(ইলমে গায়বের সমর্থনে যুক্তিনির্ভর প্রমাণসমূহ ও
আওলিয়া কিরামের ইলমে গায়বের বর্ণনা।)
কতেকগুলো যুক্তিসঙ্গত তথ্যাবলী থেকেও পূর্বাপর যাবতীয়مَاكَانَ وَمَايَكَوْنُ বিষয়ের জ্ঞানের যৌক্তিকতা প্রমাণিত হয়। সে সমস্ত দলীলপ্রমাণ নিম্নে দেয়া গেল।
(১) হুযুর সায়্যিদুল আলম (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) হলেন খোদার রাজত্বের উযীরে আ’যম তথা ‘খলীফায়ে আযম’। হযরত আদম (আলাইহিস সালাম) কে আল্লাহর ‘খলীফা’ মনোনীত করা হয়েছিল। তাহলে নিঃসন্দেহে হুযুর আলাইহিস সালাম সেই রাজত্বের ‘খলীফায়ে আযম’ এবং পৃথিবীতে বিশ্বনিয়ন্তার প্রতিনিধি। রাজ্যে নিযুক্ত শাসকের দু’টো গুণ থাকা আবশ্যক- এক, জ্ঞান, দুই, ইখতিয়ার বা কাজ করার স্বাধীনতা। এ পার্থিব রাজত্বের শাসকগণ যতবড় পদমর্যাদার অধিকারী হন, সে অনুপাতে তাদের জ্ঞান কর্মক্ষমতাও বেশী থাকে। কালেকটর বা জিলা প্রশাসকের সম্পূর্ণ জিলা সম্পর্কে জ্ঞান ও সমগ্র জিলার নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন। ভাই সরয় বা গভর্নরের সমগ্র দেশের জ্ঞান ও অধিকার প্রয়োগের ক্ষমতা থাকা জরুরী। কেননা এ দু’টি গুণ ব্যতীত তিনি শাসন করতে পারেন না, রাজকীয় ফরমানও প্রজাদের মধ্যে জারী করতে পারবেন না। অনুরূপ, নবীগণের মধ্যে যার যতবড় পদমর্যাদা রয়েছে, তাঁর সে অনুপাতে জ্ঞান ও ক্ষমতা রয়েছে। মহাপ্রভু আল্লাহ আদম (আলাইহিস সালাম) এর খেলাফত প্রমাণ করেছেন, তাঁর জ্ঞানেরই ফলশ্রুতি রূপে। অর্থাৎ আদম (আলাইহিস সালাম) কে এত ব্যাপক জ্ঞান দান করেছেন, যা’ আল্লাহর প্রতিনিধিত্বের সহিত সঙ্গতিপূর্ণ। আর ফিরিশতাগণের দ্বারা সিজদা করানো, তাঁর বিশেষ ক্ষমতার প্রমাণবহ। ফিরিশতাগণও তাঁর কাছে মাথা নত করেছেন। অতএব, নবী করীম আলাইহিস সালাম যেহেতু সমগ্র সৃষ্টি জগতের নবী এবং আসমান যমীনের সমস্ত লোক তাঁর উম্মত, সেহেতু তাঁকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) অন্যান্য সমস্ত নবীগণের তুলনায় বেশী জ্ঞান ও ক্ষমতা দেয়ার প্রয়োজন ছিল। এজন্যই তাঁর থেকে অনেক মুজিযা’ প্রকাশ পেয়েছে। যেমন তিনি আঙ্গুলের ইঙ্গিতেই চন্দ্রকে দ্বিখন্ডিত করেছেন। ডুবন্ত সূর্যকে ফিরিয়ে এনেছেন, মেঘকে নির্দেশ দেওয়ার সাথে সাতে পানি বর্ষণ করেছে, আবার সেই মেঘ খন্ডকে হুকুম করার সাথে সাথে বর্ষণ বন্ধ হয়ে গেছে। এগুলো হলো তাঁর খোদা প্রদত্ত ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ।
(২) মৌলভী কাসেম নানুতবী সাহেব ‘তাহযীরুন নাস’ কিতাবে লিখেছেন ‘নবীগণ জ্ঞানের দিক দিয়ে উম্মত থেকে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হয়ে থাকেন, আর বাহ্যিকভাবে আমলের দিক দিয়ে অনেক সময় উম্মত নবীকেও অতিক্রম করে যায়” এতে বোঝা গেল যে আমলের ক্ষেত্রে উম্মত নবীকে অতিক্রম করতে পারে, কিন্তু জ্ঞানের দিক থেকে নবীর জ্ঞান অপেক্ষাকৃত বেশী হওয়া প্রয়োজন। হুযুর আলাইহিস সালামের উম্মতের মধ্যে ফিরিশতাওঅন্তভুর্ক্ত।
