সায়্যিদুনা হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه)’র আক্বিদা
সাহাবীদের উত্তম চরিত্র এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির সংবাদ প্রদান করা-
সায়্যিদুনা আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলে কারিম (ﷺ)’র কাছে এসে আরয করল যে, ‘আমি ক্ষুধার্ত’। তখন রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, যে এ ব্যক্তিকে মেহমান বানাবে আল্লাহ তার উপর দয়া করবেন।
তখন আনসারী সাহাবীদের থেকে একব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ), আমি এ ব্যক্তির মেহমানদারি করব।’
তিনি মেহমানকে নিয়ে তাঁর ঘরে গিয়ে স্ত্রীকে বললেনঃ ‘ঘরে খাবার কিছু আছে?’ স্ত্রী বললেন, ‘ঘরে কেবল বাচ্চাদের খাবার আছে।’ তিনি বললেন, ‘বাচ্চাদেরকে কোন কিছু দিয়ে তুষ্ট কর।’ যখন আমাদের মেহমান আসবেন, তুমি চেরাগ নিভিয়ে দেবে এবং মেহমানের কাছে প্রকাশ করবে যে, আমরা খাবার খেয়েছি।
যখন মেহমান খানা শুরু করবে, তুমি তার কাছে গিয়ে প্রদীপটি নিভিয়ে দেবে। অতঃপর তারা সকলে বসে পড়লেন এবং মেহমান খানা খেলেন। সকালে যখন তিনি (আপ্যায়নকারী) নাবী কারীম (ﷺ)’র কাছে উপস্থিত হলেন, তখন রাসূল (ﷺ) বললেনঃ
عَجِبَ اللهُ مِنْ صَنِيعِكُمَا بِضَيْفِكُمَا اللَّيْلَةَ
-“তোমরা আজ রাত মেহমানের সাথে উপর যে আচরণ করেছো আল্লাহ তা‘আলা তার উপর অনেক খুশি হয়েছেন।” ৯৩
{৯৩. সহীহ মুসলিম শরীফ, ৩/১৬২৪ পৃ. হা/২০৫৪, بَابُ إِكْرَامِ الضَّيْفِ وَفَضْلِ إِيثَارِهِ, ইমাম ইবনে আছির, জামেউল উসূল, ৯/৭৩ পৃ. হা/৬৬১৫}
আক্বিদা
নাবী করীম (ﷺ) জানতেন যে, তাঁর সাহাবী (رضي الله عنه) মেহমানের সাথে যে উত্তম আচরণ করেছেন তা। এবং এটাও জানতেন যে, আল্লাহ তা‘আলা এই উত্তম আচরণের উপর সন্তুষ্টি হয়েছেন।
অর্থাৎ আল্লাহর সন্তুষ্টির কথা জেনেই ইরশাদ করেছেন যে, মেহমানের সাথে তোমরা যে উত্তম আচরণ করেছো আল্লাহ এর উপর অনেক খুশি হয়েছেন।
পোষাক পরিধান করা অবস্থায় বিবস্ত্র-
সায়্যিদুনা হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) (বেপর্দা পাতলা কাপড় পরা নারীদের অবস্থা বলতে গিয়ে) ইরশাদ করেন, জাহান্নামীদের এমন দু‘টি দল, যাদের আমি দেখিনি। তাদের এক দলের হাতে গরুর লেজের মত চাবুক থাকবে।
وَنِسَاءٌ كَاسِيَاتٌ عَارِيَاتٌ مُمِيلَاتٌ مَائِلَاتٌ
‘তারা তা দিয়ে লোকদেরকে মারবে। আর একদল হবে নারীদের। তাদের পোষাক পরিধান করা সত্তে¡ও উলঙ্গ দেখাবে।’ তারা গর্বের সাথে নৃত্যের ভঙ্গিতে বাহু দুলিয়ে পথ চলবে। তারা বুখ্তী উটের উঁচু কূঁজের মত করে খোপা বাঁধবে। এমন নারীরা কখনো জান্নাতে প্রবেশ লাভ করবে না এবং তারা জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না। অথচ জান্নাতের সুগন্ধি অনেক অনেক দূর থেকে পাওয়া যাবে।’’ ৯৪
{৯৪. খতিব তিবরিযি, মিশকাতুল মাসাবীহ, ২/১০৪৫ পৃ. হা/৩৫২৪, সহীহ মুসলিম শরীফ, ৩/১৬৮০ পৃ. হা/২১২৮, بَابُ النِّسَاءِ الْكَاسِيَاتِ الْعَارِيَاتِ الْمَائِلَاتِ الْمُمِيلَاتِ, ইমাম মুনযিরী, তারগীব ওয়াত তারহীব, ৩/৬৯ পৃ. হা/৩১১০}
আক্বিদা
বর্তমান যুগে এই পরিবেশ এবং পোষাক মানুষের সামনেই বিদ্যমান। প্রিয় নবী অদৃশ্য জ্ঞানের অধিকারী রাসূল (ﷺ) আজ থেকে সাড়ে চৌদ্দশত বছর পূর্বে যার সংবাদ দিয়েছেন।
বুঝা গেল আল্লাহ তা‘আলা তাঁর প্রিয় হাবীব (ﷺ) কে অদৃশ্যের জ্ঞান করেছেন। যারা বলে নাবী (ﷺ)’র ইলমে গায়ব নেই, তারা মূলত নাবী কারীম (ﷺ)’র বাণীকে অস্বীকারকারী। আল্লাহ আমাদেরকে এসব ভ্রষ্ট লোকদের থেকে হিফাজত করুণ, আমিন।
উপমাহীন নবী (ﷺ)-
❏ সায়্যিদুনা আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) বলেন, নাবী কারীম (ﷺ) ইরশাদ করেন-
مَنْ رَآنِي فِي الْمَنَامِ فَقَدْ رَآنِي، فَإِنَّ الشَّيْطَانَ لَا يَتَمَثَّلُ بِي
-‘‘যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নে দেখল, সে মূলত আমাকেই দেখল, কেননা শায়তান আমার রূপ ধারণ করতে পারে না।’’ ৯৫
{৯৫. ইমাম মুসলিম, আস-সহীহ, ৪/১৭৭৫ পৃ. হা/২২৬৬ , كتاب الروياء , ইমাম তাবরানী, মু‘জামুল আওসাত, হা/৬০৮ এবং মু‘জামুল কাবীর, ১২/৩৮ পৃ. হা/১২৪০৩, হাকেম, আল-মুস্তাদরাক, ৪/৪৩৫ পৃ. হা/৮১৮৬, ইমাম আহমদ, আল-মুসনাদ, ১২/৮৮ পৃ. হা/৭১৬৮, সুনানে তিরমিযি, ৪/১০৫ পৃ. হা/২২৭৬, মুসনাদে আবি ই‘য়ালা, হা/৩২৮৫, ইমাম বাগভী, শরহে সুন্নাহ, ১২/২২৬ পৃ. হা/৩২৮৬}
আক্বীদা
শয়তান প্রত্যেকের রূপ ও ছুরত ধারণ করতে পারে। কিন্তু শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ (ﷺ)’র রূপ ধরতে পারে না। সুতরাং যে সব মানুষ নিজেদেরকে তার মত বলে, অথবা নাবী (ﷺ) কে তাদের মত বলে এবং এ নিয়ে তর্ক করে তবে তারা তো শয়তান থেকেও মারাত্মক।
আল্লাহ আমাদেরকে এসব মানুষ থেকে হেফাজত করুণ। আমিন!
