চতুর্বিংশ অধ্যায়


সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহ ﷻ'র  যিকির করা


  

সকাল এবং সন্ধ্যায় কিছু আযকার -


 ১। আয়াতুল কুরসী...


اَللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لاَ تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلاَ نَوْمٌ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الأَرْضِ مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلاَّ بِإِذْنِهِ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلاَ يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِنْ عِلْمِهِ إِلاَّ بِمَا شَاءَ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاو ;َاتِ وَالأَرْضَ وَلاَ يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ


 এর ফজিলত- ‘যে সকালে পাঠ করবে তাকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জ্বিনদের থেকে রক্ষা করা হবে, যে সন্ধ্যায় পাঠ করবে তাকে সকাল পর্যন্ত রক্ষা করা হবে।’


حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ إِيَاسٍ، عَنْ أَبِي السَّلِيلِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ رَبَاحٍ الأَنْصَارِيِّ، عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ أَبَا الْمُنْذِرِ أَىُّ آيَةٍ مَعَكَ مِنْ كِتَابِ اللَّهِ أَعْظَمُ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ قُلْتُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ أَبَا الْمُنْذِرِ أَىُّ آيَةٍ مَعَكَ مِنْ كِتَابِ اللَّهِ أَعْظَمُ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ قُلْتُ ‏{‏ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ ‏}‏ قَالَ فَضَرَبَ فِي صَدْرِي وَقَالَ ‏"‏ لِيَهْنِ لَكَ يَا أَبَا الْمُنْذِرِ الْعِلْمُ ‏"‏ ‏.


উবাই ইবনু কা‘ব رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:


তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেনঃ হে আবুল মুনযির! তোমার কাছে আল্লাহ ﷻ'র  কিতাবের কোন আয়াতটি সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই অধিক জ্ঞাত। তিনি আবার বলেন, হে আবুল মুনযির! তোমার কাছে আল্লাহ ﷻ'র  কিতাবের কোন আয়াতটি সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ? আমি বললাম, “আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম” (আয়াতুল কুরসী)। তখন তিনি আমার বুকে (হালকা) আঘাত করে বলেনঃ হে আবুল মুনযির! তোমার জ্ঞান আনন্দদায়ক হোক।


(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ১৪৬০,  মুসলিম।)



 ২। ইখলাস, ফালাক্ব এবং সুরা নাস..


 এর ফজিলত- যে সকাল এবং সন্ধ্যায় তিনবার পাঠ করবে তা তার জন্য সব কিছুর ব্যাপারে যথেষ্ট হবে।


حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُصَفَّى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي فُدَيْكٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنْ أَبِي أَسِيدٍ الْبَرَّادِ، عَنْ مُعَاذِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خُبَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ قَالَ خَرَجْنَا فِي لَيْلَةِ مَطَرٍ وَظُلْمَةٍ شَدِيدَةٍ نَطْلُبُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِيُصَلِّيَ لَنَا فَأَدْرَكْنَاهُ فَقَالَ ‏"‏ أَصَلَّيْتُمْ ‏"‏ ‏.‏ فَلَمْ أَقُلْ شَيْئًا فَقَالَ ‏"‏ قُلْ ‏"‏ ‏.‏ فَلَمْ أَقُلْ شَيْئًا ثُمَّ قَالَ ‏"‏ قُلْ ‏"‏ ‏.‏ فَلَمْ أَقُلْ شَيْئًا ثُمَّ قَالَ ‏"‏ قُلْ ‏"‏ ‏.‏ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا أَقُولُ قَالَ ‏"‏ ‏{‏ قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ ‏}‏ وَالْمُعَوِّذَتَيْنِ حِينَ تُمْسِي وَحِينَ تُصْبِحُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ تَكْفِيكَ مِنْ كُلِّ شَىْءٍ ‏"‏ ‏.


মু’আয ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু খুবাইব رضي الله عنه হতে তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ:


তিনি বলেন, এক বর্ষণমুখর খুবই অন্ধকার কালো রাতে আমাদের সলাত পড়াবার জন্য আমরা রাসুলুল্লাহ ﷺ-কে খুঁজছিলাম। আমরা তাঁকে পেয়ে গেলাম। তিনি বললেনঃ বলো। আমি কিছুই বললাম না। পুনরায় তিনি বললেন, বলো। আমি কিছই বললাম না। তিনি আবার বললেনঃ বলো। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহ‌র রাসুল! কি বলবো? তিনি বললেনঃ তুমি সন্ধ্যায় ও সকালে উপনীত হয়ে তিনবার সূরাহ কুল হুয়াল্লাহু (সূরা ইখলাস), সূরাহ নাস ও ফালাক্ব পড়বে; এতে তুমি যাবতীয় অনিষ্ট হতে রক্ষা পাবে।


(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৫০৮২, তিরমিযী, নাসায়ী।)



 ৩। সুনানু আত-তিরমিজীতে রয়েছে- 


يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ بِرَحْمَتِكَ أَسْتَغِيثُ أَصْلِحْ لِي شَأْنِي كُلَّهُ، وَلَا تَكِلْنِي إِلَى نَفْسِي طَرْفَةَ عَيْنٍ.


 অর্থঃ ‘হে চিরঞ্জীন, হে চিরস্থায়ী, তোমার রহমতের জন্য আমি তোমার দরবারে জানাই আমার সকাতর নিবেদন। তুমি আমার অবস্থা সংশোধন করে দাও, তুমি চোখের পলক পরিমাণ সময়ের (এক মূহুর্তের) জন্যেও আমাকে আমার নিজের উপর ছেড়ে দিও না।’ 


حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ الْمُكْتِبُ، حَدَّثَنَا أَبُو بَدْرٍ، شُجَاعُ بْنُ الْوَلِيدِ عَنِ الرُّحَيْلِ بْنِ مُعَاوِيَةَ، أَخِي زُهَيْرِ بْنِ مُعَاوِيَةَ عَنِ الرَّقَاشِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا كَرَبَهُ أَمْرٌ قَالَ ‏"‏ يَا حَىُّ يَا قَيُّومُ بِرَحْمَتِكَ أَسْتَغِيثُ ‏"‏ ‏.‏ 

وَبِإِسْنَادِهِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ أَلِظُّوا بِيَا ذَا الْجَلاَلِ وَالإِكْرَامِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ ‏.‏ وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ أَنَسٍ مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ ‏.‏


আনাস ইবনু মালিক رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:


তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ এর সম্মুখে কঠিন কাজ হাযির হলে তিনি বলতেন: হে চিরজীবি, হে চিরস্থায়ী! আমি তোমার রহমাতের ওয়াসীলায় সাহায্য প্রার্থনা করি’’।


একই সনদসূত্রে আনাস رضي الله عنه বলেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ তোমরা সবসময় “ইয়া যাল-জালালি ওয়াল-ইকরাম’’ পাঠ করাকে অপরিহার্য করে নাও।


আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। এ হাদীস আনাস رضي الله عنه হতে একাধিক সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। 


(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৫২৪)



 ৪। সহীহ মুসলিমে রয়েছে- 


أَمْسَيْـنا وَأَمْسـى المـلكُ لله وَالحَمدُ لله ، لا إلهَ إلاّ اللّهُ وَحدَهُ لا شَريكَ لهُ، لهُ المُـلكُ ولهُ الحَمْـد، وهُوَ على كلّ شَيءٍ قدير ، رَبِّ أسْـأَلُـكَ خَـيرَ ما في هـذهِ اللَّـيْلَةِ وَخَـيرَ ما بَعْـدَهـا ، وَأَعـوذُ بِكَ مِنْ شَـرِّ ما في هـذهِ اللَّـيْلةِ وَشَرِّ ما بَعْـدَهـا ، رَبِّ أَعـوذُبِكَ مِنَ الْكَسَـلِ وَسـوءِ الْكِـبَر ، رَبِّ أَعـوذُ بِكَ مِنْ عَـذابٍ في النّـارِ وَعَـذابٍ في القَـبْر.