কুরআনেই বলা হয়েছে-
لِيكَوْنَ لِلْعُلَمِيْنَ نَذِيْرًا
(যাতে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) সমস্ত জগৎবাসীদের জন্য ভীতি প্রদর্শনকারী হন।)
{সূরাঃ ফুরকান, আয়াতঃ ১, পারাঃ ১৮}
তাহলে নিঃসন্দেহে হুযুর আলাইহিস সালামের জ্ঞান ফিরিশতাগণের তুলনায় বেশী হওয়া প্রয়োজন। অন্যথায়, কোন গুণের দিক দিয়ে হুযুর আলাইহিস সালাম উম্মত থেকে শ্রেষ্ঠ হবেন? লওহে মাহফুজের দায়িত্বে নিযুক্ত ফিরিশতাগণেরতো যা কিছু হয়েছে ও হবে مَاكَانَ وَمَايَكَوْنُ সে সব কিছুর জ্ঞান রয়েছে। সুতরাং হুযুর আলাইহিস সালামের আরও অধিক জ্ঞানের অধিকারী হওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।
(৩) কয়েক বছর উপযুক্ত শিক্ষকের সান্নিধ্যে থাকলে মানুষ জ্ঞানী হয়ে যায় হুযুর আলাইহিস সালাম জন্মগ্রহণের আগে কোটি কোটি বছর আল্লাহর মহা দরবারে অবস্থা করেছেন। এমতাবস্থায় হুযুর পূর্ণ আলেম হবেন না কেন?
❏‘তাফসীরে রুহুল বয়ানে’
لَقَدْ جَاءَكُمْ الخ-
এর তাফসীরে বলা হয়েছে যে,
একদা হযরত জিব্রাইল (আলাইহিস সালাম) হুযুরের সমীপে আরয করলেন, ‘একটি নক্ষত্র সত্তর হাজার বছর পর পর উদিত হয়। আমি এটিকে বাহাত্তর হাজার বার আলোকে উদ্ভাসিত দেখেছি।’ তখন হুযুর আলাইহিস সালাম ইরশাদ ফরমানঃ ‘আমিই ছিলাম সেই নক্ষত্র’।
{ক. বুরহানুদ্দীন হালবীঃ সিরাতে হালবীয়াঃ ১ম খÊ, পৃ.- ৪৯
খ. আল্লামা ইসমাঈল হাক্কীঃ তাফসীরে রুহুল বায়ানঃ ৩/৫৪৩ পৃ. সূরাঃ তাওবাহঃ ১২৮
গ. শায়খ ইউসূফ নাবহানীঃ জাওয়াহিরুল বিহারঃ ৩/৩৩৯
ঘ. আশরাফ আলী থানবীঃ নশরুত্তীবঃ ১৭ পৃ.
ঙ. শফি উকাড়ভীঃ যিকড়ে হাসীনঃ ৩০ পৃ.
এই হাদিসটিকে বাতিলপন্থীগণ জাল বলে উড়িয়ে দিতে চান তার জবাব আমি অধম 'সহিহ হাদিসকে জাল বানানোর স্বরুপ উন্মোচন' গ্রন্থে জবাব দিয়েছি}
হিসেব করে দেখুন কত কোটি বছর মহান আল্লাহর দরবারে অবস্থান করেছিলেন রাসূল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)।
(৪) ছাত্র বা শিষ্যের জ্ঞানের মধ্যে অপূর্ণতা থাকলে তা কেবল চারটি কারণেই হতে পারে। এক, শাগরিদ অনুপযুক্ত ছিল; উস্তাদ থেকে পূর্ণ ফয়েয লাভ করতে পারেন নি। দুই, উস্তাদ কামিল ছিলেন না, যার ফরে পরিপূর্ণ শিক্ষা দিতে পারেন নি। তিন, উস্তাদ হয়ত কৃপণ ছিলেন, পরিপূর্ণ জ্ঞান সেই শাগরিদকে দান করেন নি, কিংবা তার থেকে বেশী প্রিয় অন্য শাগরিদ ছিল, যাকেই সব কিছু শিখায়েছেন। চার, যে কিতাবটি পড়ানো হয়েছিল, সেটি পূর্ণাঙ্গ ছিল না। এ চারটি কারণ ছাড়া অন্য কোন কারণ থাকতেই পারে না। এখানে শিক্ষক হলেন স্বয়ং আল্লাহ, আর ছাত্র হলেন মাহবুব আলাইহিস সালাম, এবং যা শিক্ষা দিয়েছেন, তা হলো কুরআন ও স্বীয় বিশেষ জ্ঞান সমূহ। এখন বলুন, মহাপ্রভু আল্লাহ কি কামিল শিক্ষক নন? বা রাসূল আলাইহিস সালাম কি উপযুক্ত শাগরিদ নন? বা রাসূল আলাইহিস সালামের চেয়েও বেশী প্রিয় আর কেউ আছেন, অথবা কুরআন কি পূর্ণ কিতাব