সূরা আন নসর এর তাফসীরঃ
(ইসলামী বিশ্বকোষ ও সোনার মদিনা ব্লগ)
❏ অত্যান্ত পরিতাপের বিষয় যে, জামাআতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা আবুল আ’লা মওদূদী,সূরা নছর এর ৩নং আয়াতের “ইস্তেগফার” শব্দের তাফসীর করতে গিয়ে তাফহীমূল কুরআনে লেখে-
فسبح بحمد ربك واستغره انه كان توابا-
এবং তাঁর কাছে মাগফিরাত চাও। অবশ্যি তিনি বড়ই তাওবা কবুলকারী।অর্থাত্ তোমার রবের কাছে দোয়া করো।তিনি তোমাকে যে কাজ করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন তা করতে গিয়ে তোমার যে ভুল-ত্রুটি হয়েছে তা যেন তিনি মাফ করে দেন।
[সূত্র তাফহীমূল কুরআন ১৯ নাম্বার খণ্ড ২৮৯নং পৃষ্ঠা। আধুনিক প্রকাশনী,৯ম সংস্করণ।]
☞ ইন-শা-আল্লাহ আবুল আ’লা মওদূদীর
ভ্রান্ত আকিদার জবাব কোরআন ও হাদিস দ্বারা দিব
❏ ১. আবুল আলা মওদূদী এই থিওরী কোথায় পেল যে,ইস্তেগফার শব্দ টা গোনাহের সাথে সম্পৃক্ত বা বান্দা গোনাহ করলেই ইস্তেগফার পড়বে অন্যথায় পড়বে না ?
❏ ২. আর তাছাড়া রাসূল (ﷺ) এঁর যুগে ছিলেন সাহাবায়ে কেরাম (رضي الله عنه) গন।রাসূল (ﷺ) নবুওয়াতি কাজ করছেন এই সাহাবাদের মাঝেই।আর সাহাবায়ে কেরামগণ (رضي الله عنه) এক বাক্যে স্বীকার করেছেন এবং সাক্ষ্য দিয়েছেন যে,রাসূল (ﷺ) আল্লাহর কালাম পৌঁছানো ও আমানত পূরিপূর্ণ ভাবে আদায় করেছেন।
❏ বিদায় হজ্জের ভাষণে রাসূল (ﷺ) যখন সাহাবায়ে কেরাম (رضي الله عنه) কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে,কিয়ামতের দিন আঁমার ব্যাপারে তোমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে, বল তোমরা তখন কি উত্তর দিবে? সাহাবায়ে কেরামগণ (رضي الله عنه) বললেন, আমরা এই সাক্ষ্য দিবো যে,আঁপনি আমাদের নিকট আল্লাহর কালাম পৌছিয়ে দিয়েছেন,আল্লাহর আমানত আদায় করেছেন এবং উম্মতের জন্য ভালো কামনা করেছেন।
❏ তখন হুজুর (ﷺ) তিনবার শাহাদাত আঙ্গুলি দ্বারা আসমানের দিকে ইশারা করে বললেন, اللهم اشهد হে আল্লাহ তুমি সাক্ষ্য থাকো।
এবং আল্লাহর পক্ষ্য থেকে আয়াতও নাযিল হয়েছে যে,
اليوم اكملت لكم دينكم واتممت عليكم نعمتي ورضيت لكم الاسلام دينا-
“আজ আঁমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম,তোমাদের প্রতি আঁমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম”।
☞ উপরোল্লেখিত কুরআনের আয়াত এবং সাহাবায়ে কেরামগণের কথার দ্বারা স্পষ্ট ভাবেই বুঝা যাচ্ছে যে,রাসূল (ﷺ) নবুওয়াতি কাজ অর্থাত্ তিঁনার উপর অর্পিত দায়িত্ব পরিপূর্ণ ভাবে আদায় করেছেন।
☞ রাসূল (ﷺ) যদি নিঁজের উপর সোপর্দকৃত দায়িত্ব আদায় নাই করে থাকতেন,তাহলে সাহাবাগণ কখনোই এই ধরণের সাক্ষ্য দিতেন না যে,আঁপনি আল্লাহর আমানত আদায় করেছেন।আর সাহাবাগণ সাক্ষ্য দিলেও আল্লাহ কখনোই এই আয়াত নাযিল করতেন না যে,”আজ আঁমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম”।কেননা রাসূলের কাজে বা দ্বীনের কাজে যদি ত্রুটিযুক্ত হয়েই থাকে তাহলে তো তা কখনোই পরিপূর্ণ হত না।
☞ আর যেহেতু আল্লাহ নিজেই ঘোষণা করেছেন যে,”তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম”এর দ্বারা এটাই প্রমান হয় যে, রাসূল (ﷺ) নিঁজের দায়িত্ব পূর্ণাঙ্গ ভাবেই পালন করেছেন।অথচ তেরশত বছর পর এসে আবুল আ’লা মওদূদী বলতেছে যে, রাসূল নিজের দায়িত্ব পালনে ত্রুটি করেছেন। (নাউযুবিল্লাহ!)