 অর্থঃ ‘আমরা এবং সমগ্র জগত আল্লাহ ﷻ'র  (ইবাদত ও আনুগত্যের) জন্য সন্ধ্যায় উপনীত হয়েছি, আর সমুদয় প্রশংসা আল্লাহ ﷻ'র  জন্য, আল্লাহ ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোন মাবুদ নেই, তিনি এক; তাঁর কোন শরীক নেই, রাজত্ব তাঁরই এবং প্রশংসা মাত্রই তাঁর। তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান। হে রব্ব! এই রাতের মাঝে এবং এর পরে যা কিছু মঙ্গল নিহিত আছে আমি তোমার নিকট তার প্রার্থণা করছি। আর এই রাতের মাঝে এবং এর পরে যা কিছু অমঙ্গল নিহিত আছে, তা হতে তোমার নিকট আশ্রয় চাই। হে রব্ব! আলস্য এবং বার্ধক্যেও কষ্ট হতে আমি তোমার আশ্রয় প্রার্থণা করি, হে রব্ব! দোযখের আযাব হতে এবং কবরের আযাব হতে তোমার আশ্রয় কামনা করি।’


حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ بْنُ زِيَادٍ، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سُوَيْدٍ النَّخَعِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ يَزِيدَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَمْسَى قَالَ ‏"‏ أَمْسَيْنَا وَأَمْسَى الْمُلْكُ لِلَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ الْحَسَنُ فَحَدَّثَنِي الزُّبَيْدُ أَنَّهُ حَفِظَ عَنْ إِبْرَاهِيمَ فِي هَذَا ‏"‏ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ اللَّهُمَّ أَسْأَلُكَ خَيْرَ هَذِهِ اللَّيْلَةِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ هَذِهِ اللَّيْلَةِ وَشَرِّ مَا بَعْدَهَا اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكَسَلِ وَسُوءِ الْكِبَرِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابٍ فِي النَّارِ وَعَذَابٍ فِي الْقَبْرِ ‏"‏ ‏.‏


‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:


তিনি বলেন, যখন সন্ধ্যা হত তখন রাসুলুল্লাহ ﷺ বলতেনঃ “আম্‌সাইনা- ওয়া আম্‌সাল্‌ মুল্‌কু লিল্লা-হি ওয়াল হাম্‌দু লিল্লা-হি লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহ‌দাহু লা- শারীকা লাহু, অর্থাৎ- “আমরা সন্ধ্যায় উপনীত হয়েছি এবং আল্লাহ ﷻ'র  রাজ্যও, প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ ﷻ'র  জন্য, তিনি ছাড়া কোন মা‘বুদ নেই। তিনি একক সত্তা, তাঁর কোন শারীক নেই।”

হাসান رحمة الله বলেন, আমাকে যুবায়দ رحمة الله হাদীস বর্ণনা করেন যে, তিনি ইব্‌রাহীম رحمة الله হতে এ দু‘আটি মুখস্ত করেছেনঃ “লাহুল মুল্‌কু ওয়ালাহুল হাম্‌দু ওয়াহুয়া ‘আলা- কুল্লি শাইয়িন কদীর, আল্ল-হুম্মা আসাআলুকা খইরা হা-যিহিল লাইলাতি ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন্‌ শাররি হা-যিহিল লাইলাতি ওয়া শার্‌রি মা- বা’দাহা- আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল কাসালি ওয়া সূয়িল কিবারি, আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিন ‘আযা-বিন ফিন্না-রি ওয়া ‘আযা-বিন ফিল কবরি।” অর্থাৎ, “রাজত্ব তাঁর মালিকানাধীন, সকল প্রশংসা তাঁরই, তিনিই সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট এ রাতের কল্যাণ প্রত্যাশা করি এবং আশ্রয় চাই এ রাতের খারাবী হতে এবং এর পরবর্তী রাতের অনিষ্ট থেকেও। হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই অলসতা থেকে ও অহংকারের খারাবী থেকে। হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই জাহান্নামের শাস্তি থেকে এবং কবরের শাস্তি থেকে।”

 

(সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৬৮০০) 


 সন্ধ্যায় أَصْبَحْنَا وَأَصْبَحَ الْمُلْكُ لِلَّهِ এর স্থলে وَأَمْسَى أَمْسَيْنَا الْمُلْكُ لِلَّهِ পাঠ করবে।



 ৫। সুনান আবু দাউদ এবং তিরমিজির মধ্যে রয়েছেঃ 


 সকালে বলবেঃ


اللَّهُمَّ بِكَ أَمْسَيْنَا، وَبِكَ أَصْبَحْنَا، وَبِكَ نَحْيَا، وَبِكَ نَمُوتُ، وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ


 অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! তোমারই অনুগ্রহে সন্ধ্যায় উপনীত হই এবং তোমারই অনুগ্রহে প্রতুষে উপনীত হই। তোমারই মর্জিতে জীবিত রয়েছি, তোমারই ইচ্ছায় মৃত্যু বরণ করি, আর তোমারই নিকট প্রত্যাবর্তন করতে হবে।’


 সন্ধ্যায় বলবেঃ


اللَّهُمَّ بِكَ أَصْبَحْنَا، وَبِكَ أَمْسَيْنَا، وَبِكَ نَحْيَا، وَبِكَ نَمُوتُ، وَإِلَيْكَ النُّشُورُ.


 অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! তোমারই অনুগ্রহে প্রতুষে উপনীত হই এবং তোমারই অনুগ্রহে সন্ধ্যায় উপনীত হই। তোমারই মর্জিতে জীবিত রয়েছি, তোমারই ইচ্ছায় মৃত্যু বরণ করবো, আর তোমারই দিকে কিয়ামত দিবসে উত্থিত হয়ে সমবেত হবো।’


حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سُوَيْدٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَمْسَى قَالَ ‏"‏ أَمْسَيْنَا وَأَمْسَى الْمُلْكُ لِلَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ أُرَاهُ قَالَ فِيهَا لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ أَسْأَلُكَ خَيْرَ مَا فِي هَذِهِ اللَّيْلَةِ وَخَيْرَ مَا بَعْدَهَا وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ هَذِهِ اللَّيْلَةِ وَشَرِّ مَا بَعْدَهَا وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكَسَلِ وَسُوءِ الْكِبَرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ النَّارِ وَعَذَابِ الْقَبْرِ ‏"‏ ‏.‏ وَإِذَا أَصْبَحَ قَالَ ذَلِكَ أَيْضًا ‏"‏ أَصْبَحْنَا وَأَصْبَحَ الْمُلْكُ لِلَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ ‏.‏ وَقَدْ رَوَاهُ شُعْبَةُ بِهَذَا الإِسْنَادِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ لَمْ يَرْفَعْهُ ‏.


আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:


তিনি বলেন, সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে নবী ﷺ বলতেন : “আমরা রাতে উপনীত হলাম এবং আল্লাহ তা‘আলার বিশ্বজাহানও রাতে উপনীত হল। সকল প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার জন্য, আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, তিনি এক, তাঁর কোন শারীক নেই”। বর্ণনাকারী বলেন, আমার ধারণা হয় তিনি আরো বলেছেনঃ “রাজত্ব তাঁরই এবং সকল প্রশংসাও তাঁরই। সর্ববিষয়ে তিনি সর্বশক্তিমান। (হে আল্লাহ) তোমার নিকট আমি এ রাতের মাঝে নিহিত মঙ্গল এবং এ রাতের পরে নিহিত মঙ্গল কামনা করি। আর আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাইছি এ রাতের অমঙ্গল এবং এ রাতের পরে সমস্ত অমঙ্গল হতে। তোমার কাছে আমি আশ্রয় চাই অলসতা ও বার্ধক্যের অনিষ্ট হতে। আমি তোমার কাছে আরো আশ্রয় চাই (জাহান্নামের) আগুনের আযাব ও কবরের শাস্তি হতে।” তিনি ভোরে উপনীত হয়েও একই দু’আ করতেন : “আমরা ভোরে উপনীত হলাম এবং আল্লাহ তা‘আলার বিশ্বজাহানও ভোরে উপনীত হল। সকল প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার জন্য......।


(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৩৯০, মুসলিম হাঃ ৮/৮২)।


حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي فُدَيْكٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ الْمَجِيدِ، عَنْ هِشَامِ بْنِ الْغَازِ بْنِ رَبِيعَةَ، عَنْ مَكْحُولٍ الدِّمَشْقِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ مَنْ قَالَ حِينَ يُصْبِحُ أَوْ يُمْسِي اللَّهُمَّ إِنِّي أَصْبَحْتُ أُشْهِدُكَ وَأُشْهِدُ حَمَلَةَ عَرْشِكَ وَمَلاَئِكَتَكَ وَجَمِيعَ خَلْقِكَ أَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُكَ وَرَسُولُكَ أَعْتَقَ اللَّهُ رُبْعَهُ مِنَ النَّارِ فَمَنْ قَالَهَا مَرَّتَيْنِ أَعْتَقَ اللَّهُ نِصْفَهُ وَمَنْ قَالَهَا ثَلاَثًا أَعْتَقَ اللَّهُ ثَلاَثَةَ أَرْبَاعِهِ فَإِنْ قَالَهَا أَرْبَعًا أَعْتَقَهُ اللَّهُ مِنَ النَّارِ ‏"‏ ‏.


