২২- كِتَابُ فَضْلِ أُمَّتِهِ

১- بَابٌ

٣٨٨- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ أَبِيْ بُرْدَةَ، عَنْ أَبِيْهِ، قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : إذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ يُدْعَوْنَ إِلَى السُّجُوْدِ، فَلَا يَسْتَطِيْعُوْنَ أَنْ يَسْجُدُوْا، سَجَدَتْ أُمَّتِيْ مَرَّتَيْنِ قَبْلَ الْأُمَمِ طَوِيْلًا ، قَالَ: فَيُقَالُ: ارْفَعُوْا رُءُوْسَكُمْ، فَقَدْ جَعَلْتُ عَدْلَكُمُ الْيَهُوْدَ وَالنَّصَارَىٰ فِدَاءَكُمْ مِنَ النَّارِ .


২২.  রাসূল (ﷺ) ’র উম্মতের ফযীলত অধ্যায়


বাব নং ১৯৭. ১.


৩৮৮.অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা আবু বুরাদা থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ)  এরশাদ করেন, কিয়ামতের দিন যখন সকলকে সিজদার জন্য আহবান করা হবে তখন কেউ সিজদা করতে সক্ষম হবেনা। সমস্ত উম্মতের আগে আমার উম্মত দু’টি লম্বা সিজদা করবে। তিনি বলেন, তখন বলা হবে-তোমরা তোমাদের মাথা উঠাও, আমি তোমাদের শত্র“ ইহুদী ও খৃষ্টানদেরকে তোমাদের পরিবর্তে জাহান্নামের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছি।


٣٨٩- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ أَبِيْ بُرْدَةَ، عَنْ أَبِيْهِ، قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : إذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ، يُعْطَىٰ كُلُّ رَجُلٍ مِنَ الْـمُسْلِمِيْنَ رَجُلًا مِنَ الْيَهُوْدِ وَالنَّصَارَىٰ، فَيُقَالُ: هَذَا فِدَاؤُكَ مِنَ النَّارِ .

وَفِيْ رِوَايَةٍ: إذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ، أَعْطَى اللهُ تَعَالَىٰ كُلَّ رَجُلٍ مِنْ هَذِهِ الْأَمَّةِ رَجُلًا مِنَ الْكُفَّارِ، فَيُقَالُ لَهُ: هَذَا فِدَاؤُكَ مِنَ النَّارِ . 

وَفِيْ رِوَايَةٍ: إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ، دُفِعَ إِلَىٰ كُلِّ رَجُلٍ مِنْ هَذِهِ الْأُمَّةِ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ، فَقِيْلَ لَهُ: هَذَا فِدَاؤُكَ مِنَ النَّارِ .

وَفِيْ رِوَايَةٍ: إِنَّ هَذِهِ الْأُمَّةَ أُمَّةٌ مَرْحُوْمَةٌ عَذَابُهَا بِأَيْدِيْهَا .


৩৮৯.অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা আবু বুরদা থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ)  এরশাদ করেন, কিয়ামতের দিন প্রত্যেক মুসলমানকে ইহুদী-নাসারা থেকে একেক জনকে দেয়া হবে এবং বলা হবে, এ ব্যক্তিকে তোমার পরিবর্তে জাহান্নামে দেয়া হচ্ছে।


অন্য এক বর্ণনায় আছে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা এ উম্মতের প্রত্যেককে একজন কাফের দেবেন এবং বলা হবে জাহান্নাম থেকে মুক্তির জন্য এই ব্যক্তি তোমার ফিদয়া।


অপর বর্ণনায় আছে, কিয়ামত দিবসে এ উম্মতের প্রত্যেককে আহলে কিতাবের একজনকে অর্পণ করা হবে। অতঃপর তাকে বলা হবে এটা জাহান্নাম থেকে মুক্তির জন্য তোমার ফিদয়া।


অন্য বর্ণনায় আছে, এই উম্মত এমন দয়া প্রাপ্ত যে, এদের আযাব এরা আগেই পেয়ে যাবে। (অর্থাৎ দুনিয়াতেই পেয়ে যাবে যা চিরস্থায়ী নয়) 

(ইবনে মাজাহ, ২/১৪৩৪/৪২৯২)


٣٩٠- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيْهِ، قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ  يَوْمًا لِأَصْحَابِهِ: أَتَرْضَوْنَ أَنْ تَكُوْنُوْا رُبْعَ أَهْلِ الْـجَنَّةِ ؟ قَالُوْا: نَعَمْ، قَالَ: أَتَرْضَوْنَ أَنْ تَكُوْنُوْا ثُلُثَ أَهْلِ الْـجَنَّةِ ؟ قَالُوْا: نَعَمْ، قَالَ: أَتَرْضَوْنَ أَنْ تَكُوْنُوْا نِصْفَ أَهْلِ الْـجَنَّةِ ؟ قَالُوْا: نَعَمْ، قَالَ: أَبْشِرُوْا فَإِنَّ أَهْلَ الْـجَنَّةِ عِشْرُوْنَ وَمِائَةُ صَفٍّ، أُمَّتِيْ مِنْ ذَلِكَ ثَمَانُوْنَ صَفًّا .


