পবিত্র কোরআনের অর্থ না বুঝে পড়লে সাওয়াব হয় কিনা?

 

প্রশ্নঃ পবিত্র কোরআনের অর্থ না বুঝে পড়লে সাওয়াব হয় কিনা? এবং ইংরেজী ভাষায় লিখিত কোরআন পড়লে (অর্থ বুঝে) সে অনুযায়ী আমল করলে সাওয়াব হবে কি? নাকি পবিত্র কোরআন আরবী ভাষায় পড়াই বাধ্যতামূলক? জানালে ধন্য হব।


উত্তরঃ পবিত্র কোরআন শরীফ তিলাওয়াত করার মধ্যে বহু ফজিলত রয়েছে। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন- “যে ব্যক্তি পবিত্র কোরআনের একটি বর্ণ পাঠ করবে, সে একটি বর্ণের বিনিময়ে দশগুণ সাওয়াব পাবে।”তিলাওয়াতের সাথে পবিত্র কোরআনের ইংরেজী/বাংলা/ উর্দু অনুবাদ পড়াও সাওয়াবজনক। তবে শুধু অনুবাদ পড়লে কোরআন তিলাওয়াতের সাওয়াব পাওয়া যাবে না। কেউ যদি আরবী পড়তে না পারে, ইংরেজী বা বাংলায় উচ্চারণ দেখে কোরআন পাঠ করে তাতেও কোন অসুবিধা নেই। তবে আরবী হরফগুলোর যথাযথ উচ্চারণ অন্য কোন ভাষার অক্ষর দিয়ে হয় না। বিধায় আরবী হরফগুলোর উচ্চারণের ক্ষেত্রে ‘মাখরাজ’বা উচ্চারণের স্থানের পার্থক্য কোন ভাল ক্বারী সাহেবের নিকট থেকে জেনে নেবেন। পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত ও তদানুযায়ী আমল করার ফজিলত সম্পর্কে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন- “যে ব্যক্তি কোরআন পাঠ করেছে এবং যা কিছু তাতে রয়েছে তদানুযায়ী কাজ (আমল) করেছে তার পিতা-মাতাকে ক্বিয়ামত দিবসে এমন তাজ পড়ানো হবে, যার আলো সূর্য অপেক্ষাও উত্তম।” -[আবু দাঊদ]


উল্লেখ্য যে, পবিত্র কোরআনের শুধু অনুবাদ পড়ে আমল করা সাধারণ লোকের জন্য অনুচিত। তাই, অনুবাদের সাথে সাথে বিশুদ্ধ তাফসীর গ্রন্থের সাহায্য নেয়া উচিত। তা’ছাড়া বিভিন্ন বাতিল ফিরক্বাহ তাদের ভ্রান্ত আক্বীদা মত কোরআন অনুবাদ ও তাফসীর করেছে, ওই সব তাফসীর ও অনুবাদ গ্রন্থ পড়াও সাধারণ লোকের জন্য নাজায়েয এবং বিপদজনক। তাই প্রত্যেক সরলপ্রাণ সুন্নী মুসলমানের উচিত আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আদর্শ ও আক্বীদার আলোকে লিখিত পবিত্র কোরআনের অনুবাদ ও তাফসীর পাঠ করা। এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত বিশুদ্ধ ও সর্বজনমান্য “কানযুল ঈমান খাযাইনুল ইরফান ও নূরুল ইরফান”সহ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের হক্কানী পারদর্শী উলামায়ে কেরাম কর্তৃক লিখিত কোরআনের অনুবাদ ও তাফসীরসমূহ পাঠ করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ রইল এবং ওহাবী, শিয়া, খারেজী, রাফেজী, মওদূদী, কাদিয়ানীদের লিখিত তরজমা-এ কোরআন ও তাফসীর পড়া থেকে দূরে থাকার আহ্বান রইল। কেননা, বাতিল ফিরকা কর্তৃক লিখিত তাফসীর ও তরজমা-এ কোরআন দ্বারা বিভ্রান্ত ও ঈমান নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা অত্যন্ত বেশী। [সূত্র. যুগ-জিজ্ঞাসা, পৃ.৩১-৩২]

Top