আদ-দৌলাতুল মাক্কীয়া কিতাব রচনার রহস্যঃ
সালাত ও সালামের পর, আমি পবিত্র মক্কা মােকাররমায় অবস্থানকালে আমার নিকট রাসুলে সরওয়ারে কাউনাইন(ﷺ)-এর জ্ঞান সম্পর্কিত কতেক হিন্দুস্থানীদের পক্ষ থেকে ২৫শে জিলহজ্ব ১৩২৩ হিজরী সােমবার দিবসে আসরের সময় একটি প্রশ্ন উত্থাপিত হলাে। আমার ধারণা ঐ প্রশ্ন সেসব ওহাবীদের উত্থাপিত যারা অন্তর খুলে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে গালি দেয় এবং হিন্দুস্থানে তাদের কিতাবসমূহে প্রচার করে। কেননা, কোন সুন্নীর কোন মাসয়ালার প্রয়ােজন হলে তারা ওলামায়ে কেরাম থেকে জিজ্ঞেস করে নেবেন এটাতাে আল্লাহর নিরাপদ নগর, আল্লাহরই প্রশংসা যে, জ্ঞান ও জ্ঞানী দ্বারা এটা পরিপূর্ণ। যে ব্যক্তি উপচে পড়া সমুদ্রের নিকটে অবস্থান করে, সে একটি নহরের উদ্বৃত্ত অংশের নিকট কেন যাবে? এছাড়াও আমাদের সরদার মক্কা মােকাররমার আলিমবৃন্দ (আল্লাহ তাদের হেফাজত করুন) নবীয়ে করীম (ﷺ) এর জ্ঞানের মাসআলা এবং অন্যান্য যে মাসআলাসমূহে অত্যাচারী ওহাবীরা মতবিরােধ করে, দু’একবার নয়, বারংবার এগুলাে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করে দিয়েছেন এবং মরীচিকা পরিষ্কার করেছেন, সৌন্দর্য প্রদান করেছেন, দোষ-ত্রুটি মিটিয়ে দিয়েছেন এবং ওহাবীদের উপর মৃত্যুঘন্টা বাজিয়েছেন।
এ নগন্য বান্দা আপন শক্তিমান ও সৌন্দর্যময় প্রতিপালকের করুণায় বাপ দাদা তথা পূর্ব-পুরুষদের প্রদর্শিত সুন্নাতের খেদমতে রয়েছি এবং ওহাবীদের উপর কিয়ামত কায়েমরত রয়েছি। (তাদের খন্ডনে) আমি দু’শতেরও বেশী গ্রন্থ রচনা করেছি। আর তাদের গুরুদের দু'-চার বার নয় বরং অনেক বার মুনাজারার দাওয়াত দিয়েছি। কিন্তু তারা কেউ প্রত্যুত্তর দেয়নি, তারা হতভম্বই রয়ে গেছে, বরং এসব ব্যক্তিরা যারা আমাদের প্রিয়নবীর শানে অপবাদ দেয়, আমাদের মহান। “প্রতিপালক মিথ্যা বলতে পারে বলে অপবাদ দেয়। সুতরাং তারা পলায়ন করেছে, ভীত সন্ত্রস্ত হয়েছে, মরে গেছে এবং ধ্বংস হয়েছে। আর যারা অবশিষ্ট আছে তারাও ইনশাআল্লাহ দেখবে যে, কিংকর্তব্যবিমূঢ়, হীন, বােবা ও অজ্ঞান অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে। এসব কথা তাদের ক্রোধান্বিতই করে। তারা জানেন যে, আমি মক্কা শরীফে স্বীয় কিতাবাদি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বায়তুল্লাহর জিয়ারতে মশগুল এবং অতিসত্তর স্বীয় মাওলা হাবীব(ﷺ)-এর শহরের দিকে যাত্রাকারী। এমন এক সময়েই তারা এ প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। তাদের আশা হলাে, তাড়াহুড়া ও ধ্যানমগ্ন অবস্থায় এবং কিতাবাদি থেকে বিচ্ছিন্নতা তাদের উত্তরে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করবে, যা তাদের জন্য ঈদ ও আনন্দে পর্যবসিত হবে। আর ঐ মুসিবত যা তাদের উপর পড়েছিলাে এর এক রকম বদলাই হয়ে যাবে যে, আমিও একবার নিশ্ৰুপ থাকতে বাধ্য হবাে। যেভাবে আমি তাদের গুরুদের, হাজার বার নিশ্ৰুপ করে দিয়েছি। কিন্তু জানেনি যে, এ শক্ত দ্বীন নিরাপত্তায় রয়েছে। যে কেউ এর সাহায্যে করবে, সে সাহায্যপ্রাপ্ত ও নিরাপদ থাকবে। আল্লাহর কর্ম এমনই যে, যখন তিনি কোন কর্ম করার ইচ্ছে করেন, বলেন, হয়ে যাও, তৎক্ষণাৎ তা হয়ে যায়। সুতরাং ঐ প্রশ্ন থেকে যা আমি অনুভব করেছি তা- এটাই। সত্য ও প্রকৃত জ্ঞানতাে আল্লাহরই নিকট।
অতএব ভাল হয়, জবাবকে দুইভাগে বিভক্ত করলে। একভাগ প্রশ্নকর্তার জন্য, যে উপকারিতা হাসিল করতে চায়। আর দ্বিতীয় ভাগ হলাে সেই গোঁয়ার . আক্রমনকারীর জন্য। যেন প্রত্যেকের নিকট তাই পৌছে, যার সে উপযােগী। আর প্রত্যেককে এমন উত্তর প্রদান করা হবে, যে যার যােগ্য।
প্রথম ভাগ
• এ মাসআলায় হকের চেহারা থেকে পর্দা দুরীভূত করার বর্ণনা রয়েছে। আর এ অধ্যায়ে কয়েকটি নজর (পরিচ্ছেদ) রয়েছে যেন বুদ্ধির অধিকারীরা মূলবস্তু সহজে খুঁজে নিতে পারেন।