৩৯০.অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা আলকামা থেকে, তিনি ইবনে বুরাইদা থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ)  একদিন তাঁর সাহাবায়ে কিরামগণকে বললেন, তোমরা কি এতে রাজী আছ তোমরা এবং তোমাদের পরে আগমনকারী সকল উম্মত জান্নাতবাসীদের এক চতুর্থাংশ হবে? তারা বললেন, হ্যাঁ, আমরা রাজী। তিনি (আবার) বললেন, তোমরা কি সন্তুষ্ট আছ যে, তোমরা জান্নাতবাসীদের এক তৃতীয়াংশ হবে? তারা বললেন, হ্যাঁ, সন্তুষ্ট আছি। তিনি (পুনরায়) বললেন, তোমরা জান্নাতবাসীদের অর্ধেক হবে, এতে সন্তুষ্ট আছ? তারা বললেন, হ্যাঁ, সন্তুষ্ট আছি। অতঃপর তিনি বললেন, তোমরা সুসংবাদ শোন, কারণ জান্নাতবাসী সকল উম্মত মোট একশ’বিশ কাতার হবে, তম্মেধ্যে আশি কাতার হবে আমার উম্মতের। 

(আল মুস্তাদরাক, ১/১৫৫/২৭৫)


ব্যাখ্যা: আমাদের নবী মুহাম্মদ   হলেন খাতেমুন নবীয়্যীন তথা সর্বশেষ নবী। কিয়ামত পর্যন্ত অন্য কোন নবী আগমন করবেনা বিধায় তাঁর উম্মতের সংখ্যা অনেক বেশী হবে। আর কিয়ামতের দিন এই বেশী উম্মত নিয়ে তিনি গর্ববোধ করবেন। 


٣٩١- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ أَبِيْ بُرْدَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : إِنَّ أُمَّتِيْ أُمَّةٌ مَرْحُوْمَةٌ عَذَابُهَا بِأَيْدِيْهَا فِي الدُّنْيَا . زَادَ فِيْ رِاوَيَةِ: بِالْقَتْلِ .


৩৯১.অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা আবু বুরদা থেকে, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ)  এরশাদ করেন, আমার উম্মত হলো দয়া প্রাপ্ত উম্মত। তাদের শাস্তি দুনিয়াতেই হয়ে যাবে। অন্য বর্ণনায় بالقتل শব্দটি বৃদ্ধি আছে। (অর্থাৎ দুনিয়াতে হত্যাকাণ্ড থাকবে) 

(জামেউল আহাদীস, ৮/৩৯৪/৭৫৬১)


ব্যাখ্যা: আবু দাউদ, বায়হাকী, হাকিম, তিবরানী আবু মূসা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন: امتى مرحومة ليس عليها عذاب فى الاخرة انما عذابها فى الدنيا الفتن والزلازل والقتل والبلايا-“আমার উম্মত হলো দয়া প্রাপ্ত, তাদের উপর আখেরাতে আযাব হবে না, তাদের আযাব হবে দুনিয়াতে ফেতনা, ভূমিকম্পন, হত্যাকাণ্ড এবং বিভিন্ন প্রকার বালা-মুছিবত দ্বারা।


٣٨٣-  أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ زِيَادٍ، عَنْ يَزِيْدَ بْنِ الْـحَارِثِ، عَنْ أَبِيْ مُوْسَىٰ ، قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : فَنَاءُ أُمَّتِيْ بِالطَّعْنِ وَالطَّاعُوْنِ، قِيْلَ: يَا رَسُوْلَ اللهِ! الطَّعْنُ قَدْ عَرَفْنَاهُ، فَمَا الطَّاعُوْنَ؟ قَالَ: وَخْزُ أَعْدَائِكُمْ مِنَ الْـجِنِّ، وَفِيْ كُلٍّ شَهَادَةٌ . وَفِيْ رِوَايَةٍ: وَفِيْ كُلٍّ شُهَدَاءُ .


৩৯২.অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা যিয়াদ থেকে, তিনি ইয়াযিদ ইবনে হারিস থেকে, তিনি আবু মূসা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ)  এরশাদ করেন, আমার উম্মত ধ্বংস হবে طعن (বর্ষ খেলা) ও طاعون দ্বারা। আরয করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! طعن অর্থ আমরা বুঝেছি কিন্তু طاعون অর্থ কি? তিনি বললেন, এটা হলো তোমাদের শত্র“ জিনদের বিদ্ধকাবী বর্শা অর্থাৎ মহামারী রোগ। এগুলো প্রত্যেকটির কারণে মৃত্যু হলে শাহাদতের মর্যাদা লাভ করবে। অন্য বর্ণনায় আছে, উভয়ের দ্বারা মৃত্যু বরণ করলে শহীদ হবে। 

(মুসনাদে আহমদ, ৪/৩৯৫/১৯৫৪৬)


٣٩٣- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ خَالِدِ بْنِ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ الْـحَارِثِ، عَنْ أَبِيْ مُوْسَىٰ ، عَنِ النَّبِيِّ ، قَالَ: فَنَاءُ أُمَّتِيْ بِالطَّعْنِ وَالطَّاعُوْنِ ، فَقِيْلَ يَا رَسُوْلَ اللهِ! هَذَا الطَّعْنُ، قَدْ عَلِمْنَاهُ، فَمَا الطَّاعُوْنَ؟ قَالَ: وَخْزُ أَعْدَائِكُمْ مِنَ الْـجِنِّ، وَفِيْ كُلٍّ شَهَادَةٌ .


৩৯৩. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা খালেদ থেকে, তিনি আলকামা থেকে, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে হারিস থেকে, তিনি আবু মুসা (رضي الله عنه) থেকে, তিনি নবী করমি (ﷺ)  থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমার উম্মতের ধ্বংস হবে طعن ও طاعون দ্বারা। আরয করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা طعن অর্থ বুঝেছি কিন্তু طاعون অর্থ কি? উত্তরে তিনি বললেন, তোমাদের শত্র“ জিনের বিদ্ধকারী বর্শা। এর দ্বারা মৃত্যুবরণ করলে শাহাদতের মর্যাদা লাভ করবে। 

(প্রাগুক্ত)

Top