ওহাবী আকিদা ও সুন্নি আক্বিদা


১। ওহাবী আকিদাঃ রাসুল (ﷺ) কে ভাই বলা যাবে যেহেতু তিনি মানুষ। 

(বারাহীনই কাতিয়াহ কৃত খলিল আহমদ আম্বটভী) 


সুন্নী আকিদাঃ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে সাধারণ শব্দ দ্বারা ডাকা হারাম। (সূরা বাকারা, আয়াত-১০৪, পারা- ১, পৃষ্ঠা -১৫) 


২। ওহাবী আকিদাঃ রাসূল (ﷺ) এর জ্ঞানের চাইতে শয়তান ও আযরাঈল (আঃ) এর জ্ঞান বেশী। 

(বারাহীনই কাতিয়াহ কৃত খলিল আহমদ আম্বটভী। 


সুন্নী আকিদাঃ এটা বলা কুফরী, যেহেতু তিনি শিক্ষক হিসেবে প্রেরিত হয়েছেন। (বুখারী শরীফ, তফসীরে খাযিন) 


৩। ওহাবী আকিদাঃ নামাযে রাসূলের স্মরণ আসা হারাম। (সিরাতে মুস্তাকিম, কৃত ইসমাঈল দেহলভী) 


সুন্নী আকিদাঃ নামাযে রাসুলের ধারনা আসা ওয়াজিব যেহেতু আত্তাহিয়াতু পড়া ওয়াজিব। (বুখারী শরীফ)। 


৪। ওহাবী আকিদাঃ নবীজী (ﷺ) মাটির সৃষ্টি।

(হক বাতিলের দ্বন্দ্ব কৃত আহমদ শফী) 


সুন্নী আকিদাঃ নবীজী (ﷺ) নূরের সৃষ্টি। 

(সূরা মায়েদা,আয়াত ১৫, ৬ পারা,পৃষ্ঠা নং-৯) 


৫। ওহাবী আকিদাঃ নবীকে যে হাযির-নাযির মানে সে আবু জাহেল ও আবু লাহাবের মত। 

(ধর্মের নামে ভন্ডামীর মুখােশ উম্মােচন কৃত আহমদ শফী)


সুন্নী আকিদাঃ নবী হাযির-নাযির। সে সম্পর্কে কোরআনে পাকের মধ্যে ১১টি আয়াত রয়েছে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে (সূরা-তাহরিম,২৮-পারা, পৃষ্ঠা নং-১৭) 


৬। ওহাবী আকিদাঃ নবী (ﷺ) ইলমে গায়েব জানেন না। (হিফজুল ঈমান কৃত আশরাফ আলী থানভী)।


সুন্নী আকিদাঃ নবী (ﷺ) শব্দের অর্থ অদৃশ্যের খবর প্রদানকারী। নবী গায়েব জানে। সে বিষয়ে কোরআনের মধ্যে ৯টি আয়াত রয়েছে। তার মধ্যে একটি হচ্ছেঃ

(সূরা আলে ইমরান,আয়াত ১৭৯, পারা ৪,পৃষ্ঠা নং-১২) 


৭। ওহাবী আকিদাঃ নবী (ﷺ) নিজের কল্যাণ করতে পারে না। (বারাহীনই কাতিয়াহ কৃত খলিল আহমদ আম্বটভী)


সুন্নী আকিদাঃ নবীজী (ﷺ) নিজের ও উম্মতের কল্যাণ করতে পারেন। (মিশকাত শরীফ, তফসীরে রুহুল বয়ান) 


৮। ওহাবী আকিদাঃ নবীজী (ﷺ) মৃত্যুবরণ করে মাটির সাথে মিশে গেছে। (তাকভীয়াতুল ঈমান, কৃত ইসমাঈল দেহলভী) 


সুন্নী আকিদাঃ নবীজী (ﷺ) সহ ও সমস্ত শহীদগণ জীবিত (সূরা বাক্বারা, আয়াত ১৫৪, পারা-২, পৃষ্ঠা -২)


৯। ওহাবী আকিদাঃ মিলাদুন্নবী পালন করা হিন্দুদের ব্রাহ্মণদের জন্মদিন পালন করার মত। (সুন্নাত ও বিদাআতের সঠিক পরিচয়, কৃত আহমদ শফি) 


