16 - بَابُ مَا جَاءَ فِي بِئْسَ البْيْتِ الْـحَمَّامِ
76 - أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : «بِئْسَ الْبَيْتُ الْـحَمَّامُ، هُوَ بَيْتٌ لَا يَسْتُرُ، وَمَاءٌ لَا يُطَهِّرُ».
বাব নং ৩১.১৬. গোসলখানা সবচেয়ে খারাপ স্থান
৭৬. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা আতা থেকে, তিনি হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) থেকে, বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) এরশাদ করেন, গোসলখানা সবচেয়ে নিকৃষ্ট স্থান। এটি এমন স্থান যেখানে পর্দাহীনতা রয়েছে এবং যেখানকার পানি অপবিত্র। (প্রাগুক্ত, ৪০/২৯৩/৪৪৯৬১)
পূর্বে আরব দেশে ক্ষুদ্র পরিসরের গোসলখানার প্রচলন ছিল। লোকজন উলঙ্গ হয়ে এর থেকে পানি নিয়ে গোসল করত। পানি নাপাক হয়ে যেত। তাই গোসলখানাকে নিকৃষ্টস্থান বলা হয়েছে। যদি গোসলখানায় পবিত্র পানির ব্যবস্থা করা যায় এবং গুপ্তস্থান খুলে না যায় অর্থাৎ যদি পর্দার ব্যবস্থা থাকে তবে গোসলখানা ব্যবহারে কোন অসুবিধা নেই।
১৭ - بَابُ مَا جَاءَ فِي فَرْكِ الْـمَنِيِّ
৭৭ - أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ حَمَّادٍ، عَنْ إِبْرَاهِيْمَ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ الْـحَرْثِ، عَنْ عَائِشَةَ : كُنْتُ أَفْرُكُ الْـمَنِيَّ مِنْ ثَوْبِ رَسُوْلِ اللهِ .
বাব নং ৩২. ১৭. কাপড় থেকে বীর্য খুঁটে ফেলা
৭৭. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা হাম্মাদ থেকে, তিনি ইব্রাহীম থেকে, তিনি হাম্মাম ইবনে হারিস থেকে, তিনি হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি রাসূল (ﷺ) ’র কাপড় থেকে বীর্য খুঁটে পরিস্কার করে দিয়েছি। (আবু দাউদ, ১/১৪৩/৩৭২)
৭৮ - أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ حَمَّادٍ، عَنْ إِبْرَاهِيْمَ، عَنْ هَمَّامٍ، أَنَّ رَجُلًا أَضَافَتْهُ عَائِشَةُ أُمُّ الْـمُؤْمِنِيْنَ، فَأَرْسَلَتْ إِلَيْهِ بِمِلْحَفَةٍ، فَالْتَحَفَ بِهَا اللَّيْلَ فَأَصَابَتْهُ جَنَابَةٌ، فَغَسَلَ الْـمِلْحَفَةَ كُلَّهَا، فَقَالَتْ: مَا أَرَادَ بِغَسْلِ الْـمِلْحَفَةِ، إِنَّمَا كَانَ يُجْزِيْهِ أَنْ يَفْرُكَهُ لَقَدْ كُنْتُ أَفْرُكُ مِنْ ثَوْبِ رَسُوْلِ اللهِ ، ثُمَّ يُصَلِّيْ مَعَهُ.