আনাস ইবনু মালিক رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:


রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সকালে বা সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে বলবেঃ  “হে আল্লাহ‌! আমি সকালে উপনীত হয়েছি এবং সাক্ষী রাখি আপনাকে ও আপনার আরশ বহনকারীদের, আপনার ফেরেশতাদেরকে, আপনার সমস্ত সৃষ্টিকে, নিশ্চয়ই আপনি একমাত্র আল্লাহ‌, আপনি ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ ﷺ আপনার বান্দা ও রাসুল”-আল্লাহ তার এক-চতুর্থাংশ দেহ জাহান্নামের শাস্তি হতে মুক্তি দিবেন। আর যে ব্যক্তি তা দুইবার বলবে, আল্লাহ তার শরীরের অর্ধেক জাহান্নামের আগুন হতে মুক্তি দিবেন। আর যে ব্যক্তি তা তিনবার বলবে আল্লাহ তার শরীরের তিন-চতুর্থাংশ এবং চারবার বললে তার সমস্ত শরীর জাহান্নামের আগুন হতে মুক্তি দিবেন। 


(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৫০৬৯)


 সকালে ওয়া ইলাইকাল নুশুর এর স্থলে ওয়া ইলাইকাল মাছি-র বলবে।



 ৬। সুনানে ইবনে মাজাহর মধ্যে রয়েছে-


اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا، وَرِزْقًا طَيِّبًا، وَعَمَلًا مُتَقَبَّلًا


 অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট উপকারী ইলম, পবিত্র জীবিকা এবং গ্রহণযোগ্য আমল প্রার্থণা করি।’


حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا شَبَابَةُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُوسَى بْنِ أَبِي عَائِشَةَ، عَنْ مَوْلًى، لأُمِّ سَلَمَةَ عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ كَانَ يَقُولُ إِذَا صَلَّى الصُّبْحَ حِينَ يُسَلِّمُ ‏ "‏ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا وَرِزْقًا طَيِّبًا وَعَمَلاً مُتَقَبَّلاً ‏"‏ ‏.‏


উম্মু সালামাহ رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:


নাবী ﷺ ফজরের সলাত পড়ে সালাম ফিরিয়ে বলতেন: [আরবী] (আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা ইলমান নাফিআওয়া রিযকান তয়্যিবা, ওয়া আমালান মুতাকব্বিলা) “হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে উপকারী জ্ঞান, পবিত্র রিযিক ও এবং কবূল হওয়ার যোগ্য কর্মতৎপরতা প্রার্থনা করি”।


(সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৯২৫, আহমাদ ২৫৯৮২, ২৬০৬২, ২৬১৬০)। 



 ৭। সুনান আত তিরমিজি এবং অন্যান্যতে রয়েছে-


 أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ


  অর্থঃ ‘আল্লাহ ﷻ'র  পূর্ণ গুণাবলীর বাক্য দ্বারা তাঁর নিকট আমি অনিষ্টকর সৃষ্টির অপকার থেকে আশ্রয় চাচ্ছি।’ সন্ধ্যায় তিনবার পাঠ করবে।


و حَدَّثَنِي مَالِك عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَجُلًا مِنْ أَسْلَمَ قَالَ مَا نِمْتُ هَذِهِ اللَّيْلَةَ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ أَيِّ شَيْءٍ فَقَالَ لَدَغَتْنِي عَقْرَبٌ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَا إِنَّكَ لَوْ قُلْتَ حِينَ أَمْسَيْتَ أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ لَمْ تَضُرَّكَ.


আবূ হুরায়রা رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:


আসলাম গোত্রের এক ব্যক্তি বলল, আমি রাত্রে ঘুমাইনি। রাসুলুল্লাহ ﷺ জিজ্ঞেস করলেন, কেন ঘুমাওনি? সে উত্তর দিল, আমাকে বিচ্ছু দংশন করেছে। রাসুলুল্লাহ ﷺ বললেন যে, তুমি যদি পড়তে।

أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ

(আমি সৃষ্টের অপকারিতা হতে আল্লাহ‌র পূর্ণ কালিমাসমূহের আশ্রয় প্রার্থনা করছি) তা হলে তোমার কোন ক্ষতি হত না। 


(মুয়াত্তা ইমাম মালিক, হাদিস নং ১৭১৬)

  


 ৮। সুনান আবু দাউদে রয়েছে-


اللَّهُمَّ إِنِّي أَصْبَحْتُ أُشْهِدُكَ وَأُشْهِدُ حَمَلَةَ عَرْشِكَ وَمَلَائِكَتَكَ، وَجَمِيعَ خَلْقِكَ أَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُكَ وَرَسُولُكَ.


 অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! (তোমার অনুগ্রহে) সকালে উপনীত হয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছি তোমার এবং আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি তোমার আরশে বহনকারীদের এবং তোমার সকল ফেরেশতাদের ও তোমার সকল সৃষ্টির। নিশ্চয়ই তুমি আল্লাহ, তুমি ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কেউ নেই, তুমি এক, তোমার কোন শরীক নেই। আর মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমার বান্দাহ এবং রাসুল।’


 সকাল-সন্ধ্যায় চারবার করে পাঠ করবে। 


 এর ফজিলতের মধ্যে রয়েছে-


 যে সকালে চারবার অথবা সন্ধ্যায় চারবার পাঠ করবে আল্লাহ তাকে আগুন থেকে মুক্তি দিবেন।


 اللَّهُمَّ إِنِّي أَصْبَحْتُ এর স্থলে সন্ধ্যায় বলবে اللَّهُمَّ إِنِّي أَمْسَيْتُ


 حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي فُدَيْكٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ الْمَجِيدِ، عَنْ هِشَامِ بْنِ الْغَازِ بْنِ رَبِيعَةَ، عَنْ مَكْحُولٍ الدِّمَشْقِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ مَنْ قَالَ حِينَ يُصْبِحُ أَوْ يُمْسِي اللَّهُمَّ إِنِّي أَصْبَحْتُ أُشْهِدُكَ وَأُشْهِدُ حَمَلَةَ عَرْشِكَ وَمَلاَئِكَتَكَ وَجَمِيعَ خَلْقِكَ أَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُكَ وَرَسُولُكَ أَعْتَقَ اللَّهُ رُبْعَهُ مِنَ النَّارِ فَمَنْ قَالَهَا مَرَّتَيْنِ أَعْتَقَ اللَّهُ نِصْفَهُ وَمَنْ قَالَهَا ثَلاَثًا أَعْتَقَ اللَّهُ ثَلاَثَةَ أَرْبَاعِهِ فَإِنْ قَالَهَا أَرْبَعًا أَعْتَقَهُ اللَّهُ مِنَ النَّارِ ‏"‏ ‏.


আনাস ইবনু মালিক رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:


রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সকালে বা সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে বলবেঃ  “হে আল্লাহ‌! আমি সকালে উপনীত হয়েছি এবং সাক্ষী রাখি আপনাকে ও আপনার আরশ বহনকারীদের, আপনার ফেরেশতাদেরকে, আপনার সমস্ত সৃষ্টিকে, নিশ্চয়ই আপনি একমাত্র আল্লাহ‌, আপনি ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ ﷺ আপনার বান্দা ও রাসুল”-আল্লাহ তার এক-চতুর্থাংশ দেহ জাহান্নামের শাস্তি হতে মুক্তি দিবেন। আর যে ব্যক্তি তা দুইবার বলবে, আল্লাহ তার শরীরের অর্ধেক জাহান্নামের আগুন হতে মুক্তি দিবেন। আর যে ব্যক্তি তা তিনবার বলবে আল্লাহ তার শরীরের তিন-চতুর্থাংশ এবং চারবার বললে তার সমস্ত শরীর জাহান্নামের আগুন হতে মুক্তি দিবেন। 


(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৫০৬৯)



৯। সুনান আবু দাউদ এবং মুসনাদ আহমাদের মধ্যে রয়েছে-


اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي بَدَنِي ، اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي سَمْعِي ، اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي بَصَرِي ، لا إِلَهَ إِلا أَنْتَ


 অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার দেহের নিরাপত্তা দান করো, আমার কর্ণেও নিরাপত্তা দান করো, আমার চোখের নিরাপত্তা দান করো। আল্লাহ তুমি ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোন মাবুদ নেই। হে আল্লাহ! আমি তোমার আশ্রয় চাচ্ছি কুফরী এবং দারিদ্র হতে, আমি তোমার আশ্রয় চাচ্ছি কবরের আযাব হতে। তুমি ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোন মাবুদ নেই।’


 তিনবার পাঠ করবে।


حَدَّثَنَا الْعَبَّاسُ بْنُ عَبْدِ الْعَظِيمِ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ عَمْرٍو، عَنْ عَبْدِ الْجَلِيلِ بْنِ عَطِيَّةَ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ مَيْمُونٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي بَكْرَةَ، أَنَّهُ قَالَ لأَبِيهِ يَا أَبَةِ إِنِّي أَسْمَعُكَ تَدْعُو كُلَّ غَدَاةٍ اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي بَدَنِي اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي سَمْعِي اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي بَصَرِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ تُعِيدُهَا ثَلاَثًا حِينَ تُصْبِحُ وَثَلاَثًا حِينَ تُمْسِي ‏.‏ فَقَالَ إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَدْعُو بِهِنَّ فَأَنَا أُحِبُّ أَنْ أَسْتَنَّ بِسُنَّتِهِ ‏.‏ قَالَ عَبَّاسٌ فِيهِ وَتَقُولُ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكُفْرِ وَالْفَقْرِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ تُعِيدُهَا ثَلاَثًا حِينَ تُصْبِحُ وَثَلاَثًا حِينَ تُمْسِي فَتَدْعُو بِهِنَّ فَأُحِبُّ أَنْ أَسْتَنَّ بِسُنَّتِهِ قَالَ وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ دَعَوَاتُ الْمَكْرُوبِ اللَّهُمَّ رَحْمَتَكَ أَرْجُو فَلاَ تَكِلْنِي إِلَى نَفْسِي طَرْفَةَ عَيْنٍ وَأَصْلِحْ لِي شَأْنِي كُلَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ ‏"‏ ‏.‏ وَبَعْضُهُمْ يَزِيدُ عَلَى صَاحِبِهِ ‏.


