কবরে আযান দেয়া সম্পর্কে বর্ণনা
মুসলমানের লাশ কবরে দাফন করার পর আযান দেয়া আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের মতে জায়েয। এর পিছনে অনেক দলীল রয়েছে। কিন্তু ওহাবী দেওবন্দীরা একে বিদআত, হারাম, শিরক আরও কত কিছু বলে। তাই এ আলোচনাকে দুটি অধ্যায়ে বিন্যস্ত করা হয়েছে। প্রথম অধ্যায়ে এর প্রমাণাদি এবং দ্বিতীয় অধ্যায়ে আল্লাহর রহমত ও মেহেরবানীতে এ প্রসঙ্গে উত্থাপিত আপত্তিসমূহের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হয়েছে।
প্রথম অধ্যায়
কবরে আযান দেয়ার প্রমাণাদি
দাফনের পর কবরে আযান দেয়া জায়েয। বিভিন্ন হাদীছ ও ফকীহগণের উক্তি থেকে এর প্রমাণ মিলে।
❏ মিশকাত শরীফের কিতাবুল জনায়েয ما يقال عند من حضرت الموت অধ্যায়ে বর্ণিত আছে -
قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَقِّنُوا مَوْتَاكُمْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ.
-‘‘তোমাদের মৃতব্যক্তিদেরকে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু শিখাও।’’ ২৩৯
{ইমাম মুসলিম, আস-সহীহ, ২/৬৩১ পৃঃ হা/৯১৬, খতিব তিবরিযি, মিশকাত, ১/৫০৮ পৃঃ হা/১৬১৬}
পার্থিব জীবন শেষ হবার সাথে সাথে মানুষের জন্য দুটি খুবই ভয়াবহ সময় রয়েছে। একটি হচ্ছে জান কবয করার সময় এবং অপরটি হচ্ছে দাফন করার পর কবরে সাওয়ার-জওয়াব হবার সময়। যদি জান কবয করার সময় শুভ সমাপ্তি নসীব না হয়, তাহলে সারা জীবনের সাধনা বিফল হয়ে গেল। আর কবরের পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে পরবর্তী জীবন বরবাদ হয়ে গেল। পার্থিব জীবনে এক বছর পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে, পরবর্তী বছর পুণরায় অংশগ্রহণ করা যায়। কিন্তু এখানে সে সুযোগ নেই। এ জন্যে জীবিত ব্যক্তিদের উচিৎ ওই দু’ মুহুর্তে মৃতগামীদের যতটুকু সম্ভব সাহায্য করা। মৃত্যুর সময় কলেমা পাঠ করে শুনাবে এবং দাফন করার পরও কলেমার আওয়াজ পৌঁছাবে, যাতে কলেমা পড়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে পারে এবং কবরে পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হতে পারে।
সুতরাং উপরোক্ত হাদীছের দু’ধরনে অর্থ হতে পারে :
এক. যে মারা যাচ্ছে, তাকে কলেমা শিখাও।
দুই, যে মারা গেছে, তাকে কলেমা শিখাও। এখানে উল্লেখিত প্রথম অর্থটা হচ্ছে রূপক এবং দ্বিতীয় অর্থটা হচ্ছে বাস্তব এবং বিনা প্রয়োজনে কোন শব্দ রূপক অর্থে ব্যবহার করা ঠিক নয়।
সুতরাং উল্লেখিত হাদীছের সঠিক অর্থ হচ্ছে- নিজেদের মৃতব্যক্তিদেরকে কলেমা শিখাও এবং এ সময়টা হচ্ছে দাফনের পর। যেমন
❏ ফত্ওয়ায়ে শামী প্রথম খণ্ড الدفن অধ্যায়ের مَطْلَبٌ فِي التَّلْقِينِ بَعْدَ الْمَوْتِ শীর্ষক আলোচনায় উল্লেখিত আছে-
أَمَّا عِنْدَ أَهْلِ السُّنَّةِ فَالْحَدِيثُ أَيْ لَقِّنُوا مَوْتَاكُمْ لَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ مَحْمُولٌ عَلَى حَقِيقَتِهِ لِأَنَّ اللَّهَ تَعَالَى يُحْيِيهِ عَلَى مَا جَاءَتْ بِهِ الْآثَارُ وَقَدْ رُوِيَ عَنْهُ - عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ - أَنَّهُ أَمَرَ بِالتَّلْقِينِ بَعْدَ الدَّفْنِ فَيَقُولُ: يَا فُلَانَ بْنَ فُلَانٍ اُذْكُرْ دِينَك الَّذِي كُنْت عَلَيْهِ.
