যবেহ করার বর্ণনা



মাসআলাঃ মাছ ব্যতীত যত প্রাণী খাওয়া যায় উহা হালাল হওয়ার জন্য যবেহ শর্ত। যবেহ দু’ধরনের, একটি হল- ইখতিয়ারী (ইচ্ছাধীন বা আয়ত্বধীন) অপরটি ইদত্বিরারী (অক্ষমতা)।


অতএব যবহে ইদত্বিবারী বলা হয়- যবেহ করার স্থানে কোন ওযরের দরুণ যবেহ করতে সক্ষম না হওয়া যেমন- কোন প্রাণী দেয়াল বা মাটির নীচে এমনভাবে নিপতিত হয়েছে যে, উহার ঘাড় ও কন্ঠনালী মাটির নীচে। অথবা কোন বন্যপ্রাণী যেগুলি মানুষ দেখলে পালায় যেমন হরিণ ইত্যাদি- তাহলে ঐ অবস্থায় প্রাণীর শরীরে কোন স্থানে আঘাত করতে পারে তাহলে উহা খাওয়া হালাল হবে।


মাসআলাঃ যবহে ইখতিয়ারী বলা হয়: যবেহ এর স্থানে যবেহ করতে সক্ষম হওয়া। সুতরাং যবেহ এর স্থান হল- চিবুকের নীচে যে হাড্ডি বাইরে বের হয়েছে, উহার নীচে। আর যা থেকে সীনা শুরু হয়েছে উহার উপরে। হিদায়া, জামিউর রুমোয এবং জামে সগীর গ্রন্থে লেখা আছে যে, সমস্ত কন্ঠনালী যবেহ এর স্থান, উপরে হোক বা নীচে হোক বা মধ্যখানে হোক।


মাসআলাঃ যবেহ করার সময় যে সমস্ত রগ কাটা জরুরী উহা চারটি রগ- 


(১) হলকূম: উহা থেকে শ্বাস বের হয়। 


(২) মুররী: উহা এমন একটি রগ যা পাকস্থলীর মাথা থেকে কন্ঠণালীর সাথে সংযুক্ত, এ রগ দিয়ে ঘাস ও পানি পেটে প্রবেশ করে।


(৩ ও ৪) ওয়াদজান: উহা হল দু’টি রগ যা কন্ঠনালীর দু’পাশে অবস্থিত, উক্ত রগ দিয়ে রক্ত আসা-যাওয়া করে।


মাসআলাঃ হলকূম, মুররী ও একটি ওয়াদজান রগ কাটালে প্রাণী খাওয়া হালাল হয়।


মাসআলাঃ যবেহ করার দরুণ যদি রক্ত বের না হয় এবং নাড়াচড়াও না করে কিন্তু যবেহ এর সময় এতটুকু অনুভব হয়েছে যে, উক্ত প্রাণী জীবিত তা হলে উহা খাওয়া জায়েয আছে। আর যদি যবেহ এর সময় উক্ত প্রাণী জীবিত থাকা অনুভব না হয়, তাহলে রক্ত বের হওয়া কিংবা নাড়াচড়া করা হালাল হওয়ার জন্য শর্ত। আর কতিপয় ওলামার মতে সর্বাবস্থায় রক্ত বের হওয়া শর্ত অর্থাৎ- যবেহ করার সময় উক্ত প্রাণী জীবিত থাকা অনুভব হোক বা না হোক যবেহ করার সময় কিন্তু রক্ত বের হতে হবে।  ১৭০

➥১৭০. জামিউর রুমূয।

 

মাসআলাঃ চিবুকের নীচে যে বিত্ত বের হয়েছে উহার উপরে যবেহ করা শুদ্ধ নয়- এটা অধিকাংশ ওলামায়ে কিরামের অভিমত।


মাসআলাঃ আল্লাহ তায়ালার নামের সাথে অন্য কারো নাম যুক্ত করে যবেহ করা হারাম।


মাসআলাঃ যদি কেউ যবেহ এর সময় বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবর আল্লাহুম্মা তাক্বাব্বাল মিন ফুলানিন (ফুলানিন এর স্থানে) কোরবানীর ক্ষেত্রে অংশীদারগণের নাম নেয়া সুন্নাত।

Top