কর্মগত সমমর্যাদা


আল্লাহ তা‘আলা নারী ও পুরুষের মধ্যে কর্ম ও কর্তব্যবোধে কোন তারতম্য রাখেন নি। প্রত্যেক নিজ নিজ যোগ্যতানুসারে কর্ম, কর্তব্য ও ইবাদত পালনে সমানভাবে বাধ্য। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-

 كُلُّ نَفْسٍ بِمَا كَسَبَتْ رَهِينَةٌ

প্রত্যেক ব্যক্তি তার কৃতকর্মের জন্য দায়ী। ২৪

২৪.সূরা মুদ্দাসসির, আয়াত: ৩৮

 

অর্থাৎ নারী-পুরুষ প্রত্যেকের উপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে কিয়ামত দিবসে জিজ্ঞাসিত হবে। দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের জন্য পুরস্কৃত এবং অবহেলার জন্য তিরস্কৃত ও শাস্তি ভোগ করতে হবে।


আল্লাহ তা‘আলাও নারী হোক কিংবা পুরুষ হোক কারো আমল বিফল করেন না বরং উভয়ের আমলের মূল্য ও প্রতিদান আল্লাহর কাছে সমান। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে-

 فَاسْتَجَابَ لَهُمْ رَبُّهُمْ أَنِّي لَا أُضِيعُ عَمَلَ عَامِلٍ مِنْكُمْ مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى بَعْضُكُمْ مِنْ بَعْضٍ 

অতঃপর তাদের প্রতিপালক তাদের আহবানে সাড়া দিলেন (আর বললেন) আমি তোমার মধ্যে কোন কর্মনিষ্ঠ নর বা নারীর কর্মকে বিফল করিনা, তোমরা পরস্পর পরস্পরের অংশ বিশেষ। ২৫

২৫.সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৯৫


অর্থাৎ আমল কবুল হওয়ার দিক দিয়ে এবং এর প্রতিদান পাওয়ার ক্ষেত্রে নর-নারী আল্লাহর নিকট একসমান।


আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-

 وَمَنْ يَعْمَلْ مِنَ الصَّالِحَاتِ مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَأُولَئِكَ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ وَلَا يُظْلَمُونَ نَقِيرً 

আর পুরুষ কিংবা নারী যে কোন মু’মিন কোন ভাল কাজ করবে, তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রতি বিন্দু পরিমান অন্যায় করা হবেনা। ২৬

২৬.সূরা নিসা, আয়াত: ১২৪

 

অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-

 مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُمْ بِأَحْسَنِ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ 

নর হোক কিংবা নারী হোক যে কেউ মু’মিন অবস্থায় ভাল কাজ করবে, তবে তাকে আমি অবশ্যই উন্নত ও পবিত্র জীবন-যাপনের ব্যবস্থা করবো এবং অবশ্যই আমি তাদের উত্তম কৃতকর্মের প্রতিদান দান করবো।


সুতরাং কর্ম ও কর্তব্যবোধ এবং প্রতিদান পাওয়ার ক্ষেত্রে ইসলাম নারী-পুরুষকে সমান মর্যাদায় আসীন করেছে।


আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-

 إِنَّ الْمُسْلِمِينَ وَالْمُسْلِمَاتِ وَالْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَالْقَانِتِينَ وَالْقَانِتَاتِ وَالصَّادِقِينَ وَالصَّادِقَاتِ وَالصَّابِرِينَ وَالصَّابِرَاتِ وَالْخَاشِعِينَ وَالْخَاشِعَاتِ وَالْمُتَصَدِّقِينَ وَالْمُتَصَدِّقَاتِ وَالصَّائِمِينَ وَالصَّائِمَاتِ وَالْحَافِظِينَ فُرُوجَهُمْ وَالْحَافِظَاتِ وَالذَّاكِرِينَ اللهَ كَثِيرًا وَالذَّاكِرَاتِ أَعَدَّ اللَّهُ لَهُمْ مَغْفِرَةً وَأَجْرًا عَظِيمًا 

নিশ্চয় মুসলমান পুরুষ ও মুসলমান নারী, মু’মিন পুরুষ ও মু’মিন নারী, অনুগত পুরুষ ও অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদী নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও ধৈর্যশীল নারী, বিনীত পুরুষ ও বিনীত নারী, দানশীল পুরুষ ও দানশীল নারী, রোযা পালনকারী পুরুষ ও রোযা পালনকারী নারী, যৌনাঙ্গ হেফাযতকারী পুরুষ ও যৌনাঙ্গ হিফাযতকারী নারী, আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী নারী তাদের সকলের জন্যে আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমা ও মহান প্রতিদান প্রস্তুত রেখেছেন। ২৭

২৭.সূরা আহযাব, আয়াত: ৩৫


এখানে পুরুষের জন্য কোন পৃথক কিংবা উন্নতমানের আর নারীর জন্য নিম্নমানের প্রতিদানের কথা উল্লেখ নেই বরং উভয়ের ক্ষেত্রে সমান প্রতিদানের কথা বর্ণিত হয়েছে। এরূপ আরো আয়াতে এ ধরণের সমতা ও মর্যাদার কথা উল্লেখিত হয়েছে।

Top