নয়? যখন এগুলোর মধ্যে কোন কারণই বিদ্যমান নেই অর্থাৎ আল্লাহ তা’আলা পরিপূর্ণ জ্ঞান প্রদানকারী, মাহবুব আলাইহিস সালামও পরিপূর্ণ গ্রহণকারী এবং কুরআন হলো একটি পরিপূর্ণ কিতাব, যেখানে উক্ত হয়েছে- اَلرَّحْمَنُ عَلَّمَ الْقُرْاَنَ (দয়াময় আল্লাহ কুরআন শিখিয়েছেন), আর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হলেন আল্লাহর দরবারে বেশী ‘মকুবল’ বান্দা, তখন তাঁর জ্ঞান কেন অপূর্ণ হবে?
(৫) আল্লাহ তা’আলা প্রত্যেক কথা কেন লওহে মাহফুজে লিখলেন? লিখার প্রয়োজন হয় স্মরণ রাখার জন্য, যাতে ভুলবার উপক্রম না হয় বা অন্যদেরকে জানানোর জন্য। আল্লাহ তা’আলা ভুলত্রুটি থেকে পূতঃ পবিত্র। কাজেই তিনি অন্যদের জন্য লিখেছেন। অন্যদের মধ্যে হুযুর আলাইহিস সালামই হলেন সর্বাধিক প্রিয়। সতুরাং, সেই লেখাটা হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর উদ্দেশ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।
(৬) অদৃশ্য বিষয় সমূহের মধ্যে সর্বাধিক অদৃশ্য হলো আল্লাহর সত্ত্বা। হযরত মুসা (আঃ) যখন আল্লাহকে স্ব’চক্ষে দেখার কামনা করেছিলেন, তখন বলা হয়েছিল- لَنْ تَرَانِىْ (তুমি আমাকে দেখতে পাবে না।) আর যখন মাহবুব আলাইহিস সালাম মিরাজের সময় স্বীয় পবিত্র চর্মচক্ষু দ্বারা আল্লাহকে দেখলেন, তখন সৃষ্টি জগত কি তাঁর দৃষ্টির আড়ালে গোপন থেকে যেতে পারে?
اور كوئى غيب كياتم سے نهاں هوبهلا
جب نه خداهى چهپاتم په كردڑون درود
অর্থাৎ খোদাই যখন আপনার দৃষ্টি থেকে গোপন রইল না, তখন আর কিইবা আছে, যা’ অদৃশ্য থাকতে পারে? আপনার হাবীব (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রতি কোটি কোটি দরূদ।
{রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর দর্শন লাভের বর্ণনা আমার রচিত ‘শানে হাবীবুর রহমানে’ দেখুন।}
❏‘মিরকাত শরহে মিশকাতের’ الايمان بالقدر অধ্যায়ের প্রথম পরিচ্ছেদের শেষে উল্লেখিত আছে-
كَمَا أَنَّ النَّبِيَّ - عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ - رَآهُ فِي الدُّنْيَا لِانْقِلَابِهِ نُورًا
-‘‘হুযুর আলাইহিস সালাম ইহ জগতেই আল্লাহকে দেখেছিলেন, কেননা, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) নিজেই নূরে পরিণত হয়েছিলেন।’’
{মোল্লা আলী ক্কারীঃ মেরকাতঃ ঈমান বিল ক্বদরঃ ১/২৬৬ পৃ. হাদিসঃ ৯১}
(৭) শয়তান হলো দুনিয়াবাসীদের পথভ্রষ্টকারী আর নবী আলাইহিস সালাম হলেন সৎপথের দিশারী। শয়তান হলো মহামারীর মত আর নবী আলাইহিস সালাম হলেন সর্বরোগের সর্ববিশেষজ্ঞা ডাক্তার স্বরূপ। আল্লাহ তা’আলা শয়তানকে পথভ্রষ্ট করার সহায়ক এত ব্যাপক ও সুদূর প্রসারী জ্ঞান দান করেছেন যে, পৃথিবীর কেউ তার দৃষ্টির অগোচরে থাকে না। তার কাছে এ খবরও আছে যে কাকে পথভ্রষ্ট করা যাবে, আর কাকে করা যাবে না; এবং যে পথভ্রষ্ট হওয়ার আছে, তাকে কিভাবে পথভ্রষ্ট করতে হবে? অনুরূপভাবে সে প্রত্যেক ধর্মের প্রতিটি মাসআলা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল, যার ফলে সে প্রতিটি সৎকাজ থেকে মানুষকে বিরত রাখে ও প্রতিটি নীতি বিগর্হিত কাজ করানোর মদদ যোগায়। সে আল্লাহর কাছে দম্ভোক্তি করে বলেছিল-