‘আবদুর রহমান ইবনু আবূ বাকর رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:


আমি আমার পিতাকে বললাম, হে আব্বাজান! আমি আপনাকে প্রতিদিন ভোরে ও সন্ধ্যায় তিনবার বলতে শুনি: “হে আল্লাহ! আমার দেহ সুস্থ রাখুন। হে আল্লাহ! আমাকে সুস্থ রাখুন আমার শ্রবণ ইন্দ্রিয়ে। হে আল্লাহ! আমাকে সুস্থ রাখুন আমার দৃষ্টিশক্তিতে। আপনি ছাড়া কোন ইলাহ নাই।” তিনি বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ-কে এ বাক্যগুলো দ্বারা দু‘আ করতে শুনেছি। সেজন্য আমিও তার নিয়ম অনুসরণ করতে ভালোবাসি। ‘আব্বাস رضي الله عنه-এর বর্ণনায় রয়েছে তিনি বললেনঃ “হে আল্লাহ! আপনার নিকট কুফরী ও দরিদ্রতা হতে আশ্রয় চাইছি। হে আল্লাহ! আমি কবরের আযাব হতে আপনার নিকট আশ্রয় চাইছি, আপনি ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই।” তিনি এ দু‘আ সকালে তিনবার ও সন্ধ্যায় তিনবার করে বলতেন। তাই আমিও তাঁর নিয়ম অনুসরণ করতে ভালোবাসি। বর্ণনাকারী বলেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: বিপদগ্রস্থ ব্যক্তির দু‘আ হলো : “হে আল্লাহ! আমি আপনার রহমত প্রার্থী। কাজেই আমাকে এক পলকের জন্যও আমার নিজের নিকট সোপর্দ করবেন না এবং আমার সবকিছু সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করে দিন। আর আপনিই একমাত্র ইলাহ।” 


(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৫০৯০, ইমাম বুখারীর আদাবুল মুফরাদ)



 ১০। অনুরূপ হাদীস এ রয়েছে-


اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكُفْرِ وَالْفَقْرِ ، اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ ، لا إِلَهَ إِلا أَنْتَ


 অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার আশ্রয় চাচ্ছি কুফরী এবং দারিদ্র হতে, আমি তোমার আশ্রয় চাচ্ছি কবরের আযাব হতে। তুমি ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোন মাবুদ নেই।’


 তিনবার পাঠ করবে।


حَدَّثَنَا الْعَبَّاسُ بْنُ عَبْدِ الْعَظِيمِ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ عَمْرٍو، عَنْ عَبْدِ الْجَلِيلِ بْنِ عَطِيَّةَ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ مَيْمُونٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي بَكْرَةَ، أَنَّهُ قَالَ لأَبِيهِ يَا أَبَةِ إِنِّي أَسْمَعُكَ تَدْعُو كُلَّ غَدَاةٍ اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي بَدَنِي اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي سَمْعِي اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي بَصَرِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ تُعِيدُهَا ثَلاَثًا حِينَ تُصْبِحُ وَثَلاَثًا حِينَ تُمْسِي ‏.‏ فَقَالَ إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَدْعُو بِهِنَّ فَأَنَا أُحِبُّ أَنْ أَسْتَنَّ بِسُنَّتِهِ ‏.‏ قَالَ عَبَّاسٌ فِيهِ وَتَقُولُ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكُفْرِ وَالْفَقْرِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ تُعِيدُهَا ثَلاَثًا حِينَ تُصْبِحُ وَثَلاَثًا حِينَ تُمْسِي فَتَدْعُو بِهِنَّ فَأُحِبُّ أَنْ أَسْتَنَّ بِسُنَّتِهِ قَالَ وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ دَعَوَاتُ الْمَكْرُوبِ اللَّهُمَّ رَحْمَتَكَ أَرْجُو فَلاَ تَكِلْنِي إِلَى نَفْسِي طَرْفَةَ عَيْنٍ وَأَصْلِحْ لِي شَأْنِي كُلَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ ‏"‏ ‏.‏ وَبَعْضُهُمْ يَزِيدُ عَلَى صَاحِبِهِ ‏.


‘আবদুর রহমান ইবনু আবূ বাকর رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:


আমি আমার পিতাকে বললাম, হে আব্বাজান! আমি আপনাকে প্রতিদিন ভোরে ও সন্ধ্যায় তিনবার বলতে শুনি: “হে আল্লাহ! আমার দেহ সুস্থ রাখুন। হে আল্লাহ! আমাকে সুস্থ রাখুন আমার শ্রবণ ইন্দ্রিয়ে। হে আল্লাহ! আমাকে সুস্থ রাখুন আমার দৃষ্টিশক্তিতে। আপনি ছাড়া কোন ইলাহ নাই।” তিনি বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ-কে এ বাক্যগুলো দ্বারা দু‘আ করতে শুনেছি। সেজন্য আমিও তার নিয়ম অনুসরণ করতে ভালোবাসি। ‘আব্বাস رضي الله عنه-এর বর্ণনায় রয়েছে তিনি বললেনঃ “হে আল্লাহ! আপনার নিকট কুফরী ও দরিদ্রতা হতে আশ্রয় চাইছি। হে আল্লাহ! আমি কবরের আযাব হতে আপনার নিকট আশ্রয় চাইছি, আপনি ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই।” তিনি এ দু‘আ সকালে তিনবার ও সন্ধ্যায় তিনবার করে বলতেন। তাই আমিও তাঁর নিয়ম অনুসরণ করতে ভালোবাসি। বর্ণনাকারী বলেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: বিপদগ্রস্থ ব্যক্তির দু‘আ হলো : “হে আল্লাহ! আমি আপনার রহমত প্রার্থী। কাজেই আমাকে এক পলকের জন্যও আমার নিজের নিকট সোপর্দ করবেন না এবং আমার সবকিছু সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করে দিন। আর আপনিই একমাত্র ইলাহ।” 


(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৫০৯০, ইমাম বুখারীর আদাবুল মুফরাদ)


 উপরের দু্টি দো’আ এক বর্ণনাতে এসেছে, এগুলো আলাদাভাবে এসেছে, একটি দো’আ হিসেবে আসেনি। এগুলো সন্ধ্যায় এবং সকালে প্রত্যেকটি তিনবার করে পাঠ করা হবে।



 ১১। সহীহ বুখারীতে- 


اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ.


 যে এটি পূর্ণ বিশ্বাস রেখে পাঠ করবে তার ফাদীলাতের মধ্যে রয়েছে, সে যদি রাতে মারা যায় তাহলে জান্নাতে প্রবেশ করবে; অনুরূপভাবে সে যদি দিনে পাঠ করে মারা যায় তাহলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে, যা হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।


حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بُرَيْدَةَ، عَنْ بُشَيْرِ بْنِ كَعْبٍ، عَنْ شَدَّادِ بْنِ أَوْسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ سَيِّدُ الاِسْتِغْفَارِ اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ، خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ، وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي، فَاغْفِرْ لِي، فَإِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ‏.‏ إِذَا قَالَ حِينَ يُمْسِي فَمَاتَ دَخَلَ الْجَنَّةَ ـ أَوْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ ـ وَإِذَا قَالَ حِينَ يُصْبِحُ فَمَاتَ مِنْ يَوْمِهِ ‏"‏‏.‏ مِثْلَهُ‏.‏


শাদ্দাদ ইবনু আওস رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:


নবী ﷺ বলেন, সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার হলোঃ "হে আল্লাহ! আপনিই আমার রব্ব। আপনি ব্যতীত আর কোন মাবূদ নেই। আপনিই আমাকে সৃষ্টি করেছেন, আর আমি আপনারই গোলাম। আর আমি আমার সাধ্য মত আপনার সঙ্গে কৃত প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের উপর সুদৃঢ়ভাবে কায়িম আছি। আমি আমার প্রতি আপনার নি'য়ামত স্বীকার করছি এবং কৃতগুনাহসমূহকে স্বীকার করছি। সুতরাং আমাকে মাফ করে দিন। কারণ আপনি ব্যতীত মাফ করার আর কেউ নেই। আমি আমার কৃতগুনাহের মন্দ ফলাফল থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি।" যে লোক সন্ধ্যা বেলায় এ দু'আ পড়বে, আর এ রাতেই মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। রাবী বলেন, অথবা তিনি বলেছেনঃ সে হবে জান্নাতী। আর যে লোক সকালে এ দু'আ পড়বে, আর এ দিনেই মারা যাবে সেও তেমনি জান্নাতী হবে।


(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৩২৩) (ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৭১)



 ১২। আহমাদ তার মুসনাদে বর্ণনা করেন-


أَصْبَحْنَا عَلَى فِطْرَةِ الْإِسْلَامِ وَكَلِمَةِ الْإِخْلَاصِ، وَدِينِ نَبِيِّنَا مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم وَمِلَّةِ أَبِينَا إِبْرَاهِيمَ حَنِيفًا مُسْلِمًا، وَمَا كاَنَ مِنَ الْمُشْرِكِينَ.