-‘‘আহলে সুন্নাতের মতে এ হাদিসে لَقِّنُوا مَوْتَاكُمْ বাক্যটি বাস্তব অর্থে প্রয়োগ করা হয়েছে এবং রাসূল (ﷺ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি দাফনের পরে তালকীনের (শিখিয়ে দেয়া) নির্দেশ দিয়েছেন। তাই কবরের পাশে দাড়িয়ে বলুন, হে অমুকের পুত্র অমুক যেই ধর্মে ছিলেন, সেই ধর্মকে স্মরণ করুন।’’ ২৪০
{ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-১৯১।}
❏ একই জায়গায় ফাতওয়ায়ে শামীতে উল্লেখ আছে-
وَإِنَّمَا لَا يُنْهَى عَنْ التَّلْقِينِ بَعْدَ الدَّفْنِ لِأَنَّهُ لَا ضَرَرَ فِيهِ بَلْ نَفْعٌ فَإِنَّ الْمَيِّتَ يَسْتَأْنِسُ بِالذِّكْرِ عَلَى مَا وَرَدَ فِي الْآثَارِ.
-‘‘দাফনে পর তলকীন থেকে বারণ না করা চাই, কেননা এতে কোন ক্ষতি তো নেই বরং উপকারই রয়েছে। কারণ মৃতব্যক্তি আল্লাহর যিকর থেকে সান্ত্বনা লাভ করে, যেমন বিভিন্ন হাদীছ বর্ণিত আছে।’’ ২৪১
{ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-১৯১।}
এ হাদীছ ও এসব উদ্বৃতি থেকে বোঝা গেল যে, লাশ দাফন করার পর ওকে কলেমা তৈয়্যবার তলকীন শিখিয়ে দেয়া মুস্তাহাব, যাতে মৃতব্যক্তি মুনকার নকীরের প্রশ্নসমূহের উত্তর দিতে পারে। যেহেতু আযানের মধ্যে কলেমাও রয়েছে সেহেতু আযানও কবর তলকীনের জন্য প্রযোজ্য ও মুস্তাহাব বরং আযানের মধ্যেই পরিপূর্ণ তলকীন পাওয়া যায়। কেননা মুনকার নকীর মৃতব্যক্তির কাছে তিনটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে- এক, তোমার প্রভু কে? দুই, তোমার ধর্ম কি? তিন, ওই সোনালী জালিতে পরিবেষ্টিত সবুজ গম্বুজের মধ্য অবস্থানরত আকা মাওলা (ﷺ) সম্পর্কে তোমার কি ধারণা? এ তিনটি প্রশ্নের উত্তর আযানের মধ্যে রয়েছে। যেমন প্রথম প্রশ্নের উত্তর أَشْهَدُ أَنْ لَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ অর্থাৎ আমার ধর্ম হচ্ছে ওটাই যে ধর্মে পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরয। (ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্মে পাঁচ ওয়াক্ত নামায ছিল না) তৃতীয় প্রশ্নে উত্তর أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মদ (ﷺ) আল্লাহর রসূল। দুররুল মুখতারের প্রথম খণ্ড আযান অধ্যায়ে দশ জায়গায় আযান দেয়া সুন্নাত বলা হয়েছে। এ দশ জায়গার বিবরণ নিম্নে বর্ণিত কবিতার মাধ্যমে দেয়া হয়েছে।
فَرْضُ الصَّلَوٰةَ وَفِى اَذَنِ الصَّغِيْرِ وِفِى-وَقْتِ الْحَرِيْقِ وَالْقَرْبِ الَّذِىْ وَقْعَا
خَلْفِ المُسَافِرِ وَالْغَيْلَانِ اِنْ ظَهَرَتْ - فَاَحْفِظَ لِسِتٍّ مَنْ لِلَّذِى قَدْ شَرَعًا
وَزِيْدَ اَرْبَعٌ ذَوْهَمٍّ وَذَوْ غَضَبٍ- مُسَافِرُ ضَلٌّ فِى فَقْرٍ وَمَنْ صَرَعًا.
-পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের জন্য, নবজাত শিশুর কানে, আগুন লাগলে, যুদ্ধের সময়, মুসাফিরের পিছনে, জ্বীনের উপদ্রব বৃদ্ধি পেলে, রাগান্বিত ব্যক্তির সামনে, যেই মুসাফির রাস্তা হারিয়ে ফেলে এবং মৃগী রোগীর জন্য আযান দেয়া সুন্নাত।
❏ এ প্রসঙ্গে ফত্ওয়ায়ে শামীতে আরও উলেখ করা হয়েছে-
قَدْ يُسَنُّ الْأَذَانُ لِغَيْرِ الصَّلَاةِ، كَمَا فِي أَذَانِ الْمَوْلُودِ، وَالْمَهْمُومِ، وَالْمَصْرُوعِ، وَالْغَضْبَانِ، وَمَنْ سَاءَ خُلُقُهُ مِنْ إنْسَانٍ أَوْ بَهِيمَةٍ، وَعِنْدَ مُزْدَحَمِ الْجَيْشِ، وَعِنْدَ الْحَرِيقِ، قِيلَ وَعِنْدَ إنْزَالِ الْمَيِّتِ الْقَبْرَ قِيَاسًا عَلَى أَوَّلِ خُرُوجِهِ لِلدُّنْيَا، لَكِنْ رَدَّهُ ابْنُ حَجَرٍ فِي شَرْحِ الْعُبَابِ، وَعِنْدَ تَغَوُّلِ الْغِيلَانِ: أَيْ عِنْدَ تَمَرُّدِ الْجِنِّ.
নামায ব্যতীত কয়েক জায়গায় আযান দেওয়া সুন্নাত যেমন নবজাত শিশুর কানে, শোকাভূত, মৃগী রোগী ও রাগান্বিত ব্যক্তির কানে, যে জন্তু বা ব্যক্তির অভ্যাস খারাপ হয়ে যায় ওর সামনে, সৈনিকদের যুদ্ধ করার সময়, অগ্নিকাণ্ডের সময় এবং মৃতব্যক্তিকে কবরে রাখার সময় এর জন্ম হওযার সময়ের সাথে অনুমান করে আযান দেয়া সুন্নাত বলা হয়েছে। কিন্তু এ আযান সুন্নাত হওয়ার ব্যাপারে ইবন হাজর (رحمة الله) অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছেন, এবং জ্বীনের উপদ্রবের সময় আযান দেয়া সুন্নাত। ২৪২
{ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-৩৮৫।}
আল্লামা ইবনে হাজরের অস্বীকৃতির জবাব দ্বিতীয় অধ্যায়ে দেয়া হবে ইনশা আল্লাহ।
মিশকাত শরীফের بَابُ فَضْلِ الْأَذَانِ وَإِجَابَةِ الْمُؤَذِّنِ অধ্যায়ে বর্ণিত আছে যে, হুযুর ﷺ ইরশাদ ফরমান-তোমরা বিলালের আযানে সাহরী খাওয়া বন্ধ করো না। সে তো লোকদেরকে জাগানোর জন্য আযান দেয়। বোঝা গেল যে প্রিয় নবীর যুগে সাহরীর সময় ঘণ্টি বাজানো তো তোপ ধ্বনির পরিবর্তে আযান দেয়া হতো। ২৪৩
(১)ইমাম বুখারী, আস-সহীহ, কিতাবুল আযান, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-২২৪, হাদিস-৫৯৬।
(২)ইমাম আবু দাউদ, আস-সুনান, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৩০৩, হাদিস-২৩৪৭
(৩)ইমাম ইবনে মাযাহ, আস-সুুনান, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-৫৪১, হাদিস-১৬৯৬।
(৪)ইমাম নাসাঈ, আস-সুনানুল কোবরা, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৮১, হাদিস-২৪৮০।
(৫)ইমাম ইবনে হিব্বান, আস-সহীহ, ৮, পৃষ্ঠা-২৫০, হাদিস-৩৪৭২।
তাই ঘুমন্ত ব্যক্তিদেরকে জাগানোর জন্য আযান দেয়া সুন্নাত প্রমাণিত হলো।
