রাসুল্লাহ (ﷺ) কে স্বপ্নে দেখার আমলঃ
[০১]
হুজুর পাকঁ (ﷺ) কে স্বপ্নে দেখতে চাইলে, নিম্নে উল্লেখিত আমলটি অনুস্নরণ করুন।
হুজুর পাকঁ (ﷺ) ইরশাদ করেন, যে ব্যাক্তি জুমার রাতে দুই রাকাত নামায এভাবে পড়বে যে, প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর আয়াতুল কুরছি ০১-বার, সূরা ইকলাস ১৫-বার পাঠ পূর্বক নামায শেষ করে নিম্মোলিখিত দরুদ শরীফ ১০০০-বার পাঠ করবে, অবশ্যই সে ব্যাক্তি আমাকে স্বপ্নে দিদার লাভ করবে। যদি সে রাতে না দেখে তবে দ্বিথিয় জুমা আসার পূর্বেই আমাকে দেখতে পাবে এবং তার গুনাহ মাপ হয়ে যাবে।
দরুদ শরীফঃ-
আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা স্যায়িদিনা মুহাম্মাদিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি।
সৈয়্যদুনা গাউছে পাকঁ পীর মীর মহিউদ্দীন শাইখ সুলতান আব্দুল কাদ্বের জিলানী আল হাসান ওয়াল হোসাইনী (রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আলাইহী) এর কিতাব, "গুনিয়াতুত তালেবিন" থেকে সংগৃহিত।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ- এই কথাও প্রতিওমান যে, হুজুর পাকঁ (ﷺ) এর স্বপ্নে দিদার লাভ করতে হলে, নিজেকে-নিজের অন্তর আত্ব্যাকে পরিশুদ্ধ করে, সর্ব প্রকার গুনাহের কাজ হতে ফিরে আসতে হবে। বেশি বেশি তাওবা এস্তেগফার করে তাওয়াজ্জুর সহিত তাকওয়া অর্জন করতে হবে, আপন কলবকে পবিত্র রাখতে হবে। সদা আল্লাহর জিকির, হুজুর পাকঁ (ﷺ) দরুদ, সালামে মশগুল থাকতে হবে। বিণয়ি, আদব, ইকলাস থাকতে হবে। বড়দের সম্মান, তাজীম ও ছোটদের স্নেহ করতে হবে। পিতা মাতার খেদমত, আত্ব্যীয় ভাই-বেরাদরের সহিত সদ্বব্যাবহার করতে হবে। অযু সহকারে পাকঁ-পবিত্র বিছানায় শয়ন করতে হবে। তবেই আশা করা যায় আপনি হুজুর পাকঁ (ﷺ) এর দিদার লাভ করবেন। জ্বী হ্যাঁ হ্যাঁ বিবেকের আলোকে বললাম। ওয়ামা আলাইনা ইল্লাল বালাগ।
[০২]
মৃত্যুর সময় দীদারে মোস্তফা (ﷺ) নসীব হওয়ার দরুদ শরীফ।
আল্লাহুম্মা সাল্লি ওয়াসাল্লিম ওয়াবারিক আলা সায়্যিদিনা মুহাম্মাদিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যিল হাবীবিল আলিয়্যিল ক্বাদরিল আযিমিল যাহি ওয়ালা আলিয়্যিহি ওয়াছাবীহি ওয়াসাল্লিম।
বযুর্গানে দ্বীনরা বলেছেন, যে ব্যাক্তি প্রত্যেক জুমার রাতে (বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারের মধ্যেবর্তী রাত) এই দরুদ শরীফটি নিয়মিত ভাবে কমপক্ষে একবার পড়বে, মৃত্যের সময় সে হুজুর পাকঁ (ﷺ) এর যিয়ারত বা দীদার লাভ করবে এবং কবরের মধ্যে প্রবেশের সময় সে এটাও দেখবে যে, হুজুর পাকঁ (ﷺ) তাকে উনার রহমত পূর্ণ হাতে রাখছেন। (আফজালুস সালাত আলা সায়্যিদিস সা-দাত, পৃষ্ঠা-১৫২)
[০৩]
হুজুর পাকঁ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, জুমার দিন হলো সকল দিনের সরদার এবং আল্লাহ আযযাওয়াজাল্লাহ এর দরবারে অন্যন্যা দিন গুলোর চেয়ে বেশি মর্যাদাপূর্ণ এবং ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিন থেকেও বেশি মর্যাদাপূর্ণ। এই দিনের পাচঁটি বিশেষত্ব রয়েছে। যথাঃ-
