4 - كِتَابُ الصَّلَاةِ

19 - بَابٌ

81 - أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ حَمَّادٍ، عَنْ إِبْرَاهِيْمَ، عَنْ عَبْدِ اللهِ، عَنْ أَبِيْ ذَرٍّ  أَنَّهُ صَلَّىٰ صَلَاةً فَخَفَّفَهَا، وَأَكْثَرَ الرُّكُوْعَ وَالسُّجُوْدَ، فَلَـمَّا انْصَرَفَ، قَالَ لَهُ رَجُلٌ: أَنْتَ صَاحِبُ رَسُوْلِ اللهِ  وَتُصَلِّيْ هَذِهِ الصَّلَاةَ؟ فَقَالَ أَبُوْ ذَرٍّ: أَلَـمْ أُتِمَّ الرُّكُوْعَ وَالسُّجُوْدَ؟ قَالَ: بَلَىٰ، قَالَ: فَإِنِّيْ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ، يَقُوْلُ: «مَنْ سَجَدَ لِلهِ سَجْدَةً رَفَعَ بِهَا دَرَجَةً فِي الْـجَنَّةِ»، فَأَحْبَبْتُ أَنْ تُؤْتَىٰ دَرَجَاتٌ، أَوْ تُكْتَبُ لِيْ دَرَجَاتٌ.  وَفِيْ رِوَايَةٍ، عَنْ إِبْرَاهِيْمَ، عَنْ مَنْ حَدَّثَهُ: أَنَّهُ مَرَّ بِأَبِيْ ذَرٍّ  بِالْرَبْذَةِ، وَهُوَ يُصَلِّيْ صَلَاةً خَفِيْفَةً، يُكْثِرُ فِيْهَا الرُّكُوْعَ وَالسُّجُوْدَ، فَلَـمَّا سَلَّمَ أَبُوْ ذَرٍّ، قَالَ لَهُ الرَّجُلُ: تُصَلِّيْ هَذِهِ الصَّلَاةَ، وَقَدْ صَحِبْتَ رَسُوْلَ اللهِ ؟! فَقَالَ أَبُوْ ذَرٍّ: سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ، يَقُوْلُ: «مَنْ سَجَدَ لِلهِ سَجْدَةً رَفَعَهُ اللهُ بِهَا دَرَجَةً فِي الْـجَنَّةِ»، فَلِذَلِكَ أُكْثِرُ فِيْهَا السُّجُوْدَ.


৪. সালাত অধ্যায়

বাব নং-৩৪. ১৯. 

৮১. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা হাম্মাদ থেকে, তিনি ইব্রাহীম থেকে, তিনি হযরত আব্দুল্লাহ (رحمة الله) থেকে, তিনি হযরত আবু যর গিফারী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন- একদা তিনি সংক্ষিপ্ত করে নামায আদায় করেন। কিন্তু রুকু-সিজদা অধিক পরিমাণে করেন। নামায শেষে ফিরে আসলে এক ব্যক্তি তাঁকে বলল, আপনি রাসূল (ﷺ) ’র একজন সাহাবী, কিন্তু এভাবে (তাড়াহুড়া) করে নামায আদায় করেন? আবু যর (رضي الله عنه) বললেন, আমি কি রুকু-সিজদা পূর্ণ করিনি? লোকটি বলল, হ্যাঁ, করেছেন। তিনি বললেন, আমি রাসূল (ﷺ)  কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য একটি সিজদা দিবে জান্নাতে তার জন্য আল্লাহ একটি দরজা বুলন্দ করবেন। সুতরাং আমার পছন্দ হল যে, আমার বহু দরজা বৃদ্ধি হোক।

ইব্রাহীম নখঈ (رحمة الله) থেকে অপর একটি রেওয়ায়েত আছে যে, রাবযাহ নামক স্থানে হযরত আবু যর (رضي الله عنه)’র নিকট দিয়ে এক ব্যক্তি যাচ্ছিলেন। তখন তিনি সংক্ষিপ্তভাবে নামায আদায় করছিলেন এবং অধিক পরিমাণে রুকু-সিজদা করেছেন। (অর্থাৎ অল্পসময় অধিক রাকাত নামায পড়েছিলেন)। তিনি সালাম ফিরালে লোকটি বলল, আপনি একজন রাসূলের সাহাবী অথচ এভাবে নামাজ আদায় করলেন? তখন আবু যর (رضي الله عنه) বললেন, আমি রাসূল (ﷺ) কে বলতে শুনেছি, যে আল্লাহর জন্য একটি সিজদা করবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি দরজা বৃদ্ধি করবেন। তাই আমি নামাযে অধিক সিজদা করছি।

