বিষয় নং- ০২: পবিত্র মিরাজ শরীফ সম্পর্কিত আলোচনা।


ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর তার “হাদীসের নামে জালিয়াতি” গ্রন্থের ৫৩১ পৃষ্ঠায় উক্ত লিখেছেন-‘‘মি‘রাজের রাত্রিতে ইবাদত বন্দেগি করলে বিশেষ কোনো সাওয়াব হবে এ বিষয়ে একটিও সহীহ বা যয়ীফ হাদীস নেই।’’


শুধু তাই নয় তিনি আরও লিখেছেন-‘‘মি‘রাজের রাত কোন্টি তাই হাদীসে বলা হয়নি, সেখানে রাত পালনের কথা কী-ভাবে আসে।’’


শবেই মি‘রাজের সঠিক তারিখ:


রাসূল (ﷺ)‘র মি’রাজ হলো ২৭ই রজব বা ২৬ই রজব দিবাগত রাত। এ মতটিই সুপ্রসিদ্ধ ও অধিক গ্রহণযোগ্য। ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর মুসলিম আলিম মণীষীদের কাছে সুপ্রসিদ্ধ মতকে ভিত্তিহীন বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। 


❏ আল্লামা বদরুদ্দীন মাহমুদ আইনী (رحمة الله) বলেন-


كَانَ الْإِسْرَاء لَيْلَة السَّابِع وَالْعِشْرين من رَجَب


-‘‘রাসূল (ﷺ)‘র ইসরা ভ্রমণ বা মি’রাজ ২৭ই রজব হয়েছিল।’’ ৪ 

বিশ্বের মুসলিম সমাজের সর্বত্র এ মতই সমধিক সুপ্রসিদ্ধ ও সুপরিচিত। 

➥{আইনী, উমদাতুল ক্বারী, ৪/৩৯পৃ. দারু ইহইয়াউত্-তুরাসুল আরাবী, বয়রুত, লেবানন।}



❏ বিখ্যাত ইতিহাসবিদ ও আহলে হাদিসদের ইমাম এবং সকলের মান্যবড় আল্লামা ইবনে কাসির (رحمة الله) তার একাধিক বিখ্যাত গ্রন্থে উল্লেখ করেন-


أَنَّ الْإِسْرَاءَ كَانَ لَيْلَةَ السَّابِعِ وَالْعِشْرِينَ مِنْ رَجَبٍ وَاللَّهُ أَعْلَمُ.


-‘‘অবশ্যই মি‘রাজ সংগঠিত হয়েছে রজব মাসের ২৭ তারিখ। মহান রব আল্লাহ তা‘য়ালাই ভাল জানেন।’’  ৫ 

➥{ইবনে কাসির, আল-বেদায়া ওয়ান নিহায়া, ৩/১৩৫পৃ. দারু ইহইয়াউত্-তুরাসুল আরাবী, বয়রুত, লেবানন, সিরাতে নববিয়্যাহ, ২/৯৩ পৃ.}



❏ ইমাম কাস্তাল্লানী (رحمة الله) উল্লেখ করেন-


كان ليلة السابع والعشرين من رجب، واختاره الحافظ عبد الغني بن سرور المقدسي.


-‘‘রাসূল (ﷺ)-এর মি’রাজ ২৭ই রজব হয়েছিল। ইমাম হাফেযুল হাদিস আব্দুল গণী বিন সরুর মাকদেসী (رحمة الله) এ মতকে অধিম গ্রহণযোগ্য বলে মত প্রকাশ করেছেন।’’  ৬ 

➥{কাস্তাল্লানী, মাওয়াহেবুল লাদুন্নিয়া, ১/১৬২পৃ. দারু ইহইয়াউত্-তুরাসুল আরাবী, বয়রুত, লেবানন।}



❏ ইমাম জুরকানী (رحمة الله) অনুরূপ মতামত পেশ করেছেন।  ৭ 

➥{জুরকানী, শরহুল মাওয়াহেবুল লাদুন্নিয়া, ২/৭১পৃ. দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।}



❏ ইমাম কাস্তাল্লানী (رحمة الله)-এর মতকে ব্যাখ্যা করে লিখেন-  


كان ليلة السابع والعشرين من رجب وعليه عمل الناس، قال بعضهم: وهو الأقوى،


-‘‘রাসূল (ﷺ)-এর মি’রাজ ২৭ই রজব হয়েছিল। আর এর উপরেই মুসলমানগণের আমল অব্যাহত। অনেক উলামাগণ বলেছেন যে, এটিই শক্তিশালী অভিমত।’’  ৮