❏ দেওবন্দীদের মওলভী হুসাইন আহমদ মাদানী বলেন যে,
وہابيہ ا اپنے كومماثل ذات سروركائنات خيال كر تے ہيں
-‘‘ওয়াহাবিরা নিজেরা নিজেদেরকে রাসূলে কায়েনাত (ﷺ) এর সমকক্ষ মনে করে থাকে।’’
(হুসাইন আহমদ মাদানী, আস-সিহাবুস সাকিব, ৪৭ পৃ.)
❏ দেওবন্দীদের মাওলানা খালিল আহমাদ আম্বিটুবী লেখেন যে,
نفس بشريت ميں مماثل آپ جملہ بنى آدم ہيں
-‘‘মানব হওয়ার দৃষ্টিতে তিনি সমস্ত আদম সন্তানের মত।’’
(বারাহিনে কাতীয়া, ৩ পৃষ্ঠা)
আক্বিদা
এর থেকে নাবী (ﷺ)’র জীবিত, হাজির-নাজির হওয়াটা পরিস্কার হল। তিনি যখন চান, যেখানে চান এবং যে সময় চান উপস্থিত হতে পারেন।
❏ বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাকার আল্লামা ইবনু হাজার আসকালানী (رحمة الله) বলেন-
وَنُقِلَ عَنْ جَمَاعَةٍ مِنَ الصَّالِحِينَ أَنَّهُمْ رَأَوُا النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْمَنَامِ ثُمَّ رَأَوْهُ بَعْدَ ذَلِكَ فِي الْيَقَظَةِ وَسَأَلُوهُ عَنْ أَشْيَاءَ كَانُوا مِنْهَا مُتَخَوِّفِينَ فَأَرْشَدَهُمْ إِلَى طَرِيقِ تَفْرِيجِهَا فَجَاءَ الْأَمْرُ كَذَلِكَ
-“আল্লাহর মকবুল বান্দাদের একটি দল থেকে বর্ণিত আছে, যে তারা স্বপ্নে নাবী করীম (ﷺ)’র দিদার লাভ করেছেন। অতঃপর জাগ্রত অবস্থায়ও দেখেছেন। আর তাদের যেসব বিষয়ে সমস্যা ছিল সে ব্যাপারে তারা রাসূল (ﷺ)’র পবিত্র দরবারে প্রশ্ন করেছেন। এবং নাবী করিম (ﷺ) এসব বিষয়ের সমস্যা দূর করে দিয়েছেন।’’ ৯৬
{৯৬. ইবনু হাজার আসকালানী, ফাতহুল বারী, খণ্ড- ১২, পৃ: ৩৮৫, দারুল মা‘রিফ, বয়রুত, লেবানন।
৯৭. ইমাম আলূসী, তাফসীরে রুহুল মাআনী, খণ্ড- ৬, পৃ: ১৯০, দারুল কুতব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন থেকে প্রকাশিত।}
❏ আল্লামা মাহমুদ আলূসী (رحمة الله) লিখেছেন যে, ‘পূর্ববর্তীদের থেকে পরবর্তী আলিমদের মধ্যে যারা স্বপ্নে নবীজি (ﷺ)’র দিদার লাভ করেছেন, তারা যে সব বিষয়ে সন্দেহ পরায়ন ছিলেন, সে বিষয়ে তারা নবী করিম (ﷺ)’র নিকট জানতে চাইলেন। নাবী করিম (ﷺ) এসব বিষয়ের সংবাদ প্রদান করে তাদের সন্দেহ দূর করে দিয়েছেন।’ ৯৭
{৯৭. সাহীহ মুসলিম শরীফ, খণ্ড- ৪, পৃ: ১৭৮১, হা/২২৭৪, কিতাবু আর রু‘ইয়া}
গুপ্ত ধনভান্ডারের মালিক-
❏ সায়্যিদুনা হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন-
أَنَا نَائِمٌ أُتِيتُ خَزَائِنَ الْأَرْضِ
-‘‘আমি শয়ন অবস্থায় ছিলাম তখন আমাকে জমিনের গুপ্ত ধনভান্ডার সমূহ প্রাপ্ত হয়েছি।’’ ৯৮
{সহীহ মুসলিম শরীফ,খন্ড-৪, পৃঃ১৭৮২, হা/২২৭৪, কিতাবু রু'ইয়া}
আক্বিদা
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর প্রিয় হাবীব (ﷺ) কে জমিনের ধনভান্ডার সমূহের চাবি দান করেছেন। আর যাকে চাবি দেয়া হয় তাকে তার মালিক এবং মুখতার বানানো হয়। এজন্য আমাদের প্রিয় নবী (ﷺ) কে আল্লাহ তা‘আলা মালিক ও মুখতার বানিয়েছেন।
সবার উর্ধ্বে-
❏ সায়্যিদুনা হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) বলেন, নাবী কারীম (ﷺ) ইরশাদ করেছেন-
أَنَا سَيِّدُ وَلَدِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَأَوَّلُ مَنْ يَنْشَقُّ عَنْهُ الْقَبْرُ، وَأَوَّلُ شَافِعٍ وَأَوَّلُ مُشَفَّعٍ
-“কিয়ামাত দিবসে আমি আদম সন্তানের সর্দার হবো, সর্বপ্রথম আমি কবর থেকে উঠব, সর্বপ্রথম আমি সুপারিশ করবো এবং সর্বপ্রথম আমার সুপারিশ গ্রহণ করা হবে।” ৯৯
{৯৯. সাহীহ মুসলিম শরীফ, খণ্ড- ৪, পৃ: ১৭৮২, হা/২২৭৮, ইমাম বায়হাকী, শুয়াবুল ঈমান, ৩/৭০ পৃ. হা/১৪০৬, ইমাম বাগভী, শরহে সুন্নাহ, ১৩/২০৪ পৃ. হা/৩৬২৫, মুত্তাকী হিন্দী, কানযুল উম্মাল, ১১/৪০৪ পৃ. হা/৩১৮৮১}
সমস্ত নাবীদের ইমাম, মহান হাবীব হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা (ﷺ) সমস্ত নবী ও রাসূলদের পর সর্দার। এটাও প্রকাশ হয় যে, সমস্ত নবী রাসূলগণকে আল্লাহ তা’য়ালা যে মর্যাদা দান করেছেন এর সবগুলোই সরকারে দু‘আলাম (ﷺ)’র নিকট রয়েছে। কেননা সর্দারের জন্য আবশ্যক যে, যাদের সর্দার হবেন, তাদের থেকে প্রত্যেক মর্যাদায় বড় হওয়া।
❏ মাওলানা রুমী (رحمة الله) এ জন্যই বলেন-
سيد و سرود محمد نور جہاں
بہتر و بہتر شفيع مجرماں