 অর্থঃ ‘(আল্লাহ ﷻ'র  অনুগ্রহে) আমরা প্রত্যুষে উপনীত হয়েছি ইসলামের ফিৎরাতের উপর ও ইখলাসের উপর, আমাদের নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দ্বীনের উপর, আমাদের পিতা ইব্রাহীম عليه السلام-এর মিল্লাতের উপর, তিনি ছিলেন একনিষ্ঠ মুসলিম এবং তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন না।’


(মুসনাদে আহমাদ হা/১৫৩৬০)।



 ১৩। সুনানু আবু দাউদে-


اللهُمَّ مَا أَصْبَحَ بِي مِنْ نِعْمَةٍ أَوْ بِأَحَدٍ مِنْ خَلْقِكَ، فَمِنْكَ وَحْدَكَ لَا شَرِيكَ لَكَ، فَلَكَ الْحَمْدُ وَلَكَ الشُّكْرُ،



অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! আমার সাথে যে নিয়ামত প্রাপ্তাবস্থায় কেউ সকালে উপনীত হয়েছে, অথবা তোমার সৃষ্টির মাঝেও কারো সাথে, এসব নিয়ামত তোমার নিকট হতে। তুমি এক, তোমার কোন শরীক নেই, প্রশংসা মাত্র তোমার। আর সকল প্রকার কৃতজ্ঞতার হকদার তুমি।’


حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَسَّانَ، وَإِسْمَاعِيلُ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ، عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَنْبَسَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ غَنَّامٍ الْبَيَاضِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ مَنْ قَالَ حِينَ يُصْبِحُ اللَّهُمَّ مَا أَصْبَحَ بِي مِنْ نِعْمَةٍ فَمِنْكَ وَحْدَكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ فَلَكَ الْحَمْدُ وَلَكَ الشُّكْرُ ‏.‏ فَقَدْ أَدَّى شُكْرَ يَوْمِهِ وَمَنْ قَالَ مِثْلَ ذَلِكَ حِينَ يُمْسِي فَقَدْ أَدَّى شُكْرَ لَيْلَتِهِ ‏"‏ ‏.


আবদুল্লাহ ইবনু গান্নাম আল-বায়াদী رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:


তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ‌ ﷺ বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সকালে উপনীত হয়ে বলেনঃ “হে আল্লাহ‌! সকালে আমার প্রতি যে নেয়ামত পৌছেছে তা একমাত্র আপনার পক্ষ থেকেই পৌছলো, আপনি একক, আপনার কোন শরীক নেই, সমস্ত প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা আপনারই প্রাপ্য’-সে তার ঐ দিনের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলো। আর যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে এরূপ বললো সে তার ঐ রাতের কৃতজ্ঞতা স্বীকার করলো।


(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৫০৭৩)



 ১৪। সুনানে আবু দাউদে-


حَسْبِيَ اللَّهُ لا إِلَـهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ.


 অর্থঃ ‘আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট তিনি ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোন মাবুদ নেই, আমি তাঁর উপরই নির্ভর করি, তিনি মহান আরশের প্রতিপালক।’


 সাতবার।


حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ مُحَمَّدٍ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ بْنُ مُسْلِمٍ الدِّمَشْقِيُّ، - وَكَانَ مِنْ ثِقَاتِ الْمُسْلِمِينَ مِنَ الْمُتَعَبِّدِينَ - قَالَ حَدَّثَنَا مُدْرِكُ بْنُ سَعْدٍ - قَالَ يَزِيدُ شَيْخٌ ثِقَةٌ - عَنْ يُونُسَ بْنِ مَيْسَرَةَ بْنِ حَلْبَسٍ عَنْ أُمِّ الدَّرْدَاءِ عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ رضى الله عنه قَالَ مَنْ قَالَ إِذَا أَصْبَحَ وَإِذَا أَمْسَى حَسْبِيَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ سَبْعَ مَرَّاتٍ كَفَاهُ اللَّهُ مَا أَهَمَّهُ صَادِقًا كَانَ بِهَا أَوْ كَاذِبًا ‏.‏


আবূ দারদা رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:


তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে সাতবার বলেঃ “আল্লাহ‌ আমার জন্য যথেষ্ট। তিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই, আমি তাঁর উপর ভরসা করি এবং তিনি মহান আরশের রব’- আল্লাহ‌ তার জন্য যথেষ্ট হবেন যা তাকে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত করে তার বিরুদ্ধে, চাই যেন সত্যিকারভাবে অথবা কৃত্রিমভাবে বলুক না কেন। 


(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৫০৮১)


 যে এটি পূর্ণ বিশ্বাস সহকারে সকাল এবং সন্ধ্যায় সাতবার পাঠ করবে তার ফাদীলাত হচ্ছে-আল্লাহ তার জন্য দুনিয়ার সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এবং দ্বীনের (আখিরাতের) বিষয়ে যথেষ্ট হবেন।



 ১৫। সুনানে আবু দাউদ এবং অন্যান্যতে রয়েছে-


بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ.


 অর্থঃ ‘আমি সেই আল্লাহ ﷻ'র  নামে আরম্ভ করছি, যার নামে শুরু করলে আকাশ ও পৃথিবীর কোন বস্তুই কোনরূপ অনিষ্ট সাধন করতে পারে না। বস্তুত তিনি হচ্ছেন সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।’


 তিনবার পাঠ করবে।


حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، - وَهُوَ الطَّيَالِسِيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي الزِّنَادِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبَانَ بْنِ عُثْمَانَ، قَالَ سَمِعْتُ عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ، رضى الله عنه يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ مَا مِنْ عَبْدٍ يَقُولُ فِي صَبَاحِ كُلِّ يَوْمٍ وَمَسَاءِ كُلِّ لَيْلَةٍ بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الأَرْضِ وَلاَ فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ فَيَضُرُّهُ شَيْءٌ ‏"‏ ‏.‏ وَكَانَ أَبَانُ قَدْ أَصَابَهُ طَرَفُ فَالَجِ فَجَعَلَ الرَّجُلُ يَنْظُرُ إِلَيْهِ فَقَالَ لَهُ أَبَانُ مَا تَنْظُرُ أَمَا إِنَّ الْحَدِيثَ كَمَا حَدَّثْتُكَ وَلَكِنِّي لَمْ أَقُلْهُ يَوْمَئِذٍ لِيُمْضِيَ اللَّهُ عَلَىَّ قَدَرَهُ ‏.‏ قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ ‏.‏


উসমান ইবনু ‘আফ্‌ফান رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:


রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন : প্রতিদিন ভোরে ও প্রতি রাতের সন্ধ্যায় যে কোন বান্দা এ দু‘আটি তিনবার পাঠ করবে কোন কিছুই তার অনিষ্ট করতে পারবে না : “বিসমিল্লা-হিল্লাযী লা ইয়াযুর্‌রু মা‘আস্‌মিহি শাইয়ূন ফিল আরযি, ওয়ালা ফিস্‌ সামায়ি ওয়া হুয়াস্‌ সামীউল ‘আলীম”। (অর্থ : “আল্লাহ তা‘আলার নামে” যাঁর নামের বারাকাতে আকাশ ও মাটির কোন কিছুই কোন অনিষ্ট করতে পারে না। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী।”) আবান رحمة الله-এর শরীরের একাংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে। (উক্ত হাদীস রিওয়ায়াতকালে) এক লোক (অধঃস্তন বর্ণনাকারী) তার দিকে তাকাতে থাকলে তিনি তাকে বলেন, তুমি কি প্রত্যক্ষ করছো? শোন! আমি তোমার কাছে যে হাদীস রিওয়ায়াত করেছি তা অবিকল বর্ণনা করেছি। তবে আমি যেদিন পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়েছি ঐ দু‘আটি পাঠ করিনি এবং আল্লাহ তা‘আলা ভাগ্যের লিখন আমার উপর কার্যকর করেছেন।


(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৩৮৮, ইবনু মাজাহ হাঃ ৩৮৬৯)


 সকাল এবং সন্ধ্যায় যে এটি পাঠ করবে তার উপকারিতা হচ্ছে কোন কিছুই তার ক্ষতি করতে পারবে না। 



১৬। সুনানে আবু দাউদ এবং মুসনাদে আহমাদ এ রয়েছে-


رَضِيتُ بِاللهِ رَبًّا، وَبِالإسْلاَمِ دِيناً، وَبِمُحَمَّدٍ -صلَّى الله عليه وسلَّم- نَبِيًّا،


 অর্থঃ ‘আমি আল্লাহ ﷻ-কে আমার রব হিসেবে, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে এবং মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নবী রূপে লাভ করে সন্তুষ্ট।’


 তিনবার পাঠ করবে।


حَدَّثَنَا أَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ، حَدَّثَنَا عُقْبَةُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ أَبِي سَعْدٍ، سَعِيدِ بْنِ الْمَرْزُبَانِ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ ثَوْبَانَ، رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ مَنْ قَالَ حِينَ يُمْسِي رَضِيتُ بِاللَّهِ رَبًّا وَبِالإِسْلاَمِ دِينًا وَبِمُحَمَّدٍ نَبِيًّا كَانَ حَقًّا عَلَى اللَّهِ أَنْ يُرْضِيَهُ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ ‏.‏