☞ আর তাছাড়া রাসূল (ﷺ) নিঁজের দায়িত্ব অর্থাত্ নবুওয়াতি কাজে ত্রুটি করেছেন, এটা মওদূদী কিভাবে বুঝলেন ? কারণ তখন তো মওদূদী ছিলো না।নাকি আবার মওদূদীর উপরে ওহী নাযিল হতো ? (নাউযুবিল্লাহ)
☞ ইসলামী আকিদা
সূরা আন নসরের استغفار এর মর্মার্থ হচ্ছে, আপনি তাঁর নিকট মাগফেরাত বা ক্ষমা প্রার্থনা করুন। অথচ কুরআন সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াসের আলোকে প্রমাণিত যে,আমাদের প্রিয় নবীসহ সকল নবী রাসূলগণ যাবতীয় ছোট-বড় গুনাহ, ভুল-ত্রুটি থেকে মুক্ত।তাহলে এ আয়াতের অর্থ অবশ্যই তাবীল করতে হবে।যেমন যুগশ্রেষ্ঠ মুফাসসিরগণ এ আয়াতের সঠিক ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেছেন, এখানে প্রিয় নবী (ﷺ)কে নিঁজের গুনাহ ক্ষমা প্রার্থনা করতে বলা হয়নি,বরং উম্মতের গুনাহ মাফ চাইতে বলা হয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ আল্লামা ইমাম জালালউদ্দিন সুয়ুতী (رحمة الله) তাঁর লিখিত ‘আল হাবী লিল ফাতাওয়া’ নামক কিতাবের ২য় জিলদের ১৫৩ পৃষ্ঠা, ‘আম্বাউল আযকিয়া ফি হায়াতিল আম্বিয়া’ অধ্যায়ে লিখেছেন
النظر فى اعمال امته والاستغفارلهم من السيئات والدعاء بكشف البلاء عنهم والتردد فى اقطار الارض لحلول البركة فيها وحضور جنازة من مات من صالح امته فان هذه الامور من جملة اشغاله فى البرزخ كما وردت بذلك الاحاديث والاثار-
অর্থাৎ ‘হুজুর (ﷺ) এর এ দুনিয়াতে পাঁচটি কাজ রয়েছে।যথা:
(ক.) উম্মতের আমলের প্রতি নজর বা দৃষ্টি মোবারক রয়েছে।অর্থাৎ আল্লাহর হাবীব উম্মতের আমলসমূহ দেখছেন।
(খ.) উম্মতের জন্য আল্লাহর হাবীব ইস্তেগফার করেন অর্থাৎ আল্লাহর হাবীব (ﷺ) আল্লাহ তা’য়ালার দরবারে উম্মতের গুনাহ মাফের জন্য সুপারিশ করছেন।
(গ.) উম্মত যেন গোনাহের কারণে বালা মুসিবতে পতিত না হয় সেজন্য আল্লাহর হাবীব আল্লাহ পাকের শাহানশাহী দরবারে দোয়া করছেন।
(ঘ.) আল্লাহর হাবীব পৃথিবীর সর্বত্র পরিভ্রমণ করে সর্বত্র (শহর-বন্দর, গ্রাম-গঞ্জ,এলাকা,আতরাফ সব জায়গায় নিঁজ হাত মোবারক দ্বারা খায়র ও বরকত প্রদান করে থাকেন।
(ঙ.) নিঁজ উম্মতের নেকবান্দার ওফাত হলে আল্লাহর হাবীব (ﷺ) তার জানাযাতে অংশগ্রহণ করে আল্লাহ পাকের শাহানশাহী দরবারে এ জানাযাকে কবুল ও মঞ্জুর করিয়ে নিন।এগুলোই হচ্ছে আমলে বরযখে অর্থাৎ রওজা মোবারকে অবস্থান করে আল্লাহর হাবীব এ সকল কাজ সম্পন্ন করে থাকেন।হাদিস ও আসার থেকে এ সব কাজের পূর্ণ সমর্থন বিদ্যমান রয়েছে।’
❏ ৩. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) রাসূল (ﷺ) হতে বর্ণনা করেন,
ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻣَﺴْﻌُﻮﺩٍ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ - ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﻗَﺎﻝَ ﺇِﻥَّ ﻟِﻠَّﻪِ ﻣَﻠَﺎﺋِﻜَﺔً ﺳَﻴَّﺎﺣِﻴﻦَ، ﻳُﺒَﻠِّﻐُﻮﻥَ ﻋَﻦْ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﺍﻟﺴَّﻠَﺎﻡَ ." ﻗَﺎﻝَ : ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : " ﺣَﻴَﺎﺗِﻲ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻜَﻢْ ﺗُﺤْﺪِﺛُﻮﻥَ ﻭَﻳُﺤَﺪَﺙُ ﻟَﻜَﻢْ، ﻭَﻭَﻓَﺎﺗِﻲ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻜَﻢْ ﺗُﻌْﺮَﺽُ ﻋَﻠَﻲَّ ﺃَﻋْﻤَﺎﻟُﻜُﻢْ، ﻓَﻤَﺎ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﻣِﻦْ ﺧَﻴْﺮٍ ﺣَﻤَﺪَﺕُ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ، ﻭَﻣَﺎ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﻣِﻦْ ﺷَﺮٍّ ﺍﺳْﺘَﻐْﻔَﺮْﺕُ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻟَﻜَﻢ -
‘‘আমার হায়াত তোমাদের জন্য উত্তম। কেননা আমি তোমাদের সাথে কথা বলি তোমরাও আমার সাথে কথা বলতে পারছ। এমনকি আমার ওফাতও তোমাদের জন্য উত্তম নেয়ামত। কেননা তোমাদের আমল আমার নিকট পেশ করা হয় এবং আমি তা দেখি। যদি তোমাদের কোন ভাল আমল দেখি তাহলে আমি তোমাদের ভাল আমল দেখে আল্লাহর নিকট প্রশংসা করি, আর তোমাদের মন্দ কাজ দেখলে আল্লাহর কাছে তোমাদের জন্য গুনাহ মাফের জন্য (তোমাদের পক্ষ হয়ে) ক্ষমা প্রার্থনা করি।’’
মুসনাদে বাযযারের সনদঃ
ইমাম বাযযার ➡ ইউসুফ বিন মূসা ➡ আবদুল মজিদ বিন আবদুল আজিজ বিন আবি রওয়াদ ➡ ইমাম সুফিয়ান সাওরি ➡ আবদুল্লাহ ইবনে সা’ইব➡ যাধান ➡ আবদুল্লাহ ইবনে মাস'উদ (رضي الله عنه)
তথ্যসূত্রঃ
১. ইমাম হায়সামী (رحمة الله) মাজমাউয জাওয়াইদ, আলামাত আন নুবুউয়াঃ অধ্যায়: হায়াতিহি ওয়া ওয়াফতিহি, 2/884, হাদিস নম্বরঃ 953 ও 9/24, হাদিস: 91,পুস্তকে জানান যে, হাদীসটি আল-বাযযার তাঁর ’মুসনাদ’ গ্রন্থে বর্ণনা করেন এবং এর সকল ’রাবী’ (বর্ণনাকারী) সহীহ (মানে হাদীসটি সহীহ)।
২. ইবনুল ইরাকী, তারহ আল-তাথরিব ফী শারহ,(৩:২৯৭) তাঁর মতে হাদিসটি বিশুদ্ধতা।
৩. ইবনে সা’আদঃ আত-তাবাক্কাত-উল-কুবরা (২:১৯৪), (৫/৫০০)
৪. ইমাম কাজী আয়ায (رحمة الله) ‘আশ-শিফা’ গ্রন্থে (১:১৯)
৫. ইমাম সুয়ুতি, আল হাবি লিল ফাতাওয়া, 2
পৃষ্ঠা: 3
৬. ইমাম সৈয়ুতী (رحمة الله), ‘আল-খাসাইস আল-কুবরা’ (২:২৮১)
৭. ইমাম সৈয়ুতী (رحمة الله),‘মানাহিল-উস-শিফা ফী তাখরিজ-এ-আহাদীস আশ-শেফা’ 31 (# 8) তিনি বিবৃত করেন যে আবূ উসামাহ নিজ ‘মুসনাদ’ পুস্তকে বকর বিন আব্দিল্লাহ মুযানী (رضي الله عنه)-এর সূত্রে এবং আল-বাযযার তাঁর ‘মুসনাদ’ বইয়ে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه)-এর সূত্রে সহীহ সনদে এই হাদীস লিপিবদ্ধ করেন।
৮. খাফাযী স্বরচিত ‘নাসিমুর রিয়াদ’ (১:১০২) ও
৯. মোল্লা আলী কারী তাঁর ‘শরহে শিফা’(১:৩৬) এ হাদিসটি সমর্থন করেন।
১০. মুহাদ্দীস ইবনুল জাওযী এটি বকর বিন আব্দিল্লাহ (رضي الله عنه) ও হযরত আনাস বিন মালেক (رضي الله عنه)-এর সূত্রে "আল ওয়ফা দ্বি আহওয়ালিল মুস্তাফা (ﷺ), পৃষ্ঠা: 862, হাদিস নম্বরঃ 1564
১১. ইমাম তাকিউদ্দীন সুবকী (رحمة الله) নিজ ‘শেফাউস্ সেকাম ফী যেয়ারাতে খায়রিল আনাম’ (৩৪ পৃষ্ঠা) কিতাবে বকর ইবনে আব্দিল্লাহ মুযানী (رضي الله عنه) হতে এ হাদীস নকল করেছেন।
১২. ইবনে আব্দিল হাদী তাঁর ‘আস্ সারিম-উল-মুনকি’ (২৬৬-৭ পৃষ্ঠায়) পুস্তকে হাদিসটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
