বিষয় নং-২৬: আমাকে যে দেখবে তাকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না:


আহলে হাদিস নাসিরুদ্দীন আলবানী তার ‘দ্বঈফু মিশকাত’ গ্রন্থের ৬০০৪ নং হাদিস হিসেবে উক্ত সহীহ হাদিসকে দ্বঈফ বলে উল্লেখ করেছেন। 


❏ হাদিসটি হল-

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَبِيبِ بْنِ عَرَبِيٍّ الْبَصْرِيُّ قال: حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ كَثِيرٍ الأَنْصَارِيُّ، قَالَ: سَمِعْتُ طَلْحَةَ بْنَ خِرَاشٍ، يَقُولُ: سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُولُ: لاَ تَمَسُّ النَّارُ مُسْلِمًا رَآنِي  او رَأَى مَنْ رَآنِى

-‘‘হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত রাসূল (ﷺ) কে ইরশাদ করতে শুনেছি যে, মুসলিম ব্যক্তি আমাকে দেখবে (স্বপ্নে বা বাস্তবে হউক) অথবা আমাকে যাহারা দেখিয়াছে তাহাদেরকে যে দেখিয়াছে, তাহাকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করিবে না।’’ ৩২১

৩২১. 

ক. ইমাম তিরমিযী : আস-সুনান : ৫/৬৫১ পৃ. হা/৩৮৫৮

খ. ইমাম জালালুদ্দীন সূয়তী : আল-জামেউস-সগীর : ২/৭০৫ পৃ. হা/৯৮৬৭

গ. খতিব তিবরিযী : মিশকাত : মানাবিকে সাহাবা : ৪/৪১৩ পৃ. হা/৬০১৩, দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত।

ঘ. ইমাম যিয়া মুকাদ্দাসী : ইত্তিবাউস-সুনান :

ঙ. আলবানী : দ্বঈফুল মিশকাত : হাদিস নং : ৬০০৪

চ. ইমাম তাবরানী : মু’জামুল কাবীর : ১৭/৩৫৭ পৃ. হা/৯৮৩

ছ. ইমাম তাবরানী : মু’জামুল আওসাত : ১/৩০৮ পৃ. হা/১০৩৬

জ. ইমাম দায়লামী : আল-মুসনাদিল ফিরদাউস : ৫/১১৬ পৃ. হা/৭৬৫৯

ঝ. ইমাম আবি আছেম : আস-সুন্নাহ : ২/৬৩০ পৃ.হা/১৪৮৪

ঞ. আল্লামা ইবনে হাযার হায়সামী : মাযমাউদ-যাওয়াইদ : ১০/২১ পৃ.


ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি (رحمة الله) উক্ত হাদিসটি সংকলন করে বলেন, হাদিসটি সহীহ। অপরদিকে ইমাম তিরমিযী (رحمة الله) বলেন হাদিসটি ‘হাসান’ ও গরীব।


✧ এই হাদিসের রাবী

 مُوسَى بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ كَثِيرٍ 

‘মূসা ইবনে ইব্রাহিম ইবনে কাছির’ কে ইমাম ইবনে শাহিন ও ইবনে হিব্বান (رحمة الله) ثقة বিশ্বস্ত বলেছেন। (ইমাম মুগলতাঈ: ইকমালু তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ৪৭৭৪)


✧ ইমাম আবু আলী তুশী (رحمة الله) তার বর্ণিত হাদিসকে حسن হাসান বলেছেন। (ইমাম মুগলতাঈ: ইকমালু তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ৪৭৭৪)


✧ ইমাম যাহাবী (رحمة الله) তার ব্যাপারে বলেন: صدوق مُقِلّ. -“সে সত্যবাদী ও হাদিস বর্ণনায় দরিদ্র বা তার হাদিস সংখ্যা খুব কম।” (ইমাম যাহাবী: তারিখুল ইসলাম, রাবী নং ৩২২)


✧ ইমাম যাহাবী (رحمة الله) তার ‘কাশেফ’ গ্রন্থে তাকে ثقة বিশ্বস্ত বলেছেন। (ইমাম যাহাবী: আল কাশেফ, রাবী নং ৫৬৭৬)


✧ অতএব, এই রাবীর বর্ণিত হাদিস সহীহ্ হওয়াতে কোন বাধা নেই। ইমামগণ তার ব্যাপারে কোন সমালোচনা করেননি। ইমাম তিরমিযি (رحمة الله) হাদিসটিকে حسن হাসান বলেছেন। আল্লামা ছান‘আনী (رحمة الله) হাসিটিকে সহীহ্ বলেছেন। (আল্লামা ছান‘আনী: আত তানভীর শরহে জামেউস সাগীর, হাদিস নং ৫৮৪৮)


✧ মেসকাতের তাহকিকে নাসিরুদ্দিন আলবানী হাদিসটিকে حسن হাসান বলেছেন। আলবানী তার ‘তারাজিয়াতে আলবানী’ গ্রন্থে হাদিসটিকে حسن হাসান বলে স্বীকার করেছেন। (আলবানী: তারাজিয়াাতে আলবানী, হাদিস নং ২৪৬)


❏ এই হাদিসের সমর্থনে আরেকটি হাদিস রয়েছে,

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ قَالَ: نَا مُحَمَّدُ بْنُ عُثْمَانَ بْنِ خَالِدٍ أَبُو مَرْوَانَ الْعُثْمَانِيُّ قَالَ: نَا نَافِعُ بْنُ صَيْفِيٍّ، وَكَانَ بَلَغَ مِائَةً وثِنْتَى عَشْرَةَ سَنَةً، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عُقْبَةَ الْجُهَنِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَا يَدْخُلُ النَّارَ مُسْلِمٌ رَآنِي، وَلَا رَأَى مَنْ رَآنِي، 

-“আব্দুর রহমান ইবনে উকবা তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন, তিনি নবী করিম (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলে পাক (ﷺ) বলেছেন: ঐ মুসলমানকে আগুনে প্রবেশ করানো হবেনা যে আমাকে দেখেছে অথবা আমাকে যারা দেখেছে তাদেরকে দেখেছে।” ৩২২

৩২২. ইমাম তাবারানী: মু‘জামুল আওসাত, হাদিস নং ১০৩৬; ইমাম তাবারানী: মুজামুল কবীর, হাদিস নং ৯৮৩; ইমাম আবী আছেম: আস সুন্নাহ, হাদিস নং ১৪৮৫; ইমাম আবু নুয়াইম: মারেফাতুস সাহাবা, হাদিস নং ৫৪১৫; ইমাম ইবনুল আছির: উছদুল গাবা ফি মারিফাতিস সাহাবা, ৩৭১৪ নং রাবীর ব্যাখ্যায়; হাফিজ ইবনে কাছির: জামেউল মাসানিদ ওয়াস সুনান, হাদিস নং ৭৬৯৮; ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী: আল-ইসাবা, ৫৬৩৫ নং রাবীর ব্যাখ্যায়; ইমাম হায়সামী: মাজমাউয-যাওয়াইদ, হা/১৬৪২২


অতএব, কোন মুসলমান যদি রাসূলে করিম (ﷺ) কে দেখলে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবেনা। এমনকি কোন মুসলমান সাহাবীদেরকে দেখলেও তাকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবেনা। (সুবহানাল্লাহ)


Top