➥{জুরকানী, শরহুল মাওয়াহেবুল লাদুন্নিয়া, ২/৭১পৃ. দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।}



❏ ইমাম ইবনে জাওযী (ওফাত. ৫৯৭ হি.) লিখেন-


كان ليلة سبع وعشرين من رجب


-‘‘রাসূল (ﷺ)-এর মি’রাজ ২৭ই রজব হয়েছিল।’’ 


(ইবনে জাওযী, আল-মুনতাযিম ফি তারিখুল উমুম ওয়াল মুলক, ৩/২৬ পৃ., দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।)


❏ শায়খ মুহাম্মদ বিন তৈয়্যব নাজ্জার (رحمة الله) লিখেন-


وفي الليلة السابعة والعشرين من شهر رجب كما هو المشهور


-‘‘রাসূল (ﷺ)-এর মি‘রাজ হয়ে ছিল রযব মাসের ২৭ তারিখ, আর এটিই সুপ্রসিদ্ধ অভিমত।’’ 


(কওলুল মুবীন ফি সীরাতে সায়্যিদিল মুরসালীন, ১/১৫৩ পৃ.) 


❏ আল্লামা সফিউর রহমান মোবারকপুরী লিখেন-


كان ليلة السابع والعشرين من شهر رجب سنة ١٠ من النبوة، واختاره العلامة المنصور فوري.


-‘‘রাসূল (ﷺ)-এর মি‘রাজ হয়েছিল নবুয়তের দশম বছর রযব মাসের ২৭ তারিখ, প্রখ্যাত ঐতিহাসিক আল্লামা মানসূর ফূরী (رحمة الله) এ মতকে অধিক পছন্দনীয় বলেছেন।’’ 


(আর-রাহিকুল মাখতুম, ১/১২৪ পৃ.) 


❏ দেওবন্দী ঐতিহাসিক মাওলানা আবুল হাসান নদভী লিখেন-


والمشهور أن الإسراء كان في الليلة السابعة والعشرين من شهر رجب، وقد اختاره الحافظ ابن سرور المقدسي


-‘‘প্রসিদ্ধ হচ্ছে নিশ্চয় রাসূল (ﷺ)-এর মি‘রাজ হয়ে ছিল রযব মাসের ২৭ তারিখ, প্রখ্যাত ঐতিহাসিক আল্লামা হাফেয ইবনে সুরুর মাকদেসী (رحمة الله) এ মতকে অধিক পছন্দনীয় বা গ্রহণযোগ্য বলেছেন।’’ 


(নদভী, সিরাতে নববিয়্যাহ, ২১৭ পৃ., দারু ইবনে কাসির, দামেস্ক, সিরিয়া, দ্বিতীয় প্রকাশ. ১৪২৫ হি.।) 


এবার আমরা রাসূল (ﷺ)-এর মি‘রাজ হওয়া এ তারিখের ইবাদতের কোনো ফযিলত বর্ণিত হয়েছে কীনা তা তালাশ করবো।



পবিত্র শবেই মি‘রাজের নামায ও রোযা:


হাদিস নং-১:


❏ ইমাম বায়হাকী (رحمة الله) সংকলন করেন-


أَخْبَرَنَا أَبُو عَبْدِ اللهِ الْحَافِظُ، حَدَّثَنِي أَبُو نَصْرٍ رَشِيقُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الرُّومِيُّ إِمْلَاءً مِنْ كِتَابِهِ بالطَّابِرانِ، أَخْبَرَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ إِدْرِيسَ الْأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الْهَيَّاجِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ سُلَيْمَانَ التَّيْمِيِّ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ، عَنْ سَلْمَانَ الْفَارِسِيِّ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: فِي رَجَبٍ يَوْمٌ وَلَيْلَةٌ مَنْ صَامَ ذَلِكَ الْيَوْمَ، وَقَامَ تِلْكَ اللَّيْلَةَ كَانَ كَمَنْ صَامَ مِنَ الدَّهْرِ مِائَةَ سَنَةٍ، وَقَامَ مِائَةَ سَنَةٍ وَهُوَ ثَلَاثٌ بَقَيْنَ مِنْ رَجَبٍ


