কারবালার ক্রিমিনাল কুখ্যাত ইয়াজিদ ড. জাকির নায়েকের চোখে হিরো !!!
ড জাকির নায়েক বলেছে "ইয়াজিদকে (রহিমুল্লাহ) বলা যাবে (নাউযুবিল্লাহ)
যেই হাদিসকে প্রমানস্বরুপ ভিত্তি করে সে এ কথা বলেছে তাতে :
-- বুখারী শরীফের ১টা হাদিসে
-- ৩টা মিথ্যাচার করেছে সে।
এখানে মাত্র ৬/৭ মিনিটের ভিডিওটি দেখুন।
https://m.youtube.com/watch?v=rqE33JbZB8k
দয়া করে গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন কাউকে অন্ধ ভাবে বিশ্বাস করবেন না।
❏ জাকির নায়েক কারবালার জিহাদকে “Political Battle” বলে উল্লেখ করেছে। অথচ ইতিহাস ভিন্ন কথা বলে। ইতিহাস মতে, হযরত ইমাম হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হক্বকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিজের জীবন কারবালার ময়দানে দান করে শাহাদাৎ বরণ করেছেন।
❏ কারবালার ময়াদানের ঘৃনিত পশু ইয়াজিদের নামের শেষে “রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু” উচ্চারণ করে থাকে।
━কুসতুনতুনিয়া-বিষয়ক হাদীসের অপব্যাখ্যার অপনোদন━
❏ ”…তিনি মহানবী (ﷺ)-কে বলতে শুনেছেন,
‘নৌযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী আমার সাহাবীদের
প্রথম দলটি বেহেশতী হবে।’ মহানবী (ﷺ)
এর পর বলেন, ‘আমার সাহাবীদের মধ্যে প্রথম বাহিনী যারা (রোমক) সিজারের শহর (কুসতুনতুনিয়া তথা কনস্টানটিনোপোল/ ইস্তাম্বুল) জয় করবে, তাদের গুনাহ মাফ করা হবে’।”
[সহীহ বুখারী, ৪র্থ খণ্ড, হাদীস – ১৭৫]
❏ আবু দাউদের সুনানে বর্ণিত সহীহ হাদীসে বিবৃত হয়েছে:
عن أسلم أبي عمران قال : غزونا من المدينة نريد القسطنطينية وعلى الجماعة عبد الرحمن بن خالد بن الوليد
হযরত আসলাম আবি ইমরান (رضي الله عنه)
বলেন, “আমরা কনস্টানটিনোপোল জয়ের
উদ্দেশ্যে মদীনা হতে বের হই। আবদুর
রহমান বিন খালেদ বিন ওয়ালিদ ছিলেন এই বাহিনীর
প্রধান।” [সুনানে আবি দাউদ, ২য় খণ্ড, হাদীস
নং ২৫১২; আলবানীও এই হাদীসকে সহীহ
বলেছে তার ‘তাখরিজ’ পুস্তকে]
❏ ইমাম তাবারী নিজ ‘তারিখ’ গ্রন্থে বলেন –
فمما كان فيها من ذلك دخول المسلمين مع عبد الرحمن بن خالد بن الوليد بلاد الروم ومشتاهم بها وغزو
আবদুর রহমান বিন খালেদ বিন ওয়ালিদের
সেনাপতিত্বে ৪৪ হিজরী সালে মুসলমান
বাহিনী রোমে (কনস্টানটিনোপোল)
প্রবেশ করেন এবং সেখানে গযওয়া (ধর্মযুদ্ধ)
সংঘটিত হয়। [তারিখে তাবারী, ৪৪ হিজরীর ঘটনা,
০০৫ খণ্ড, ২১২ পৃষ্ঠা; কায়রোর ‘দারুল মা’আরিফ’
প্রকাশনী হতে প্রকাশিত]
অথচ এয়াযীদ আরও বহু পরে ওখানে যায়।
উপরন্তু, তাকে সেখানে পাঠানো হয়েছিল
শাস্তিস্বরূপ; আর সে ওই প্রথমে অংশগ্রহণকারী যোদ্ধাদের প্রতি বিদ্রূপাত্মক মন্তব্য করেছিল।
❏ ইমাম ইবনে আসীর (رحمة الله) লিখেন:
في هذه السنة وقيل : سنة خمسين سير معاوية جيشًا كثيفًا إلى بلاد الروم للغزاة ، وجعل عليهم سفيان بن عوف ، وأَمَرَ ابنه يزيد بالغزاة معهم فتثاقل واعتلّ فأمسك عنه أبوه ، فأصاب الناس في غزاتهم جوعٌ ومرض شديد ، فأنشأ يزيد يقول :
ما إن أبالي بما لاقت جموعهم *** بالفرقدونة من حمى ومن موم
إذا اتكأت على الأنماط مرتفقًا *** بدير مروان عندي أم كلثومِ
فبلغ معاوية شعره، فأقسم عليه ليلحقنّ بسفيان في أرض الروم، ليصيبه ما أصاب الناس، فسار ومعه جمع كثير أضافهم إليه أبوه
”এই বছর, অর্থাৎ, ৪৯ বা ৫০ হিজরী সালে হযরত