-‘‘সৃষ্টির সেরা নূরে মুহাম্মাদ (ﷺ) দু’জাহানের সর্দার
সর্বোত্তম থেকে সর্বোত্তম তিনি অপরাধীদের সুপারিশকারী।’’
❏ বিশ্ব কবি শায়খ সা‘দী (رحمة الله) বলেন-
آنكہ آمد نہ فلك معراج رو
انبياء و اولياء محتاج او
-“তিনিই ঐ রাসূল যাঁর মি‘রাজগমন নবম আসমান পর্যন্ত হয়েছে। সকল নাবী ও ওলীগণ তাঁরই মুখাপেক্ষী।
এ হাদীস থেকে এটাও প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামত দিবসে তাকে যে সম্মান ও মর্যাদা দান করবেন, তা তিনি জানতেন।
এটাও তাঁর জানা ছিল যে, কবর মুবারক থেকে তিনিই প্রথম উঠবেন। সুতরাং লোকের আক্বীদা এটা যে, নবীয়ে পাক (ﷺ)’র নিকট কী ইলমে গায়ব আছে? স্পষ্টত তারা (বাতিলপন্থীগণ) ভ্রষ্টতার মধ্যে নিমজ্জিত।
তাঁর (ﷺ)’র পবিত্র বাণী যে, সর্বপ্রথম আমি সুপারিশ করবো এবং আমার শাফা‘আত গ্রহণ করা হবে।
আর শাফায়াতের সম্পর্ক কিয়ামতের সাথে। যে সব লোক এ আক্বীদা পোষণ করে যে, সমস্ত নবী এবং আওলিয়াগণ জানেন না যে, কিয়ামত দিবসে তাদের সাথে কিরূপ আচরণ করা হবে। তারা মূলতঃ হাদিসের বিপরীত আক্বীদা পোষণ করে। এবং প্রিয় নবী (ﷺ)’র পবিত্র বাণী থেকে গর্দান ফিরিয়ে নেয়।
❏ মৌলভী ইসমাঈল দেহলভী “তাকভিয়াতুল ঈমান”-এ লিখেছেন যে,
جو كہ الله اپنے بندوں سےمعاملہ كر ے گا خواه دنيا ميں خواه قبر ميىں خواه آخرت ميں- سو اس كى حقيقت كسى كو معلوم نهيں- نہ نبى كو نہ ولى كو نہ اپنا حال نہ دوسر كا
-“আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দার সাথে যে আচরণ করবেন, চাই তা দুনিয়াতে হোক, চাই কবরে বা আখেরাতে হোক, তার প্রকৃত অবস্থা কেউ জানে না। নবী-ওলী কেউ জানেন না। নিজের অবস্থাও জানে না, অপরের অবস্থাও না।” ১০০
{১০০.তাকভিয়াতুল ঈমান, পৃ: ২৭, দিল্লি থেকে প্রকাশিত।}
নবীগণের ইখতিয়ার-
সৈয়্যিদুনা হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, হযরত মূসা (عليه السلام)’র কাছে মালাকুল মাউত এসে বলতে লাগলেন, ‘আপনার প্রভুর কাছে চলুন’।
তখন হযরত মূসা (عليه السلام) থাপ্পর মেরে তাঁর চোখ উঠিয়ে নিলেন। মালাকুল মাউত পুণরায় মহান আল্লাহর দরবারে এসে বললেন-
إِنَّكَ أَرْسَلْتَنِي إِلَى عَبْدٍ لَكَ لَا يُرِيدُ الْمَوْتَ، وَقَدْ فَقَأَ عَيْنِي
-‘‘হে আল্লাহ আমাকে এমন এক বান্দার কাছে পাঠিয়েছেন যিনি মৃত্যুর ইচ্ছা করেন না এবং আমার চোখ উঠিয়ে নিয়েছেন।’’
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর চোখ পুণরায় দিলেন এবং বললেন, পুণরায় আমার বান্দার কাছে যাও এবং বল, “আপনি কি জীবিত থাকতে চান”?
যদি জীবিত থাকতে চান তবে আপনার হাত এই ছাগলের পিঠের উপর রাখুন, ছাগলের যত লোম আপনার হাতের নীচে থাকবে এত বছর হায়াত বাড়িয়ে দেয়া হবে। হযরত মূসা (عليه السلام) বললেন, পুণরায় কী হল? তিনি (মালাকুল মাউত) বললেন, পুণরায় আপনার মাউত এসেছে।
তখন হযরত মূসা (عليه السلام) বললেন, “হে আমার রব, এখনই এই পবিত্র ভূমি থেকে একটি পাথর নিক্ষেপ করে আমার রূহ কবজ করুণ।” ১০১
{ ১০১. সহীহ মুসলিম শরীফ, ৪/১৮৪৩পৃ: হা/২৩৭২, অধ্যায়: بَابُ مِنْ فَضَائِلِ مُوسَى صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
খ. ইমাম খতিব তিবরিযি, মিশ্কাতুল মাসাবীহ, ৩/১৫৯২ পৃ. হা/৫৭১৩, অধ্যায়: بَاب بدءالخلق وَذِكْرِ الْأَنْبِيَاءِ عَلَيْهِمُ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ}
আক্বিদা
আল্লাহ তা‘আলা সমস্ত নবী (عليه السلام) গণকে হায়াত-মাউতের ইখতিয়ার দিয়েছেন। যখন তারা চান দুনিয়া থেকে ইন্তেকাল করেন। অনুরূপভাবে যে সময় এবং যেখানে চান তাদের রূহ মুবারক কবজ করা হয়।
আল্লামা আদরুদ্দীন আইনী (رحمة الله) বলেন, হযরত মূসা (عليه السلام) বায়তুল মুকাদ্দাসের পাশে দাফন হতে ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন। কেননা সেখানে অনেক নবী এবং ওলীদের কবর রয়েছে।
❏ আল্লামা বাদরুদ্দীন আইনী (رحمة الله) ও মুসলিম শরীফের ব্যাখ্যাকার ইমাম নববী (رحمة الله) এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, ওলী এবং আল্লাহর মকবুল বান্দাদের কাছে দাফন করা মুস্তাহাব এবং জায়েজ। আর ওলী আল্লাহদের কবরের স্থান বারকাত ও মর্যাদাবান।
(আল্লামা আইনী, উমদাতুল ক্বারী, ৮/১৪৯ পৃ.)