১৩. ইমাম ইবনে হাজর আসকালানী (رحمة الله) নিজ ‘আল-মাতালিব-উল-আলিয়্যাহ’ (৪:২২-৩ #৩৮৫৩) গ্রন্থে বকর ইবনে আব্দিল্লাহ মুযানী (رضي الله عنه)-এর সূত্রে।
১৪. ইবনে হাজার আসকালানী, তাকরিব ওয়াল তাহযিব, 1/478
১৫. ইমাম ইবনে হাজর আসকালানী, লিসান আল মিজান, 2/পৃষ্ঠা: 395, হাদিস 1620
১৬. আলাউদ্দীন আলী নিজস্ব ‘কানযুল উম্মাল’ পুস্তকে (১১:৪০৭ #৩১৯০৩) ইবনে সাআদের বর্ণিত হাদীসটি উদ্ধৃত করেন এবং হারিস হতেও একটি রওয়ায়াত উদ্ধৃত করেন (# ৩১৯০৪)।
১৭. হাকিম তিরমিযী, নওদীর আল উসুল, 4/পৃষ্ঠা: 176
১৮. ইমাম যাহাবি, মিজান আল ইতিদাল, 2, পৃষ্ঠা: 439
১৯. ইমাম ইবনে আদি, আল কামিল, 3/পৃষ্ঠা: 76
২০. ইমাম আজলুনি, কাশফ আল খিফা, 1/পৃষ্ঠা: 1178
২১. ইমাম সাখাভীঃ আল কাউলুল বদী ফী সালাত আলাল হাবিব আশ শাফী (ﷺ), পৃষ্ঠা: 160
২২. শাশীঃ আল মুসনাদস-শাশী, 2/253 পৃ, হাদিস নম্বর: 826
২৩. আবু হাতিম, আল-জারহ ওয়াত-তাদিল, 6/64 পৃ
২৪. শায়খ শু‘আয়েব আল-আরনা’উত, তাহরির আল-তাকরীব,2/379, হাদিস: 4160
২৫. আল-মুগনি, 1/571, হাদীস: 3793
২৬. ইবনে হিব্বান, কিতাব আল-মাজরুহিন, 2/160।
২৭. কিতাব আল-হজ্ব, পৃষ্ঠা: (# 179)
২৮. ইমাম দায়লামিঃ মুসনাদুল ফিরদুস, 1/183, হাদিস : 686
২৯. ইমাম যাহাবিঃ সিয়ার আল আ'লাম আন নুবালা, 17/পৃষ্ঠা: 106
৩০. ইমাম মিয্যিঃ তাহযিব আল কামাল, 14/পৃষ্ঠা: 558
৩১. ইমাম ইবনে কাসিরঃ তাফসীরে ইবনে কাসীর, 3/ পৃষ্ঠা: 516
৩২. ইমাম ইবনে কাসীরঃ ‘আল-বেদায়া ওয়ান-নেহায়া’ (৪:২৫৭)।
৩৩. ইমাম জুরকানীঃ শরহে মাওহিব, 7/পৃষ্ঠা: 373
৩৪. শায়খ আবদুল্লাহ আল-তালিদি, মানাহিল আল-সাফা ফী তাখরিজ আহাদীছ আশ-শিফা'র তাহযিব, পৃষ্ঠা। 458-459 (# 694)
৩৫. আল-মুনাভি, ফয়জুল কাদির, 3/401
৩৬. তারিখ আল-দাওরি, 2/370
৩৭. আল-বুরকানী, পৃষ্ঠা 317
৩৮. আন হামল আল-আসফার, 4/148
৩৯. মাহমুদ মামদুহ, রাফউল-মিনারাহ’ আন তাখরিজ আহাদীস আল-জিয়ারা, 156-159 পৃ
৪০. জুহদামি, ফাদ্বালুস সালাহ ‘আলান ন্যাবি (ﷺ), ১/৩৮-৩৯, হাদিস নম্বর: 25-26
৪১. ইমাম মুত্তাকী আল হিন্দি, কানজুল উম্মাল, 11/পৃষ্ঠা: 407, হাদিস নম্বরঃ 31904
৪২. ফায়রোজ আবাদী, আস ছালাত ওয়াল বাশার ফিস সালাত আ'লা খায়েরুল বাশার, পৃষ্ঠা: 104-105
৪৩. আল-মুনযিরি, তারগীব ওয়াল-তারাহীব 3: 343
৪৪. ইমাম নাবহানীঃ হুজ্জাতুল্লাহি আলাল আলামিন ফি মু'জাজাতুল মুরসালীন (ﷺ), পৃষ্ঠা: 713
উক্ত হাদিস প্রসঙ্গে ইমাম ইবনে হাজার হাইসামী (رحمة الله) বলেন:
ﺭَﻭَﺍﻩُ ﺍﻟْﺒَﺰَّﺍﺭُ، ﻭَﺭِﺟَﺎﻟُﻪُ ﺭِﺟَﺎﻝُ ﺍﻟﺼَّﺤِﻴﺢِ -
-‘‘উক্ত হাদীসের সমস্ত রাবী বুখারীর সহিহ গ্রন্থের ন্যায়।’’ তাই হাদিসটি সহিহ।
১.বাজ্জার,আল-মুসনাদ,৫/৩০৮পৃ.হাদিস,১৯২৫
২.সুয়ূতি,জামিউস সগীর,১/২৮২পৃ.হাদিস,৩৭৭০-৭১
৩.আল্লামা ইবনে কাছির ,বেদায়া ওয়ান নিহায়া,৪/২৫৭পৃ.
৪. আল্লামা মুত্তাকী হিন্দী,কানযুল উম্মাল,১১/৪০৭পৃ. হাদিস,৩১৯০৩
৫.ইমাম ইবনে জওজী,আল-ওফা বি আহওয়ালি মোস্তফা,২/৮০৯-৮১০পৃ.
৬. আল্লামা ইবনে কাছির,সিরাতে নববিয়্যাহ,৪/৪৫পৃ.
