বিষয় নং-৮: যে বস্তকে যে ভালবাসে,  তাকে সে অধিক স্মরণ করে:


আহলে হাদিস আলবানী তার “দ্বঈফু জামে” গ্রন্থের হাদিস নং ৫৩৪৭ এ উক্ত হাদিসকে দ্বঈফ বলে উড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন। 


عن عائشة رضى الله تعالى عنها مرفوعا: مَنْ أَحَبَّ شَيْئاً أَكْثَرَ مِنْ ذِكْرِهِ


 -‘‘হযরত আয়েশা (রা.) হতে মারফূ সূত্রে বর্ণিত।  হুযূর (ﷺ) ইরশাদ করেন, যে বস্তুর প্রতি যার ভালবাসা হয় সে তারই অধিক (যিকর) স্মরণ করে থাকে।’’ ৩২

➥৩২. 

(১) ইমাম বায়হাকীঃ দালায়েলুল নবুয়াতঃ ২/৪৯ পৃঃ 

(২) ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতীঃ জামেউস সগীরঃ ২/৬০৬পৃ, হাদিসঃ ৮৩১২ 

(৩) মুত্তাকী হিন্দীঃ কানযুল উম্মালঃ ১/৪২৫ পৃঃ হাদিস: ১৮২৯ 

(৪) আল্লামা কাস্তাল্লানীঃ মাওয়াহেবে লাদুন্নিয়াঃ ২/৬১৫ পৃঃ এবং ২/৬৩৭ পৃঃ 

(৫) ইমাম জুরকানীঃ শরহুল মাওয়াহেবঃ ৯/৬৯ পৃঃ 

(৬) আহলে হাদিস নাসিরুদ্দীন আলবানীঃ দ্বইফুল জামেঃ হাদিস নং ৫৩৪৭ 

(৭) ইমাম কাযী আয়াযঃ শিফা শরীফঃ ২/১১ পৃঃ 

(৮) আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারীঃ শরহে শিফা, ১/৪৫৯ পৃঃ এবং ২/৪৭ পৃঃ 

(৯) আল্লামা শফী উকাড়ভীঃ যিকরে জামীলঃ ২২ পৃঃ 

(১০) আল্লামা আযলুনী: কাশফুল খাফাঃ ২/১৯৮ পৃঃ হা/২৩৫০ 

(১১) ইমাম সুয়ূতি, মানাহিলুল সাফা : ১/১৮৪ পৃঃ হাদিস: ৯৬৫

(১২) শায়খ ইউসূফ নাবহানী : ফতহুল কাবীর : ৩/১৪০পৃঃ হা/১১২৪৬ 

(১৩) সূয়ূতী,  আল-র্দুরুল মুনতাসিরাহ, ১/১৭৯ পৃঃ হা/৩৭৩ 

(১৪) সাখাভী, মাকাসিদুল হাসানা : ১/৬১৯ পৃঃ হা/১০৪৯ 

(১৫) যারকশী, তাযকিরা ফি আহাদিসুল মুসতাহিরা: ১/১১৫পৃ, 

(১৬) আবুল আশবাল, শরহে সহীহ মুসলিম : ৪৯/২০ পৃঃ 

(১৭) বুকরী, দালিলুল ফালিহীন শরহে রিয়াযুস সালেহীন : ৩/১৯২ পৃঃ 

(১৮) মোবারকপুরী, মার‘আতুল মাফাতিহ : ৭/২০২ পৃঃ 

(১৯) মানাভী, ফয়যুল কাদীর, ৪/৩২০ পৃঃ হাদিস: ৫৪৫০ এবং ৬/৮৩ পৃঃ: ৮৫০৯ এবং ৬/৩০ পৃঃ হা/৮৩১২ 

(২০) মোল্লা আলী ক্বারী : মিরকাত, ৪/১৪৬৬ পৃঃ হা/২১২৯ 

(২১) মোল্লা আলী ক্বারী, মিরকাত, ৮/৩১৩৪ পৃঃ হাদিস: ৫০০৭ 

(২২) মোল্লা আলী ক্বারী : মিরকাত, ৯/৩৭২২ পৃঃ হা/৫৮৩৩ 

(২৩) শাফূরী, মাযালিসুল-ওয়ায়েযিয়্যাত, ১/৪১০ পৃঃ 

(২৪) ইমাম ইরাকী, শরহে ত্বাকরীব, ৮/২৭২ পৃঃ 

(২৫) মুগালাতি, শরহে সুনানে ইবনে মাজাহ, ১/১৫৪১ পৃঃ 

(২৬) ইয়াকুব কালাবাজী, বাহরুল ফাওয়াইদ, ১/২৩ পৃঃ 

(২৭) যারকশী, শরহে মুস্তফা, ১/২৮ পৃঃ ও ১/৮৭ পৃঃ 

(২৮) শায়খ ইউসূফ নাবহানী, ওসায়েল: ১/৩১৮ পৃঃ হাদিস,  ২১৮, ও ৪/৩২ পৃঃ 

(২৯) খলিল বিন আলী তায়মী, হুকুকুন্নবী (ﷺ), ১/৩৮২ পৃঃ


সনদ পর্যালোচনা:


আল্লামা আজলূনী (رحمة الله) এবং মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) এ হাদিস উল্লেখ করে কোনো সমালোচনা করেননি, বরং তাঁরা লিখেছেন-


رواه ابو نعيم و الديلمى عن عائشة رضى الله تعالى عنها مرفوعا


-‘‘উক্ত হাদিসটি ইমাম আবু নুয়াইম ও ইমাম দায়লামী  হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) হতে মারফূ সূত্রে বর্ণনা করেছেন।’’ ৩৩

➥৩৩. আল্লামা আজলূনী: কাশফুল খাফাঃ ২/১৯৮ পৃ, হা/২৩৫০, মোল্লা আলী ক্বারী, শরহে শিফা, ২/৪৭ পৃঃ


তবে আল্লামা জুরকানী (رحمة الله) সনদ সূত্র এভাবে উল্লেখ করেন-


رواه أبو نعيم، ثم الديلمي من طريق مقاتل بن حيان، عند داود بن أبي هند، عن الشعبي، عن عائشة، عن النبي صلى الله عليه وسلم: من أحب شيئًا أكثر من ذكره


-‘‘হাদিসটি ইমাম আবু নুয়াইম (رحمة الله) বর্ণনা করেছেন, ইমাম দায়লামী (رحمة الله) এ হাদিসটি মুকাতিল ইবনে হায়্যান হতে তিনি দাউদ বিন আবি হিন্দ হতে তিনি তাবেয়ী শা‘বী (رحمة الله) হতে তিনি মা আয়েশা (رضي الله عنه) হতে, তিনি রাসূল (ﷺ) হতে বর্ণনা করেন............।’’ (ইমাম জুরকানী, শারহুল মাওয়াহিব, ৯/৬৯ পৃ.) 


এ সনদে সকলেই সিকাহ শুধু ‘মুকাতিল ইবনে হায়্যান’ ছাড়া, তিনি সত্যবাদী, তবে হাদিস বর্ণনায় কিছুটা নরম প্রকৃতির। উক্ত রাবীর বিষয়ে আমি ইতোপূর্বে আরেকটি হাদিসের পর্যালোচনায় উল্লেখ করেছি। আহলে হাদিস আলবানী এ রাবীকে কেন্দ্র করে এটিকে যঈফ বলেছেন। 


তার জীবনীতে আল্লামা ইবনে কাসির (رحمة الله) উল্লেখ করেছেন-


وقال الأزدي : كان وكيع ينسبه إلى الكذب، قال: ولعله التبس عليه بمقاتل بن سليمان، فإن مقاتل بن حيان صدوق، قوي الحديث


-‘‘মুহাদ্দিস আযদী (رحمة الله) বলেন, ইমাম ওয়াকী (رحمة الله) তাকে মিথ্যাবাদী হওয়ার প্রতি সম্পৃক্ত করেছেন, আযদী বলেন, এর দ্বারা তিনি রাবী মুকাতিল ইবনে সুলাইমানকে বুঝিয়েছেন, কেননা ‘মুকাতিল ইবনে হায়্যান’ সত্যবাদি এবং হাদিসে শক্তিশালী।’’ (ইবনে কাসির, তাকমীল ফি জারহু ওয়া তা‘দীল, ১/১৬০ পৃ. ক্রমিক.২০০) 


তিনি আরও উল্লেখ করেছেন-


قال مروان الطَّاطَري، وابن معين، وأبو داود: ثقة. وقال النَّسائيُّ: ليس به بأس. وذكره ابن حبان في الثقات. وقال الدارقطني: صالح.


-‘‘মুহাদ্দিস মারওয়ার তাতারী, ইবনে মাঈন এবং আবূ দাউদ (رحمة الله) বলেন, তিনি সিকাহ বা বিশ্বস্ত। ইমাম নাসাঈ (رحمة الله) বলেন, তার হাদিস গ্রহণ করতে কোনো অসুবিধা নেই। ইমাম ইবনে হিব্বান (رحمة الله) তাকে সিকাহ রাবীর তালিকায় স্থান দিয়েছেন, ইমাম দারাকুতনী (رحمة الله) বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সৎ ব্যক্তি।’’ (ইবনে কাসির, তাকমীল ফি জারহু ওয়া তা‘দীল, ১/১৫৯ পৃ. ক্রমিক.২০০)


তাহলে বুঝা গেল, আলবানী এ রাবীর বিষয়ে মনগড়া তাহকীক করে একে যঈফ বলেছেন।

Top