খায়বার বিজয়ী-
❏ সৈয়্যিদুনা হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) বলেন, রাসূল (ﷺ) খায়বার বিজয়ের দিন ইরশাদ করেন-
لَأُعْطِيَنَّ هَذِهِ الرَّايَةَ رَجُلًا يُحِبُّ اللهَ وَرَسُولَه، يَفْتَحُ اللهُ عَلَى يَدَيْهِ
-‘‘আগামীকাল আমি ঐ ব্যক্তির হাতে বিজয়ের পতাকা দেব, যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ﷺ) কে ভালবাসে। আর আল্লাহ তাঁর হাতে বিজয় দান করবেন।’’
❏ হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) বলেন-
فَدَعَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ، فَأَعْطَاهُ إِيَّاهَا، وَقَالَ: امْشِ، وَلَا تَلْتَفِتْ، حَتَّى يَفْتَحَ اللهُ عَلَيْكَ
-‘‘তখন রাসূল (ﷺ) হযরত আলী বিন আবি তালিব (رضي الله عنه) কে ডেকে তাঁর হাতে পতাকা দিলেন। আর বললেন, আল্লাহ তা‘আলা তোমাকে বিজয় দান না করা পর্যন্ত এদিক সেদিক তাকাবে না।’’ ১০২
{১০২. সহীহ মুসলিম শরীফ, ৪/১৮৭১ পৃ. হা/২৪০৫-২৪০৬, পরিচ্ছেদ: بَابُ مِنْ فَضَائِلِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ}
আক্বিদা
হুযূর পুরনূর (ﷺ) জানেন যে, খায়বার বিজয়ী কে? এজন্য হযরত আলী (رضي الله عنه) কে ডেকে তাঁর হাতে পতাকা দিয়েছেন।
এটাও বুঝা গেল যে, সমস্ত সাহাবায়ে কিরামগণের এই আক্বীদা ছিল যে, হুযূর (ﷺ) অবগত যে, খায়বার বিজয়ী কে। এজন্যই সবাই চুপ ছিলেন।
সুতরাং যে সব লোক বলে বেড়ায় যে, নবী (ﷺ) আগামীকালের খবর জানেন না এবং নবী (ﷺ) গায়ব জানেন না। তারা সাহাবায়ে কিরামগণের আক্বীদার বিরোধিতা করে।
পাহাড়ের উপর শাসন এবং রাসূল (ﷺ)’র ইলম-
সায়্যিদুনা হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) বলেন, রাসূল (ﷺ) যখন হেরা গুহায় ছিলেন, তা দুলতে লাগল, তখন রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন-
اسْكُنْ حِرَاءُ فَمَا عَلَيْكَ إِلَّا نَبِيٌّ، أَوْ صِدِّيقٌ، أَوْ شَهِيدٌ
-‘‘হে পাহাড় স্থির হও, তোমার উপর তো নাবী (ﷺ) অথবা সিদ্দিক অথবা শহীদ রয়েছেন।’’ ১০৩
{১০৩. সহীহ মুসলিম শরীফ, ৪/১৮৮০ পৃ. হা/২৪১৭, পরিচ্ছেদ: بَابُ مِنْ فَضَائِلِ طَلْحَةَ، وَالزُّبَيْرِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا}
আক্বিদা
নাবী পাক (ﷺ) পাহাড়ের উপর শাসন করেছেন এবং তাঁর উম্মতদের ব্যাপারে জানতেন যে, কোন কোন অবস্থায় তাদের ইন্তিকাল হবে।
দূর এবং কাছ থেকে শুনা-
সায়্যিদুনা হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) বলেন, আমরা রাসূল (ﷺ)’র পবিত্র খেদমতে উপস্থিত হলাম। হঠাৎ করে একটি মৃদু শব্দ শুনলাম, নাবী (ﷺ) বললেন-
أَتُدْرُونَ مَا هَذَا؟
‘তোমরা কি জান এই মৃদু শব্দ কিসের?’
তখন আমরা বললাম-
اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ
-‘আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই ভাল জানেন।’
রাসূল (ﷺ) বলেন-
هَذَا حَجَرٌ رُمِيَ بِهِ فِي النَّارِ مُنْذُ سَبْعِينَ خَرِيفًا، فَهُوَ يَهْوِي فِي النَّارِ الْآنَ، حَتَّى انْتَهَى إِلَى قَعْرِهَا
-‘এটি পাথরের শব্দ, যেটি আজ থেকে ৭০ বছর পূর্বে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয়েছিল, এখন এটি জাহান্নামের নিচে পৌঁছেছে।’ ১০৪
{১০৪. সহীহ মুসলিম শরীফ, ৪/২১৮৪ পৃ. হা/২৮৪৪, পরিচ্ছেদ: بَابٌ فِي شِدَّةِ حَرِّ نَارِ جَهَنَّمَ وَبُعْدِ قَعْرِهَا وَمَا تَأْخُذُ مِنَ الْمُعَذَّبِينَ}
আক্বিদা
নাবি পাক (ﷺ)’র শ্রবণশক্তি এত বেশি যে, দূর-নিকট এর কোন পার্থক্য নেই। সত্তর বছর ধরে নিচে পাথর পড়ছে। এটা কত কোটি মাইল দূরে তা আন্দাজ করা যায়। হুযূর পাক (ﷺ) এই পাথর জাহান্নামের নীচে যাওয়ার ফলে সৃষ্ট আওয়াজ মাদিনা শরীফে বসে শুনেছেন। অনুরূপ রাসূল (ﷺ) তাঁর উম্মাত ও গোলামদের দরুদ ও সালাম শুনেন। তারা যেখান থেকে পড়–কনা কেন?
