গাঙ্গুহীর কতেক ভ্রান্ত ধারনা
কেনইবা হবেনা ! ঐ কিতাবকে খলীল আহমদের দিকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে এবং তা তিনি তার উস্তাদ রশিদ আহমদ গাঙ্গুহীর নির্দেশক্রমে লিপিবদ্ধ। করেছেন। তাতে আমাদের পবিত্রতম প্রতিপালক মিথ্যা বলতে পারেন বলে ফতােয়া দেয়া হয়েছে। (দেখুন তার কিতাবের ৩ পৃষ্ঠা) আর আমাদের প্রিয় নবী(ﷺ) সম্পর্কে বলেছেন-“তার জ্ঞান অভিশপ্ত শয়তান থেকে কম।(দেখুন ১৪৭ পৃঃ)
আর রাসুলে পাক (ﷺ)-এর মীলাদ ও বেলাদত শরীফের সময় কিয়াম করাকে এর ন্যায় বলে, যা হিন্দুস্থানের মুশরিকরা স্বীয় আবিষ্কৃত ভ্রান্ত ভগবান শ্রী কৃষ্ণের জন্য করে থাকে যে, যখন তার জন্মাষ্টমীর দিন আসে তখন একজন মহিলাকে পূর্ণ গর্ভিতার ন্যায় সজ্জিত করে, অতঃপর জন্মের মুহুর্তের অবস্থাকে হুবহু বর্ণনা করে। তখন তারা খুব বিরক্তিবােধ ও মুহুর্তে মুহুর্তে করতালী, কাতচিত ও ছটফট করতে থাকে। অতঃপর এর নীচ থেকে একটি শিশুর প্রতিমা বের করে, নাচ-গান, আনন্দ-ফুর্তি, গান-বাজনা ও তালি বাজায়। তাছাড়া আরাে নিকৃষ্ট কৌতুক করে বেড়ায় অথচ (এ সাধু) মীলাদুন্নী (ﷺ) সম্মেলনকে এর সাথে তুলনা করেছেন এবং বলেছেন- বরং এটা মুশরিকদের চেয়েও নিকৃষ্টতম কর্ম। কেননা, তারা এর জন্য একটি তারিখ নির্দিষ্ট করে। আর এরা তাও করেনা বরং যখন ইচ্ছে অশ্লীল কথন করে'।(দেখুন ১৪১ পৃঃ
আর আহলে সুন্নাত যখন তাদের সামনে ওলামায়ে হেরমাঈন শরীফাইনের উদ্ধৃতি দিলেন যে, তাঁরা নিজেরাই {মিলাদুন্নবী (ﷺ)-এর} মজলিশ করেন এবং এ মর্যাদাপূর্ণ কর্ম মুস্তাহাব হওয়া সম্পর্কে বারংবার অগণিত ফতােয়া লিখে আসছেন, তখন ঐ গ্রন্থকার তাদের দুর্নাম ও ত্রুটি বের করতে তাদের ঈমান ও বিশ্বস্ততা সম্পর্কে সমালােচনা আরম্ভ করে এবং স্বীয় নগর দেওবন্দের ওহাবীদেরকে দ্বীন ও বিশ্বস্ততায় তাদের চাইতে শ্রেয়তর বলতে শুরু করে। যেমন ১৭-১৮ পৃষ্ঠায় বলেনঃ “ওলামায়ে দেওবন্দের যা অবস্থা সবই স্পষ্ট আর সামান্যও দুরে নয়। নামাজ জমাআত সহকারে আদায় করেন, অসৎ কর্মে বাধা প্রদান যতটুকু সম্ভব করে থাকেন, আর ফতােয়া লিখার সময় ধনী-দরিদ্রের সঠিক উত্তর প্রদান করেন। তাদের ত্রুটির উপর কেউ যদি সাবধান করে দেয় তা বিনাবাক্যে মেনে নেন। এটা আল্লাহর নিকট গ্রহণযােগ্যতার নিদর্শন, যেকোন বিবেকবান মুসলমানই তা স্বচক্ষে দেখতে পারেন। অন্যদিকে মক্কা শরীফের ওলামা কেরামদের যিনি আকল ও জ্ঞান দ্বারা প্রত্যক্ষ করেছেন, তিনি খুব ভাল করেই জানেন, আর যারা যানেননি, তারা নির্ভরযােগ্য বর্ণনা দ্বারা প্রত্যক্ষ করার ন্যায়ই জানেন যে, সেখানকার অধিকাংশ আলিম (অবশ্যই সবাই নন, বহু পরহেজগারও রয়েছেন। এ অবস্থায় যে, (১) তাদের পােষাক শরীয়ত সম্মত নয়। (২) দাঁড়ি অধিকাংশের একমুষ্টি থেকে কম (৩) নামাজের প্রতি উদাসীন (৪) শক্তি থাকা সত্ত্বেও সৎ কর্মের আদেশের তাগীদ শূন্য (৫) অধিকাংশ শরীয়ত পরিপন্থী আংটি - পরিহিত (৬) বিভিন্ন ধরণের ফ্যাশনের শােভা, আর (৭) ফতােয়া দানের ক্ষেত্রে নগদ দিয়ে যা ইচ্ছা লিখে নিতে পারবেন। যদি তাদের এ ত্রুটিগুলাে কেউ দেখিয়ে দেয়, তাহলে তাকে উত্তম মধ্যম দেয়ার জন্য ওরা তৈরী হয়ে যান। স্বয়ং শেখুল ওলামা (আল্লামা সৈয়দ আহমদ যিনী দাহলান (رحمة الله), শেখুল হিন্দ মাওলানা রাহমাতুল্লাহর সাথে যে কর্ম করেছেন তা কারাে নিকট গােপন নয়। বুগদাদী রাফেযী থেকে কিছু টাকা নিয়ে আবু তালিবকে মুমিন লিখে দিয়েছেন, যা বিশুদ্ধ হাদীসসমূহের বিপরীত। সুতরাং আর কতই লিখবাে, যা অনেক দীর্ঘ। ওলামায়ে হারামাঈনের দোষত্রুটিসমূহ লিখতে লজ্জাও লাগে। কিন্তু অক্ষম হয়ে লিখতে হচ্ছে। তাদের ওলামায়ে কিরামদের মধ্যে ফ্যাসাদ ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর অবাধ্যতা চরম আকার ধারণ করছে। এমনকি তিনি ২০ পৃষ্ঠায় লিখেছেঃ “এ নগণ্য বান্দা মসজিদে মক্কায়। আসর নামাজের পর ওয়াজকারী এক অন্ধ আলেমের নিকট মীলাদ মাহফিলের অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি। তিনি বললেন, বিদআত, হারাম। তখন অন্ধ বক্তাকে পছন্দ হলাে। কেননা, সে মীলাদ বর্ণনাকে হারাম বলে আখ্যায়িত করেছে।” অতএব, সে হিদায়তের পরিবর্তে অজ্ঞতা ও অন্ধতাকে পছন্দ করেছে। আমরা আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করছি যেন তিনি আমাদের ধ্বংস থেকে রক্ষা করেন। আল্লাহ তায়ালা আমাদের নবী মুহাম্মদ (ﷺ) তার বংশধর এবং সাহাবাদের উপর দরুদ প্রেরণ করুন। আমীন।