وَلَأُغْوِيَنَّهُمْ أَجْمَعِينَ - إِلَّا عِبَادَكَ مِنْهُمُ الْمُخْلَصِينَ
-‘‘আমি তোমার বিশুদ্ধ চিত্ত বিশিষ্ট নেককার বান্দাগণ ছাড়া বাকী সবাইকে পথভ্রষ্ট করেই ছাড়বো।’’
{সূরাঃ হিজরঃ আয়াতঃ ৩৯-৪০, পারাঃ ১৪}
পথভ্রষ্টকারীকে যখন এতটুকু জ্ঞান দান করা হলো, তখন সর্ববিশেষজ্ঞ ডাক্তার সদৃশ হুযুর আলাইহিস সালামের সঠিক পথের দিশা প্রদানের জন্য এর চেয়ে অনেক বেশী জ্ঞান থাকা একান্ত প্রয়োজন, যাতে তিনি প্রত্যেক ব্যক্তির রোগ নির্নয় ও আরোগ্য লাভের যোগ্যতার পরিমাপ করে চিকিৎসা করতে পারেন। অন্যথায়, সঠিক পথ নির্ধারণের কাজ পরিপূর্ণ হবে না। এবং মহাপ্রভু আল্লাহর সম্পর্কে এ আপত্তি উত্থাপন করা হবে যে, তিনি পথভ্রষ্টকারীকে শক্তিশালী করেছেন আর পথপ্রদর্শনকারীকে দূর্বল রেখেছেন। সেজন্য পথভ্রষ্টতা পরিপূর্ণতা লাভ করল, আর হেদায়েত অপরিপূর্ণ রয়ে গেল।
(৮) মহান প্রভু হুযুর আলাইহিস সালামকে ‘নবী’ বলে সম্বোধন করেছেন। যেমন يَا اَيُّهَاا لنَّبِىُّ ‘নবী’ শব্দের অর্থ হলো খবরদাতা। যদি খবর বলতে শুধু দ্বীনের খবরই লক্ষ্যার্থ হয়, তাহলে বলতে হয় প্রত্যেক মৌলভীই নবী; আর যদি পার্থিব ঘটনাবলীর খবর ধরে নেওয়া হয়, তাহলে প্রত্যেকটি সংবাদপত্র, রেডিও টি,ভি ও তারবার্তা প্রেরণকারী সবাই ‘নবী’রূপে পরিগণিত হবে। সুতরাং, বোঝা গেল যে, ‘নবী’ শব্দের মধ্যে অদৃশ্য বিষয়াদির খবরাখবরই গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ নবী হলেন ফিরিশতাগণ ও আরশ সম্পর্কে খবরদাতা, যেখানে তারবার্তা ও সংবাদপত্র সমূহ কোন কাজেই আসবে না। সেখানে একমাত্র নবীর জ্ঞানই কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে। এতে বোঝা গেল যে, ‘ইলমে গায়ব’ নবী শব্দের অন্তভুর্ক্ত বা অঙ্গীভূত।
এ পর্যন্ত হুযুর আলাইহিস সালামের ইলমে গায়ব সম্পর্কে আলোচনা করা হল। এখন এও জানা দরকার যে, হুযুর আলাইহিস সালামের মাধ্যমে আওলিয়া কিরামও ইলমে গায়ব লাভ করে থাকেন। তবে তাঁদের জ্ঞান নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর মাধ্যমেই অর্জিত হয় ও উহা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর জ্ঞান সমুদ্রের এক ফোঁটার সমতুল্য।
❏মিশকাত শরীফের ব্যাখ্যামূলক গ্রন্থ ‘মিরকাতে’ শাইখুল কবীর আবু আবদুল্লাহ সিরাজী (রহ.) কর্তৃক সংকলিত ‘মু‘তাক্বদীহ’ এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে-
أَنَّ الْعَبْدَ يُنْقَلُ فِي الْأَحْوَالِ حَتَّى يَصِيرَ إِلَى نَعْتِ الرُّوحَانِيَّةِ فَيَعْلَمَ الْغَيْبَ
-‘‘নিশ্চয় বান্দার, আধ্যাত্মিক অবস্থার পরিবর্তন হতে থাকে, শেষ পর্যন্ত যখন ‘রূহানীয়তের’ গুণ প্রাপ্ত হয়, তখনই গায়ব সম্পর্কে অবগত হয়।’’