❏ ইমামে আহলে সুন্নাত শাহ্ আহমাদ রেযা খাঁন বেরলভী (رحمة الله) এজন্যই বলেছেন-
دور ونيزد يك كے سننے والے وه كان
كان لعل كرامت پہ لاكوں سلام
“দূর এবং নিকট থেকে শ্রবণকারী ওই কান মোবারক
মনি মুক্তাময় ওই কান মোবারকের মর্যাদার উপর লাখো সালাম।’’
নেকড়ে বাঘ কর্তৃক বলা যে, নবী (ﷺ)’র নিকট অতীত-ভবিষ্যতের জ্ঞান রয়েছে-
সায়্যিদুনা হযযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) বলেন, একটি নেকড়ে বাঘ কতগুলো বকরীর কাছে গিয়ে একটি বকরি পাকড়াও করল। রাখাল বাঘ থেকে বকরিকে ছিনিয়ে আনল। নেকড়ে টিলার উপর উঠে বলতে লাগল “আমি এটাকে খাওয়ার ইচ্ছা করেছি, যেটি আল্লাহ তা‘আলা আমাকে দিয়েছেন। অথচ তুমি সেটি আমার থেকে ছিনিয়ে নিলে। রাখাল নেকড়ের কথা বলতে দেখে বলল- “আল্লাহর শপথ! আজ আমি যে ঘটনা দেখলাম তা কখনো দেখিনি। যে, নেকড়ে কিভাবে কথা বলে?”
তখন নেকড়ে বাঘ বলতে লাগল-
أَعْجَبُ مِنْ هَذَا رَجُلٌ فِي النَّخَلَاتِ بَيْنَ الْحَرَّتَيْنِ يُخْبِرُكُمْ بِمَا مَضَى وَبِمَا هُوَ كَائِن بَعَدَكُمْ
এর থেকে আরো আশ্চর্য বিষয় হল যে, এক মহান সাহেব দু’পাহাড়ের মাঝে খেজুরের পতাকার মধ্যে (মদিনা শরীফ) রয়েছেন, যিনি পূর্ব-পরের সংবাদ দেন। ঐ ব্যক্তি (রাখাল) ছিল ইহুদী।
فجَاءَ الرَّجُلُ إِلَى النَّبِي صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَسْلَمَ وَخَبَّرَهُ
-‘ওই ব্যক্তি নবী করিম (ﷺ)’র দরবারে আসলেন নেকড়ে বাঘের ঘটনা বললেন এবং মুসলমান হয়ে গেলেন।’ ১০৫
{১০৫. ইমাম বাগভী, শরহে সুন্নাহ, ১৫/৮৭ পৃ. হা/৪২৮২, পরিচ্ছেদ: بَابُ كَلامِ السِّبَاعِ খতিব তিবরিযি, মিশকাত শরীফ, ৩/১৬৬৬পৃ. হা/৫৯২৭, আহলে হাদিস আলবানীও মিশকাতের তাহকীকে একে সহীহ বলেছেন। পরিচ্ছেদ: بَاب فِي المعجزات}
আক্বিদা
নাবীয়ে পাক (ﷺ) পূর্ব-পর সব বিষয়ে খবর রাখতেন। নেকড়ে বাঘ একটি হিংস্র জন্তু সেও এ বিষয়ে দৃঢ় বিশ্বাস রাখে। কিন্তু যেসব মৌলভী বা আলিম দ্বীনের মুবালিগ সেজে এই সত্যকে অস্বীকার করে, তারাতো এই হিংস্র জন্তু থেকেও নিঃকৃষ্ট। মহান আল্লাহ এসব লোকদের ব্যাপারে বলেন-
أُولَئِكَ كَالْأَنْعَامِ بَلْ هُمْ أَضَلُّ
-‘তারা চতুষ্পদ জন্তুর মতো, বরং তারা এসব হতেও অধিক ভ্রষ্ট।’ ১০৬
{১০৬.সূরা আ‘রাফ: ১৭৯}
কবি বলেন-
تو دانا ئے ما كان و ما يكوں ہے
مگر بے خبر بے خبر ديكهتے ہيں
‘‘আপনি পূর্ব-পর সব বিষয়ে জ্ঞাত
কিন্তু যারা অজ্ঞ, তারা এটার ব্যাপারে কোন খবর রাখে না।”
শয়তান কর্তৃক ওযীফা বলে দেয়া-
সায়্যিদুনা হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে পাক (ﷺ) আমাকে রামাদানের ফিতরা দেখাশুনার জন্য নিযুক্ত করেছেন। আমার কাছে এক ব্যক্তি এসে খাদ্য শস্য হতে মুষ্টি ভরে ভরে নিতে লাগল। আমি তাকে পাকড়াও করে বললাম, তোমাকে আমি রাসূল (ﷺ)’র কাছে নিয়ে যাব।
সে বলতে লাগলোঃ আমি অভাবি আমার পরিবার আছে, আমি অক্ষম। এটি শুনে তাকে আমি ছেড়ে দিলাম। যখন সকাল হল নবীয়ে পাক (ﷺ) বললেন-
يَا أَبَا هُرَيْرَةَ، مَا فَعَلَ أَسِيرُكَ البَارِحَةَ؟
হে আবূ হোরায়রা, গত রাত চুর তোমার সাথে কিরূপ আচরণ করেছে? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ), যখন অনেক অনুনয়-বিনয় করল, তার উপর আমার দয়া চলে আসল, তাই তাকে ছেড়ে দিয়েছি। তখন
রাসূল (ﷺ) বললেন-
أَمَا إِنَّهُ قَدْ كَذَبَكَ، وَسَيَعُودُ
সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে এবং অচিরেই সে পুনরায় আসবে।
فَعَرَفْتُ أَنَّهُ سَيَعُودُ، لِقَوْلِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّهُ سَيَعُودُ، فَرَصَدْتُهُ
সুতরাং এখন আমার পূর্ণ ইয়াকিন হল যে, সে পুনরায় আসবে কেননা, এটা রাসূল (ﷺ) বলেছেন। তাই আমি তার অপেক্ষায় রইলাম। হঠাৎ সে আসল পুনরায় আমি তাকে পাকড়াও করে বললাম, তোমাকে রাসূল (ﷺ)’র কাছে নিয়ে যাব। সে বলল, আমাকে ছেড়ে দিন, আমি অভাবী, আমার উপর ছেলে সন্তানের বোঝা রয়েছে। আমি আর আসব না। তখন তার প্রতি আমার দয়া চলে আসল এবং তাকে ছেড়ে দিলাম। সকালে রাসূল (ﷺ) জিজ্ঞাসা করলেন-
يَا أَبَا هُرَيْرَةَ، مَا فَعَلَ أَسِيرُكَ
হে আবূ হুরায়রা তোমার বন্দি কী করেছে? আমি আরয করলাম, হে রাসূল (ﷺ), সে আমার কাছে বেশি দরিদ্রতা প্রকাশ করে ছেলে সন্তানদের উযর পেশ করেছে। তার উপর আমার দয়া হয়েছে, তাই তাকে ছেড়ে দিয়েছি। রাসূল (ﷺ) বললেন-