-‘‘হযরত সালমান ফারসী (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, নিঃসন্দেহে রযব মাসে এমন একটি মহান দিন ও মহান রাত রয়েছে যে ব্যক্তি ঐ দিনে রোযা রাখবে এবং ঐ রাতে জাগরান করে ইবাদত করবে, তার সাওয়াবের পরিমান হবে ঐ ব্যক্তির মত যে একশ বছর দিনে নফল রোযা রেখেছে এবং রাত্রে নফল ইবাদত করেছে। ঐ মহান দিন ও রাত্রটি হলো রযব মাস শেষ হওয়ার ৩ দিন বাকী থাকতে অর্থাৎ- ২৭ শে রযব (শব-ই-মিরাজ)।’’ 


(ইমাম বায়হাকী, শুয়াবুল ঈমান, ৫/৩৪৫ পৃ. হা/৩৫৩০ এবং ফাযায়েলুল আওকাত, ৯৫ পৃ., হা/১১, মুত্তাকী হিন্দী, কানযুল উম্মাল, ১২/৩১২ পৃ. হা/৩৫১৬৯, আল্লামা তাহের পাটনী, তাযকিরাতুল মাওদ্বুআত, ১১৬ পৃ., ইমাম দায়লামী, আল-ফিরদাউস, ৩/১৪২ পৃ. হা/৪৩৮১)


এ হাদিসটির সনদটি সামান্য যঈফ। ইমাম বায়হাকী (رحمة الله) এটি সংকলন করে যঈফ বলেছেন। তবে তিনি এ সনদের আরেক শাওয়াহেদ সূত্র বর্ণনা করেছেন।



হাদিস নং-২:


❏ ইমাম বায়হাকী (رحمة الله) সংকলন করেন-


أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْحَافِظُ، أَخْبَرَنَا أَبُو صَالِحٍ خَلَفُ بْنُ مُحَمَّدٍ بِبُخَارَى، أَخْبَرَنَا مَكِّيُّ بْنُ خَلَفٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ أَحْمَدَ، قَالَا: حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ الْحُسَيْنِ، أَخْبَرَنَا عِيسَى وَهُوَ الْغُنْجَارُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْفَضْلِ، عَنْ أَبَانَ، عَنْ أَنَسٍ، عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنَّهُ قَالَ:  فِي رَجَبٍ لَيْلَةٌ يُكْتَبُ لِلْعَامِلِ فِيهَا حَسَنَاتُ مِائَةِ سَنَةٍ، وَذَلِكَ لِثَلَاثٍ بَقَيْنَ مِنْ رَجَبٍ، فَمَنْ صَلَّى فِيهَا اثْنَتَيْ عَشْرَةَ رَكْعَةً يَقْرَأُ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ فَاتِحَةَ الْكِتَابِ وَسُورَةٌ مِنَ الْقُرْآنِ يَتَشَهَّدُ فِي كُلِّ رَكْعَتَيْنِ، وَيُسَلِّمُ فِي آخِرِهِنَّ


-‘‘হযরত আনাস ইবনে মালিক (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, রযবে একটি রজনী রয়েছে যে রজনীতে ইবাদত করলে একশ বছরের নফল ইবাদতের সাওয়াব পাবে, ঐ মহান রাত্রটি হলো রযব মাস শেষ হওয়ার ৩ দিন বাকী থাকতে অর্থাৎ- ২৭ শে রযব (শব-ই-মিরাজ)। সে নামাযটি ১২ রাক‘আত, প্রত্যেক রাক‘আতে সূরা ফাতেহার সাথে কুরআনের যে কোনো স্থান থেকে পড়ে দুই রাক‘আত করে পড়বে, শেষ রাক‘আতে ছাড়া সালাম ফিরাবে না।’’ 


(ইমাম বায়হাকী, শুয়াবুল ঈমান, ৫/৩৪৬ পৃ. হা/৩৫৩১, ফাযায়েলুল আওকাত, ৯৬ পৃ., হা/১২, মুত্তাকী হিন্দী, কানযুল উম্মাল, ১২/৩১২ পৃ. হা/৩৫১৭০) এ সনদে ‘আবান ইবনে আইয়্যাশ’ নামক রাবী দুর্বল, তবে সে সুপ্রসিদ্ধ হযরত আনাস (رضي الله عنه)-এর ছাত্র ছিলেন।



হাদিস নং-৩:


❏ হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন,


عن النبى ﷺ قال من صام يوم السابع والعشرين من رجب كتب له ثواب صيام ستين شهرا-


-‘‘নবী করীম (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ২৭ শে রজবে রোযা রাখবে,  তার জন্য ৬০ মাসের (৫ বছর) নফল রোযার সাওয়াব লিখা হবে।’’  ৯

➥{শায়খ আব্দুল কাদের জিলানী : গুনিয়াতুত ত্বালেবীন, পৃ-২৪০}



(৫) হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি নবী করীম হতে বর্ণনা করেছেন, 


عن النبى ﷺ قال من صام يوم السابع والعشرين من رجب كتب له ثواب صيام ستين شهرا-


-‘‘নবী করীম (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ২৭ শে রজবে রোযা রাখবে,  তার জন্য ৬০ মাসের (৫ বছর) নফল রোযার সাওয়াব লিখা হবে।’’  ১০

➥{শায়খ আব্দুল কাদের জিলানী : গুনিয়াতুত ত্বালেবীন, পৃ-২৪০}



(৬) গাউসে পাক আবদুল কাদীর জিলানী (رضي الله عنه) দুজন সাহাবী হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) এবং হযরত সালমান ফারসী (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন-


انهما قالا قال رسول الله ﷺ ان فى رجب يوما وليلة من صام ذلك اليوم وقام تلك الليلة كان له من الاجر كمن صام مائة سنة وقام لياليها وهى لثلاثة يبقين من رجب-


-‘‘নবী করীম (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, নিঃসন্দেহে রযব মাসে এমন একটি মহান দিন ও মহান রাত রয়েছে যে ব্যক্তি ঐ দিনে রোযা রাখবে এবং ঐ রাতে জাগরান করে ইবাদত করবে, তার সাওয়াবের পরিমান হবে ঐ ব্যক্তির মত যে একশ বছর দিনে নফল রোযা রেখেছে এবং রাত্রে নফল ইবাদত করেছে। ঐ মহান দিন ও রাত্রটি হলো রযব মাস শেষ হওয়ার ৩ দিন বাকী থাকতে অর্থাৎ- ২৭ শে রযব (শব-ই-মিরাজ)।’’  ১১

➥{শায়খ আব্দুল কাদের জিলানী : গুনিয়াতুত তালেবীন, পৃ-২৪০}



(৭) হযরত গাউসুল আযম শায়খ আবদুল কাদের জিলানী (رضي الله عنه) আরও বলেন, 


قد جمع بعض العلماء رجمهم الله الليالى التى يستحب احياءها فقال انها اربع عشرة ليلة فى السنة وهى اول ليلة من شهر المحرم وليلة العاشوراء واول ليلة من شهر رجب وليلة النصف من هو ليلة سبع وعشرين منه وليلة النصف من شعبان وليلة عرفة وليلتا العيدين وخمس ليال منها فى شهر رمضان وهن وتر ليالى العشر الاواخر- 


-‘‘শরীয়তের কতেক বিজ্ঞ উলামায়ে কেরাম এমন কতগুলো রাত্র উলে­খ করেছেন যে রাত্র গুলোতে ইবাদত করা অতি উত্তম বা মুস্তাহাব। বৎসরের ঐ রাত্রগুলোর সংখ্যা হলো ১৪টি। যথা-


১। মুহাররাম মাসের প্রথম রাত্র 


২। উক্ত মাসের ১০ম রাত্র (আশুরার রাত্র) 


৩। রযব মাসের প্রথম রাত্র


৪। রযব মাসের ১৫তম রাত্র।


৫। রযব মাসের ২৭তম রাত্র (শবে মি‘রাজ)


৬। শাবানের ১৫ তারিখ রাত্র (শবে বরাত)


৭। রোযার ঈদের রাত্র (শাওয়ালের পহেলা রাত্রি)


৮। আরাফাতের রাত্র (৯ই জিলহজ্জ)


৯। কোরবানী ঈদের রাত্র ১০ই জিলহজ্জ


১০-১৪। রমজানের শেষ দশ দিনের ৫ বিজোড় রাত্র (২১,  ২৩,  ২৫,  ২৭,  ২৯)।’’  ১২

➥{শায়খ আব্দুল কাদের জিলানী : গুনিয়াতুত তালেবীন, পৃ-২৩৬}



(৮) বিশ্ব বিখ্যাত ফকীহ আল্লামা তাহাবী (رحمة الله) ইমাম শাফী (رحمة الله) এর কওল নকল করে বলেন, 