{মোল্লা আলী ক্কারীঃ মেরকাতঃ কিতাবুল ঈমানঃ প্রথম পরিচ্ছেদঃ ১/২২৮ হাদিসঃ ২}
❏‘মেরকাতের আর এক জায়গায় উক্ত “কিতাবে আকায়িদ’ গ্রন্থের বরাত দিয়ে বর্ণনা করা হয়েছে-
وَيَطَّلِعَ الْعَبْدُ عَلَى حَقَائِقِ الْأَشْيَاءِ، وَيَتَجَلَّى لَهُ الْغَيْبُ، وَغَيْبُ الْغَيْبِ
-‘‘কামিল বান্দা যাবতীয় বস্তুর নিগূঢ় তত্ত্ব ও রহস্য সম্পর্কে অবহিত হন এবং তাঁর কাছে অদৃশ্যের বিষয়ও প্রকাশিত হয়ে যায়।’’
{মোল্লা আলী ক্কারীঃ মেরকাতঃ কিতাবুল ঈমানঃ প্রথম পরিচ্ছেদঃ ১/১১৯ হাদিসঃ ২}
❏মিরকাতের দ্বিতীয় খন্ডের ৬ষ্ঠ পৃষ্ঠায়- اَلصَّلَوةُ عَلَى النَّبِىِّ وَفَضْلِهَا. শীর্ষক অধ্যায়ে লিপিবদ্ধ আছে-
قَالَ الطِّيبِيُّ: وَذَلِكَ أَنَّ النُّفُوسَ الزَّكِيَّةَ الْقُدُسِيَّةَ إِذَا تَجَرَّدَتْ عَنِ الْعَلَائِقِ الْبَدَنِيَّةِ عَرَجَتْ وَوَصَلَتْ بِالْمَلَأِ الْأَعْلَى، وَلَمْ يَبْقَ لَهَا حِجَابٌ، فَتَرَى الْكُلَّ كَالْمُشَاهَدِ بِنَفْسِهَا، أَوْ بِإِخْبَارِ الْمَلِكِ لَهَا
-‘‘ইমাম তিববী (রহ.) বলেন-পূত পবিত্র আত্মা সমূহ যখন সীমাবদ্ধ শারীরিক গন্ডির বাহিরে আসে তখন আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধন করে সুউচ্চ স্তরে উপনীত হয় এবং তাঁদের সামনে কোনরূপ আবরণ অবশিষ্ট থাকে না। তখন সমস্ত বস্তুকে নিজের সামনে উপস্থিত ও স্থূল বস্তু সদৃশ দেখতে পায়। এ ধরনের অনুভূতি আপনা আপনিই কিংবা ফিরিশতার ‘ইলহাম’ দ্বারা অর্জিত হয়।’’
{মোল্লা আলী ক্কারীঃ মেরকাতঃ ১/২২৮ পৃ.ঃ দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ}
❏‘শাহ আবদুল আযীয মুহাদ্দিস দেহলভী সাহেব (রহমতুল্লাহে আলাইহে) তাফসীরে আযীযী’তে সূরা জ্বিনের তাফসীরে ফরমান-
اطلاع بر لوح محفوظ وديدن نقوش نيزاز بعضے ولياء بتواتر منقول است
অর্থাৎ- লওহে মাহফুজ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন এবং উহার লিপিদর্শন করা সম্পর্কে কোন কোন ওলী থেকেও ‘মুতওয়াতির’ পর্যায়ের বর্ণনা পাওয়া যায়।
{শায়খ আব্দুল আজীজ মুহাদ্দিস দেহলভীঃ তাফসীরে আযীযী (ফার্সি)- সূরা জিনঃ ২১৬-২১৭ পৃ. পারাঃ ২৯}
❏ইমাম ইবনে হাজর মক্কী (রহমতুল্লাহে আলাইহে) তাঁর রচিত ‘কিতাবুল এ’লামে এবং আল্লামা শামী (রহমতুল্লাহে আলাইহে) তাঁর রচিত ‘সুলুক হুস্সামে উল্লেখ করেছেন-
اَلْخَوَاصُّ يَجُوْزُ اَن يَّعْلَمُ الْغَيْبَ فِىْ قَضْيَةٍ اَوْقَضَاءٍ كَمَا وَقَعَ لِكثِيْرٍ مِّنْهُمْ وَاشْتَهَرَ
অর্থাৎ- এটা বৈধ যে বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ (আওলিয়া কিরাম) কোন ঘটনা বা সিদ্ধান্তের ব্যাপারে গায়বী ইলম অর্জন করেন, যেমন অনেক আওলিয়া কিরাম থেকে ধরনের ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে এবং তা’ সাধারন্যে প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়েছে।
{ক. ইবনে হাজার মক্কীঃ এ’লাম বিকাওয়াতিউল ইসলামঃ ৩৫৯ পৃ.
