ইলমে গায়েব সম্পর্কে আল্লাহ ও রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর প্রতি আহলুস সুন্নাহর আকিদাঃ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
حمد و مصلى على رسوله الكريم
- সকল প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার জন্য, যিনি যাবতীয় গায়ব (অদৃশ্য বস্তু) সমূহ পরিপূর্ণরূপে জ্ঞাত, পাপসমূহের মার্জনাকারী, দোষ-ত্রুটিসমূহ গােপনকারী, গােপন রহস্যাদি স্বীয় পছন্দনীয় রাসুলগণের নিকট প্রকাশকারী। আর উৎকৃষ্টতম দরুদ ও সালাম তাঁর উপর, যিনি সকল পছন্দনীয়দের চাইতেও অধিকতর পছন্দনীয়, সকল প্রিয়দের চেয়ে অধিকতর প্রিয়, গায়ব সম্পর্কে অবগতকারীদের সরদার, যাঁকে তাঁর মহান প্রতিপালক ভালরূপে শিক্ষা প্রদান করেছেন। তাঁর উপর আল্লাহর করুণা অসীম! তিনি সকল গায়েবের বিশ্বস্ত রক্ষক, গায়বের সংবাদ দিতে তিনি কৃপণতা করেন না। আর না তিনি স্বীয় প্রতিপালকের ইহসান থেকে উদাসীন রয়েছেন, যার কারণে যা কিছু গত হয়েছে অথবা ভবিষ্যতে সংঘটিত হবে তা তাঁর কাছে গােপন থাকবে। সুতরাং তিনি ফেরেস্তাদের স্বচক্ষে প্রত্যক্ষকারী এবং আল্লাহ তায়ালার সত্তা ও গুণাবলীকে এমনভাবে প্রত্যক্ষকারী যে, না তাঁর চক্ষু অবনত হয়েছে, আর না সীমাতিক্রম করেছে। এতদসত্বেও কি যা কিছু তিনি দর্শন করেছেন তাতে তােমরা তাঁর সাথে ঝগড়া করবে? " আল্লাহ তায়ালা তাঁর উপর কুরআন অবতীর্ণ করেছেন, যা প্রত্যেক কিছুর বিবরণ সম্বলিত। অতএব, তিনি পূর্বাপর সকল কিছুর জ্ঞান বেষ্টন করে নিয়েছেন। আর এমন জ্ঞানও যার কোন সীমা নেই, গণনা সে পর্যন্ত পৌছতে অসমর্থ। সমগ্র জাহানে যা কেউই জানেন না! এমনকি হযরত আদম (আঃ)-এর জ্ঞানসমূহ ও সকল সৃষ্টির জ্ঞান এবং লাওহ-কলম ইত্যাদি সকল কিছুর জ্ঞান মিলে আমাদের প্রিয় নবী (ﷺ)-এর জ্ঞানের সমুদ্রের একটি বিন্দু মাত্র। কেননা, হুজুর (ﷺ) এর জ্ঞানের পরিধি ধারণার বহু উর্ধ্বে। তার উপর আল্লাহর দরুদ ও সালাম। তার জ্ঞান ঐ অসীম সমুদ্র অর্থাৎ আল্লাহ্ তায়ালার চিরস্থায়ী জ্ঞানের সবচেয়ে বড় বিচ্ছুরণ এবং মহানতর অঞ্জলি স্বরূপ।
সুতরাং হুজুর(ﷺ) স্বীয় প্রতিপালকের সাহায্য নেন, আর সমগ্র জাহান হুজুর (ﷺ) থেকে সাহায্য নেন। আর জ্ঞানীর কাছে যে জ্ঞান তা হুজুর সৈয়দে আলম(ﷺ)-এর জ্ঞান থেকেই এবং হুজুর(ﷺ) এর কারণে, তাঁর কাছ থেকে অর্জিত হয়েছে এবং তার (ﷺ) থেকেই নেয়া হয়েছে।
যেমন কসীদায়ে বােরদায় আল্লামা ইমাম শরফুদ্দীন বুসিরী (رحمة الله) কত সুন্দরভাবে ছন্দের মাধ্যমে বলেছেনঃ
نموا من البحر أو رشقا من الديم
وكلهم من رسول أله ملست وأوقفون لديه عندحدهم من نقطة العلم ومنشطة الحكم
অর্থাৎ প্রত্যেকেই রাসুলুল্লাহ (ﷺ)-এর জ্ঞান সমুদ্র থেকে এক অঞ্জলি অথবা তার রহমতের বৃষ্টি থেকে এক চুমুক (রহমত) প্রার্থী। সকলেই সরকারে রিসালত থেকে নিজ নিজ পদ মর্যাদানুযায়ী পরিস্তান অবহিত হয়, রাসুলে সৈয়দে আলম (ﷺ)-এর জ্ঞানের একটি বিন্দু অথবা তার জ্ঞান-বিজ্ঞানের স্বরচিহ্ন অর্থাৎ। রাসুলে ইলম ও হিকমত এতই ব্যাপক যে, প্রত্যেকের জ্ঞান-বিজ্ঞানের সম্পর্ক তার সম্মুখে; তাইও যে সম্পর্ক কিতাবের সাথে আরবী স্বরচিহ্ন ও জের জবরের। তার বংশধর ও ছাহাবীদের উপর বরকত সমূহ ও সম্মান প্রেরণ করুন। আমীন!