ইমাম ইবনুল হাজ্জ ও ইমাম কুসতালানী (رحمة الله) বলেন:
وَقَدْ قَالَ عُلَمَاءُ نَالَا فَرْقَ بَيْنَ مَوْتِه وَحَيو تِه عَلَيْهِ السَّلَامُ فِىْ مُشَاهِدَ تِه لِاُمَّتِهِ وَمَعرِ فَتِه بِاَحْوَ الِهِمْ وَنِيَّا تِهِمْ وَعَزَائِمِهِمْ وَخَوَاطِرِ هِمْ وَذلِكَ جَلِىٌّ عِنْدَهُ لَاخَفَاءَبِه
আমাদের সু-বিখ্যাত উলামায়ে কিরাম বলেন যে,হুযুর আলাইহিস সালামের জীবন ও ওফাতের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। তিনি নিজ উম্মতকে দেখেন,তাদের অবস্থা, নিয়ত, ইচ্ছা ও মনের কথা ইত্যাদি জানেন। এগুলো তাঁর কাছে সম্পূর্ণরূপে সুস্পষ্ট। কোনরূপ অস্পষ্টতা ও দুর্বোধ্যতার অবকাশ নেই এখানে।
১. ইমাম ইবনুল হাজ্জ مدخل গ্রন্থে
২. ইমাম কুসতালানী (رحمة الله) مواهب (মাওয়াহিব) গ্রন্থের ২য় খণ্ডের ৩৮৭ পৃষ্ঠায় ২য় পরিচ্ছেদে زيارة قبره شريف শীর্ষক বর্ণনা।
❏ ৪. রাসূল (ﷺ) এঁর ওফাত শরীফ ও আমাদের জন্য নেয়ামত স্বরূপ। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) রাসূল (ﷺ) হতে বর্ণনা করেন-
ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻣَﺴْﻌُﻮﺩٍ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ – ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ – ﻗَﺎﻝَ ﺇِﻥَّ ﻟِﻠَّﻪِ ﻣَﻠَﺎﺋِﻜَﺔً ﺳَﻴَّﺎﺣِﻴﻦَ، ﻳُﺒَﻠِّﻐُﻮﻥَ ﻋَﻦْ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﺍﻟﺴَّﻠَﺎﻡَ .” ﻗَﺎﻝَ : ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ” ﺣَﻴَﺎﺗِﻲ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻜَﻢْ ﺗُﺤْﺪِﺛُﻮﻥَ ﻭَﻳُﺤَﺪَﺙُ ﻟَﻜَﻢْ، ﻭَﻭَﻓَﺎﺗِﻲ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻜَﻢْ ﺗُﻌْﺮَﺽُ ﻋَﻠَﻲَّ ﺃَﻋْﻤَﺎﻟُﻜُﻢْ، ﻓَﻤَﺎ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﻣِﻦْ ﺧَﻴْﺮٍ ﺣَﻤَﺪَﺕُ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ، ﻭَﻣَﺎ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﻣِﻦْ ﺷَﺮٍّ ﺍﺳْﺘَﻐْﻔَﺮْﺕُ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻟَﻜَﻢ –
‘‘আঁমার হায়াত তোমাদের জন্য উত্তম। কেননা আঁমি তোমাদের সাথে কথা বলি তোমরা ও আঁমার সাথে কথা বলতে পারছ।এমনকি আঁমার ওফাত ও তোমাদের জন্য উত্তম নেয়ামত।কেননা তোমাদের আমল আঁমার নিকট পেশ করা হয় এবং আঁমি তা দেখি।যদি তোমাদের কোন ভাল আমল দেখি তাহলে আঁমি তোমাদের ভাল আমল দেখে আল্লাহর নিকট প্রশংসা করি,আর তোমাদের মন্দ কাজ দেখলে আল্লাহর কাছে তোমাদের জন্য গুনাহ মাফের জন্য (তোমাদের পক্ষ হয়ে) ক্ষমা প্রার্থনা করি।’’
☞উক্ত হাদিস প্রসঙ্গে ইমাম ইবনে হাযার হাইসামী (রঃ) বলেন:
ﺭَﻭَﺍﻩُ ﺍﻟْﺒَﺰَّﺍﺭُ، ﻭَﺭِﺟَﺎﻟُﻪُ ﺭِﺟَﺎﻝُ ﺍﻟﺼَّﺤِﻴﺢِ –
-‘‘উক্ত হাদীসের সমস্ত রাবী বুখারীর সহিহ গ্রন্থের ন্যায়।’’ তাই হাদিসটি সহিহ।
তথ্যসূত্রঃ
১.বাজ্জার,আল-মুসনাদ,৫/৩০৮পৃ. হাদিস,১৯২৫
২.সুয়ূতি,জামিউস সগীর,১/২৮২পৃ. হাদিস,৩৭৭০-৭১
৩.আল্লামা ইবনে কাছির ,বেদায়া ওয়ান নিহায়া,৪/২৫৭পৃ.
৪. আল্লামা মুত্তাকী হিন্দী,কানযুল উম্মাল,১১/৪০৭পৃ. হাদিস,৩১৯০৩
৫.ইমাম ইবনে জওজী,আল-ওফা বি আহওয়ালি মোস্তফা,২/৮০৯-৮১০পৃ.
৬. আল্লামা ইবনে কাছির,সিরাতে নববিয়্যাহ,৪/৪৫পৃ.