খ. ইবনে আবেদীন শামীঃ সুল্লুল হুস্সাম মিনাল মাযমূআয়ে রসায়েলঃ ২/৩১১ পৃ.}
❏শাহ ওলীউল্লাহ সাহেব (রহমতুল্লাহে আলাইহে) ‘আলতাফুল কুদস’ নামক কিতাবে লিখেছেন-
نفس كليه بجائے جسد عارف مى شود وذات عارف بجائے روح اوهمه عالم بعلم حضورى مى بيند
অর্থাৎ- ‘আরিফের’ আত্মা একেবারে তাঁর দৈহিক আকৃতির রূপ পরিগ্রহ করে থাকে এবং তাঁর সত্ত্বা ‘রূহের’ সঙ্গে একাকার হয়ে যায়। তখন তিনি ‘হুযুরী’ জ্ঞানের সাহায্যে সমগ্র জগত দেখতে পান।
❏আল্লামা যুরকানী (রহমতুল্লাহে আলাইহে) তাঁর রচিত ‘শরহে মওয়াহেব গ্রন্থের সপ্তম খন্ডের ২২৮ পৃষ্ঠায় লিখেছেন-
قاَلَ فِىْ لَطَائِفِ الْمِنَنْ اِطِّلاَعُ الْعَبْدِ عَلَى غَيْبِ مِنْ غَيَوْبِ اللهِ بِدَلِيْلِ خَبَرِ اتَّقُوْا مِنْ فَرَاسَةَ الْمُؤْمِنِ فَاِنَّهُ يَنْظُرُ بِنُوْرِ اَللهُ لاَ يَسْتَغْرَبَ وَهُوَ مَعْنَى كُنْتَ بَصَرَهُ الَّذِىْ يُبْصِرُ بِهِ فَمِنَ الْحَقِّ بَصِرُهُ فَاِطِّلاَعُهُ عَلَى الْغَيْبِ لاَيُسْتَغْرَبَ
অর্থাৎ- ‘লাতায়েদুল মেনান’ কিতাবে উল্লেখিত আছে যে, কোন কামিল বান্দা কর্তৃক আল্লাহ তা’আলার অদৃশ্য বিষয় সমূহ থেকে কোন অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান লাভ আশ্চর্যের বিষয় নয়।
{আল্লামা জুরকানীঃ শরহুল মাওয়াহেবঃ ৭/২২৮ পৃ.}
এটা সেই হাদীছেই ব্যক্ত হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, “মুমিনের জ্ঞানকে ভয় কর, কেননা, তিনি আল্লাহর নুরে দেখেন।” এটাই অপর এক হাদীছেরও অর্থ জ্ঞাপন করে, যেখানে বলা হয়েছে আল্লাহ তা’আলা বলেন, “আমি তাঁর চোখ হয়ে যাই যদ্বারা তিনি দেখেন। সুতরাং তাঁর দেখা আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত অসাধারণ শক্তির বলেই সম্পন্ন হয়ে থাকে। তাই তাঁর গায়ব সম্পর্কে অবগত হওয়াটা বিস্ময়কর কোন ব্যাপার নয়।
❏আল্লামা ইমাম শারানী (রহমতুল্লাহে আলাইহে) তাঁর রচিত اليواقيت والجو اهر নামক কিতাবে উল্লেখ করেছেন-
لِلْمُجْتَهِدِيْنَ الْقَدْمُ فِىء عُلُوْمِ الْغَيْبِ
-‘‘গায়বী ইলম সমূহের ক্ষেত্রে মুজতাহিদগণেরও দৃপ্ত পদচারণা রয়েছে।’’
{ইমাম আব্দুল ওয়াহাব শা’রানীঃ আল-ইয়াকুত ওয়াল জাওয়াহির ফি বয়ানে আকায়েদে আকাবিরঃ ২/৪৮০ পৃ.}
❏হুযুর গাউছে পাক (রহমতুল্লাহে আলাইহে) ফরমান-
نَظَرْتُ اِلَى بِلاَدِ اللهِ جَمْعًا – كَخَرْدَلَةٍ عَلَى حُكْمِ اتِّصَالِىْ
অর্থাৎ- আমি আল্লাহ তা’আলার সমস্ত শহরগুলোকে এভাবে দেখেছি, যেমন কয়েকটি তৈলবীজ পরস্পর সন্নিবেশিত হয়ে আছে।