আমীরে মোয়াবিয়া (رضي الله عنه) রোমের (কনস্টানটিনোপোল) উদ্দেশ্যে এক বিশাল
বাহিনী প্রেরণ করেন। তিনি এর দায়িত্বভার
অর্পণ করেন সুফিয়ান বিন আউফের প্রতি এবং তাঁর ছেলে এয়াযীদকে ওই বাহিনীর
সাথে যেতে বলেন। কিন্তু এয়াযীদ ‘অসুস্থ
হওয়ার ভান করে এবং যেতে অস্বীকৃতি জানায়’।
যোদ্ধারা যখন ক্ষুধা ও রোগ-ব্যাধিগ্রস্ত হন,
তখন সে ব্যঙ্গ করে কবিতায় বলে, ‘ফারকুদওয়ানা- এ মহা গযবে তারা পতিত হয়েছে; তাদের জ্বর বা অন্য যা-ই কিছু হোক, তাতে আমার যায় আসে না। কেননা, আমি বসে আছি উচ্চ
ফরাশে (ম্যাট্রেস); আর আমার বাহুবন্ধনে আছে উম্মে কুলসুম (এয়াযীদের স্ত্রীদের একজন)।’
”হযরত আমীরে মোয়াবিয়া (رضي الله عنه) যখন এই
কবিতার শ্লোক সম্পর্কে জানতে পারেন, তখন তিনি এয়াযীদকে শপথ গ্রহণ করতে ও কনস্টানটিনোপোলে সুফিয়ান ইবনে আউফের সাথে যোগ দিতে বাধ্য করেন, যাতে করে ’সেও ইসলামের মোজাহিদদের মোকাবেলাকৃত কঠিন পরীক্ষার অংশীদার হতে পারে’ (এটি এয়াযীদের
প্রতি শাস্তি ছিল)। এমতাবস্থায় এয়াযীদ অসহায়
হয়ে পড়ে এবং তাকে যুদ্ধে যেতে হয়; আর
হযরত আমীরে মোয়াবিয়া (رضي الله عنه) তার সাথে আরেকটি বাহিনী প্রেরণ করেন।”
[’তারিখে ইবনে আল-আসীর’, ৩য় খণ্ড, ১৩১ পৃষ্ঠা]
❏ ইমাম বদরুদ্দীন আইনী (رحمة الله) বলেন:
قلت: الأظهر أن هؤلاء السادات من الصحابة كانوا مع سفيان هذا ولم يكونوا مع يزيد بن معاوية، لأنه لم يكن أهلاً أن يكون هؤلاء السادات في خدمته
”আমি বলি, অসংখ্য সাহাবী (رضي الله عنه) হযরত সুফিয়ান
ইবনে আউফ (رضي الله عنه)-এর অধীনে যুদ্ধে গিয়েছিলেন এবং ‘এয়াযীদ ইবনে মোয়াবিয়ার নেতৃত্বে যান নি,
কেননা সে তাঁদেরকে নেতৃত্বদানে অযোগ্য ছিল’।”
[‘উমদাতুল কারী’, শরহে সহীহ আল-বোখারী, ১৪/১৯৭-১৯৮]
❏ কনস্টানটিনোপোলে সেনা অভিযানের সার-সংক্ষেপ নিম্নরূপ:
* প্রথম আক্রমণ পরিচালিত হয় ৪২ হিজরী সালে।
* দ্বিতীয় দফায় আক্রমণ হয় ৪৩ হিজরীতে এবং এর সেনাপতি ছিলেন হযরত বসর বিন আবি আরকা।
* তৃতীয় অভিযান পরিচালনা করা হয় ৪৪
হিজরী সালে এবং এটি নেতৃত্ব দেন আবদুর
রহমান বিন খালেদ বিন ওয়ালীদ।
*৪র্থ বার পরবর্তী অভিযান ছিল ৪৬ হিজরীতে যার সেনাপতি ছিলেন মালিক বিন আবদির্ রহমান ও আবদুর রহমান বিন খালেদ বিন ওয়ালীদ।
* ৪৭ হিজরীতে পরবর্তী অভিযান পরিচালনা করেন মালিক বিন হোবায়রা ও আবদুর রহমান বিন কায়েমী।
* ৪৯ হিজরী সালে কনস্টানটিনোপোল তিনবার
আক্রমণ করা হয়।
*আর সর্বশেষ ৫০ হিজরীতে যে অভিযান পরিচালিত হয় তাতে ""ইয়াযীদ"" যোগ দেয় ।
❏ হযরত আমীরে মোয়াবিয়া (رضي الله عنه)
এয়াযীদকে আটক করে সিজারের ওখানে পাঠান,
কারণ সে মোজাহিদীনবৃন্দের প্রতি বিদ্রূপ
করতো। তাই শাস্তিস্বরূপ তাকে ওখানে পাঠানো হয়েছিল, জ্বেহাদের জন্যে নয়।
অতএব, এয়াযীদ সপ্তম সেনা অভিযানে অংশগ্রহণ করেছিল, প্রথম অভিযানে নয় । আর
বোখারী শরীফে উল্লেখিত হয়েছে, “আমার উম্মতের মধ্যে সিজারের নগরী আক্রমণকারী প্রথম সেনা দলের পাপ- পঙ্কিলতা মাফ করা হবে।”
রেফারেন্সঃ
❏ ইবনে কাসিরের আল-বেদায়া ওয়ান্ নেহায়া
❏ ইবনে খালদুনের ইতিহাস
❏ ইমাম ইবনে আসীরের ইতিহাস
এখন সেই গুলোর বিস্তারিত দেখুন:-
মুসলিম বাহিনীর কায়সারের নগরী আক্রমণ ও ইয়াজিদের অংশগ্রহণ:
(১) প্রথম মুসলিম নৌবাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন হযরত আমিরে মুয়াবিয়া (رضي الله عنه)। হযরত উছমান ইবনে আফফানের (رضي الله عنه) শাসনামলে তিনি রোম আক্রমণের অনুমতি চেয়েছিলেন এবং ৩২ হিজরীতে অনুমতি পেয়ে তিনি যুদ্ধ করে ইস্তাম্বুল (কন্সস্ট্যান্টিনোপল) জয় করেন। তখন ইয়াজিদ মাত্র ৬ (ছ’) বছরের শিশু। আর সে ঐ যুদ্ধে অংশ নেয় নি।
*সুত্রঃ {ইবনে আছীরের (৫৫৫-৬৩০ হিঃ) রচিত আল-কামিল ফীত তারীখ, ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা নং ২৫ ও ইবনে কাছীরের (৭০২-৭৭৪ হিঃ) রচিত আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৭ম খন্ড, পৃষ্ঠা নং ১৭৯}
(২) কায়সারের রোম নগরীতে মুসলিম বাহিনীর আক্রমণ:
প্রথম আক্রমণ: আধুনিক ঐতিহাসিকদের মতে, মহানবী নিজেই (’আলাইহিস সলাতু ওয়াস সালাম) মুসলিম সেনাবাহিনীকে কায়সারের নগরী আক্রমণ করতে পাঠিয়ে ছিলেন। তিনি জামাদিউল উলা ৮ মোতাবেক, ৬২৯ খৃষ্টাব্দে ঐ এলাকা (কায়সারের নগরী) দ্রুত আক্রমণ করে অপরাধী গোত্রগুলোকে শাস্তি দিতে তাঁর ৩,০০০ সাহাবীর একটি দলকে (সারিয়্যা) পাঠিয়েছিলেন - যার নেতৃত্বে ছিলেন হযরত জাইদ ইবনে হারিছা, দ্বিতীয় কমান্ডার ছিলেন হযরত জাফর ইবনে আবি ত্বালিব ও তৃতীয় কমান্ডার ছিলেন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা রাদ্বিআল্লাহুতা’লা ’আনহুম
নেয় নি।
*সুত্রঃ {সাইফুর রহমান মুবারকপুরীর (১৯৪৩-২০০৬ খৃঃ) রচিত, আর-রাহীকুল মাখতুম}। এ যুদ্ধে নবীজী উল্লিখিত তিনজনের শাহাদাত বরণের সংবাদ আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন! আর এর নাম ছিলো মুতার যুদ্ধ। তখন ইয়াজিদের জন্মই হয় নি।
দ্বিতীয় আক্রমণ: আমরা যদি কায়সারের নগরীর অর্থ করি - তাহলে সেটা হবে, হিমস বা হোমস নগরী - যা হযরত উমার ইবনুল খাত্তাবের (رضي الله عنه) শাসনামলে ১৬ হিজরীতে মুসলিম বাহিনী জয় করছিলেন এবং এর কমান্ডার ছিলেন হযরত উবাইদা ইবনুল জাররাহ (رضي الله عنه)। এ বাহিনীতে হযরত ইয়াজিদ ইবনে আবি সুফিয়ান (رضي الله عنه) অংশ নিয়েছিলেন। তখনো ইয়াজিদ ইবনে মুয়াবিয়া জন্মগ্রহণ করে নি। কেননা, সে জন্মগ্রহণ করেছে ২৬ হিজরীতে
*সুত্রঃ (আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৯ম খন্ড, পৃষ্ঠা নং ৭৬) ইয়াজিদ ইবনে আবি সুফিয়ান একজন সাহাবী ও আমিরে মুয়াবিয়ার ভাই ছিলেন।
তৃতীয় আক্রমণ: (আগেই উল্লেখ করা হয়েছে) হযরত আমিরে মুয়াবিয়া (رضي الله عنه) ৩২ হিজরীতে রোম আক্রমণ করে ইস্তাম্বুলে পৌঁছে যান - যখন ইয়াজিদ ছিলো ৬ বছরের শিশু।
*সুত্রঃ (সূত্র: আল-কামিল ফীত তারীখ, ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা নং ২৫ ও আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৭ম খন্ড, পৃষ্ঠা নং ১৭৯} এটিই ছিলো মুসলমানদের প্রথম নৌপথে রোম আক্রমণ।
চতুর্থ আক্রমণ: ৪২ হিজরীতে মুসলিম বাহিনী ইস্তাম্বুলের পথে রোম আক্রমণ করে।
*সুত্রঃ (আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৮ম খন্ড, পৃষ্ঠা নং ২৪)।
পঞ্চম আক্রমণ: পরের বছর, অর্থাৎ ৪৩ হিজরীতে মুসলিম বাহিনী হযরত বাশার ইবনে আর্তাহর (رضي الله عنه) নেতৃত্বে আবারো ইস্তাম্বুলের পথে রোম আক্রমণ করে।
*সুত্রঃ (তারিখে ইবনে খালদুন, ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা নং ৯ ও আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৮ম খন্ড, পৃষ্ঠা নং ২৪)।