বিভিন্ন হাদীছ ও ফকীহগণের উক্তিসমূহ থেকে জানা যায় যে, আযানের সাতটি উপকার রয়েছে। আমি ওগুলো নিম্নে বর্ণনা করছি, যাতে অনায়াসে বোঝা যায় যে, ওসব উপকারের মধ্যে কোন কোনটি মৃতব্যক্তির উপকারে আসবে।
প্রথম, এর দ্বারা মৃতব্যক্তির তলকীন হয় যেমন আমি ইতিপূর্বে আলোচনা করেছি।
দ্বিতীয়, আযানের ধ্বনিতে শয়তান পালিয়ে যায়। যেমন
❏ মিশকাত শরীফের আযান অধ্যায়ে আছে-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِذَا نُودِيَ لِلصَّلاَةِ أَدْبَرَ الشَّيْطَانُ، وَلَهُ ضُرَاطٌ، حَتَّى لاَ يَسْمَعَ التَّأْذِينَ.
-‘‘যখন নামাযের আযান দেয়া হয়, তখন শয়তান বিদ্যুৎবেগে পালিয়ে যায়, যাতে আযান শুনতে না পায়।’’ ২৪৪
{ইমাম মুসলিম, আস-সহীহ, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-২৯১, হাদিস-৩৮৯, খতিব তিবরিযি, মিশকাত, আযান অধ্যায়, ১/২০৭ পৃঃ হাদিস/৬৫৫, ইমাম বুখারী, আস-সহীহ, ১/১২৫ পৃঃ হা/৬০৮, সুনানে নাসাঈ, ২/২১ পৃঃ হা/৬৭০, এবং হা/১২৫৩}
মৃত্যুর সময় মৃতগামী ব্যক্তিকে শয়তান ঈমান ছিনিয়ে নেয়ার জন্য যেভাবে প্রলোভিত করে, তদ্রুপ সে কবরের মধ্যে প্রবেশ করে এবং তাকে খোদা বলার জন্য প্ররোচিত করে, যাতে মৃতব্যক্তি শেষ পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়।
اللهم اَحْفِظْنَا مِنْهُ
হে আল্লাহ এর থেকে আমাদেরকে রক্ষা করুন। যেমন-
❏ নওয়াদেরুল উসূল নামক গ্রন্থে ইমাম মুহাম্মদ ইবনে আলি তিরমিযী (رحمة الله) উলেখ করেছেন-
وَأخرج الْحَكِيم فِي نَوَادِر الْأُصُول عَن سُفْيَان الثَّوْريّ قَالَ إِذا سُئِلَ الْمَيِّت من رَبك تزايا لَهُ الشَّيْطَان فِي صُورَة فيشير إِلَى نَفسه إِنِّي أَنا رَبك.
অর্থাৎ মৃতব্যক্তিকে যখন প্রশ্ন করা হয়, তোমার প্রভু কে? তখন শয়তান তার নিজের দিকে ইশারা করে বলে ‘আমি তোমার খোদা’। ২৪৫
{ইমাম হাকেম তিরমিযি, নাওয়াদিরুল উসূল ফি মা’রিফাতিল আহাদিসিল রাসূল, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-৩২৩, দারুস সদর, বয়রুত, লেবানন, ইমাম সুয়ূতি, শরহুস সুদুর, পৃষ্ঠা-১৪১, হা/৫৪}
এজন্য হুযুর ﷺ প্রশ্নোত্তরের সময় মৃতব্যক্তি অটল থাকার জন্য দুআ করেছেন) তাই আযানের দ্বারা শয়তান দমে যায়, মৃত ব্যক্তি শয়তানের প্ররোচনা থেকে রেহাই পায়।
তৃতীয়, আযান মনের ভয়ভীতি দূর করে। যেমন-
❏ হযরত আবু নঈম ও ইবনে আসাকির হযরত আবু হুরাইরা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেছেন-
عَنْ عَطَاء عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ (صلى الله عليه وسلم) نَزَّلَ اَدَمُ بِالْهِنْدِ وَاسْتَوْحَشَ فَنَزَّلَ جِبْرَيِلُ فَنَادٰى بِالْأَذَانِ.