❏শাইখ আবদুল হক মুহাদ্দিছ দেহলবী (রহমতুল্লাহে আলাইহে) তাঁর রচিত ‘যুবদাতুল আসরার’ গ্রন্থে হযরত গাউছে পাকের (রহমতুল্লাহে আলাইহে) একটি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রণিধানযোগ্য উক্তির বর্ণনা দিয়েছেন-
قاَلَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ يَااَبْطَالُ يَااَطْ قَالَ هَلَمُّو وَخُذُوْا عَنْ هَذَا الْبَحْرِ الَّذِىء لَاسَاحِلَ لَهُ وَعِزَّةِ رَبِّىْ اِنَّ السُّعَدَاءُ وَالْاَشْقِيَاءَ يُعْرَضُوْنَ عَلَىَّ وَاَنَّ بُوْبُوْ ءَةَ عَيْنِىْ فِى اللَّوْحِ الْمَحْقُىْظِ وَاَنَا غَائِصٌُ فِىْ بِحَارِ عِلْمِ اللهِ
অর্থাৎ- গাউছে পাক (রহমতুল্লাহে আলাইহে) ফরমান- হে সাহসী ভক্তগণ! হে আমার সন্তানগণ! এসো আমার এ অকুল সমুদ্র থেকে কিছু আহরণ কর। খোদার কসম, নেক্কার ও বদ্কার লোকদেরকে আমার সামনে উপস্থিত করা হয় আর আমার চোখের কোনা লওহে মাহফুজের দিকে নিবদ্ধ থাকে। আমি আল্লাহ তা’আলার অপার জ্ঞান সমুদ্রে ডুব দিয়ে থাকি।
{শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভীঃ যুবদাতুল আসরারঃ১৮০পৃ.}
❏আল্লামা জামী (রহমতুল্লাহে আলাইহে) তাঁর রচিত نفحات الانس কিতাবে হযরত খাজা বাহাউদ্দিন নক্শবন্দী (কুঃ সিঃ) এর একটি উক্তি উল্লেখ করেছেন। উক্তিটি হলো-
حضرت عزيزاں عليه الرحمة گفته اند كه زمين درنظر ايں طائفه چوں سفره ايست ومامى گويم نه چوں ناخنے است هيچ چيز ازنظر ايشاں غائب نيست
অর্থাৎ- হযরত আযীযান (রহমতুল্লাহে আলাইহে) বলেন যে, একদল আওলিয়া কিরামের সামনে পৃথিবীটা দস্তরখানার মত আর আমি মনে করি, আঙ্গুলের নখের মত। কোন বস্তুই তাঁদের দৃষ্টি বহির্ভুত নয়।
{আল্লামা আব্দুল রহমান জামীঃ নুহফাতুল উনস্ঃ ৩৮৭-৩৮৮ পৃ.}
❏ইমাম শা’রানী (রহমতুল্লাহে আলাইহে) كبريت الاحمر গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন-
وَاَمَّا شَيْخُنَا السَّيِّدُ عَلِىُّنِ الْخَوَّاصُّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فَسَمِعْتُهُ يَقُوْلُ لاَيَكْمُلُ الرَّ جُلُ عِندِفَا حَتَّى َيْعَلَم حَرْكَاتِ مُرِيْدِهِ فِىْ اِنَّتِقَالِهِ فِى الْاَصْلَابِ وَهُوَ مِنْ يَوْمِ اَلَسْتُ اِلَى اِسْتِقْرَارِهِ فِى الْجَنَّةِ اَوْفِى النَّارِ
অর্থাৎ- আমি আমার শাইখ সৈয়দ আলী খাওয়াছ (রাদিআল্লাহু আনহু) কে বলতে শুনেছি ‘আমার মতে ওই পর্যন্ত কোন ব্যক্তি কামিল হিসেবে গণ্য হয় না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তিনি নিজ মুরীদের পিতার ঔরসে থাকাকালীন গতিবিধি সংক্রান্ত ক্রিয়া প্রক্রিয়া, এমনকি ‘মীছাকের দিন’ থেকে তার বেহেশত কিংবা দোযখ প্রবেশ করা অবধি তার যাবতীয় অবস্থা সম্পর্কে অবহিত হন।