ব্যাখ্যা: নামাযে কিয়ামকে দীর্ঘ করা উত্তম না রাকাতের সংখ্যা বৃদ্ধি করে রুকু-সিজদার সংখ্যা বৃদ্ধি করা উত্তম? এ নিয়ে ওলামায়ে কেরামের মধ্যে মত পার্থক্য রয়েছে। কেউ নামাযে দীর্ঘক্ষণ কিয়াম করাকে উত্তম ও অধিক সওয়াবের কাজ মনে করেন। আবার কেউ কেউ বেশী রাকাতে বেশী রুকু-সিজদা করা উত্তম মনে করেন। আর কেউ কেউ উভয়টিতে সমান ফযীলত মনে করেন। বিশুদ্ধ হাদিস সমূহে কিয়াম, রুকু ও সিজদার ফযীলত বর্ণিত আছে। ইমাম আ‘যম (رحمة الله) বলেন- যেহেতু হাদিসে উভয়টির ফযীলত সম্পর্কে দলীল রয়েছে, একটির উপর অপরটিকে প্রাধান্য দেওয়ার কোন সংগত কারণ নেই। তাই তিনি এ ব্যাপারে কোন ফায়সালা দেননি। যারা অধিক সিজদার পক্ষে মত পোষনকারী, তারা দলীল হিসাবে এ হাদিসটি পেশ করেন।

তাছাড়া মুসলিম শরীফে হযরত আবু হোরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত হাদিসও দলীল হিসেবে পেশ করেন। হাদিসে বর্ণিত আছে, রাসূল (ﷺ)  বলেছেন “বান্দা ঐ সময় আল্লাহর অতি নিকটবর্তী হয়ে থাকে, যখন সে সিজদা অবস্থায় থাকে। সুতরাং এ সময় অধিক দোয়া করবে।” এ হাদিস দ্বারা সিজদার ফযীলত প্রমাণিত হয়।

যারা দীর্ঘ কিয়ামের পক্ষে তারা সহীহ মুসলিম শরীফে হযরত জাবির (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত হাদিস দলীল হিসেবে পেশ করেন। উক্ত হাদিসে রাসূল (ﷺ)  বলেছেন, اَفْضَلُ الصلوةِ طولُ القنوتِ “উত্তম নামায হল দীর্ঘ কিয়াম করা।” পক্ষান্তরে কিয়াম কিরাতের সাথে সর্ম্পক যুক্ত আর সিজদা তাসবীহ্’র সাথে সর্ম্পক যুক্ত আর কিরাত তাস্বীহ থেকে উত্তম। এ কারণেই রাসূল (ﷺ)  সিজদা অপেক্ষা কিয়াম দীর্ঘ করতেন। এছাড়া কষ্ট ও পরিশ্রম অনুযায়ী কাজের সওয়াব মিলে থাকে। কিয়ামে দৈহিক যে কষ্ট হয় সিজদায় তা হয়না। তাই দীর্ঘ সিজদা থেকে দীর্ঘ কিয়াম উত্তম। হানাফী মাযহাবের তিনজন ইমাম এ মত পোষণ করেন। ইসহাক ইবনে রাহ্ওয়ায়হ (رحمة الله) এ মতামতের মধ্যে চমৎকার ও সূ² একটি দৃষ্টিভঙ্গি পেশ করেছেন। তিনি বলেছেন, দিবাভাগের নামাযে রুকু-সিজদা দীর্ঘ করা আর রাতের নামাযে কিয়াম দীর্ঘ করা সংগতিপূর্ণ। ইমাম তিরমিযী বলেছেন তিনি হয়ত এ দৃষ্টিকোণ থেকে বলেছেন যে, রাসূল (ﷺ)  দিনের নামাযের চেয়ে রাতের নামাযে কিয়াম দীর্ঘ করতেন বলে বর্ণিত আছে।

Top