-হযরত আদম (عليه السلام) কে হিন্দুস্থানে (সিংহল) অবর্তীণ করা হয়েছিল এবং তিনি খুবই ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। তখন জিব্রাইল (عليه السلام) আসলেন ও আযান দিলেন। ২৪৬
{ইমাম ইবনে আসাকীর (ওফাত ৫৭১ হিঃ), তারিখে দামেস্ক, খণ্ড-৭, পৃষ্ঠা-৪৩৭।}
অনুরূপ মুদারেজুন নাবুয়াত প্রথম খণ্ডে তৃতীয় অধ্যায়ের ৬২ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করা হয়েছে এবং মৃতব্যক্তি ওই সময় আত্মীয়-স্বজনকে ত্যাগ করে একাকী অন্ধকার ঘরে উপনীত হয় এবং খুবই ভয়ের সঞ্চার হয় এবং এ ভয়ের কারণে হতভম্ব হয়ে পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার আশংকা থাকে। তাই আযানের দ্বারা মন আশ্বস্থ হবে এবং সঠিক উত্তর দিতে পারবে।”
চতুর্থ, আযানের বরকতে মানসিক অশান্তি দূর হয় এবং আত্মিক সান্ত্বনা পাওয়া যায়।
❏ মসনদুল ফিরদাউসে হযরত আলী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে-
قَالَ رَآنِي النَّبِي صلى الله عليه وسلم فَقَالَ: يَا اِبْنِ أَبِي طَالِبْ أَرَاكَ حَزِيْنًا، فَمَر بَعْضَ أَهْلِكَ يُؤَذِّنُ فِي أُذَنِكَ فَإِنَّهُ دَوْاءِ للهم.
অর্থাৎ আমাকে সন্ত্রস্ত অবস্থায় দেখে হুযুর ﷺ জিজ্ঞাসা করলেন-কি কারণ তোমাকে মনমরা মনে হচ্ছে কেন? তুমি কাউকে বল যেন তোমরা কানে আযান দেয়, কেননা আযান অশান্তি দূর করে। ২৪৭
{ইমাম মুত্তাকী হিন্দী, কানযুল উম্মাল, ২/৬৫৭ পৃঃ হা/৫০০০ এবং ২/১২৪ পৃঃ হা/৩৪৪০, ২/৬৫৮ পৃঃ হা/৫০০১, আল্লাল্লামা জুফারুদ্দীন বিহারী, সহীহুল বিহারী, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৯১৩, ইমাম দায়লামী, আল-ফিরদাউস}
❏ বুযুর্গানে দ্বীন এমন কি আল্লামা ইবনে হাজর (رحمة الله) বলেন-
جَرَّبْتَهُ فَوَجَدْتُهُ كَذَالِكَ فِى الْمِرْقَاتْ.
অর্থাৎ আমি এটা পরীক্ষা করে দেখেছি এবং উপকার পেয়েছি। ২৪৮
{আল্লাল্লামা জুফারুদ্দীন বিহারী, সহীহুল বিহারী, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৯১৩}
মিরকাতেও الاذان শীর্ষক অধ্যায়ে অনুরূপ বর্ণিত আছে। তাহলে মৃতব্যক্তির অন্তরে ওই সময় যেই আঘাত লাগে, আযানের বকরতে তা দূর হয়ে যাবে এবং সান্ত্বনা লাভ করবে।
পঞ্চম. আযানের বরকতে প্রজ্জ্বলিত আগুন নিবে যায়।
❏ হযরত আবু হুরাইয়া (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন-
عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَطْفِئُوا الْحَرِيقَ بِالتَّكْبِيرِ.
