো না।


ইবনে আসাকের হযরত সালমান ফারসী রাযি. থেকে বর্ণনা করেন, আল্লাহ তা‘আলা তার হাবীব মোস্তফা (ﷺ) এর উপর অহি পাঠিয়েছেন।

ولقد خلقت الدنيا وأهلها لأعرفهم كرامتك ومنزلتك عندي ولولاك ما خلقت الدنيا

‘আমি দুনিয়া ও দুনিয়াবাসীকে এ জন্য সৃষ্টি করেছি যে, আমার কাছে যে আপনার ইজ্জত মর্যাদা আছে তা তাদের সামনে প্রকাশ করবো। আপনি যদি না হতেন, আমি দুনিয়া সৃষ্টি করতাম না।’


হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া বলেন,

أتاني جبرائيل عليه السلام فقال إن الله يقول لولاك ما خلقت الجنة ولولاك ما خلقت النار

‘হযরত জিবরাঈল আমার কাছে এসে বললো, আল্লাহ তা‘আলা বলছেন, আপনি না হলে আমি জান্নাত সৃষ্টি করতাম না। আপনি না হলে জাহান্নাম সৃষ্টি করতাম না।’

سبحان الله والحمد لله الهم صل وسلم وتارك على سيدنا محمد وأله وأصحابه أجمعين


❏ প্রশ্ন :  لو لاك لما خلقت الأفلاك  এই হাদীসের সনদে সমস্যা আছে। এর সনদ সহীহ না। এর জবাব কী? এ ক্ষেত্রে ওলামাদের মত কী?


✍ জবাব : حامدا ومصليا ومسلما   হযরত মোল্লা আলী আল কারী হানাফী (رحمة الله) মাওযুআতে কাবীর কিতাবে বলেন, موضوع لكن معناه صحيح এই হাদীস যদিও সনদের দিক দিয়ে জাল, তবে অর্থ সহীহ। এই বর্ণনা বছর বছর ধরে উম্মাতের ওলামায়ে কেরাম রাসূলের মর্যাদা ও মাহাত্ত্বর উপর দলিল দিয়ে থাকেন। যা ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতার পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। সুতরাং সহীহ হওয়ার জন্য এই দলিলই যথেষ্ট। কিছু গায়রে মুকাল্লিদরা এই হাদীস মাওজু হওয়ার কথা বলেছে। এই ফিতনাপূর্ণ যুগে বেকার লোকদের একটি ব্যস্ততা হয়ে গেছে। পূর্বের ওলামায়ে কেরাম সকলে কি জাল হাদীস বর্ণনা করেছেন?

মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (رحمة الله) এবং দেওবন্দ মাদরাসার মুহতামিম কারী তৈয়ব সাহেবও মর্যাদার অন্যান্য হাদীসের সাথে দৃঢ়তার জন্য এই হাদীসটির অর্থ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। মাওলানা আলহাজ হাফেয ইলিয়াস (رحمة الله) ফাযায়েলে হজের মধ্যে জোর দিয়েছেন।

وفي الشرف معناه ثابت ويؤيد الأول ما ورد في غير رواية من أنه مكتوب على العرش وأوراق الجنة لا إله الله محمد رسول الله كما بسط طرقه السيوطي في مناقب اللالي في غير موضع وبسط له شواهد أيضا في تفسيره في سورة الم نشرح


ইমাম শাহ আহমদ রেযা খা বেরলবী (رحمة الله)  এর গ্রহণযোগ্যতার উপর অনেক দলিল পেশ করেছেন।


টিকা : হাদীস শরীফে এসেছে,

 أول ما خلق الله نوري ، أول ما خلق الله القلم ، أول ما خلق الله العقل، أول ما خلق الله الماءو أول ما خلق الله العرش

এখানে সকগুলি প্রথম হওয়ার অধিকার রাখে। তবে বাস্তব প্রথম একটিই হতে পারে। বেশি নয়। তবে তুলনামূলক ও ধর্তব্যের দিক দিয়ে একাধিক হতে পারে। যার এই হাদীসগুলি থেকে স্পষ্ট হয়।

Top