৭৮. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা হাম্মাদ থেকে, তিনি ইব্রাহীম থেকে, তিনি হাম্মাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা (رضي الله عنه)’র বাড়ীতে মেহমান হল। তার জন্য তিনি একটি লেপ পাঠালেন। রাতে সে এটা বিছায়ে অথবা গায়ে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। ঐ সময় তার স্বপ্নদোষ হয়ে গেল। সে সম্পূর্ণ লেপটি ধুয়ে দেয়। হযরত আয়েশা বললেন পুরো লেপটি কেন ধৌত করলে। এটা (শুকানোর পর) খুঁটে ফেললেই তো যথেষ্ট হতো। আমি রাসূল (ﷺ) ’র কাপড় থেকে খুঁটে বীর্য পরিস্কার করে দিয়েছি এরপর এ কাপড়ে তিনি নামায আদায় করেছেন।
ব্যাখ্যা: বীর্য পবিত্র না অপবিত্র এ নিয়ে সাহাবায়ে কেরামের যুগ থেকে মতবিরোধ পরিলক্ষিত হয়। সাহাবাগণের মধ্যে ইবনে ওমর, ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) এবং ইমামগণের মধ্যে ইমাম শাফেঈ ও ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (رحمة الله)’র মতে বীর্য পাক।
➥ ইমাম নববী, শরহে মুসলিম, খন্ড ১ম, পৃষ্ঠাঃ ১৫০
পক্ষান্তরে সাহাবাগণের মধ্যে হযরত ওমর, সা’দ ইবনে আবি ওয়াককাস, হযরত আয়েশা, আবু হুরাইয়া, আনাস (رضي الله عنه) প্রমুখ এবং ইমামগণের মধ্যে সুফিয়ান সওরী, আওযাঈ, ইমাম আবু হানিফা ও ইমাম মালেক (رحمة الله)’র মতে বীর্য সাধারণত নাপাক। বীর্য থেকে পবিত্রতা অর্জনের ব্যাপারে ইমাম মালিক ও ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله)’র মধ্যে সামান্য মতপার্থক্য রয়েছে। ইমাম মালিক বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত বীর্য ধৌত করা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কাপড় পাক হবেনা। ইমাম আবু হানিফা বলেন, শুষ্ক বীর্য খুঁটে ফেলে দিলেই কাপড় পাক হয়ে যায়। কিন্তু আর্দ্রতা ও তরল বীর্য ধৌত করা ব্যতীত কাপড় পবিত্র হবেনা।
ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله) সহীহ আবু আওয়ানায় হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত হাদিস দ্বারা দলীল পেশ করেন। হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) বলেন, বীর্য শুষ্ক হলে আমি রাসূল (ﷺ) ’র কাপড় থেকে তা খুঁটে পরিস্কার করে দিতাম আর আর্দ্র হলে তা ধুয়ে দিতাম। মুসলিম শরীফের বর্ণনায়ও আছে, হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) বলেন, রাসূল (ﷺ) নিজে বীর্য ধৌত করতেন এরপর সে কাপড় পরিধান করে নামাযের জন্য মসজিদে চলে যেতেন, তখন কাপড়ে আমি ধৌত করার চিহ্ন দেখতে পেতাম। এ’তে বীর্য নাপাক হওয়া প্রমাণিত হয়।
যুক্তিগত দলীল হল পেশাব, রক্ত ও মজি বের হলে শুধু উযূ করতে হয় গোসল করতে হয় না। পক্ষান্তরে বীর্যপাত হলে গোসল ওয়াজিব হয়।
ইমাম শাফেঈ বীর্য পাক হওয়ার পক্ষে যুক্তিগত দলীল পেশ করতে গিয়ে কিতাবুল উম্ম গ্রন্থে বলেন- বীর্য থেকে আম্বিয়ায়ে কেরামগণের ন্যায় পবিত্র ব্যক্তিগণ সৃষ্টি হয়। সুতরাং বীর্যকে কিভাবে নাপাক বলা যাবে? উত্তরে আমরা বলবো বীর্য থেকে আবু জেহেল ও আবু লাহাবের মত কাফেরও তো সৃষ্টি হয়েছে এর কি উত্তর হবে? নাপাক বস্তু থেকে পবিত্র বস্তু সৃষ্টি করা এটা আল্লাহর কুদরতের বহিঃপ্রকাশ। অতএব হানাফী মাযহাবই দলীল সম্মত ও যুক্তিযুক্ত।