-‘‘রাসূল ইরশাদ করেন, প্রজ্জলিত আগুনকে তাকবীর দ্বারা নিভিয়ে দাও।’’ ২৪৯
{টিকাঃ
ইমাম তাবরানী, মু‘জামুল আওসাত, ৮/২৫৮ পৃঃ হা/৮৫৬৯, তাবরানী, কিতাবুদ দোয়া, ১/৩০৭ পৃঃ হা/১০০১, তাইমী ইসবাহানী, আত্-তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৭৬৯,
☞তবে ইমাম বায়হাকী (رحمة الله) হাদিসটি এভাবে সংকলন করেছেন-
عَمْرُو بْنُ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: اسْتَعِينُوا عَلَى إِطْفَاءِ الْحَرِيقِ بِالتَّكْبِيرِ
-‘‘আমর ইবনে শুয়াইব (رحمة الله) তিনি তার পিতা তিনি তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন, নিশ্চয় রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, প্রজ্জলিত আগুন লাগার সময়ে তাকবীরের মাধ্যমে আগুন নিভিয়ে দাও।’’ (ইমাম বায়হাকী, দাওয়াতুল কাবীর, ২/১১৮ পৃঃ হা/৫১৬)}
❏ ইমাম আবু ই‘য়ালা সংকলন করেন-
جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِيهِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - قَالَ: إِذَا رَأَيْتُمُ الْحَرِيقَ فَكَبِّرُوا.
-‘‘ইমাম জাফর ইবনে মুহাম্মদ তিনি তার পিতা থেকে তিনি বলেন, নিশ্চয় রাসূল ইরশাদ করেন, যখন তোমরা কোন জায়গায় আগুন লাগতে দেখ তাকবীর বলবে।’’ ২৫০
{টিকাঃ
ইমাম আবু ই’য়ালা, আল-মুসনাদ, দাওলাভী, আল-কুনা ওয়াল আসমা, ৩/১০৮৮ পৃঃ হা/১৯০০, ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী, ইত্তেহাফুল খায়রাতুল মাহরাহ, ৬/৪৩৬ পৃঃ হা/৬১৫৪,
☞ইমাম দায়লামী (رحمة الله) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) হতে সংকলন করেন-
إِذا رَأَيْتُمْ الْحَرِيق فكبروا فَإِنَّهُ يُطْفِئ النَّار
-‘‘রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, যখন তোমরা কোন জায়গায় আগুন লাগতে দেখ তাকবীর বলবে; কেননা এটা আগুন নিভিয়ে ফেলে।’’ (দায়লামী, আল-ফিরদাউস, ১/২৬৩ পৃঃ হা/১০১৯)
☞ইমাম ইবনে সুন্নী (رحمة الله) সংকলন করেন-
عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا رَأَيْتُمُ الْحَرِيقَ فَكَبِّرُوا؛ فَإِنَّ التَّكْبِيرَ يُطْفِئُهُ
-‘‘ আমর ইবনে শুয়াইব (رحمة الله) তিনি তার পিতা তিনি তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, যখন তোমরা কোন জায়গায় আগুন লাগতে দেখ তাকবীর বলবে; কেননা এটা আগুন নিভিয়ে ফেলে।’’ (ইমাম ইবনে সুন্নী, আমালুল ইয়াউম ওয়াল লাইলা, ১/২৫৬ পৃঃ হা/২৯৪-১৯৭, ইমাম ইবনে আদি, আল-কামিল, ৫/২৪৯ পৃঃ ক্রমিক- ৯৭৭)
☞ইমাম ইবনে আদি (رحمة الله) সাহাবী ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে সংকলন করেন-
قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيهِ وَسلَّمَ إِذَا رَأَيْتُمُ الْحَرِيقَ فَكَبِّرُوا.
