১. নারীর শারীরিক পার্থক্য


বিজ্ঞানীদের মতে নারী ও পুরুষের মধ্যে দৈহিক গঠনের ক্ষেত্রে পার্থক্য রয়েছে। নারীর আকৃতি, অবয়ব, অংগ-প্রত্যংগ হতে আরম্ভ করে শারীরিক অণু পরমাণু পর্যন্ত পুরুষ হতে সম্পূর্ণ পৃথক। শরীরতত্ব বিষয়ে গবেষণার ফলে প্রমাণিত হয়েছে যে, নারীর তুলনায় পুরুষের শারীরিক অবস্থা অনেক গুণ বেশি শক্তিশালী। মাতৃগর্ভে সন্তানের নারী বা পুরুষ আকৃতি ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে তাদের শারীরিক গঠন লাভ করে। নারীর দৈহিক গঠন এমনভাবে গঠিত হয় যাতে করে নারী সন্তান উৎপাদন ও লালন-পালন করতে পারে। এজন্য দেখা যায় নারীর জরায়ূ গঠন হতে আরম্ভ করে প্রাপ্তবয়স্কা পর্যন্ত তার দেহের পূর্ণ বিকাশ জেনেটিক প্রভাবে হয়ে থাকে। নারীর স্তনযুগল থাকে যা পুরুষদের জন্য প্রযোজ্য নয়। কারণ সন্তান লালন-পালনের জন্য তাকে যুগল স্তন দিয়েই সৃষ্টি করা হয়েছে। নারীদের দেহে ডিম্বকোষ থাকার ফলে মাসিক ঋতুস্রাব হয়ে থাকে। এ সময় তার দেহের তাপ সংরক্ষণ হ্রাস পায়, রক্তে চাপ কমে যায়, হজম শক্তি ব্যাহত হয়, স্বাধ অবসন্ন, স্মরণশক্তি কমে যায় এবং মনের একগ্রতা বিনষ্ট হয়। এ বিষয়গুলো পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এজন্য নারীরা শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। নারীর ভিতরে হরমোনজনিত কারণে লিঙ্গের পরিবর্তন হয়েছে এবং তাদের শারীরিক গঠন কিছুটা নরম। শরীর বিজ্ঞানে বিশেষজ্ঞ এমিল নুডিক, ডাক্তার ক্রেগার গীব হার্ডদের মতে ঋতুবর্তী নারীদের মধ্যে শারীরিক দুর্বলতা সম্পর্কে রোগ বেশি বিদ্যমান। অধ্যাপক লাপিনস্কি বলেন- “মাসিক ঋতুকালে নারীদের কর্মাধীনতা নষ্ট হয়ে পড়ে এবং একটা প্রভাবশালী ক্ষমতা তাকে বাধানুগত করে ফেলে। স্বেচ্ছায় কোন কাজ করা বা না করার শক্তি প্রায় নষ্ট হয়ে পড়ে। ডাক্তার ক্রাফটের মতে ভদ্র, বিনয়ী, প্রফুল্লাচিত্ত নারীদের মধ্যে ঋতুস্রাবের সময় পরিবর্তন দেখা দেয়। এ ডাক্তারের মতে এ সময় নারীরা হঠাৎ রুক্ষ, ঝগড়াটে ও অসহিষ্ণু হয়ে ওঠে।


অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ওয়েনবার্গ মন্তব্য করেন- “আত্মহত্যাকারী নারীদের শতকরা ৫০ জন ঋতুকালেই আত্মহত্যা করে থাকে।” ডাক্তার রিপ্রেসেভের মতে নারীদের অতিরিক্ত দৈহিক উপাদানসমূহ ক্ষুধার্ত অবস্থায় যে পরিমাণে বের হয়, গর্ভাবস্থায় তদপেক্ষা অধিক পরিমাণে নির্গত হয়ে থাকে। ডাক্তার ফিশার, মোল, হিউলাক, এলবার্ট, ইলিয়াস প্রমুখের মতে গর্ভকালীন মাসে নারীদের দৈহিক ও মানসিক শ্রম করার যোগ্যতা থাকে না। ফ্রান্সের নোবেল প্রাইজ বিজয়ী ড. জলেকিস ক্যারেল-এর মতে নারী পুরুষে যে বৈষম্য বিরাজমান তা মৌলিক ও বুনিয়াদী ধরনের। এ বৈষম্য তাদের দেহে সৃষ্ট স্নায়ুমণ্ডলীতে বিদ্যমান। নারীদের সম্পূর্ণ দৈহিক অবয়বই ভিন্ন ধরনের। তাদের জীবনকোষ হতে এক প্রকার রাসায়নিক দ্রব্য নির্গত হয় যা গর্ভ ধারণের উপযোগী করে সৃজন করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে নারী দেহের প্রতিটি কোষ নারীত্বের নিদর্শন বহন করে। নারী আর পুরুষের মধ্যে এ পার্থক্যের কারণেই একজনকে সন্তান উৎপাদন ও লালনপালন উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে, আরেকজনের দৈহিক গঠন করা হয়েছে ব্যাপক পরিধিতে কাজকর্ম করার জন্যে। এ ক্ষেত্রে নারী আর পুরুষের বৈষম্য দূরীকরণ করা সম্ভবপর নহে। এটি আল্লাহর সৃষ্টিগত পার্থক্য। নারীরা নরের চেয়ে দুর্বল। শক্তির ক্ষেত্রেও তাদের মধ্যে তফাৎ রয়েছে। একটি নরের যে পরিমাণ শক্তি বা সামর্থ্য থাকে নারীদের ততটা নয়। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষেত্রেও ব্যাপক তারতম্য রয়েছে। নরের লিঙ্গের আকার ও আকৃতি এক রকম; নারীদের লিঙ্গ অন্য রকমের। এ লিঙ্গের পার্থক্যগত কারণেও স্বভাব-চরিত্রেও পার্থক্য বিদ্যমান থাকে। দৈর্ঘ্য বা উচ্চতার দিক থেকে নারীরা নরের চেয়ে সামান্যতম ছোট হয়। অনেকে প্রমাণ করে বলেছেন স্বাভাবিক নারীর দৈর্ঘ্য থাকে বার সেন্টিমিটারের অধিক। এ পার্থক্য পরিবেশগত কারণেও পার্থক্যের হার সব দেশে বা অঞ্চলে একই রকম থাকে না। ওজনের ক্ষেত্রেও নারীরা নরের চেয়ে অনেক কম থাকে। নারীদেহের ওজন যে কোন স্বাভাবিক পুরুষের চেয়ে পাঁচ কিলোগ্রাম কম। শিরা উপ-শিরার গতি ও শক্তির দিক থেকেও নারী জাতি পুরুষের চেয়ে অনেক দুর্বল। নারীদের শিরা-উপশিরা নরের চেয়ে স্বতন্ত্র। নারীর শিরার স্পন্দনের দ্রূততাও ধীরতার ক্ষেত্রে অনুরূপ পার্থক্য বিদ্যমান। নরের শিরাগুলো নারীদের শিরা থেকে দৃঢ়তর, তেমন দ্রুততর। শ্বাস-প্রশ্বাসের দ্রুততা ও শক্তির দিক থেকেও নর-নারীর ভেতরে বড় রকমের বিভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। নিঃশ্বাসের ভেতর দিয়ে যে কার্বলিক এসিডের রেণুগুলো বেরিয়ে আসে, তা দেহের ভেতরকার তাপের প্রভাবে গরম হয়ে যায়। নিঃশ্বাসের সময় নর প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১১ ড্রাম কার্বন জ্বালিয়ে দেয়।পক্ষান্তরে নারী ঘণ্টায় ৬ ড্রাম জ্বালায় মাত্র। এতে প্রমাণিত হয় যে, নারীদেহের শক্তিজাত তাপ পুরুষের অর্ধেকের চেয়ে সামান্য বেশি। নরের মগজ সাধারণত গড়ে ৪৯.১০ আউন্স, আর নারীর মগজের ওজন মাত্র ৪৪ আউন্স। এ ওজনের তারতম্যের কারণেই বুদ্ধি প্রখরতা ও মন্থরতা নির্ভরশীল। তাই বলা যায় নর ও নারীর মগজের আকৃতি ও প্রকৃতি উভয় ক্ষেত্রেই যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। পুরুষের মগজের ওজন নারীর মগজের চেয়ে সাধারণত ১ ড্রাম বেশি। নারীদের মগজে শিরা ও প্যাচ খুব কম। তার আবরণ ব্যবস্থাও অসম্পূর্ণ। এ সব কারণে নর-নারীর মধ্যে এ সৃষ্টিগত পার্থক্যকে কোনভাবে অস্বীকার করা যায় না।


এভাবে মহান আল্লাহ তা‘আলা পুরুষদের চেয়ে, নারীদের শারীরিক শক্তি দৈহিক কাঠামো ও গঠন এবং মেধার দিক থেকে দুর্বল করে সৃষ্টি করেছেন। তবে তাদেরকে সন্তান উৎপাদন ও লালন-পালনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত যোগ্যতম করে তৈরি করা হয়েছে। নারী ও পুরুষের শারীরিক কাঠামো, দৃঢ়তা, সুস্থতা, ঋতুস্রাব, গঠন এবং হরমোনের কারনে আল্লাহ তা‘আলা নর ও নারীর জন্য একই ধরনের দায়িত্ব দিয়ে প্রেরণ করেনি। বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে প্রমাণ করেছেন যে, নর ও নারীর যৌন অনুভূতি, জীববিজ্ঞানের বাস্তবতা ও সামাজিক পরিবেশ হতে অস্তিত্ব লাভ করেছে। তাদের দায়িত্ববোধ, কর্তব্যবোধ ও অধিকার সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন।

Top