সায়্যিদুনা হযরত ইয়া‘লা বিন র্মুরাহ সাকাফি (رضي الله عنه)'র আক্বিদা
রাসূল (ﷺ)’র দরবারে উটের প্রার্থনা
সায়্যিদুনা হযরত ইয়া‘লা ইবনু র্মুরাহ সাকাফি (رضي الله عنه) বলেন, আমি রাসূল (ﷺ)’র তিনটি জিনিস দেখিছি একটি হল, একদা আমি রাসূল (ﷺ)’র সাথে যাচ্ছিলাম। একটি উটের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছি যার দ্বারা জমিতে চাষ দেয়া হচ্ছিল। উট যখন নাবী কারিম (ﷺ) কে দেখল সে চিৎকার করল এবং তার গর্দান নবী (ﷺ)’র সামনে ঝুঁকিয়ে দিল। রাসূল (ﷺ) তখন দাঁড়িয়ে বললেন:
أَيْنَ صَاحِبُ هَذَا الْبَعِيرِ
এই উটের মালিক কোথায়? উটের মালিক উপস্থিত হলে নাবী কারীম (ﷺ) বললেন, এই উটটি আমার কাছে বিক্রি করে দাও। মালিক বলল, হে রাসূল (ﷺ)! এটি আপনাকে হিবা করলাম। কিন্তু এটি এমন ঘরের উট যার কাছে এই উট ছাড়া জীবিকার আর কোন উপায় নেই। তিনি (ﷺ) বললেন:
فَإِنَّهُ شَكَا كَثْرَةَ الْعَمَلِ وَقِلَّةَ العَلَفِ فَأحْسِنُوا إِلَيْهِ
-‘তুমি যা বলেছ, তা ঠিক। কিন্তু এই উটটি তোমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে যে, তার থেকে অধিক কাজ নেয়া হয়, কিন্তু খাবার কম দেয়া হয়, সুতরাং তার সাথে ভালো আচরণ কর।’ ২৬৯
{২৬৯. ক. ইমাম খতিব তিবরিযি, মিশকাত শরীফ, ৩/১৬৬৪ পৃ. (ভারতীয়) ৫৪০ পৃ., হা/৫৯৫২, ইমাম ইবনে কাসির, আল বেদায়া ওয়ান নিহায়া, ২য় খণ্ড, পৃ. ১৪৫-১৪৬, ইমাম বাগভী, শারহে সুন্নাহ, ১৩/২৯৫ পৃ. হা/৩৭১৮, ইমাম আহমদ, আল-মুসনাদ, ২৯/১০৬ পৃ. হা/১৭৫৬৫, আহলে হাদিস আলবানী এটিকে সহীহ বিশ্-শাওয়াহেদ বলে মিশকাতে তাহকীক করেছেন। এ সনদে উক্ত সাহাবীর ছাত্র ‘আব্দুল্লাহ ইবনে হাফস’ নামক একজন তাবেয়ী রয়েছেন, যাকে কেউ মাজহুল বা অপরিচিত বলে হাদিসটি যঈফ বলতে চান। অথচ ইমাম মিয্যী (رحمة الله) উল্লেখ করেছেন-
وَذَكَرَهُ اِبْنُ حِبَّانٍ فِي كِتَابِ الثِّقَاتْ رَوٰى لَهُ النَّسَائِي.
-‘‘ইমাম ইবনে হিব্বান (رحمة الله) তাকে সিকাহ বা বিশ্বস্ত রাবীর তালিকায় স্থান দিয়েছেন। ইমাম নাসাঈ (رحمة الله) তার হাদিস বর্ণনা করেছেন।’’ (ইমাম মিয্যী, তাহজিবুল কামাল, ১৪/৪২৬ পৃ. ক্রমিক. ৩২৩০, ইমাম ইবনে হিব্বান, কিতাবুস সিকাত, ৫/৬০ পৃ. ক্রমিক.৩৮৫০, আল্লামা মুগলতাঈ, ইকমালু তাহযিবুল কামাল, ৭/৩০৯ পৃ. ক্রমিক. ২৮৮৭, ইবনে হাজার, তাহযিবুত তাহযিব, ৫/১৮৯ পৃ. ক্রমিক. ৩২৬) আল্লামা মুগলতাঈ (رحمة الله) নিজস্ব অভিমত হিসেবে বলেন- وكان ثقة. -‘‘তিনি সিকাহ বা বিশ্বস্ত।’’ (আল্লামা মুগলতাঈ, ইকমালু তাহযিবুল কামাল, ৭/৩০৯ পৃ. ক্রমিক. ২৮৮৭) ইমাম বুখারী (رحمة الله) তার জীবনী আলোচনা করে কোন সমালোচনা বা অপরিচত হওয়ার কোন ইঙ্গিত দেননি। (ইমাম বুখারী, তারিখুল কাবীর, ৫/৭৫ পৃ. ক্রমিক.১৯৯) তাই বুঝা গেল এই সনদটিই সহীহ।}
আক্বিদা
জীব-জন্তু নাবী কারীম (ﷺ) কে চিনে এবং তার নিজের সমস্যার কথা ব্যক্ত করে। রাসূল (ﷺ) তাদের ভাষা বুঝেন। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর প্রিয় হাবীব (ﷺ) কে তাদের (জীব-জন্তুর) হাজত পূরণ এবং সমস্যা দূর করার ক্ষমতা ও শক্তি দান করেছেন।
❏কবি বলেন-
بے يارد مدد گار جنہيں كو تى نہ پو چهے
ان كا تمہں يارو مددگار بنايا
-‘‘অসহায় ও সাহায্য বঞ্চিত যাদের কেউ দৃষ্টিপাত করে না
মহান রব আপনাকে তাদের সহায়ক ও সাহায্যকারী বানিয়েছেন।’’
যে সব লোক রাসূল (ﷺ) কে আল্লাহর হুকুমে হাজতপূর্ণকারী এবং সমস্যা দূরীভূতকারী মানে না, তারা জীবজন্তু থেকে অধিক মন্দ।