أَمَا إِنَّهُ قَدْ كَذَبَكَ وَسَيَعُودُ
-‘সাবধান! সে মিথ্যা বলেছে, অচিরেই সে আবার আসবে।’
আমি তৃতীয়বার তার জন্য অপেক্ষা করলাম। সে এসে ঘুরতে লাগল। তাকে আমি পাকড়াও করলাম এবং বললাম তোমাকে রাসূূল (ﷺ)’র কাছে নিয়ে যাব। তুমি আসবে না বলে পুনরায় এসেছ। সে বলল, আমাকে ছেড়ে দাও।
أُعَلِّمْكَ كَلِمَاتٍ يَنْفَعُكَ اللَّهُ بِهَا
এমন কিছু কালিমা শিখিয়ে দেব, যেগুুলোর মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা তোমাকে উপকৃত করবেন। আমি বললাম, সেগুলো কি? সে (শয়তান) বলল-
إِذَا أَوَيْتَ إِلَى فِرَاشِكَ، فَاقْرَأْ آيَةَ الكُرْسِيِّ: {اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلَّا هُوَ الحَيُّ القَيُّومُ} [البقرة: ২৫৫]، حَتَّى تَخْتِمَ الآيَةَ، فَإِنَّكَ لَنْ يَزَالَ عَلَيْكَ مِنَ اللَّهِ حَافِظٌ، وَلاَ يَقْرَبَنَّكَ شَيْطَانٌ حَتَّى تُصْبِحَ
-‘‘রাত্রিবেলা আপনি যখন বিছানায় আসবেন, তখন আয়াতুল কুরছি শেষ পর্যন্ত তেলাওয়াত করবেন। তাহলে আল্লাহ তা’য়ালা আপনার হেফাজতের জন্য একজন ফেরেশতা পাঠাবেন। অতঃপর সকাল পর্যন্ত শয়তান আপনার কাছে আসবেনা।’’
আমি তাকে ছেড়ে দিলাম, রাসূল (ﷺ) বললেন-
مَا فَعَلَ أَسِيرُكَ البَارِحَةَ
‘হে আবূ হুরায়রা! তোমার কয়েদি কী বলেছে?’ আমি আরয করলাম, সে আমাকে এমন কিছু শব্দ শিখিয়েছে যার মাধ্যমে আল্লাহ তা’য়ালা আমাকে উপকার দেবেন।
তখন নবী করিম (ﷺ) বললেন-
أَمَا إِنَّهُ قَدْ صَدَقَكَ وَهُوَ كَذُوبٌ
সাবধান! সে বড় মিথ্যুক কিন্তু সে যা বলেছে তা সত্য।
রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করলেন, হে আবূ হুরায়রা, তুমি জান তিন দিন কার সাথে কথা বলেছো? হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) বললেন, জানিনা। রাসূল (ﷺ) বললেন, সে শয়তান। ১০৭
{১০৭. ইমাম বুখারী, আস-সহীহ, ৩/১০১ পৃ. হা/২৩১১, খতিব তিবরিযি, মিশকাত শরীফ, ১/৬৫৫পৃ: হা/২১২৩, পরিচ্ছেদ: كتاب فَضَائِل الْقُرْآن, ইমাম বায়হাকী, শুয়াবুল ঈমান, ৪/৫৩ পৃ. হা/২১৭০ এবং দাওয়াতুল কাবীর, হা/৪০৬, ইমাম বাগভী, শরহে সুন্নাহ, ৪/৪৬২ পৃ. হা/১১৯৬, ইবনে আছির, জামেউল উসূল, হা/৬২৪৯, ইমাম মুনযিরী, তারগীব ওয়াত তারহীব, ১/২৩৭ পৃ. হা/৯০০}
আক্বীদা:
নাবী করিম (ﷺ) সাহাবাকে অতীত ও ভবিষ্যতের ঘটনার সংবাদ দিয়েছেন এবং সাহাবাও এসব ঘটনার সত্যায়ন করেছেন। অনুরূপভাবে শয়তান মানুষের ছুরতে আসতে পারে এবং ওজীফাও বর্ণনা করে। এজন্য মুসলমানদের উচিৎ এসব লোকদের থেকে বাঁচা। এবং ওয়ায়েজ ও ওযীফা এমন হাযারাত থেকে শিক্ষা করা যাদের আক্বীদার মধ্যে রাসূল (ﷺ)’র মহত্ব ও ভালবাসা প্রকাশ পায়।
❏ আল্লামা জালালুদ্দীন রুমী (رحمة الله) বলেন-
اے بسا ابليس آدم روئ ہست
-‘‘অনেক সময় ইবলিসও আদাম সন্তানের সূরাতে দেখা দেয়।’’
স্মরণশক্তি দান করা-
সায়্যিদুনা হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) বলেন, একদা নবী করিম (ﷺ) ইরশাদ করেন যে, তোমাদের যে ব্যক্তি তার কাপড় বিছিয়ে দেবে অতঃপর একে নিজ বক্ষের সাথে মিলিয়ে নিবে তাতে সে হাদিসকে স্মরণ রাখতে পারবে।
فَإِنَّهُ لَمْ يَنْسَ شَيْئًا سَمِعَهُ
-‘তবে সে কোন শোনা কথাই ভুলবে না।’
فَبَسَطْتُ بُرْدَةً عَلَيَّ، حَتَّى فَرَغَ مِنْ حَدِيثِهِ، ثُمَّ جَمَعْتُهَا إِلَى صَدْرِي، فَمَا نَسِيتُ بَعْدَ ذَلِكَ الْيَوْمِ شَيْئًا حَدَّثَنِي بِهِ
-‘‘অতঃপর আমি চাদর বিছিয়ে দিলাম। সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত নবী করিম (ﷺ)’র বর্ণনাকৃত কোন হাদিস ভুলিনি।’’ ১০৮
{১০৮ . সহীহ মুসলিম শরীফ, ৪/১৯৪০ পৃ. হা/২৪৯৩, পরিচ্ছেদ: بَابُ مِنْ فَضَائِلِ أَبِي هُرَيْرَةَ الدَّوْسِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ}
আক্বিদা
স্মরণশক্তি মানুষের একটি গুণ। যেটি মানুষ কুদরতিভাবে পেয়ে থাকে। কিন্তু আমাদের রাসূলে মাকবুল (ﷺ) কে আল্লাহ তা‘আলা এই ক্ষমতা দান করেছেন যে, তিনি যে কোন মানুষকে এই গুন দান করতে পারেন। কোন জিনিস কম হলে তা হাত পেতে নেয়া যায়, কিন্তু জিনিস যখন বেশি হয় তবে তা নেয়ার জন্য কাপড় বা চাদরের প্রয়োজন হয়। হুযূরে কারিম (ﷺ) তখন রাহমাতের সাগরের জোয়ারের মধ্যে ছিলেন। তাই বললেন-