ষষ্ঠ আক্রমণ: পরের বছর, অর্থাৎ ৪৪ হিজরীতে হযরহ খালিদ বিন ওয়ালিদের (رضي الله عنه) ছেলে হযরত আব্দুর রহমান বিন সহ (رضي الله عنه) মুসলিম বাহিনী রোমে প্রবেশ করে এবং সেখানে শুধু শীতকালটা কাটায়। আর হযরত বাশার ইবনে আর্তাহর (رضي الله عنه) তখন নৌপথে যুদ্ধ করেছিলেন।
*সুত্রঃ (আল-কামিল ফীত তারীখ, ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা নং ২৯৮) ।
সপ্তম আক্রমণ: ৪৬ হিজরীতে হযরত মালিক ইবনে আব্দিল্লাহ (رضي الله عنه) রোম রাজ্যে ছিলেন। কথিত আছে যে, হযরত আব্দুর রহমান বিন খালিদ বিন ওয়ালিদ (رضي الله عنه) একই বছর হিমসে ফিরে আসেন এবং ইন্তেকাল করেন। তিনি কন্সস্ট্যান্টিনোপল আক্রমণের উদ্দেশ্যে নিয়োজিত বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন। এ আক্রমণের কথা কোনো ইতিহাসের বইতে লিখা না থাকলেও আবূ দাউদ শরীফে রয়েছে। যেমন-
হযরত আবূ ইমরান (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, আমরা মদীনা হতে ইস্তাম্বুল (কুস্তুনতুনিয়া বা কন্সন্ট্যান্টিনোপল) অভিমুখে যুদ্ধ-যাত্রা করলাম। আমাদের সেনাপতি ছিলেন খালিদ বিন ওয়ালিদের ছেলে আব্দুর রহমান। রোমানবাহিনী ইস্তাম্বুল শহরের দেয়ালে পিঠ লাগিয়ে যুদ্ধের জন্যে দাঁড়িয়েছিলো। এরপর কেউ শত্রুসেনাদের উপরে হামলা করে বসলো। আমাদের লোকজন বলে উঠলো: থামো! থামো!! লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ!!! সেতো নিজেই নিজেকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে। তখন হযরত আবূ আইউব আনসারী (رضي الله عنه) বললেন: “তোমরা নিজেদের ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিও না (সূরা আল-বাকারা:১৯৫)। এ আয়াত আমাদের আনসারদের ব্যাপারে নাযিল হয়েছিলো। যখন আল্লাহ তাঁর নবীকে (সল্লাল্লাহুতা’লা ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহায্য করলেন এবং ইসলামকে জয়ী করলেন - তখন আমরা বলেছিলাম যে, আমরা যুদ্ধে না গিয়ে ঘরে থেকে আমাদের সহায়-সম্পদ দেখাশুনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করবো। তখন আল্লাহুতা’লা নাযিল করলেন: তোমরা আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করো এবং নিজেদের ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিও না (২:১৯৫)। ঘরে বসে থেকে মালামালের রক্ষণাবেক্ষণ করা এবং যুদ্ধে না যাওয়াটাই হচ্ছে, নিজেদের ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া।” আবূ ইমরান বলেন: এ কারণেই আবূ আইউব (আনসারী) ইস্তাম্বুলে সমাহিত না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ আঝ্ঝা ও জাল্লার রাস্তায় সব সময়ে যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন।
*সুত্রঃ (সুনানে আবূ দাউদ, জিহাদ অধ্যায়, “তিনি আঝ্ঝা ওয়া জাল্লা ফরমান: তোমরা নিজেদের ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিও না” অনুচ্ছেদ, হাদীছ নং ২৫০৪)