-‘‘রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, যখন তোমরা কোন জায়গায় আগুন লাগতে দেখ তাকবীর বলবে।’’ (ইমাম ইবনে আদি, আল-কামিল, ৬/১৯৯ পৃঃ ক্রমিক- ১২৮০)}
আযানের মধ্যেওতো তাকবীর (আল্লাহু আকবর) রয়েছে। তাই মৃতব্যক্তির কবরে যদি আগুন লেগে থাকে, আশা করা যায় যে আল্লাহ তা’আলা এর বরকতে নিভিয়ে দেবে।
ষষ্ঠ. আযান আল্লাহর যিকির এবং এর বরকতে কবর আযাব দূরীভূত হয়; কবর প্রশস্ত হয়, এবং সংকীর্ণ কবর থেকে নাজাত পাওয়া যায়।
❏ ইমাম আহমদ, ইমাম তাবরানী ও ইমাম বায়হাকী (رحمة الله) হযরত জাবির (رضي الله عنه) থেকে হযরত সাআদ ইবনে মুয়ায (رضي الله عنه) এর দাফনের ঘটনা উদ্বৃতি করে বর্ণনা করেছেন-
سَبَّحَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَبَّحْنَا طَوِيلًا ثُمَّ كَبَّرَ فَكَبَّرْنَا فَقِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ لِمَ سَبَّحَتْ ثُمَّ كَبَّرْتَ قَالَ: لَقَدْ تَضَايَقَ عَلٰى هَذَا العَبْد الصَّالح قَبره حَتَّى فَرَّجَهُ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ عَنهُ . رَوَاهُ أَحْمَد.
-‘‘দাফনের পর হুযুর ﷺ সুবহানাল্লাহ বললেন। অতঃপর আল্লাহু আকবর বললেন, অন্যরাও বললেন। উপস্থিত সাহাবায়ে কিরাম আরয করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ, তাসবীহ ও তাকবীর বলার রহস্য কি? ইরশাদ ফরমালেন এ নেকবান্দার জন্য কবরটা সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছিল, আল্লাহ তাআলা একে প্রশস্ত করে দিয়েছেন।’’ ২৫১
{টিকাঃ
খতিব তিবরিযি, মিশকাত, ১/১৪৯ পৃঃ হা/১৩৫, পরিচ্ছেদ: بَاب إِثْبَات عَذَاب الْقَبْر , ইমাম আহমাদ, আল-মুসনাদ, ২৩/২৭৮ পৃঃ হা/১৫০২৯, হাইছামী, মাযমাউয-যাওয়াইদ, হা/৪২৫৪,
(ذيل القول المسدد في الذب عن المسند للإمام أحمد) নামক গ্রন্থের ৮১ পৃষ্ঠায় এ হাদিস প্রসঙ্গে লিখা হয়েছে- قلت رجال الإسنادين ثِقَات -
‘‘আমি বলি, এই হাদিসটির দুটি সূত্রের সনদের সমস্ত রাবী সিকাহ বা বিশ্বস্ত।’’}
❏ আল্লামা তিবী (رحمة الله) এর ব্যাখ্যা প্রসংগে লিখেছেন-
قَالَ الطِّيبِيُّ: ...... أَيْ: مَازِلْتُ أُكَبِّرُ وَتُكَبِّرُونَ وَأُسَبِّحُ وَتُسَبِّحُونَ حَتَّى فَرَّجَهُ اللَّهُ.
-‘‘ইমাম তিবী (رحمة الله) বলেন, আমি ও তোমরা তাসবীহ ও তকবীর বলতে আছি। এর মধ্যে আল্লাহ তাআলা তার কবরকে প্রশস্ত করে দিয়েছেন।’’ ২৫২
{মোল্লা আলী ক্বারী, মেরকাত, ১/২১৮ পৃঃ হা/১৩৫ এর ব্যাখ্যা।}
সপ্তম. আযানের মধ্যে হুযুর ﷺ'র যিকর আছে এবং পূণ্যা্মাদের যিকরের সময় আল্লাহর রহমত নাযিল হয়।
❏ তাবে-তাবেঈ ইমাম সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা (رحمة الله) বলেছেন-
عِنْدَ ذِكْرِ الصَّالِحِينَ تَنْزِلُ الرَّحْمَةُ.