أَيُّكُمْ يَبْسُطُ ثَوْبَهُ
তোমাদের মধ্যে কে আছ যে তার কাপড় বিছাবে? বুঝা গেল এটি বড় কোন দান। হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) তৎক্ষণাৎ চাদর বিছিয়ে দিলেন।
এই বিশ্বাসের উপর হুযুর (ﷺ) হিফয শক্তি দান করেছেন। হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) বলেন, সেদিন হতে আজ পর্যন্ত আমি কোন হাদিস ভুলিনি।
❏ হাকিমুল উম্মত মুফতি আহমাদ ইয়ারখাঁন গুজরাটি (رحمة الله) বলেন-
مالك ہي خزانہ قدرت كے جو جس كوچا ہيں ڈ اليں
دى خلد جناب ربيعہ بگڈ ى لاكهوں كى بنائ ہے
-‘‘তিনি কুদরতে খাজিনার (ধনভাণ্ডারের) মালিক যাকে চান দিয়ে দেন,
হযরত রবাঈকে জান্নাত দান করেছেন, লক্ষ বঞ্চিতকে তিনি করেছেন সৌভাগ্যবান।’’
নেক আমল দ্বারা গুনাহ মাফ হওয়া-
সায়্যিদুনা হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) বলেন, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন- একব্যক্তি রাস্তায় হাঁটছিল, রাস্তায় সে একটি কাটাযুুক্ত গাছের ডাল দেখতে পেল। ডালটি নিয়ে একপাশে রেখে দিল।
فَشَكَرَ اللهُ لَهُ، فَغَفَرَ لَهُ
-“অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তার এ নেক আমাল কবূল করেছেন এবং তাকে ক্ষমা করে দিলেন।”
(ইমাম মুসলিম, আস-সহীহ, ৩/১৫২১ পৃ. হা/১৯১৪)
আক্বিদা
নেক কাজের মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা গুনাহ ক্ষমা করে দেন। এ কারণে আহলে সুন্নাত ওয়াল জা‘আমাত মুসলমানদের জন্য ঈসালে সাওয়াব করেন। কেননা মৃত ব্যক্তিদের জন্য কুরআন তিলাওয়াত করে ইসালে সাওয়াব করলে আল্লাহ তা‘আলা গুনাহ ক্ষমা করে দেন।
আল্লাহর ওলীদের স্থান-
হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) ইরশাদ করেন, রাসূল (ﷺ) তাঁর নূরাণী জবানে বলেছেন-
رُبَّ أَشْعَثَ، مَدْفُوعٍ بِالْأَبْوَابِ لَوْ أَقْسَمَ عَلَى اللهِ لَأَبَرَّهُ
-‘‘ধূলায় মিশ্রিত চুলবান এবং দরজা সমূহ থেকে তাড়িতদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে, তারা যদি আল্লাহর উপর ভরসা করে শপথ করেন তবে আল্লাহ তা‘আলা তাদের শপথকে সত্য হিসেবে পরিণত করেন।’’ ১০৯
{১০৯ . সহীহ মুসলিম শরীফ, ৪/২০২৪ পৃ. হা/২৬২২, পরিচ্ছেদ: بَابُ فَضْلِ الضُّعَفَاءِ وَالْخَامِلِينَ}
আক্বিদা
আল্লাহর ওলীগণ আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর প্রিয় রাসূল (ﷺ)’র আদেশ এবং আহকাম সমূহ পালন করার মাধ্যমে এমন মাক্বাম অর্জিত হয় যে, তারা যেরূপ বলেন আল্লাহ তা‘আলা তার বাস্তবায়ন করেন। এই মাক্বাম ও মর্যাদাটি মহান আল্লাহ তাদেরকে দান করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-
ذَلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَنْ يَشَاءُ
-‘‘এটা মহান আল্লাহর অনুগ্রহ, যাকে ইচ্ছা তাকে তা দান করেন।’’ ১১০
{১১০ . সূরা মায়িদা: ৫৪। }
আল্লাহর ওলীদের “হ্যাঁ” সূচক বা বাস্তবিক মক্বাম-
সৈয়্যদুনা হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলে কারিম (ﷺ) ইরশাদ করেন-
إِنَّ اللهَ إِذَا أَحَبَّ عَبْدًا دَعَا جِبْرِيلَ فَقَالَ: إِنِّي أُحِبُّ فُلَانًا فَأَحِبَّهُ، قَالَ: فَيُحِبُّهُ جِبْرِيلُ، ثُمَّ يُنَادِي فِي السَّمَاءِ فَيَقُولُ: إِنَّ اللهَ يُحِبُّ فُلَانًا فَأَحِبُّوهُ، فَيُحِبُّهُ أَهْلُ السَّمَاءِ، قَالَ ثُمَّ يُوضَعُ لَهُ الْقَبُولُ فِي الْأَرْضِ
-‘‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা যখন কোন বান্দাকে মুহাব্বাত করেন, তখন জিব্রা‘ঈল (عليه السلام) কে ডেকে বলেন, আমি অমুক বান্দাকে ভালবাসি তুমিও তাকে ভালবাস। জিবরাঈল (عليه السلام) তাকে ভালবাসেন। অতঃপর জিবরাঈল (عليه السلام) আসমানে ঘোষণা করে বলেন, আল্লাহ তা‘আলা অমুক ব্যক্তিকে ভালবাসেন তোমরাও তাকে ভালবাস। সুতরাং আসমান বাসিরা তাকে ভালবাসেন এবং তিনি বলেন, অতঃপর তাকে যমীনে গ্রহণযোগ্যতা দান করা হয়। ১১১
{১১১ . সহীহ মুসলিম শরীফ, ৪/২০৩০ পৃ. হা/২৬৩৭, পরিচ্ছেদ: بَابُ إِذَا أَحَبَّ اللهُ عَبْدًا حَبَّبَهُ لِعَبَادِهِ , ইমাম তাবরানী, মু‘জামুল আওসাত, ৫/১৭৯ পৃ. হা/৫০০১, ইমাম আহমদ, আল-মুসনাদ, ১৩/৬৩ পৃ. হা/৭৬২৫, মুসনাদি আবি ই‘য়ালা, ১২/৩৯ পৃ. হা/৬৬৮৫, ইমাম আবু নুয়াইম ইস্পাহানী, হিলইয়াতুল আউলিয়া, ৩/২৫৮ পৃ., মুসনাদে বায্যার, হা/৮৩৯২, ইমাম বুখারী, আস-সহীহ, ৪/১১ পৃ. হা/৩২০৯, সহীহ ইবনে হিব্বান, ২/৮৫ পৃ. হা/৩৬৪}
