পঞ্চ অদৃশ্য জ্ঞান সম্পর্কিত বিশদ আলােচনাঃ


 আশ্চর্যের বিষয় নয় যে, এমন কতেক লােক রয়েছে যারা নসের’ অর্থসমূহ এবং ব্যাপকতা ও নির্দিষ্টতার স্থানসমূহ জানে না, তারাও বলতে লাগলাে আপনি স্বীয় নবীয়ে করিম (ﷺ)-এর জন্য আদি থেকে অনন্তকাল পর্যন্তের সকল বর্তমান ও ভবিষ্যতের জ্ঞান স্থির করেছেন, যাতে এ পঞ্চবস্তুও অন্তর্ভূক্ত হলাে, যেগুলাের 



জ্ঞান আল্লাহ তায়ালা ব্যতীত অন্য কেউ জানেন না। অতঃপর তা আল্লাহর সাথে খাস হওয়া কোথায় গেলাে?' 

'এক না, আমি বলছি, হে লােক! তুমি কত শীঘ্রই ভুলে বসেছাে! আমি কি তােমার মনে মনে বলছি যে, এটি আল্লাহর জন্য (নির্ধারিত) স্বীয় সত্তাগত জ্ঞানের এবং তা আল্লাহর সকল জ্ঞানকে পরিবেষ্টন করে আছে? প্রদত্ত জ্ঞানতাে আল্লাহ। তায়ালার স্থির করা ও তাঁর ইরশাদ করার দ্বারা তাঁর বান্দার জন্য প্রমাণিত। তুমি কি জাননা যে, যা সংঘটিত হয়েছে আর যা সংঘটিত হবে-এ সবের জ্ঞান আমি রাসুলে পাক(ﷺ)-এর জন্য নিজ পক্ষ থেকে স্থির করিনি, বরং আল্লাহই তা। প্রমাণিত করেছেন এবং মুহাম্মদ (ﷺ) ও সাহাবায়ে কিরামই প্রমাণ করেছেন; এরপরের সকল ইমামই-এটা প্রমাণ করেছেন। যেমন কুরআনের অনেক আয়াত, হাদীস, সাহাবী ও ওলামায়ে কিরামের বক্তব্য আমি বর্ণনা করে এসেছি। সুতরাং ঘটনা কোন্ দিকে প্রবাহিত হচ্ছে (কোথায় ফিরে যাচ্ছে), কি হয়েছে তােমাদের! কি হুকুম প্রয়ােগ করছাে! তােমরা কি আল্লাহর আয়াতের মধ্যে কতেককে। কতেক দ্বারা খণ্ডন করছাে? অথচ তোমরা কুরআন পাঠ করাে। তােমাদের কি বােধশক্তি (আকল) নেই? তােমরা কি শুনােনি যা আমি তােমাদের শুনিয়েছি যে, আল্লাহ তায়ালা এমনভাবে নফী (অস্বীকার) করেছেন যা স্থানচ্যুত হবার নয়; আবার এমনভাবে প্রমাণ করেছেন যা অস্বীকার করা সম্ভব নয়; (বরং) উভয়ের মধ্যে সমতা বিধান অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। অথচ তােমরা সমতার নিয়মাবলী সম্পর্কে যেন কানে অলংকার ঠেসে রেখেছাে! যেন তােমরা কান লাগিয়ে রাখছে। কিন্তু শুনছাে না। দৃষ্টি নিক্ষেপ করছাে অথচ দেখছাে না। এমন যদি তােমরা বলাে যে, আল্লাহ পাঁচটি বস্তুকে গুণে নিয়েছেন এবং নির্দিষ্টভাবে এগুলােরই বর্ণনা করেছেন, তাহলে অবশ্যই এগুলাে ব্যতীত অন্যান্যগুলি আল্লাহর সাথে খাস হওয়ার মধ্যে অতিরিক্ত হবে। আর যদি আল্লাহ তায়ালার জ্ঞান অন্যান্য অদৃশ্য জ্ঞানাবলীতেও জারী হয়, তাহলে তাতে এর খাস হওয়ার বিশেষত্ব বাতিল হয়ে। যায়। এখন এটাও অন্যান্য গায়েবের ন্যায় হয়ে গেলাে যে, বলার দ্বারা জানা হয়ে। যায়। এ আমি বলছি, প্রথমতঃ অবকাশ দাও এবং শীঘ্রই নিজকে রক্ষা করাে। কেননা, দ্রুততা অনিশ্চয়তা ও ত্রুটির দিকে টেনে নেয়। যদি মুনাজারার পদ্ধতিতে ১ আলােচনা করতে চাও, তাহলে এ দাবী তােমরা কোথায় থেকে আবিষ্কার করেছে যে, এ খাস হওয়াতে তাঁর কোন বিশেষত্ব রয়েছে।

 ২ আয়াতে তাে এভাবেই রয়েছে। “নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট কিয়ামতের জ্ঞান রয়েছে। তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন, জানেন যা মাতৃগর্ভে রয়েছে এবং কেউ জানেনা সে আগামীকাল কি করবে, আর না কেউ জানে যে, সে কোথায় মৃত্যুবরণ করবে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ জ্ঞানময় ও সংবাদদাতা। সুতরাং এ আয়াতে এর বর্ণনা কোথায় যে, এ পঞ্চজ্ঞানের সবই আল্লাহর সাথেই খাস? খাস হওয়াতে অধিকতর জোরও কোথায় রয়েছে? তুমি কি দেখছােনা যে এ পাঁচটির মধ্যে কোন বস্তু এমনও যাতে বিশিষ্টতার প্রমাণ করে। এমন কিছু নাই। যেমন আল্লাহ তায়ালার এ ইরশাদ-“তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন” এবং আল্লাহর বাণী-“গর্ভাশয়ে যা কিছু রয়েছে তিনি সবই জানেন।

Top