(০১) আল্লাহ আযযাওয়াজাল্লাহ আদম আলাইহিচ্ছালাতু ওয়াচ্ছাল্লামকে এই দিনে সৃষ্টি করেছেন।
(০২) এই দিনে আল্লাহ আযযাওয়াজাল্লাহ আদম আলাইহিচ্ছালাতু ওয়াচ্ছাল্লামকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন।
(০৩) এই দিনে আল্লাহ আযযাওয়াজাল্লাহ হযরত সায়্যিদুনা আদম আলাইহিচ্ছালাতু ওয়াচ্ছাল্লামকে ওফাত দিয়েছেন।
(০৪) এই দিনে এমন একটি সময় রয়েছে, বান্দা এই সময় আল্লাহ আযযাওয়াজাল্লাহ এর নিকট যা চাইবে আল্লাহ আযযাওয়াজাল্লাহ তাকে তা দান করবেন যতক্ষন পর্যন্ত সে হারাম কোন কিছু না চায়।
(০৫) এই দিনেই কিয়ামাত সংগঠিত হবে এবং আল্লাহ আযযাওয়াজাল্লাহ এর সান্নিধ্য লাভ কারী ফেরেস্তা, আসমান-জমিন, বায়ু, পাহাড়-পর্বত, সমুদ্র এমন কিছু নেই যে জুমার দিনকে ভয় পায় না। (ইবনে মাজাহ, খন্ড-০২, হাদিস নং-১০৮৪)
[০৪]
হযরত মা আয়িশা সিদ্দীকা~{রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা আলাইহা}~বলেন, প্রিয় নবী হুজুর পূরনুর (ﷺ) শাবান অপেক্ষা বেশি (নফল) রোজা কোন মাসে রাখতেন না। পূর্ণ শাবানই রোজা রাখতেন। আর ইরশাদ করতেন নিজের সাধ্য অনূসারে আমল করো। আল্লাহ তায়ালা ততক্ষণ পর্যন্ত আপন অনূগ্রহ'কে থামিয়ে রাখেন না (যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা ক্লান্ত হওনা) নিশ্চয় তার নিকট পছন্দনীয় (নফল) নামায হচ্ছে যা সব সময় (নিয়মিত ভাবে) পড়া হয়। যদিও তা কম হয়। সুতরাং তিনি (ﷺ) যখন কোন (নফল) নামায পড়তেন তখন তা নিয়মিতই পড়তেন। (সহীহ বুখারী শরীফ, খন্ড-০১, পেজ-৬৪৮, হাদিস নং-১৯৭৪)
উল্লেখিত হাদিসে পাকেঁ, সম্পূর্ণ শাবানের রোজা দ্বারা উদ্দেশ্য হ'লো, শাবানের অধিকাংশ রোজা। (মুখাসাফাতুল কুলুব, পেজ-৩০৩)
উম্মতের কান্ডারী, দোজাহানের বাদশা, রাহমাতুল্লীল আলামিন, হুজুর সুলতানে আকরাম (ﷺ) বলেন, কোন ব্যাক্তি যদি তার বাতেন কে সংশোধন করে নেয়, তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার জাহের কেও সংশোধন করে দিবেন। (জামেউস সগির, হাদিস নং-৮৩৩৯)
[০৫]
উম্মুল মুমিনীন হযরত মা আয়েশা সিদ্দীকা~{রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা আলাইহা}~বলেন, রাসুলে কারীম (ﷺ) পূর্ণ শাবানের রোজা রাখতেন। তিনি~{রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা আলাইহা}~বলেন, আমি আরজ করলাম হে আল্লাহর রাসুল (ﷺ) সমস্ত মাসের মধ্যে কি আপনার নিকট শাবানের রোজা রাখা বেশি পছন্দনীয়? তদুত্তরে হুজুরে আম্বিয়া (ﷺ) ইরশাদ করলেন, আল্লাহ তায়ালা এই বছর মৃত্য বরণকারি প্রতিটি ব্যাক্তির নাম লিপিবদ্ধ করেন, আর আমার নিকট এটাই পছন্দনীয় যে আমার বিদায়ের সময় যখন আসবে তখন আমি যেন রোজাদার অবস্থায় থাকি। (মুসনাদে আবু ইয়ালা, খন্ড-০৪, পেজ-২৭৭, হাদিস নং-৪৮৯০)
ধন ও মর্যাদার প্রতি ভালোবাসা মুমিনের অন্তরে এমন ভাবে মুনাফিকি বাড়িয়ে দেয়, যেভাবে পানি উদ্ভিদ বাড়িয়ে দেয়। (ইহয়্যাউল উলুম, ভলিউম-০৩, পেজ-২৮৬)
আল্লাহর হাবীব (ﷺ) ইরশাদ করেন, দোয়া মু'মিনদের হাতিয়ার স্বরুপ। (আল মুস্তাদরাক লীল হাকেম, খন্ড-০২, পেজ-১৬২, হাদিস-১৮৫৫)