👏ইমাম ইবনুল হাজ্জ ও ইমাম কুস্তালানী (رحمة الله) বলেন:
وَقَدْ قَالَ عُلَمَاءُ نَالَا فَرْقَ بَيْنَ مَوْتِه وَحَيو تِه عَلَيْهِ السَّلَامُ فِىْ مُشَاهِدَ تِه لِاُمَّتِهِ وَمَعرِ فَتِه بِاَحْوَ الِهِمْ وَنِيَّا تِهِمْ وَعَزَائِمِهِمْ وَخَوَاطِرِ هِمْ وَذلِكَ جَلِىٌّ عِنْدَهُ لَاخَفَاءَبِه
আমাদের সু-বিখ্যাত উলামায়ে কিরাম বলেন যে,হুযুর আলাইহিস সালামের জীবন ও ওফাতের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।তিঁনি নিঁজ উম্মতকে দেখেন,তাদের অবস্থা,নিয়ত,ইচ্ছা ও মনের কথা ইত্যাদি জানেন।এগুলো তাঁর কাছে সম্পূর্ণরূপে সুস্পষ্ট। কোনরূপ অস্পষ্টতা ও দুর্বোধ্যতার অবকাশ নেই এখানে।
তথ্যসূত্রঃ
১. ইমাম ইবনুল হাজ্জ مدخل গ্রন্থে
২. ইমাম কুস্তালানী (رحمة الله) مواهب (মাওয়াহিব) গ্রন্থের ২য় খণ্ডের ৩৮৭ পৃষ্ঠায় ২য় পরিচ্ছেদে زيارة قبره شريف শীর্ষক বর্ণনা
লক্ষ্য করুন: উল্লেখিত হাদিসগুলোর শেষে আমরা দেখতে পাই যে,স্পষ্ট করে বলা হয়েছে “তোমাদের কোন পাপ দেখলে তার জন্য আল্লাহর কাছে মাগফেরাত কামনা করব/আর তোমাদের মন্দ কাজ দেখলে আল্লাহর কাছে তোমাদের জন্য গুনাহ মাফের জন্য (তোমাদের পক্ষ হয়ে) ক্ষমা প্রার্থনা করি।’’
❏ তাহলে “মাগফেরাত” কথাটি কার জন্য বসেছে আপনারাই বিবেচনা করুন।কাজেই সকল ক্ষেত্রে মাগফেরাত মানেই এই নয় যে,আমি অন্যায় করলাম,ভুল-ত্রুটি করলাম,গোনাহ করলাম তা নয়।
বিভিন্ন সহিহ হাদিসে আমরা দেখি যে, নবিজী (ﷺ) তাওবা বা ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন বা ইস্তেগফার করেছেন এই কথা সত্য।তবে তার সাথে সাথে এই আকিদা পোষন করতে হবে যে নবিজী (ﷺ) গোনাহ করার নয় বরং উম্মতের গোনাহ মাফের জন্য আল্লাহর দরবারে তাওবা বা ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন বা ইস্তেগফার করেছেন।
❏ সাবধান!আর এর ব্যতিক্রম হলে সাথে সাথে ঈমান চলে যাবে।পাঠকগন আশা করি আপনারা বুজতে পেরেছেন।
☞ তারপর ও আরেকটি জবাব হল নবিজীর মাধ্যমে আল্লাহ আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন কিভাবে তাওবা বা ক্ষমা প্রার্থনা বা ইস্তেগফার করতে হবে? তার মানে এটা মানা যাবে না নবিজী গোনাহ বা ভুল-ত্রুটি করেছেন।(নাউযুবিল্লাহ!)। সাবধান! এরকম কল্পনাও করলে ঈমান থাকবে না।
❏ ৫.আঁমার খাতিরে আল্লাহ্ তায়ালা, আঁমার উম্মাতের অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি ও ভুল ক্ষমা করে দিয়েছেন এবং তার সে কাজ যা সে বাধ্য হয়ে করেছে। ”
[ইবনে মাজাহ্: হাদিস নং-২০৪৫]
❏ ৬. হযরত আবুযর গিফারী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে
عُر ضَتْ عَلَىَّ اَعْمَالُ اُمَّتِىْ حَسَنُهَا وَسَيِّئُهَا فَوَجَدْت فِىْ مَحَاسِنِ اَعْمَالِها الْاَذَى يُمَاطُ عَنِ الطَّرِيْقِ
(আঁমার সামনে আঁমার উম্মতের ভালমন্দ সমূহ পেশ করা হয়েছে। আঁমি তাদের নেক আমল সমূহের মধ্যে রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সমূহ অপসারনের মত পূণ্য কাজও লক্ষ্য করেছি।
[মিশকাত শরীফ :‘মাসাজিদ’ অধ্যায়]
❏ ৭. হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে।রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেছেন:
ﺇﻧّﻰ ﺃﺭﻯ ﻣﺎﻻ ﺗﺮﻭﻥَ ﻭﺃﺳﻤﻊُ ﻣﺎﻻ ﺗﺴﻤﻌﻮﻥَ
আঁমি সেসব কিছু শুনতে পাই যা তোমরা শুনতে পাওনা এবং সেসব কিছু দেখতে পাই যা তোমরা দেখতে পাওনা।
তথ্যসূত্রঃ
(ক.) তিরমিযি -জামেউস সহীহ, আবওয়াবুয যুহুদ ৪/১৪৫,হাদীস ২৩১২
(খ.) ইবনে মাজাহ-আস সুনান ৪/৫০৫
(গ.) কিতাবুয যুহুদ,হাদীস নং ৪১৯০
(ঘ.) মাসনাদু আহমদ ৫/১৭৩
(ঙ.) মাসনাদু বাযযার ৯/৩৫৮,হাদীস নং ৩৯২৫
(চ.) মুস্তাদরাক:২/৫১০,হাদীস নং ৮৬৩৩, ৮৭২৬।
(ছ.) বায়হাকী-সুনানে কুবরা ৭/৫২
(জ.) নাসির উদ্দীন আলবানী; সিলসিলাতুল আহাদীসুস সহীহা ৪/২৯৯, হাদীস নং ১৭২২।
❏ ৮. হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) বলেন-