-‘‘নেক বান্দাদের যিকরের ফলে রহমত নাযিল হয়।’’ ২৫৩
{মোল্লা আলী ক্বারী, মেরকাত, ৩/১২০৯ পৃঃ হা/১৬৭৮, খতিবে বাগদাদী, তারিখে বাগদাদ, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-১৩, দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।}
দাফনের পর মৃতব্যক্তির জন্য রহমতের খুবই প্রয়োজন। তাই আমাদের সামান্য মুখ নাড়ার ফলে যদি এত বড় বড় সাতটি উপকার হতে পারে, তাতে ক্ষতি কি? প্রমাণিত হলো যে, কবরে আযান দেয়া ছওয়াবের কাজ। ফতওয়ায়ে শামীর سنن الوضوء অধ্যায়ে আছে সমস্ত জিনিস মূলতঃ মুবাহ অর্থাৎ যেটা শরীয়ত নিষেধ করেন নি, ওটা মুবাহ হিসেবে গণ্য। এবং যে মুবাহ কাজ সৎ নিয়তে করা হয়, তা মুস্তাহাব হিসেবে গণ্য।
❏ মিশকাত শরীফের শুরুতেই আছে -
إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ.
সমস্ত আমল নিয়তের উপর নির্ভরশীল ২৫৪
{ইমাম বুখারী, আস-সহীহ, হা/১, ইমাম ইবনে মাযাহ, আস-সুনান, হা/৪২২৭, মিশকাত, হা/১}
❏ শামীর سنن الوضوء অধ্যায়ে আরও উল্লেখিত আছে-
أَنَّ الْفَرْقَ بَيْنَ الْعِبَادَةِ وَالْعَادَةِ هُوَ النِّيَّةُ الْمُتَضَمِّنَةُ لِلْإِخْلَاصِ.
অভ্যাস ও ইবাদতের মধ্যে খালেস নিয়তের দ্বারাই পাথর্ক্য প্রকাশ পায়। ২৫৫
{ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১০৩, ওযূর মুস্তাহাব অধ্যায়।}
অর্থাৎ যে কাজে খালেস নিয়ত থাকবে না, তা অভ্যাসই বলা যাবে।
❏ দুররুল মুখতারে مستحبات الوضوء শীর্ষক আলোচনায় বর্ণিত আছে-
(وَمُسْتَحَبُّهُ) وَهُوَ مَا فَعَلَهُ النَّبِيُّ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - مَرَّةً وَتَرَكَهُ أُخْرَى، وَمَا أَحَبَّهُ السَّلَفُ.
-মুস্তাহাব ওই কাজটাকে বলা হয়, যেটা হুযুর ﷺ কোন সময় করেছেন আবার কোন সময় করেন নি এবং ওই কাজটাকেও বলা হয়, যেটা বিগত মুসলমানগণ ভাল মনে করেছেন। ২৫৬
{ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১২৪, ওযূর মুস্তাহাব অধ্যায়।}
❏ শামীতে দাফনের আলোচনায় ولايجصص পর উল্লেখিত আছে-
وَقَالَ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - مَا رَآهُ الْمُسْلِمُونَ حَسَنًا فَهُوَ عِنْدَ اللَّهِ حَسَنٌ.
নবী করীম (ﷺ) ইরশাদ ফরমান, যে কাজটা মুসলমানগণ ভাল মনে করেন, সেটা আল্লাহর কাছেও ভাল হিসেবে গণ্য। ২৫৭
{ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-২৩৭।}
উপরোক্ত ইবারতসমূহ থেকে প্রমাণিত হলো যে কবরে আযান দেয়া যেহেতু শরীয়তে নিষেধ নয়, তাই জায়েয এবং উহা মুস্তাহাব। আর মুসলমান গণ যেহেতু এটাকে ভাল মনে করে, তাই এটা আল্লাহর কাছেও ভাল হিসাবে গণ্য। স্বয়ং দেওবন্দীদের নেতা মৌলভী রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী ফতওয়ায়ে রশিদীয়ার প্রথম খণ্ড কিতাবুল আকাইদের ১৪ পৃষ্ঠায় বলেছেন-কেউ প্রশ্ন করেছিল যে, দাফনের পর তলকীন জায়েয আছে কিনা। তখন জবাব দিয়েছিল যে, এ মাসআলাটা সাহাবায়ে কিরামের যুগে বিতর্কিত ছিল। এর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কেউ দিতে পারে না। দাফনের পর তলকীন করা এভাবে অর্থাৎ অমীমাংসিত রয়েছে। তাই যেটার উপরই আমল করা হোক না কেন, ঠিক আছে-রশীদ আহমদ।