উল্লিখিত বিস্তারিত বর্ণনা অনুসারে, হযরত আমিরে মুয়াবিয়ার (رضي الله عنه) নেতৃত্বে যে মুসলিম সেনাবাহিনী ৩২ হিজরীতে প্রথমবার ইস্তাম্বুল আক্রমণ করে - সেটাই হচ্ছে, বুখারী শরীফে উল্লিখিত ক্ষমাপ্রাপ্ত দল। আর এটা পরিষ্কার যে, আবূ দাউদ শরীফে উল্লিখিত ইস্তাম্বুল আক্রমণকারী মুসলিম সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদের (رضي الله عنه) ছেলে হযরত আব্দুর রহমান (رضي الله عنه) - যিনি আল-কামিল ফীত তারীখের বর্ণনা অনুসারে ৪৬ বা ৪৭ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন এবং তাঁর নেতৃত্বে এ ইস্তাম্বুল আক্রমণও ৪৬ হিজরীতে হয়েছে। উল্লেখ্য যে, সিহাহ সিত্তাহর অন্তর্গত সুনানে আবূ দাউদের গ্রহণযোগ্যতা সকল ইতিহাসগ্রন্থের চেয়ে বেশি। সুতরাং হাদীছ শরীফ, ইতিহাস ও রিজাল (জীবনী গ্রন্থ) অনুসারে এটা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত যে, হযরত আব্দুর রহমান বিন খালিদ বিন ওয়ালিদের নেতৃত্বেই ৪৬ বা ৪৭ হিজরীর আগে মুসলিম সেনাবাহিনী ইস্তাম্বুল আক্রমণ করেছিলো।
অষ্টম আক্রমণ: অষ্টমবার যখন মুসলিম সেনাবাহিনী ইস্তাম্বুল আক্রমণ করে - তখন এ বাহিনীতে ছিলেন হযরত ইয়াজিদ ইবনে শাজরাহ শামী রাদ্বিআল্লাহুতা’লা ’আনহু। ইনি কোনোভাবেই ইয়াজিদ ইবনে মুয়াবিয়া নন।
নবম আক্রমণ: ৪৯ বা ৫০ হিজরীতে আমিরে মুয়াবিয়া (رضي الله عنه) হযরত সুফিয়ান ইবনে আউফের (رضي الله عنه) নেতৃত্বে রোমের শহরগুলো দখল করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময়ের প্রথম দলে ইয়াজিদ অংশ না নেওয়ায় তিনি শাস্তি হিসেবে জোর করে ইয়াজিদকে দ্বিতীয় দলে অর্ন্তভুক্ত করেছিলেন। ঐতিহাসিক ইবনুল আছীর এ ঘটনাটি এভাবে বর্ণনা করেছেন: “এ বছর (৪৯ হিঃ) কিংবা কেউ কেউ বলেন ৫০ হিজরীতে আমিরে মুয়াবিয়া সুফিয়ান ইবনে আউফের নেতৃত্বে রোমের শহরগুলো দখল করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তিনি সেখানে সেনাবাহিনী পাঠালেন এবং তাঁর ছেলে ইয়াজিদকে নির্দেশ দিলেন তাতে যোগ দিতে। কিন্তু ইয়াজিদ তাতে যোগ দিতে গড়িমসি করলো। আর মুয়াবিয়া এ ব্যাপারে চুপ থাকলেন। মুসলিম সেনারা এ অভিযানে অসুস্থতা ও ক্ষুধায় অনেক কষ্ট স্বীকার করলো। এ খবর পেয়ে ইয়াজিদ একটি দু’ লাইনের শ্লোক আবৃত্তি করলো: আমি ঐ বাহিনী থেকে কেন সতর্ক থাকবো না - যারা ফার্কানদোনায় (বর্তমানে গ্রীসের একটি পৌরসভা) জ্বর ও গুটি বসন্তে আক্রান্ত হয়েছে - যখন কিনা আমি মারওয়ানের ঘরে উম্মে কুলসুমের সঙ্গে শৌখিন পোশাক পরে আরামে শুয়ে আছি?” (আল-কামিল ফীত তারীখ)
উম্মে কুলসুম বিনতে আব্দিল্লাহ বিন আমির ছিলো ইয়াজিদের স্ত্রী। যখন মুয়াবিয়া ইয়াজিদের এ শ্লোক আবৃত্তির খবর পেলেন - তখন তিনি তাকে সুফিয়ান ইবনে আওফের কাছে রোমে পাঠানোর শপথ নিলেন - যেন তিনিও কষ্ট লাঘব করতে পারেন। (প্রাগুক্ত)
ইবনুল আছীরের (৫৫৫-৬৩০ হিঃ) চেয়েও অনেক প্রবীণ ঐতিহাসিক আল-মাসউদী (২৮২/২৮৩-৩৪৫ হিজরী) তাঁর “মুরূজুয যাহাবী ওয়া মা’য়াদিনিল জাওয়াহির” কিতাবে লিখেছেন: “মুয়াবিয়া মুসলিম সেনাবাহিনীর উন্নতির খবর পেয়ে তা ইয়াজিদকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানালেন। আর ইয়াজিদ বললো: এ (মুসলিম বাহিনীর জয়লাভের) উপলক্ষে আমি আমার মাতাল বন্ধুদের নিয়ে বাড়ীতে একটি পার্টি দেবো!”
সুতরাং উল্লিখিত বিবরণগুলোর আলোকে এটা পরিষ্কার যে,
১। নবীজী (’আলাইহিস সলাতু ওয়াস সালাম) প্রথম যে দু’ সেনাবাহিনীর ব্যাপারে বেহেশত নিশ্চিত হওয়ার ও ক্ষমাপ্রাপ্তির ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন - ইয়াজিদ তাতে অংশ নেয় নি, বরং সে নবম বাহিনীতে অংশ নিয়েছিলো।