إن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال هل ترون قبلتى ههنا فوالله ما يخفى على ركوعكم ولاخشوعكم إنى لأراكم من وراء ظهرى (بخارى شريف)
অর্থাৎঃ- “রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন,)তোমরা কি আঁমার মুখ কিবলার দিকেই দেখছ? আল্লাহর কসম! আঁমার কাছে না তোমাদের রুকু লুকায়িত, আর না তোমাদের একাগ্রতা ও নম্রতা।নিশ্চয়ই আঁমি তোমাদেরকে আঁমার পিছন হতেও দেখি।”
[বুখারী শরীফ: ১ম খন্ড, ৫৯ পৃঃ]
❏ ৯. হযরত শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিস দেহলভী(رحمة الله) বলেন- রাসুলে পাক (ﷺ) উম্মতের গুনাহসমুহ,ইমানের স্তরসমুহ,পাপ ও পূণ্য কর্মাদি এবং উম্মতের ভাল চরিত্র ও কপটতা (মুনাফিকি) কে জানেন ও চিনেন।অতত্রব শরিয়তের বিধান অনুযায়ী উম্মতের বেলায় তার সাক্ষ্যদান (উপস্থিতি) গ্রহনযোগ্য ও অবশ্যই পালনীয়।
[তাফসীরে আযীযী: ১ম খন্ড,পৃষ্ঠা-৬৪৬]
❏ ১০. ঈমাম জালাল উদ্দীন সুয়ুতী (رحمة الله) বলেন :
ﺍﻟﻨﻈﺮ ﻓﻲ ﺍﻋﻤﺎﻝ ﺍﻣﺘﻪ ﻭﺍﻻﺳﺘﻐﻔﺎﺭ ﻟﻬﻢ ﻣﻦ ﺍﺳﻴﺌﺎﺕ ﻭﻟﺪﻋﺎﺀ ﺑﻜﺸﻒ ﺍﻟﺒﻼﺀ ﻋﻨﻬﻢ ﻭﻟﺘﺮﺩﺩ ﻓﻲ ﺍﻗﻄﺎﺭ ﺍﻻﺭﺽ ﻭﺍﻟﺒﺮﻛﺔ ﻓﻴﻬﺎ ﻭ ﺣﻀﻮﺭ ﺟﻨﺎﺯﺓ ﻣﻦ ﺻﺎﻟﺤﻲ ﺍﻣﺘﻪ ﻓﺎﻥ ﻫﺬﻩ ﺍﻻﻣﻮﺭ ﻣﻦ ﺍﺷﻐﺎﻟﻪ ﻛﻤﺎﻭﺭﺩﺕ ﺑﺬﺍﻟﻚ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﻭﺍﻻﺛﺎﺭ
উম্মতের বিবিধ কর্ম,তাদের পাপরাশির ক্ষমা প্রার্থনা করা,তাদেরকে বালা মুসিবত থেকে রক্ষা করার জন্য দোআ করা, পৃথিবীর একপ্রান্ত হদে অন্য প্রান্তে আনাগোনা করা ও বরকত দান করা এবং নিজ উম্মতের কোন নেক বান্দাহর ওফাত হলে তার জানাযাতে অংশগ্রহণ করা এগুলো হচ্ছে রাসূল (ﷺ) এঁর সখের কাজ। কোন কোন হাদিস থেকেও এসব কথার সমর্থন পাওয়া যায়।
[ইনতেবাহুল আযকিয়া ফি হায়াতিল আউলিয়া,পৃষ্ঠা: ৭]
❏ ১১. আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত।রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন:
«والذى نفسى بيده لو لم تذنبوا لذهب الله بكم، ولجاء بقوم يذنبون ، فيستغفرون الله ، فيغفرلهم».
“সে সত্তার শপথ! যার হাতে আঁমার প্রাণ। তোমরা যদি গোনাহ না করতে তবে আল্লাহ তোমাদেরকে ধ্বংস করে দিতেন। অতঃপর এমন এক জাতি সৃষ্টি করতেন যারা গোনাহ করতো অতঃপর তারা আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করত এবং আল্লাহ তা‘আলা তাদের ক্ষমা করতেন।”
[সহীহ মুসলিম, কিতাবুত-তাওবাহ বাবু সুকুতিয-যুনুবি বিল-ইসতিগফারি ওয়াত-তাওবাহ, হাদীস নং ২৭৪৯/১১, পৃ. ১১৮৩]
❏ ১২. হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে
حَدَّثَنَا أَبُو الرَّبِيعِ الْعَتَكِيُّ، وَقُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، كِلاَهُمَا عَنْ حَمَّادِ بْنِ زَيْدٍ، – وَاللَّفْظُ لِقُتَيْبَةَ – حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ، عَنْ ثَوْبَانَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِنَّ اللَّهَ زَوَى لِيَ الأَرْضَ فَرَأَيْتُ مَشَارِقَهَا وَمَغَارِبَهَا وَإِنَّ أُمَّتِي سَيَبْلُغُ مُلْكُهَا مَا زُوِيَ لِي مِنْهَا وَأُعْطِيتُ الْكَنْزَيْنِ الأَحْمَرَ وَالأَبْيَضَ وَإِنِّي سَأَلْتُ رَبِّي لأُمَّتِي أَنْ لاَ يُهْلِكَهَا بِسَنَةٍ بِعَامَّةٍ وَأَنْ لاَ يُسَلِّطَ عَلَيْهِمْ عَدُوًّا مِنْ سِوَى أَنْفُسِهِمْ فَيَسْتَبِيحَ بَيْضَتَهُمْ وَإِنَّ رَبِّي قَالَ يَا مُحَمَّدُ إِنِّي إِذَا قَضَيْتُ قَضَاءً فَإِنَّهُ لاَ يُرَدُّ وَإِنِّي أَعْطَيْتُكَ لأُمَّتِكَ أَنْ لاَ أُهْلِكَهُمْ بِسَنَةٍ بِعَامَّةٍ وَأَنْ لاَ أُسَلِّطَ عَلَيْهِمْ عَدُوًّا مِنْ سِوَى أَنْفُسِهِمْ يَسْتَبِيحُ بَيْضَتَهُمْ وَلَوِ اجْتَمَعَ عَلَيْهِمْ مَنْ بِأَقْطَارِهَا – أَوْ قَالَ مَنْ بَيْنَ أَقْطَارِهَا – حَتَّى يَكُونَ بَعْضُهُمْ يُهْلِكُ بَعْضًا وَيَسْبِي بَعْضُهُمْ بَعْضًا ” .