ان افضل الليالى ليلة مولده ﷺ ثم ليلة القدر ثم ليلة الاسراء والمعراج ثم ليلة عرفة ثم ليلة الجمعة ثم ليلة النصف من شعبان ثم ليلة العيد- 


-‘‘নিশ্চয়ই ইবাদতের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম রাত হলো রাসূল (ﷺ) এর জন্মদিনের রাত্র (১২ই রবিউল আউয়াল) তারপর হলো শবেই কদরের রাত্র তারপর হলো মিরাজের রাত্র (২৭ শে রযব) তারপর উত্তম রাত্র হলো লাইলাতুল আরাফা (৯ই জিলহজ্জ) তারপর হলো জুমার রাত্র তারপর হলো ১৫ই শাবানের রাত্র (শবেই বরাত) এবং তারপর দুই ঈদের রাত্র।’  ১৩

➥{আল্লামা শায়খ ইউসূফ নাবহানী: জাওয়াহিরুল বিহার : ৩/৪২৬ পৃ.}



আর উপরে বর্ণিত শায়খ আবদুল কাদের জিলানী (رضي الله عنه) এর যে হাদিসগুলো উলে­খ করেছি তার অনেকগুলোর সনদ তিনি উলে­খ করেছেন আবার অনেকগুলোর শুধু একজন রাবীর নামই তিনি উলে­খ করেছেন। তার কারণ কিতাব দীর্ঘায়িত হওয়ার আশংকায় সমস্ত হাদিসের সনদ জানা সত্তে¡ও তিনি পূর্ণ সনদ বর্ণনা করেন নি।  ১৪

➥{শায়খ আব্দুল কাদের জিলানী : গুনিয়াতুত তালেবীন, পৃ-৫}



❏ বিশ্ব বিখ্যাত ফকীহ আল্লামা তাহাবী (رحمة الله) ইমাম শা‘ফী (رحمة الله) এর কওল নকল করে বলেন, 


ان افضل الليالى ليلة مولده ﷺ ثم ليلة القدر ثم ليلة الاسراء والمعراج ثم ليلة عرفة ثم ليلة الجمعة ثم ليلة النصف من شعبان ثم ليلة العيد- 


-‘‘নিশ্চয়ই ইবাদতের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম রাত হলো রাসূল (ﷺ) এর জন্মদিনের রাত্র (১২ই রবিউল আউয়াল) তারপর হলো শবেই কদরের রাত্র তারপর হলো মিরাজের রাত্র (২৭ শে রযব) তারপর উত্তম রাত্র হলো লাইলাতুল আরাফা (৯ই জিলহজ্জ) তারপর হলো জুম‘আর রাত্র তারপর হলো ১৫ই শাবানের রাত্র (শবেই বরাত) এবং তারপর দুই ঈদের রাত্র।’  ১৫

➥{আল্লামা শায়খ ইউসূফ নাবহানী: জাওয়াহিরুল বিহার : ৩/৪২৬ পৃ.}



❏ ইমাম ইবনে আবেদীন শামী (رحمة الله) লিখেন-


عَنْ بَعْضِ الشَّافِعِيَّةِ: أَنَّ أَفْضَلَ اللَّيَالِي لَيْلَةُ مَوْلِدِهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - ثُمَّ لَيْلَةُ الْقَدْرِ، ثُمَّ لَيْلَةُ الْإِسْرَاءِ وَالْمِعْرَاجِ، ثُمَّ لَيْلَةُ عَرَفَةَ، ثُمَّ لَيْلَةُ الْجُمُعَةِ، ثُمَّ لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ، ثُمَّ لَيْلَةُ الْعِيدِ


-‘‘একদল শাফেয়ী ফকীহগণ থেকে বর্ণিত আছে, সবচেয়ে উত্তম রাত হলো রাসূল (ﷺ)-এর জন্ম দিনের রাত, তারপর লাইলাতুল ক্বদরের রাত, তারপর ইসরা বা মি‘রাজের রাত, তারপর আরাফাতের রাত, তারপর জুম‘আর রাত, তারপর ১৫ই শাবান তথা শবে বরাতের রাত, তারপর দুই ঈদের রাত।’’ (ইমাম ইবনে আবিদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, ২/৫১১ পৃ.)


Top