❏ প্রশ্ন-১৯০: ইচ্ছাকৃত হত্যাকারী কি সর্বদা জাহান্নামে থাকবে? অথচ হাদীস শরীফে এসেছে, شفاعتى لاهل الكبائر(আমার উম্মতের কবীরা গোনাহকারীদের জন্য আমার সুপারিশ)। এতে বুঝা যায়, হত্যাকারীরা চিরকাল জাহান্নামে থাকবে না। অতএব, এরা চিরকাল জাহান্নামে থাকবে, কী থাকবে না? দলিলসহ বর্ণনা কর।
✍ উত্তর: ইচ্ছাকৃত হত্যাকারীর তাওবা কবুল হবে কিনা এবং ওই ব্যক্তি চিরকাল জাহান্নামে থাকবে কিনা এ বিষয়ে ইমামগণের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের মতে, যদি ওই ব্যক্তি মু’মিন হয় তাহলে আল্লাহ তা‘আলার মাগফিরাত এবং হুযূর -এর শাফা‘আতের দ্বারা জাহান্নামে শাস্তিভোগ করার পর জান্নাতে যাবে। ঈমানের কারণে চির জাহান্নামী হবে না। কিন্তু এ হুকুম ওই সময় প্রযোজ্য হবে, যখন উক্ত ব্যক্তি হত্যাকে হালাল মনে করে হত্যাকান্ড সংঘটিত না করে থাকে। অন্যথায় হালাল মনে করে হত্যা করার অপরাধে চিরকাল জাহান্নামে থাকবে। সে কারণে জমহুর ওলামায়ে কিরাম উক্ত আয়াতে خالدًا শব্দের ব্যাখ্যা বিস্তারিতভাবে করেছেন- من يقتل متعمدًا ।
234. তাফসীরে ইবনে কাসীর, খন্ড- ১, পৃষ্ঠা:৫৩৭
❏ প্রশ্ন-১৯১: সূরা আলে-ইমরানে ইরশাদ হয়েছে,
إِنَّ مَثَلَ عِيسَى عِنْدَ اللهِ كَمَثَلِ آدَمَ উক্ত আয়াতে হযরত ঈসা (عليه السلام)কে হযরত আদম (عليه السلام)-এর অনুরূপ ও সাদৃশ হিসেবে তুলনা করা হয়েছে। অথচ হযরত আদম (عليه السلام) ছিলেন মাতা-পিতাবিহীন এবং হযরত ঈসা (عليه السلام) হলেন পিতাবিহীন। অতএব এ সাদৃশ্যতা কিভাবে শুদ্ধ হবে? বর্ণনা কর।
✍ উত্তর: হযরত ঈসা (عليه السلام) সাধারণ প্রচলিত নিয়ম ও পদ্ধতি বর্হিভূত পিতা ছাড়াই জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এটা ছিল এক আশ্চর্য বিষয়। কিন্তু এর চেয়ে আরো বেশী আশ্চর্যের বিষয় ছিল হযরত আদম (عليه السلام) মা-বাবা উভয় ছাড়াই আল্লাহ তা‘আলার কুদরতী শক্তিতে সৃষ্টি হয়েছিলেন। সুতরাং এখানে এক বিস্ময়কর বিষয়কে তার চেয়েও আরো অধিক বিস্ময়কর বিষয়ের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। দৃষ্টান্ত ও উপমায় উপমান ও উপমেয় সকল দিক দিয়ে একরকম ও সমান হওয়া শর্ত নয়। বরং উপমানে কিছু গুণ উপমেয়-এর মধ্যে পাওয়া যাওয়াই উপমা ও দৃষ্টান্তের জন্য যথেষ্ট। যেমন- কোন মানুষের বীরত্ব ও সাহসিকতার দৃষ্টান্ত বাঘের সাথে করা হয়। অথচ উভয়ের মধ্যে প্রত্যেক দিক দিয়ে সমতা নেই।
235. তাফসীরে খাযেন,200. সূরা বাকারা, খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৩০১।