২। কিছু অর্বাচীন ব্যক্তি মানুষকে গোমরাহ করতে অপপ্রচার (প্রোপাগান্ডা) করে বেড়ায় যে, ইয়াজিদ ঐ বাহিনীর সেনাপতি ছিলো; আর ইমাম হুসাঈন (رضي الله عنه) নাকি সাধারণ সৈনিক হিসেবে তাতে যোগ দিয়েছিলেন! ডাহা মিথ্যে কথা!! বরং সত্য হচ্ছে, ইয়াজিদ নয়, বরং হযরত সুফিয়ান ইবনে আউফ (رضي الله عنه) ঐ (নবম) বাহিনীর কমান্ডার বা সেনাপতি ছিলেন।
৩। জিহাদে অংশগ্রহণে ইয়াজিদের কোনোই আগ্রহ ছিলো না। আর তাই, সে মুসলিম বাহিনীতে অংশ নেয় নি। এতে পরিষ্কার হলো যে, হাদীছ শরীফে বর্ণিত ইস্তাম্বুল অভিযানে প্রেরিত জান্নাতি ও ক্ষমাপ্রাপ্ত প্রথম নৌবাহিনীতে সে কোনোভাবেই অংশ নেয় নি।
৪। মুসলিম বাহিনীর কষ্টের কথা জানতে পেরে - তাতে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে ইয়াজিদের খুশি হওয়াটা অবশ্যই কোনো জান্নাত প্রত্যাশী কামেলদার ব্যক্তির আলামত হতে পারে না।
৫। ইয়াজিদের এ খুশি হওয়ার খবর পেয়ে হযরত মুয়াবিয়া (رضي الله عنه) তাকে শাস্তি দিতে ঐ (নবম) বাহিনীতে পাঠাতে সিদ্ধান্ত নেন।
সুতরাং ইয়াজিদ কোনোভাবেই উল্লিখিত দু’টি হাদীছ শরীফাঈনে বর্ণিত প্রথম অভিযানে অংশ নেয় নি। যারা বলে অংশ নিয়েছিলো - তারা গোমরাহ ও মিথ্যেবাদী।
____________
মুমিনকে হত্যা করা কুফরীঃ
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদ্বি আল্লাহু তাআলা আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুল পাক (ﷺ) বলেছেন, মুসলমানদেরকে গালাগালি করা ফাসেকি আর তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা কুফরী | [ বুখারী ৪৮, মুসলিম ৬৪ ]
এ সম্পর্কে বিস্তারিত এখানে পাবেনঃ
https://sunni-encyclopedia.blogspot.com/2015/11/blog-post.html?m=1
_______________
সেই হিসেবে বলা যায় যার হুকুমে বা যাদের দ্বারা বা যাদের ইচ্ছাকৃত সম্মতিকৃমে ইমাম হোসাইনকে ও অনেক সাহাবায়ে কেরামকে শহীদ করল তারা সকলেই কাফির আর তাদের অধিনায়ক হল ইয়াজিদ বিন মুয়াবিয়া।
❏ এ প্রসংগে বিখ্যাত মুফাসসিস ও মুহাদ্দিস আল্লামা আলুসি (رحمة الله) বলেন (নিচে বিস্তৃতভাবে আলোচনা করা হয়েছে),"
❏ ইবনে যিয়াদ ইয়াযীদের নির্দেশে হুজুর পাক (ﷺ) উনার আহলে বাইত উনাদেরকে বন্দী করে এবং কারবালায় শাহাদাত প্রাপ্ত উনাদের কর্তিত মস্তক মুবারক নিয়ে মিছিল করে দামাস্কে নিয়ে যাওয়ার জন্য শিমার ইবনে জুল জাউশান ইবনে সালাবা, শীস ইবনে রাবী, আমর ইবনে, হাজ্জাজ এবং আরো কতক লোককে নিযুক্ত করে। তাদের হুকুম দেয় তারা যে শহরে পৌঁছাবে সেখানে যেন কর্তিত মস্তক মুবারকের প্রদর্শনী করা হয়। নাউযুবিল্লাহ !! এরূপ
মিছিলটি পহেলা ছফর দামেস্ক শহরের দ্বার দেশে পৌঁছে। ইয়াযীদ তখন জায়রূন রাজপ্রাসাদে অবস্থা করছিলো। সে প্রাসাদের বেলকুনীতে বসে দৃশ্য উপভোগ করছিলো। নাউযুবিল্লাহ !
❏ ওখানকার কাকগুলো কলরব করে বিলাপ প্রকাশ করতে লাগলো। ইয়াযীদ তখন কবিতা আবৃত্তি করে বিজয় উল্লাস করে বলে-
ﻟﻤﺎ ﺑﺪﺕ ﺗﻠﻚ ﺍﻟﺤﻤﻮﻝ ﻭﺍﻟﺸﺮﻗﺖ + ﺗﻠﻚ ﺍﻟﺮﺅﺱ ﻋﻠﻲ ﺷﻔﺎ ﺟﻴﺮﻭﻥ + ﻧﻌﺐ ﺍﻟﻐﺮﺍﺏ ﻓﻘﻠﺖ ﻗﻞ ﺍﻭ ﻻﺗﻘﻞ +
ﻓﻘﺪ ﺍﻗﺘﻀﻴﺖ ﻣﻦ ﺍﻟﺮﺳﻮﻝ ﺩﻳﻮﻧﻲ
অর্থ: যখন ওইসব বাহন চোখে পড়লো, আর ওইসব মস্তক সামনে ভেসে উঠলো জয়রূন উপকন্ঠে তখন কাককুল কলরব করে উঠলো। আমি বললাম, কলরব করো বা নাই করো,
আমি রসূলের নিকট হতে আমার ঋনগুলো শোধ করে নিয়েছি।” আসতাগফিরুল্লাহ !! নাউযুবিল্লাহ !!!