{ইমাম আব্দুল ওয়াহ্হাব শা’রানীঃ আল কাবারিয়্যাতুল আহমারঃ ২/৩৩০ পৃ.}
❏শাহ ওলিউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভী সাহেব (রহমতুল্লাহে আলাইহে) فيوض الحرمين নামক গ্রন্থে লিখেছেন-
ثُمَّ اِنَّهُ يَنْجَذِبُ اِلَى خَيْرِ الْحَقِّ فَيْصِيْرَ عَبْدَ اللهِ فَيَتَجَلَّى لَهُ كُلُّ شَيْئٍ
অর্থাৎ- অতঃপর সেই ‘আরিফ’ ব্যক্তি হক তা’আলার সুমহান দরবারের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে আত্মবিলীন হয়ে যান, এরপর তিনি আল্লাহর প্রিয় বান্দায় পরিণত হন। তখন তাঁর কাছে প্রত্যেক কিছুই উন্মুক্ত ও প্রতিভাত হয়ে যায়।
{শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভীঃ ফয়জুল হারামাঈনঃ ১৭৫ পৃ.}
❏মিশকাত শরীফের প্রথম খন্ডে ‘কিতাবুত দাওয়াতের ذكر الله والتقرب শীর্ষক অধ্যায়ে বুখারী শরীফের সূত্রে হযরত আবু হুরাইরা (রাদিআল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত আছে-
فَإِذَا أَحْبَبْتُهُ: كُنْتُ سَمْعَهُ الَّذِي يَسْمَعُ بِهِ، وَبَصَرَهُ الَّذِي يُبْصِرُ بِهِ، وَيَدَهُ الَّتِي يَبْطِشُ بِهَا، وَرِجْلَهُ الَّتِي يَمْشِي بِهَا
-‘‘আল্লাহ তা’আলা ফরমান, সেই প্রিয় বান্দাকে যখন আমি ভালবাসি, তখন আমি তার কান হয়ে যাই, যদ্বারা তিনি শুনেন, চোখ হয়ে যাই, যদ্বারা তিনি দেখেন, হাত হয়ে যাই, যদ্বারা কোন কিছু ধরেন, এবং পা হয়ে যাই যদ্বারা তিনি চলাফেরা করেন।’’
{ক. বুখারী আস-সহীহঃ কিতাবুর-রিকাকঃ ৫/২৩৮৪পৃ. হাদিসঃ ৬৫০২
খ. ইবনে হিব্বানঃ আস-সহীহঃ ২/৫৮ হাদিসঃ ৩৪৭
গ. বায়হাকীঃ সুনানে কোবরাঃ ১০/২১৯ পৃ.
ঘ. বায়হাকীঃ আয্-যুহুদ আল কাবীরঃ ২/২৬৯ হাদিসঃ ৬৯৬
ঙ. খতিব তিবরিযীঃ মিশকাতঃ কিতাবুদ-দাওয়াতঃ ২/৪২৩ হাদিসঃ ২২৬৬}
একথা স্মরণ রাখা দরকার যে হযরত খিযির (আলাাইহিস সালাম) ও হযরত ইলিয়াস (আলাইহিস সালাম) এখনও পৃথিবীপৃষ্ঠে জীবিত আছেন। তাঁর এখন উম্মতে মুস্তাফা (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর ওলী হিসেবে গণ্য। হযরত ঈসা (আলাইহিস সালাম) যখন পৃথিবীতে (পুনরায়) তশরীফ আনবেন, তখন তিনিও এ উম্মতের ওলী হিসেবে আসবেন। তাঁদের (হযরত খিযির, ইলিয়াস ও ঈসা (আলাইহিস সালাম) ব্যাপক জ্ঞান সম্পর্কে আমি ইতিপূর্বে আলোচনা করেছি। তাঁদের জ্ঞানও এখন হুযুর আলাইহিস সালামের উম্মতের ওলীগণেরই জ্ঞান হিসেবে পরিগণিত।