সাওবান رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:


তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সন্ধায় উপনীত হয়ে বলে, 'আল্লাহ তা'আলা আমার রব, ইসলাম আমার দ্বীন এবং রাসুলুল্লাহ ﷺ আমার রাসুল হওয়ায় আমি সর্বান্তকরণে পরিতৃপ্ত আছি', তাকে পরিতৃপ্ত করা আল্লাহ তা'আলার করণীয় হয়ে যায়। 


(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৩৮৯, নাকদুল কিত্তানী (৩৩/৩৪) আল-কালিমুত-তায়্যিব (২৪), যঈফা (৫০২০), আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান এবং উপরক্ত সূত্রে গারীব।)


 সকাল এবং সন্ধ্যায় যে এটি পাঠ করবে তার উপকারিতা হচ্ছে ইয়াওমুল ক্বিয়ামাহতে আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট হবেন।



 ১৭। সহীহ মুসলিমে রয়েছে-


أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ

 

অর্থঃ ‘আমি আল্লাহ ﷻ'র  কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করি এবং তাঁর নিকটই তাওবা করছি।’ দিনে একশতবার।


حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنِي عَبْدُ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا دَاوُدُ، عَنْ عَامِرٍ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُكْثِرُ مِنْ قَوْلِ ‏"‏ سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَتْ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَاكَ تُكْثِرُ مِنْ قَوْلِ سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ ‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ خَبَّرَنِي رَبِّي أَنِّي سَأَرَى عَلاَمَةً فِي أُمَّتِي فَإِذَا رَأَيْتُهَا أَكْثَرْتُ مِنْ قَوْلِ سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ ‏.‏ فَقَدْ رَأَيْتُهَا ‏{‏ إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللَّهِ وَالْفَتْحُ‏}‏ فَتْحُ مَكَّةَ ‏{‏ وَرَأَيْتَ النَّاسَ يَدْخُلُونَ فِي دِينِ اللَّهِ أَفْوَاجًا * فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَاسْتَغْفِرْهُ إِنَّهُ كَانَ تَوَّابًا‏}‏ ‏"‏ ‏.‏


‘আয়িশাহ رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:


রাসুলুল্লাহ ﷺ অধিক সংখ্যায় এ দু’আ পড়তেনঃ “সুবহা-নাল্লা-হি ওয়াবি হামদিহী আসতাগফিরুল্ল-হা ওয়াতুবু ইলাইহি”। অর্থাৎ, “মহান পবিত্র আল্লাহ। সমস্ত প্রশংসা তার জন্য। আমি আল্লাহ ﷻ'র  কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, আমি তার কাছে তাওবাহ করছি, অনুতপ্ত হচ্ছি।”  রাবী বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ ﷻ'র  রাসুল! আমি আপনাকে অধিক সংখ্যায় এ কথা বলতে দেখেছি “সুবহা-নাল্লা-হি ওয়াবি হামদিহী আসতাগফিরুল্ল-হা ওয়াতুবু ইলাইহি”। রাবী বলেন, তিনি বললেনঃ আমার মহান প্রতিপালক আমাকে সুসংবাদ দিয়েছেন যে, আমি অচিরেই আমার উম্মাতের মধ্যে একটি নিদর্শন দেখতে পাব। যখন আমি সে আলামত দেখতে পাই তখন অধিক সংখ্যায় এ দু’আ পাঠ করতে থাকিঃ “সুবহা-নাল্লা-হি ওয়াবি হামদিহী আসতাগফিরুল্ল-হা ওয়াতুবু ইলাইহি”। সে নিদর্শন সম্ভবত এই “ইযা-জা-আ নাসরুল্ল-হি ওয়াল ফাতহ...”। অর্থাৎ “ যখন আল্লাহ ﷻ'র  সাহায্য আসবে এবং বিজয় লাভ হবে (অর্থাৎ-মাক্কাহ বিজয়) , তুমি দেখতে পাবে, দলে দলে লোক আল্লাহ ﷻ'র  দীনে প্রবেশ করছে; তখন তুমি তোমার প্রভুর প্রশংসা সহকারে তাঁর তাসবীহ করো এবং তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিঃসন্দেহে তিনি খুবই তাওবাহ গ্রহনকারী। (সুরাহ আন্- নাসর) 


(সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৯৭৫) (ই.ফা. ৯৭০)

  


 ১৮। সুনানু আত-তিরমিজীতে রয়েছে-


سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ عَدَدَ خَلْقِهِ، وَرِضَا نَفْسِهِ وَزِنَةَ عَرْشِهِ، وَمِدَادَ كَلِمَاتِهِ.


 অর্থঃ ‘আমি আল্লাহ ﷻ'র  পবিত্রতা বর্ণনা করছি তাঁর প্রশংসার সাথে তাঁর সৃষ্ট বস্তুসমূহের সংখ্যায় সমান, তাঁর নিজের সন্তোষের সমান, তাঁর আরশের ওজনের সমান ও তাঁর বাণী সমূহের লিখার কালি পরিমাণ অসংখ্যবার।’


 তিনবার পাঠ করবে।


حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالَ سَمِعْتُ كُرَيْبًا، يُحَدِّثُ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ جُوَيْرِيَةَ بِنْتِ الْحَارِثِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم مَرَّ عَلَيْهَا وَهِيَ فِي مَسْجِدٍ ثُمَّ مَرَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِهَا قَرِيبًا مِنْ نِصْفِ النَّهَارِ فَقَالَ لَهَا ‏"‏ مَا زِلْتِ عَلَى حَالِكِ ‏"‏ ‏.‏ فَقَالَتْ نَعَمْ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ أَلاَ أُعَلِّمُكِ كَلِمَاتٍ تَقُولِينَهَا سُبْحَانَ اللَّهِ عَدَدَ خَلْقِهِ سُبْحَانَ اللَّهِ عَدَدَ خَلْقِهِ سُبْحَانَ اللَّهِ عَدَدَ خَلْقِهِ سُبْحَانَ اللَّهِ رِضَا نَفْسِهِ سُبْحَانَ اللَّهِ رِضَا نَفْسِهِ سُبْحَانَ اللَّهِ رِضَا نَفْسِهِ سُبْحَانَ اللَّهِ زِنَةَ عَرْشِهِ سُبْحَانَ اللَّهِ زِنَةَ عَرْشِهِ سُبْحَانَ اللَّهِ زِنَةَ عَرْشِهِ سُبْحَانَ اللَّهِ مِدَادَ كَلِمَاتِهِ سُبْحَانَ اللَّهِ مِدَادَ كَلِمَاتِهِ سُبْحَانَ اللَّهِ مِدَادَ كَلِمَاتِهِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ ‏.‏ وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ هُوَ مَوْلَى آلِ طَلْحَةَ وَهُوَ شَيْخٌ مَدَنِيٌّ ثِقَةٌ وَقَدْ رَوَى عَنْهُ الْمَسْعُودِيُّ وَسُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ هَذَا الْحَدِيثَ ‏.


উম্মুল মুমিনীন জুওয়াইরিয়াহ বিনতুল হারিস رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:


রাসুলুল্লাহ ﷺ তার কাছ দিয়ে অতিক্রম করলেন, সে সময় তিনি তার (ঘরে) নামাযের জায়গায় ছিলেন। আবার রাসুলুল্লাহ ﷺ প্রায় দুপুরে তার কাছ দিয়ে গমন করেন এবং তাকে বললেনঃ তুমি কি তখন হতে এই অবস্থায় আছ? তিনি বললেনঃ হযাঁ। তিনি বললেন, আমি তোমাকে কি কিছু বাক্য শিখিয়ে দিব না যা তুমি বলবে? “আল্লাহ তা’আলা তাঁর সৃষ্টিকুলের সমপরিমাণ মহাপবিত্র” (৩ বার), “আল্লাহ তা’আলা তাঁর সত্তার সন্তোষ মোতাবিক মহাপবিত্র” (৩ বার), “আল্লাহ তা’আলা তাঁর আরশের ওজনের সমপরিমাণ মহাপবিত্র” (৩ বার), “আল্লাহ তাঁর কালামের সমান মহাপবিত্র” (তিন বার)।


(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৫৫৫, ইবনু মাজাহ (৩৮০৮), মুসলিম)

  


وَعَنْ أُمِّ المُؤمِنِينَ جُوَيْرِيَةَ بِنتِ الحَارِثِ رَضِيَ اللهُ عَنهَا: أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ مِنْ عِنْدِهَا بُكْرَةً حِيْنَ صَلَّى الصُّبْحَ وَهِيَ فِي مَسْجِدِهَا، ثُمَّ رَجَعَ بَعدَ أَنْ أَضْحَى وَهِيَ جَالِسَةٌ، فَقَالَ: «مَا زِلْتِ عَلَى الحَالِ الَّتي فَارَقَتُكِ عَلَيْهَا ؟» قَالَتْ: نَعَمْ، فَقَالَ النَّبيُّ صلى الله عليه وسلم: «لَقَدْ قُلْتُ بَعْدَكِ أَرْبَعَ كَلِمَاتٍ ثَلاثَ مَرَّاتٍ، لَوْ وُزِنَتْ بِمَا قُلْتِ مُنْذُ اليَوْمِ لَوَزَنَتْهُنَّ: سُبْحَانَ الله وَبِحَمْدِهِ عَدَدَ خَلْقِهِ، وَرِضَا نَفْسِهِ، وَزِنَةَ عَرْشِهِ، وَمِدَادَ كَلِمَاتِهِ» . رواه مسلم.

