বৈবাহিক জীবনে আল্লাহর বরকত


সমাজে অনেক বিবাহের উপযুক্ত যুবককে বলতে শুনা যায় যে, ‘আমি এখনো আর্থিকভাবে সচ্ছল নই, তাই এখন বিবাহ করবো না। এটা সম্পূর্ণ একটা ভুল ধারণা। সমাজে কয়জন আছে যারা প্রতিষ্ঠিত হয়ে বিবাহ করেছে? বরং দেখা যায় বিবাহ করে মানুষ প্রতিষ্ঠিত হয় বেশি। মানুষ পৃথিবীতে আসার পূর্বেই আল্লাহ তা‘আলা তার রিযিকের ব্যবস্থা করেছেন। স্ত্রী যখন স্বামীর ঘরে আসবে তখন তার রিযিক স্বামীর মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা স্বামীর ঘরেই পৌঁছিয়ে দেন। পরে যখন সন্তান-সন্ততি জন্মগ্রহণ করে তখন তাদের রিযিক তাদের পিতার মাধ্যমে তাদের ঘরে পৌঁছে যায়। বিবাহ পূর্বে সাধারণত দেখা যায় ছেলে বেকার থাকে, পকেটে চা খাওয়ার মতো পয়সা থাকেনা। কিন্তু বিবাহ পরবর্তী দেখা যায় সে মনোযোগ সহকারে উপার্জন করতে থাকে। ওই দিকে ইঙ্গিত করে কুরআনে কারীমে বলা হয়েছে,

-إِنْ يَكُونُوا فُقَرَاءَ يُغْنِهِمُ اللهُ مِنْ فَضْلِهِ  

তারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে সচ্ছল করে দেবেন। ৭৬

৭৬.সূরা নূর, আয়াত: ৩২

 

হযরত ইবনে মাসউদ(رضي الله عنه) বলেন, তোমরা যদি ধনি হতে চাও, তাহলে বিবাহ করো। কেননা, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন-إِنْ يَكُونُوا فُقَرَاءَ يُغْنِهِمُ اللهُ مِنْ فَضْلِهِ  (ইবনে কাসীর)।


ব্যক্তি যখন ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার নিয়্যতে নিজের চরিত্র সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে এবং সুন্নাতে রাসূল (ﷺ)র অনুসরণার্থে সদুদ্দেশ্যে বিবাহ করবে তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে আর্থিক সাচ্ছন্দ্য দান করবেন। এই উদ্দেশ্যে নবী করীম  (ﷺ) ইরশাদ করেন-

 ثَلَاثَةٌ حَقٌّ عَلَى اللهِ عَوْنُهُمْ: الْمُكَاتَبُ الَّذِي يُرِيدُ الْأَدَاءَ وَالنَّاكِحُ الَّذِي يُرِيدُ الْعَفَافَ وَالْمُجَاهِدُ فِي سَبِيلِ اللهِ 

তিন প্রকারের ব্যক্তিকে সাহায্য করা আল্লাহর উপর আবশ্যক। যে মুকাতাবা দাস তার মুক্তিপণ আদায় করতে চায়, বিবাহকারী যে আপন চরিত্র পবিত্র রাখতে চায় এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ কারী। ৭৭

৭৭.তিরিমিযী, নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ, সূত্র. মিশকাত, পৃ. ২৬৭

 

বিয়ের দ্বারা মানুষের মধ্যে লুকিয়ে থাকা বহুমুখী ব্যক্তিত্ব ও প্রতিভা প্রকাশ পায়। মানুষের মধ্যে কর্তব্যবোধ ও দায়িত্ববোধ জাগিয়ে তোলে। অনেক নিঃস্কর্ম ও অলুক্ষণে মানুষও বিয়ের পরে কর্মটো ও সৌভাগ্যশালী হয়ে ওঠে। বিশেষত স্ত্রী যদি পূণ্যবতী ও বুদ্ধিমতি হয় তাহলে সৎ পরামর্শ দিয়ে স্বামীকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে সক্ষম হয়।


বিয়ের মাধ্যমে দু’টি পরিবারের মধ্যে স্থায়ীভাবে আত্মীয়তার সম্পর্ক স্থাপন হয়। এতে সামাজিক শান্তি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)’র বহু বিবাহের অনেক কারণের মধ্যে এটিও একটি অন্যতম কারণ। হাদিস শরীফে হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- لَمْ تَرَ لِلْمُتَحَابِّينَ مثل النِّكَاح বিবাহের ন্যায় পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা-সম্প্রীতি সৃষ্টিকারী আর কিছুই দেখবে না। ৭৮

৭৮.ইবনু মাজাহ, সূত্র. মিশকাত, পৃ ২৬৮

Top