দলীলঃ
➥ তাফসীরে রূহুল মায়ানী ২৫ তম খন্ড ৭৪ পৃষ্ঠা ।
❏ ইয়াযীদ কাফির যে তার কবিতায় কথিত ঋনের
কথা বলেছে সে বিষয়ে আল্লামা আলূসী বাগদাদী
(رحمة الله) বলেন,-
” ইয়াযীদ তার উক্তি আমি রসূলের নিকট হতে আমার ঋনগুলো শোধ করে নিয়েছি দ্বারা বুঝাতে চাচ্ছে যে, হুজুর পাক (ﷺ) বদর যুদ্ধে ইয়াযীদের নানা উতবা এবং তার মামাকে ও অন্যান্য আপনজনকে হত্যা করেছিলেন। যার প্রতিশোধরূপে ইয়াযীদ
হুজুর পাক (ﷺ) উনার
আহলে বাইত শরীফ উনাদের শহীদ করেছে। নাউযুবিল্লাহ! এটা স্পষ্ট কুফরীর প্রমান। তার এ উক্তি প্রমানিত হওয়ায় ইয়াযীদ এজন্য অবশ্যই কাফির হয়ে গেছে।”
তথ্যসূত্রঃ
➥ তাফসীরে রূহুল মায়ানী ২৫ তম খন্ড ৭৪ পৃষ্ঠা
❏ আলুসী (رحمة الله) বলেন-
ﺫﺍﻟﻚ ﻟﻌﻤﺮﻱ ﻫﻮ ﺍﻟﻀﻼﻝ ﺍﻟﺒﻌﻴﺪ ﺍﻟﺬﻱ ﻳﻜﺎﺩ
ﻳﺰﻳﺪ ﻋﻠﻲ ﺿﻼﻝ ﻳﺰﻳﺪ
অর্থ-আমি কসম করে বলি , এটা হলো চরম ভ্রষ্টতা। যা ইয়াজীদের ভ্রষ্টতাকে অতিক্রম করেছে।”
তথ্যসূত্রঃ
➥ রুহুল মায়ানী ২৫ তম খন্ড ৭৩ পৃষ্ঠা ।
━কুরআন শরীফ এবং হাদীস শরীফের আলোকে হযরত
আহলে বাইত (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) ওনাদের ফযীলত ━
❏ কুরআন মজীদে ঘোষিত হয়েছে: “নিশ্চয়
যারা কষ্ট দেয় আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ﷺ)-কে,
তাদের প্রতি আল্লাহর লা’নত (অভিসম্পাত) দুনিয়া ও আখেরাতে এবং আল্লাহ তাদের জন্যে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন।” [সূরা আহযাব, ৫৭ আয়াত]
❏ মহান আল্লাহ পাক কুরআন শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
ﻗﻞ ﻻ ﺍﺱﺀﻟﻜﻢ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﺟﺮﺍ ﺍﻻ ﺍﻟﻤﻮﺩﺓ ﻓﻲ ﺍﻟﻘﺮ ﺑﻲ
অর্থ: হে আমার হাবীব (ﷺ) ! আপনি ( উম্মতদের ) বলুন, আমি তোমাদের নিকট নবুওয়াতের দায়িত্ব পালনের কোন প্রতিদান চাই না। তবে আমার নিকটজন তথা আহলে বাইত উনাদের প্রতি তোমরা সদাচারন করবে।”( সূরা শূরা : আয়াত শরীফ ২৩ )
❏ এ আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় বিখ্যাত তফসীর
“তাফসীরে মাযহারীতে” উল্লেখ আছে-
ﻻ ﺍﺱﺀﻟﻜﻢ ﺍﺟﺮﺍ ﺍﻻ ﺍﻥ ﺗﻮﺩﻭﺍ ﺍﻗﺮﺑﺎﺀﻱ ﻭﺍﻫﻞ ﺑﻴﺘﻲ ﻭ ﻋﺘﺮﺗﻲ ﻭﺫﻟﻚ ﻻﻧﻪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻛﺎﻥ ﺧﺎﺗﻢ
ﺍﻟﻨﺒﻴﻦ ﻻ ﻧﺒﻲ ﺑﻌﺪﻩ
অর্থ: আমি তোমাদের নিকট প্রতিদান চাই
না তবে তোমরা আমার নিকটাত্মীয়, আহলে বাইত ও বংশধর উনাদের ( যথাযথ সম্মান প্রদর্শন পূর্বক) হক্ব আদায় করবে। কেননা আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুজুর পাক (ﷺ) তিনি হচ্ছেন শেষ নবী। উনার পরে কোন নবী নেই।”
তথ্যসূত্রঃ
➥ তাফসীরে মাযহারী ৮ম খন্ড ৩২০ পৃষ্ঠা।
কতিপয় হাদীস শরীফ থেকে হযরত সাইয়্যিদুনা ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার ফযীলত নিম্নে উল্লেখ করা হলো :
❏ ” উম্মুল মু’মিনিন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, একদা ভোরবেলা হুজুর পাক (ﷺ) তিনি একখানা কালো বর্নের পশমী নকশী কম্বল শরীর মুবারকে জড়িয়ে বের হলেন। এমন সময় হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম তিনি সেখানে আসলেন, তিনি উনাকে কম্বলের ভিতর প্রবেশ
করিয়ে নিলেন। তারপর ইমাম হযরত হুসাইন আলাইহিস সালাম তিনি আসলেন, উনাকেও হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম উনার উনার সাথে প্রবেশ করিয়ে নিলেন।
অতঃপর সাইয়্যিদাতুন নিছা হযরত ফাতিমাতুয
যাহরা আলাইহিস সালাম তিনি আসলেন উনাকেও
তাতে প্রবেশ করিয়ে নিলেন। তারপর হযরত আলী আলাইহিস সালাম তিনি আসলেন,উনাকেও তার ভিতর প্রবেশ করিয়ে নিলেন। অতঃপর হুজুর পাক (ﷺ) কুরআন শরীফের এই আয়াত শরীফখানা পড়লেন, হে আমার আহলে বাইত ! আল্লাহ তায়ালা তিনি আপনাদেরকে সকল প্রকার অপবিত্রতা থেকে মুক্ত রেখে পবিত্র করার মত পবিত্র করবেন।”
অর্থাৎ পবিত্র করেই সৃষ্টি করেছেন।
তথ্যসূত্রঃ
➥ সহীহ মুসলিম শরীফ – বাবু ফাদ্বায়িলু আহলে বাইতিন নাব্যিয়ি (ﷺ)- ৬০৪৩ নং হাদীস শরীফ। (ইফা)
❏ হাদীস শরীফে আরো বর্নিত আছে-
ﻋﻦ ﺣﻀﺮﺕ ﺍﺑﻲ ﺳﻌﻴﺪ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻲ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﺍﻟﺤﺴﻦ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ
ﻭ ﺍﻟﺤﺴﻴﻦ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭ ﺍﻟﺤﺴﺴﻴﻦ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﺳﻴﺪﺍ ﺷﺒﺎﺏ ﺍﻫﻞ ﺍﻟﺠﻨﺔ
অর্থ: হযরত আবু সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বলেন, হুজুর পাক (ﷺ) ইরশাদ মুবারক করেন, হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম ও ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনারা দু’জনেই জান্নাতী যুবকগনের
সাইয়্যিদ।”
তথ্যসূত্রঃ
➥ তিরমীযি শরীফ – আহলে বাইত শরীফ উনাদের ফযীলত অধ্যায়।
❏ হাদীস শরীফে আরো বর্নিত আছে-
ﺍﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ ﻟﻌﻠﻲ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻭ ﻓﺎﻃﻤﺔ ﻋﻠﻴﻬﺎ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭ ﺍﻟﺤﺴﻦ ﻋﻠﻴﻪ
ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭ ﺍﻟﺤﺴﻴﻦ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﺍﻧﺎ ﺣﺮﺏ ﻟﻤﻦ ﺣﺎﺭﺑﻬﻢ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻟﻤﻦ ﺳﺎﻟﻤﻬﻢ
অর্থ: হযরত যায়িদ ইবনে আরকাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি বলেন, নিশ্চয়ই রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আলী আলাইহিস সালাম , সাইয়্যিদাতুনা ফাতিফাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম, হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম , ইমাম হুসাইন আলাইহিস
সালাম উনাদের সম্পর্কে বলেছেন, যারা উনাদের
প্রতি শত্রুতা পোষন করবে, আমি তাদের শত্রু।
পক্ষান্তরে যে উনাদের সাথে সদ্ব্যবহার করবে, আমি তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করবো।”
তথ্যসূত্রঃ
➥ সহীহ তিরমিযী শরীফ – আহলে বাইত শরীফ উনাদের ফযীলত অধ্যায়।
এই সম্পর্কে বললে শেষ করা যাবে না শুধু কিছু হাদিস এর রেফারেন্স দিচ্ছি এগুলো স্বয়ং আমি (মাসুম বিল্লাহ সানি) আহলে বাইয়াতের শানে সহীহ তিরমিযি থেকে সংকলিত করেছি (আরো অনেক হাদিস রয়েছে এখানে কিছু দিলাম)-
TIRMIZI SORIF::-
Hadith Number 3205:
Hadith Number 3206:
Hadith Number 3712:
Hadith Number 3713:
Hadith Number 3717:
Hadith Number 3718:
Hadith Number 3719:
Hadith Number 3721:
Hadith Number 3722:
Hadith Number 3723:
Hadith Number 3724:
Hadith Number 3726:
Hadith Number 3727:
Hadith Number 3728:
Hadith Number 3731:
Hadith Number 3732:
Hadith Number 3733:
Hadith Number 3734:
Hadith Number 3735:
Hadith Number 3736:
Hadith Number 3737:
Hadith Number 3767:
Hadith Number 3768:
Hadith Number 3769:
Hadith Number 3770:
Hadith Number 3771:
Hadith Number 3772:
Hadith Number 3773:
Hadith Number 3874:
Hadith Number 3775:
Hadith Number 3876:
Hadith Number 3786:
Hadith Number 3787:
Hadith Number 3788:
Hadith Number 3789:
Hadith Number 3800:
Hadith Number 3801:
:
:
HOUSEHOLD:
Al-Tirmidhi, Hadith #6143
Al-Tirmidhi, Hadith #6144
Al-Tirmidhi, Hadith # 6174
:
Muslim:
:
Hadith Number 31/5923:
Hadith Number 31/5920:5922
Hadith Number 031/5955:
-----------------------------------------------
━ইতিহাস সাক্ষী ইয়াজিদ চিরঅভিশপ্ত━
━এখন আসুন ইয়াজিদকে জগতবিখ্যাত ইমামগন দ্বারা Justify করি যাদেরকে আহলে হাদিস / সুন্নী / ওহাবী- তাবলিগ সবাই মানেন।━
❏ সহীহ হাদিসঃ
রাসুল [ﷺদুরুদ ] বলেছেন, যে ব্যাক্তি মদিনাবাসীর উপর অত্যাচার করে এবং তাদেরকে ভয় প্রদর্শন করে, তুমি তাঁকে ভয় প্রদর্শন কর, এমন মানুষের উপর আল্লাহ, ফেরেস্তাগন ও সকল মানুষের লা'নত বর্ষিত হোক।
[মো'জামুল আওসাত লিত তাবারানী- ২/১২৫/১]
❏ Imam Ahmed narrates this report from Sa’ib bin Khalad (RA) that the Prophet of Allah (Peace be upon him) said:
Whosoever spreads injustice and frightened the people of Madina, then Curse (Lanah) of Allah, his Angels and all the people is upon such a person.
[Musnad Ahmed bin Hanbal as narrated by Imam Ibn Kathir in Al Bidayah Wal Nihayah Vol 8 Page No. 274]