وفي روايةٍ لَهُ: «سُبْحانَ الله عَدَدَ خَلْقِهِ، سُبْحَانَ الله رِضَا نَفْسِهِ، سُبْحَانَ اللهِ زِنَةَ عَرْشِهِ، سُبْحَانَ الله مِدَادَ كَلِمَاتِهِ».

وفي رواية الترمذي: «ألاَ أُعَلِّمُكِ كَلِمَاتٍ تَقُولِينَهَا؟ سُبحَانَ الله عَدَدَ خَلْقِهِ؛ سُبحَانَ الله عَدَدَ خَلْقِهِ، سُبحَانَ الله عَدَدَ خَلْقِهِ، سُبْحَانَ اللهِ رِضَا نَفْسِهِ، سُبْحَانَ اللهِ رِضَا نَفْسِهِ، سُبْحَانَ الله رِضَا نَفْسِهِ، سُبْحَانَ الله زِنَةَ عَرْشِهِ، سُبْحَانَ اللهِ زِنَةَ عَرْشِهِ، سُبْحَانَ الله زِنَةَ عَرْشِهِ، سُبْحَانَ اللهِ مِدَادَ كَلِمَاتِهِ، سُبْحَانَ الله مِدَادَ كَلِمَاتِهِ، سُبْحَانَ الله مِدَادَ كَلِمَاتِهِ.


মু'মিন জননী জুয়াইরিয়াহ বিনতে হারেস رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:


নবী ﷺ সকাল ভোরে ফজরের নামায সমাপ্ত করে তাঁর নিকট থেকে বাইরে গেলেন। আর তিনি (জুয়াইরিয়াহ) স্বীয় জায়নামাযে বসেই রইলেন। তারপর চাশ্‌তের সময় তিনি যখন ফিরে এলেন, তখনও তিনি সেখানেই বসেছিলেন। এ দেখে তিনি তাঁকে বললেন, “আমি যে অবস্থায় তোমাকে ছেড়ে বাইরে গেলাম, সে অবস্থাতেই তুমি রয়েছ?” তিনি বললেন, ‘হযাঁ।’ নবী ﷺ বললেন, “তোমার নিকট থেকে যাবার পর আমি চারটি বাক্য তিনবার পড়েছি। যদি সেগুলিকে তোমার সকাল থেকে (এ যাবৎ) পঠিত দু‘আর মুকাবিলায় ওজন করা যায়, তাহলে তা ওজনে সমান হয়ে যাবে। আর তা হচ্ছে এই যে,

‘সুবহা-নাল্লা-হি অবিহামদিহী আদাদা খালক্বিহী, অরিযা নাফসিহী, অযিনাতা আরশিহী, অমিদা-দা কালিমা-তিহ।’ অর্থাৎ, আল্লাহ ﷻ'র  সপ্রশংস পবিত্রতা ঘোষণা করি; তাঁর সৃষ্টির সমান সংখ্যক, তাঁর নিজ মর্জি অনুযায়ী, তাঁর আরশের ওজন বরাবর ও তাঁর বাণীসমূহের সমান সংখ্যক প্রশংসা।”


(রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ১৪৪১, মুসলিম ২৭২৬, তিরমিযী ৩৫৫৫, নাসায়ী ১৩৫২, ইবনু মাজাহ ৩৮০৮, আহমাদ ২৬২১৮, ২৬৮৭৫) 



 ১৯। সহীহ মুসলিমে রয়েছে-


 سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ


 অর্থঃ ‘আমি আল্লাহ ﷻ'র  পবিত্রতা বর্ণনা করছি তাঁর প্রশংসা সহকারে।’ একশতবার।


حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنِي عَبْدُ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا دَاوُدُ، عَنْ عَامِرٍ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُكْثِرُ مِنْ قَوْلِ ‏"‏ سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَتْ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَاكَ تُكْثِرُ مِنْ قَوْلِ سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ ‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ خَبَّرَنِي رَبِّي أَنِّي سَأَرَى عَلاَمَةً فِي أُمَّتِي فَإِذَا رَأَيْتُهَا أَكْثَرْتُ مِنْ قَوْلِ سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ ‏.‏ فَقَدْ رَأَيْتُهَا ‏{‏ إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللَّهِ وَالْفَتْحُ‏}‏ فَتْحُ مَكَّةَ ‏{‏ وَرَأَيْتَ النَّاسَ يَدْخُلُونَ فِي دِينِ اللَّهِ أَفْوَاجًا * فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَاسْتَغْفِرْهُ إِنَّهُ كَانَ تَوَّابًا‏}‏ ‏"‏ ‏.‏


‘আয়িশাহ رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:


রাসুলুল্লাহ ﷺ অধিক সংখ্যায় এ দু’আ পড়তেনঃ “সুবহা-নাল্লা-হি ওয়াবি হামদিহী আসতাগফিরুল্ল-হা ওয়াতুবু ইলাইহি”। অর্থাৎ, “মহান পবিত্র আল্লাহ। সমস্ত প্রশংসা তার জন্য। আমি আল্লাহ ﷻ'র  কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, আমি তার কাছে তাওবাহ করছি, অনুতপ্ত হচ্ছি।”  রাবী বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ ﷻ'র  রাসুল! আমি আপনাকে অধিক সংখ্যায় এ কথা বলতে দেখেছি “সুবহা-নাল্লা-হি ওয়াবি হামদিহী আসতাগফিরুল্ল-হা ওয়াতুবু ইলাইহি”। রাবী বলেন, তিনি বললেনঃ আমার মহান প্রতিপালক আমাকে সুসংবাদ দিয়েছেন যে, আমি অচিরেই আমার উম্মাতের মধ্যে একটি নিদর্শন দেখতে পাব। যখন আমি সে আলামত দেখতে পাই তখন অধিক সংখ্যায় এ দু’আ পাঠ করতে থাকিঃ “সুবহা-নাল্লা-হি ওয়াবি হামদিহী আসতাগফিরুল্ল-হা ওয়াতুবু ইলাইহি”। সে নিদর্শন সম্ভবত এই “ইযা-জা-আ নাসরুল্ল-হি ওয়াল ফাতহ...”। অর্থাৎ “ যখন আল্লাহ ﷻ'র  সাহায্য আসবে এবং বিজয় লাভ হবে (অর্থাৎ-মাক্কাহ বিজয়) , তুমি দেখতে পাবে, দলে দলে লোক আল্লাহ ﷻ'র  দীনে প্রবেশ করছে; তখন তুমি তোমার প্রভুর প্রশংসা সহকারে তাঁর তাসবীহ করো এবং তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিঃসন্দেহে তিনি খুবই তাওবাহ গ্রহনকারী। (সুরাহ আন্- নাসর) 


(সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৯৭৫) (ই.ফা. ৯৭০)


 সকাল এবং সন্ধ্যায় যে এটি একশতবার পাঠ করবে তার উপকারিতা হচ্ছে, বিচার দিবেসে সে যা নিয়ে আসবে তার চেয়ে বেশী নিয়ে কেহই আসবে না, ঐ ব্যক্তি ব্যতীত যে তার মতই পাঠ করছে অথবা তার চেয়ে বেশী পাঠ করেছে।


 এর অন্য উপকারিতা হচ্ছে- এটি তার গুনাহসমূহকে মিটিয়ে দেবে যদিও তা সাগরের ফেনার পরিমাণ হয়।


حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنِي عَبْدُ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا دَاوُدُ، عَنْ عَامِرٍ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُكْثِرُ مِنْ قَوْلِ ‏"‏ سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَتْ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَاكَ تُكْثِرُ مِنْ قَوْلِ سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ ‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ خَبَّرَنِي رَبِّي أَنِّي سَأَرَى عَلاَمَةً فِي أُمَّتِي فَإِذَا رَأَيْتُهَا أَكْثَرْتُ مِنْ قَوْلِ سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ ‏.‏ فَقَدْ رَأَيْتُهَا ‏{‏ إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللَّهِ وَالْفَتْحُ‏}‏ فَتْحُ مَكَّةَ ‏{‏ وَرَأَيْتَ النَّاسَ يَدْخُلُونَ فِي دِينِ اللَّهِ أَفْوَاجًا * فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَاسْتَغْفِرْهُ إِنَّهُ كَانَ تَوَّابًا‏}‏ ‏"‏ ‏.‏


‘আয়িশাহ رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:


রাসুলুল্লাহ ﷺ অধিক সংখ্যায় এ দু’আ পড়তেনঃ “সুবহা-নাল্লা-হি ওয়াবি হামদিহী আসতাগফিরুল্ল-হা ওয়াতুবু ইলাইহি”। অর্থাৎ, “মহান পবিত্র আল্লাহ। সমস্ত প্রশংসা তার জন্য। আমি আল্লাহ ﷻ'র  কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, আমি তার কাছে তাওবাহ করছি, অনুতপ্ত হচ্ছি।”  রাবী বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ ﷻ'র  রাসুল! আমি আপনাকে অধিক সংখ্যায় এ কথা বলতে দেখেছি “সুবহা-নাল্লা-হি ওয়াবি হামদিহী আসতাগফিরুল্ল-হা ওয়াতুবু ইলাইহি”। রাবী বলেন, তিনি বললেনঃ আমার মহান প্রতিপালক আমাকে সুসংবাদ দিয়েছেন যে, আমি অচিরেই আমার উম্মাতের মধ্যে একটি নিদর্শন দেখতে পাব। যখন আমি সে আলামত দেখতে পাই তখন অধিক সংখ্যায় এ দু’আ পাঠ করতে থাকিঃ “সুবহা-নাল্লা-হি ওয়াবি হামদিহী আসতাগফিরুল্ল-হা ওয়াতুবু ইলাইহি”। সে নিদর্শন সম্ভবত এই “ইযা-জা-আ নাসরুল্ল-হি ওয়াল ফাতহ...”। অর্থাৎ “ যখন আল্লাহ ﷻ'র  সাহায্য আসবে এবং বিজয় লাভ হবে (অর্থাৎ-মাক্কাহ বিজয়) , তুমি দেখতে পাবে, দলে দলে লোক আল্লাহ ﷻ'র  দীনে প্রবেশ করছে; তখন তুমি তোমার প্রভুর প্রশংসা সহকারে তাঁর তাসবীহ করো এবং তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিঃসন্দেহে তিনি খুবই তাওবাহ গ্রহনকারী। (সুরাহ আন্- নাসর) 


(সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৯৭৫) (ই.ফা. ৯৭০)



 ২০। সহীহ বুখারী এবং মুসলিমে রয়েছে-


لَا إلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ المُلْكُ ؛ وَلَهُ الحَمْدُ ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ.


 অর্থঃ ‘আল্লাহ ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোন মাবুদ নেই, তিনি এক তাঁর কোন শরীক নেই, রাজত্ব তাঁরই এবং প্রশংসা মাত্রই তাঁর, তিনিই জীবিত করেন এবং মৃত্যু দান করেন। তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান।’


 দিনে একশতবার।


حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ سُمَىٍّ، مَوْلَى أَبِي بَكْرٍ عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ، وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ‏.‏ فِي يَوْمٍ مِائَةَ مَرَّةٍ، كَانَتْ لَهُ عَدْلَ عَشْرِ رِقَابٍ، وَكُتِبَتْ لَهُ مِائَةُ حَسَنَةٍ، وَمُحِيَتْ عَنْهُ مِائَةُ سَيِّئَةٍ، وَكَانَتْ لَهُ حِرْزًا مِنَ الشَّيْطَانِ يَوْمَهُ ذَلِكَ حَتَّى يُمْسِيَ، وَلَمْ يَأْتِ أَحَدٌ بِأَفْضَلَ مِمَّا جَاءَ بِهِ، إِلاَّ أَحَدٌ عَمِلَ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ ‏"‏‏.‏


আবূ হুরায়রা رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:


আল্লাহ ﷻ'র  রাসুল ﷺ বলেছেন, যে লোক একশ’বার এ দু’আ’টি পড়বেঃ আল্লাহ ব্যতিত কোন ইলাহা নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরিক নেই, রাজত্ব একমাত্র তাঁরই, সমস্ত প্রশংসাও একমাত্র তাঁরই জন্য, আর তিনি সকল বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান। তাহলে দশটি গোলাম আযাদ করার সমান সওয়াব তার হবে। তার জন্য একশটি সওয়াব লেখা হবে এবং আর একশটি গুনাহ মিটিয়ে ফেলা হবে। ঐদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সে শয়তান হতে মাহফুজ থাকবে। কোন লোক তার চেয়ে উত্তম সওয়াবের কাজ করতে পারবে না। তবে হযাঁ, ঐ ব্যক্তি সক্ষম হবে, যে এর চেয়ে ঐ দু’আটির ‘আমল বেশি পরিমাণ করবে।

  

(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩২৯৩)


 যে একশতবার পাঠ করবে তার যে আযর রয়েছে তা হচ্ছে-


 * ১০ জন দাসকে মুক্ত করা,


 * ১০০ নেক আমল তার জন্য লিখিত হবে,


 * ১০০ পাপ মুছে দেয়া হবে এবং


 * ঐ দিনে সে সন্ধ্যা পর্যন্ত শয়তান থেকে নিরাপত্তা পাবে।


 ২১। সহীহ কালিমুত তাইয়্যেব এ রয়েছে-


اَللّّهُمَّ عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ، رَبَّ كُلِّ شَيْءٍ وَمَلِيكَهُ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ نَفْسِي، وَشَرِّ الشَّيْطَانِ وَشِرْكِهِ وَأَقْتَرِفَ عَلَى نَفْسِيْ سُوْءًا، أَوْ أَجُرَّهُ إِلَى مُسْلِمٍ،


 অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! তুমি গোপন ও প্রকাশ্য সবকিছুই জান। আকাশ ও পৃথিবীর তুমি সৃষ্টিকর্তা। তুমি সব বস্তুর প্রতিপালক এবং সমস্ত কিছুর মালিক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি তুমি ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোন মাবুদ নেই। আমি আমার প্রবৃত্তির অনিষ্ট হতে আর শয়তান এবং তার শিরকের অনিষ্ট হতে তোমার আশ্রয় প্রার্থণা করছি। আমি নিজের অনিষ্ট হতে এবং কোন মুসলিমের অনিষ্ট করা হতে তোমার আশ্রয় চাচ্ছি।’


(সহীহ কালিমুত তাইয়্যেব, হা/২১)


حَدَّثَنَا خَطَّابُ بْنُ عُثْمَانَ قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زِيَادٍ، عَنْ أَبِي رَاشِدٍ الْحُبْرَانِيِّ: أَتَيْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو فَقُلْتُ لَهُ: حَدِّثْنَا بِمَا سَمِعْتَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَلْقَى إِلَيَّ صَحِيفَةً فَقَالَ: هَذَا مَا كَتَبَ لِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَنَظَرْتُ فِيهَا، فَإِذَا فِيهَا: إِنَّ أَبَا بَكْرٍ الصِّدِّيقَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ سَأَلَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، عَلِّمْنِي مَا أَقُولُ إِذَا أَصْبَحْتُ وَإِذَا أَمْسَيْتُ، فَقَالَ: " يَا أَبَا بَكْرٍ، قُلِ: اللَّهُمَّ فَاطِرَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ، عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ، رَبَّ كُلِّ شَيْءٍ وَمَلِيكَهُ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ نَفْسِي، وَشَرِّ الشَّيْطَانِ وَشِرْكِهِ، وَأَنْ أَقْتَرِفَ عَلَى نَفْسِي سُوءًا أَوْ أَجُرُّهُ إِلَى مُسْلِمٍ "


আবু রাশেদ আল-হিবরানী (র) থেকে বর্ণিতঃ:


আমি আবদুল্লাহ ইবনে আমর رضي الله عنه-র নিকট উপস্থিত হয়ে তাকে বললাম, আপনি রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর নিকট যা শুনেছেন তা আমাকে বর্ণনা করে শুনান। তিনি আমার সামনে একটি ক্ষুদ্র পুস্তিকা পেশ করে বলেন, এটা নবী (সাঃ) আমাকে লিখিয়ে দিয়েছেন। আমি তাতে চোখ বুলিয়ে দেখতে পেলাম যে, আবু বাকর সিদ্দীক رضي الله عنه নবী (সাঃ)-এর নিকট জিজ্ঞাসার সুরে বলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সকাল-সন্ধ্যায় আমার বলার জন্য আমাকে কিছু শিখিয়ে দিন। তিনি বলেনঃ হে আবু বাকর! তুমি বলো, “হে আল্লাহ আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর স্রষ্টা, দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞা তাবারানী, প্রতিটি জিনিসের প্রতিপালক ও মালিক! আমি তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করি আমার প্রবৃত্তির ক্ষতি থেকে, শয়তানের অনিষ্ট ও তার অংশীবাদিতা থেকে, আমার নিজের অনিষ্ট করা থেকে এবং কোন মুসলমানের ক্ষতি করা থেকে”।


(আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নং ১২১৬, তিরমিযী, হাকিম, ইবনে হিব্বান)



 লক্ষ্যনীয়ঃ-


❏ যখন একটি দো’আ উল্লেখ করা হবে তখন একটি সুন্নাত বাস্তবায়িত হবে। একজন মুসলিমের উচিত সকাল সন্ধ্যায় এই পাঠ করা যাতে সে যতটুকু সম্ভব সুন্নাতকে বাস্তবায়ন করতে পারে।


❏ এটা প্রয়োজনীয় যে যখন একজন এই দো’আগুলো পাঠ করবে তখন তা করবে ইখলাস, ছিদক এবং এগুলোর প্রতি পূর্ন বিশ্বাস রেখে। চেষ্টা করুন এগুলোর অর্থের দিকে খেয়াল করতে যেন তা আপনার জীবন, নৈতিকতা এবং আচার আচরনে প্রতিক্রিয়া ফেলে। 

Top