সাওবান (رضي الله عنه) তিনি বলেন,রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা গোটা পৃথিবীকে সংকুচিত করে আঁমার সম্মুখে রেখে দিলেন।অতঃপর আঁমি এর পূর্বপ্রান্ত থেকে পশ্চিমপ্রান্ত পর্যন্ত প্রত্যক্ষ করেছি। পৃথিবীর যে অংশটুকু গুটিয়ে আমার সম্মুখে রাখা হয়েছিল সে পর্যন্ত আঁমার উম্মাতের কর্তৃত্ব পৌঁছবে।আঁমাকে লাল (স্বর্ণ) ও সাদা (রৌপ্য) দু’প্রকারের গুপ্তধন দেয়া হয়েছে।আঁমি আঁমার উম্মাতের জন্য আঁমার রবের কাছে এ দু’আ করেছি,যেন তিঁনি তাদেরকে সাধারণ দুর্ভিক্ষের দ্বারা ধ্বংস না করেন এবং যেন তিঁনি তাদের উপর নিজেদের ছাড়া এমন কোন শত্রুকে চাপিয়ে না দেন যারা তাদের দলকে ভেঙ্গে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দিবে।এ কথা শুনে আঁমার পালনকর্তা বললেন,হে মুহাম্মাদ (ﷺ)! আঁমি যা সিদ্ধান্ত করি তা কখনো পরিবর্তন হয় না,আঁমি আঁপনার দু‘আ কবূল করেছি।আঁমি আঁনার উম্মাতকে সাধারণ দুর্ভিক্ষের দ্বারা ধ্বংস করব না এবং তাদের উপর তাদের নিজেদের ছাড়া অন্য এমন কোন শত্রুকে চাপিয়ে দেব না যারা তাদের সমষ্টিকে বিক্ষিপ্ত ও ধ্বংস করতে সক্ষম হবে। যদিও পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত হতে লোক একত্রিত হয়ে প্রচেষ্টা করে না কেন।তবে মুসলিমগণ নিজের মধ্যে পরস্পর একে অপরকে হত্যা করবে এবং একে অপরকে বন্দী করবে।
(ই.ফা. ৬৯৯৪,ই.সে. ৭০৫১)
[সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৭১৫০।(সহিহ হাদিস)]
লক্ষ্য করুন: উপরে বর্নিত হাদিস সমূহ থেকে আমরা স্পষ্টভাবে দেখতে পাই যে, হাদিস সমূহে বলা হয়েছে-
● আঁমার খাতিরে আল্লাহ্ তায়ালা আঁমার উম্মাতের অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি ও ভুল ক্ষমা করে দিয়েছেন।
● আঁমার সামনে আঁমার উম্মতের ভালমন্দ সমূহ পেশ করা হয়।
● রাসুলে পাক (ﷺ) উম্মতের গুনাহসমুহ,ইমানের স্তরসমুহ,পাপ ও পূণ্য কর্মাদি এবং উম্মতের ভাল চরিত্র ও কপটতা (মুনাফিকি) কে জানেন ও চিনেন।
● উম্মতের বিবিধ কর্ম,তাদের পাপরাশির ক্ষমা প্রার্থনা করা,তাদেরকে বালা মুসিবত থেকে রক্ষা করার জন্য দোআ করা
● তোমরা যদি গোনাহ না করতে তবে আল্লাহ তোমাদেরকে ধ্বংস করে দিতেন।
● আঁমি আঁমার উম্মাতের জন্য আঁমার রবের কাছে এ দু’আ করেছি,যেন তিঁনি তাদেরকে সাধারণ দুর্ভিক্ষের দ্বারা ধ্বংস না করেন এবং যেন তিঁনি তাদের উপর নিজেদের ছাড়া এমন কোন শত্রুকে চাপিয়ে না দেন যারা তাদের দলকে ভেঙ্গে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দিবে।এ কথা শুনে আঁমার পালনকর্তা বললেন,হে মুহাম্মাদ (ﷺ)! আঁমি যা সিদ্ধান্ত করি তা কখনো পরিবর্তন হয় না,আঁমি আঁপনার দু‘আ কবূল করেছি।আঁমি আঁনার উম্মাতকে সাধারণ দুর্ভিক্ষের দ্বারা ধ্বংস করব না এবং তাদের উপর তাদের নিজেদের ছাড়া অন্য এমন কোন শত্রুকে চাপিয়ে দেব না যারা তাদের সমষ্টিকে বিক্ষিপ্ত ও ধ্বংস করতে সক্ষম হবে।
🌹তাহলে এখানেও আমরা বুজতে পারি যে,রাসূল (ﷺ) সম্পূর্ণ নিষ্পাপ এতে ঝাররা পরিমাণও সন্দেহ করার অবকাশ নেই।আর করলে সাথে সাথে ঈমান চলে যাবে।