সুন্নী আকিদাঃ মিলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম) পালন করা আল্লাহ ও রাসুলের সুন্নত। সে বিষয়ে কুরআনে পাকের মধ্যে প্রায় ১৩-১৪টি আয়াত রয়েছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে-(সূরা আলে ইমরান, আয়াত- ৮১, পারা ৩, পৃষ্ঠা নং-১৯)


১০। ওহাবী আকিদাঃ ওরশ, ফাতেহা, যিয়ারত করা বিদআত। (সুন্নাত ও বিদাআতের সঠিক পরিচয়, কৃত আহমদ শফী) 


সুন্নী আকিদাঃ ফাতেহা করা উত্তম, এটি করলে একটি (নফল) হজ্জ এর সমান সওয়াব পাওয়া যায়। (কানযুল উম্মাল) 


১১। ওহাবী আক্বিদাঃ নামাযের পর মুনাজাত করা নাজায়েয। তাই তারা করেনা। 


সুন্নী আকিদাঃ নামাযের পর মুনাজাত করা সুন্নত। (তফসীরে মাযহাবী) 


১২। ওহাবী আক্বিদাঃ ঢিলে নিয়ে ৪০ কদম হাটা সুন্নত। (প্রিয় নবীর দিন রাত) 


সুন্নী আকিদাঃ ঢিলা নিয়ে ৪০ কদম হাটা মাকরুহ। (ফতােয়ায়ে শামী,কিমিয়ায়ে ছাদাত)


১৩। ওহাবী আকিদাঃ জানাযার পর মুনাজাত করা নাজায়েয। তাই তারা করে না। 


সুন্নী আকিদাঃ জানাযার পর মুনাজাত করা সুন্নত। (দুররে মুখতার, মেশকাত শরীফ) 


১৪। ওহাবী আকিদাঃ আযানের আগে সালাতু-সালাম দেওয়া নাজায়েয। 

সুন্নী আকিদাঃ আযানের আগে সালাতু-সালাম দেয়া জায়েয। (মেশকাত শরীফ) 


১৫। ওহাবী আকিদাঃ এই লােকটা কেমন ছিল বলা জায়েয নাই, তাই তারা বলে না।


সুন্নী আক্বিদাঃ এই লােকটা কেমন ছিল বলা জায়েয আছে। (বুখারী শরীফ,মুসলিম শরীফ) 


১৬। ওহাবী আকিদাঃ আযানের পর মুনাজাত দোয়া নাজায়েজ, তাই তারা করেনা। 


সুন্নী আকিদাঃ আযানের পর মুনাজাত/দোয়া করা মুস্তাহাব। (দুররে মুখতার, মেশকাত শরীফ) 


১৭। ওহাবী আকিদাঃ তাদের কাজ হচ্ছে বক্তব্য ও লেখনির মাধ্যমে নবী ও ওলীর সমালােচনা করা। 


সুন্নী আকিদাঃ সুন্নিদের কাজ হচ্ছে বক্তব্য ও লেখনির মাধ্যমে নবী ও ওলীর প্রশংসা করা। 


১৮। ওহাবী আকিদাঃ মা-বাবাকে পায়ে ধরে সালাম করা শিরক। (দেশ বিদেশের প্রশ্নোত্তর, কৃত দেলােয়ার হােসেন সাঈদী)। 


সুন্নী আকিদাঃ মা-বাবাকে পায়ে ধরে সালাম করা জান্নাতের চৌকাটে চুমু দেওয়ার মত। (দুররে মুখতার, মেশকাত শরীফ)। 


১৯। ওহাবী আকিদাঃ নবী (ﷺ)'র নাম শুনলে চুমু খাওয়া নাজায়েয, তাই তারা চুমু খায় না। 


সুন্নী আকিদাঃ নবীর নাম শুনলে চুমু খাওয়া হযরত আদম (আঃ) এর সুন্নত, হযরত আবু বকর  (رضي الله عنه) এর সুন্নত। (দুররে মুখতার, তফসীরে জালালাইন)। 


২০। ওহাবী আকিদাঃ নামাযে ইকামতের সময় আল্লাহু আকবর বললে দাঁড়িয়ে যায়। 


সুন্নী আকিদাঃ নামাযে ইকামতের সময় আল্লাহু আকবর বললে দাঁড়ানাে মাকরূহ বরং হাইয়্যা আ'লাস সালাহ বলার সময় দাঁড়ানাে উত্তম। (ফতােয়ায়ে আলমগীর,দুররে মুখতার, মেশকাত শরীফ)।

Top