আক্বিদা
আল্লাহর ওলীদের সাথে মুহাব্বাত রাখা আল্লাহর সুন্নত তাঁদেরকে যারা ভালবাসেন, আল্লাহ তা‘আলা তাঁদের উপর খুশি হন। আল্লাহর ওলীদের প্রসিদ্ধতা এবং গ্রহণযোগ্যতা আল্লাহ তা‘আলা নিজেই করেছেন এবং আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে বড় মর্যাদা ও সম্মানের মাধ্যমে প্রতিপালন করেন। তাদেরকে বড় ক্ষমতা এবং ইখতিয়ার দান করেন।
❏ হাদীসে কুদসীর মধ্যে আছে-
كُنْتُ سَمْعَهُ الَّذِي يَسْمَعُ بِهِ، وَبَصَرَهُ الَّذِي يُبْصِرُ بِهِ، وَيَدَهُ الَّتِي يَبْطِشُ بِهَا، وَرِجْلَهُ الَّتِي يَمْشِي بِهَا، وَإِنْ سَأَلَنِي لَأُعْطِيَنَّهُ، وَلَئِنِ اسْتَعَاذَنِي لَأُعِيذَنَّهُ
-‘‘মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, আমি তাদের কান হয়ে যাই যা দ্বারা তারা শুনেন, তাদের চোখ হয়ে যাই, যা দ্বারা তারা দেখেন, তাদের পা হয়ে যাই, যা দ্বারা তারা চলেন, তাদের হাত হয়ে যাই, যা দ্বারা তারা ধরেন। তারা যদি আমার কাছে কিছু প্রার্থনা করে অবশ্যই আমি তা কবুল করি।’’ ১১২
{১১২ . সহীহ বুখারী শরীফ, ৮/১০৫ পৃ. হা/৬৫০২, পরিচ্ছেদ: بَابُ التَّوَاضُعِ , ইমাম বায়হাকী, আস-সুনানুল কোবরা, ৩/৪৮২ পৃ. হা/৬৩৯৫, মুসনাদে বায্যার, হা/৮৭৫০, ইমাম বাগভী, শরহে সুন্নাহ, ৫/১৯ পৃ. হা/১২৪৭, খতিব তিবরিযি, মিশকাত, হা/২২৬৬}
রাসূল (ﷺ) সর্বপ্রথম সৃষ্টি এবং শাফা‘আতকারী-
❏ ইমাম বায়হাকী (رحمة الله) বর্ণনা করেন-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَمَّا خَلَقَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ آدَمَ خَيَّرَ لِآدَمَ بَنِيهِ، فَجَعَلَ يَرَى فَضَائِلَ بَعْضِهِمْ عَلَى بَعْضٍ، قَالَ: فَرَآنِي نُورًا سَاطِعًا فِي أَسْفَلِهِمْ، فَقَالَ: يَا رَبِّ مَنْ هَذَا؟ قَالَ: هَذَا ابْنُكَ أَحْمَدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هُوَ الْأَوَّلُ وَالْآخَرُ وَهُوَ أَوَّلُ شَافِعٍ
-‘‘হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, যখন আল্লাহ তা‘আলা হযরত আদম () কে সৃষ্টি করলেন, তখন তাকে তাঁর সন্তান-সন্ততি দেখালেন। হযরত আদম () তাদের পারস্পরিক শ্রেষ্ঠত্ব নিরীক্ষা করতে থাকেন। অবশেষে তিনি একটি চমকদার (উজ্জল) নূর দেখতে পেয়ে জিজ্ঞাসা করলেন : হে পরওয়ারদিগার! এ কার নূর? আল্লাহ তা‘আলা বললেন, এ তোমার আওলাদ, তাঁর নাম (আসমানে) আহমদ (ﷺ)। তিনি (সৃষ্টিতে) প্রথম ও তিনি প্রেরণে (নবীদের) সবার শেষ, তিনি সর্বপ্রথম শাফায়াতকারী।’’ ১১৩
{১১৩ .
ক. ইমাম বায়হাকী : দালায়েলুল নবুয়ত : ৫/৪৮৩ পৃ. দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।
খ. ইমাম সুয়ূতি : খাসায়েসুল কোবরা : ১/৭০ পৃ. হাদিস : ১৭৩
গ. আল্লামা ইমাম ইবনে আসাকির : তারিখে দামেস্ক : ৭/৩৯৪-৩৯৫ পৃ. দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।
ঘ. ইমাম যুরকানী : শরহুল মাওয়াহেব, ১/৪৩ পৃ., দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।
ঙ. মুত্তাকী হিন্দী : কানযুল উম্মাল : ১১/৪৩৭ পৃ. হা/৩২০৫৬, মুয়াস্সাতুর রিসালা, বয়রুত, লেবানন।
চ. আবু সা‘দ নিশাপুরী, শরফুল মুস্তফা, ৪/২৮৫পৃ.
ছ. কাস্তাল্লানী, মাওয়াহেবে লাদুন্নীয়া, ১/৪৯পৃ.
জ. দিয়ার বকরী, তারীখুল খামীস, ১/৪৫পৃ.
ঝ. র্সারাজ, হাদিসাহ, হাদিস নং.২৬২৮
ঞ. ইবনে হাজার আসকালানী, আল-মুখাল্লিসিয়্যাত, ৩/২০৭পৃ. হাদিসঃ ২৩৪০,
ট. সালিম র্জারার, আল-ইমা ইলা যাওয়াইদ, ৬/৪৭৮পৃ. হা/৬০৮৩
ঠ. ইবনে সালেহ শামী, সবলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ১/৭১পৃ. দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।
ড. ইফরাকী, মুখতাসারে তারীখে দামেস্ক, ২/১১১পৃ.}
আক্বিদা
এ হাদিস থেকে বুঝা যায় যে হযরত সায়্যিদিনা আদম (عليه السلام) রাসূল (ﷺ) কে নূর রূপেই দেখে ছিলেন, আর তিনি মহান রবের কাছে পরিচয় জানতে চাইলে আহমদ (ﷺ) বলেছেন রুহে আহমদ (ﷺ) বলেননি। সকলেরই জানা যে রুহকে বান্দা বলা হয় না। তাই এ হাদিস থেকে প্রমাণিত হল যে সর্ব প্রথম রাসূল (ﷺ)-এর নূরানী জিসম মোবারককে সৃষ্টি করা হয়েছে। ১১৪
{১১৪. সম্পাদক কর্তৃক সংযোজিত।}