স্বামীর জন্য খরচ করার সাওয়াব
যে কোন দান-সদকারই সাওয়াব রয়েছে। বিশেষত অভাবী স্বামীর জন্য স্ত্রীর খরচ করায় বেশি সাওয়াব পাওয়া যায়। হাদীসে এসেছে-
عن زينب فقلت بلالا سل لنا رسول الله صلى الله عليه وسلم هل يجزى عنى ان اتصدق على زوجى وايتام فى حجرى من الصدقة وقلنا لاتخبر بنا قلت فدخل فساله فقال من هى ؟ قال زينب قال اي الزيانب هى قال هي امرءة عبد الله فقال نعم يكون لها اجر القرابة واجر الصدقة“
হযরত যয়নব (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত যে, আমি হযরত বেলাল (رضي الله عنه) -এর নিকটে বললাম যে, আমার জন্যে -এর নিকটে জিজ্ঞেস করুন যে, আমার স্বামী এবং তার সন্তানাদির জন্যে অর্থ সম্পদ খরচ করলে আমি কি সাওয়াব পাব? আর আমার কথা বলো না। যয়নব (رضي الله عنه) বলেন, তিনি গেলেন এবং মহানবী তাকে জিজ্ঞেস করলেন কে খরচ করছে? বললেন, যয়নব। তখন মহানবী জিজ্ঞেস করলেন, কোন যয়নব? জবাবে বললেন, আবদুল্লাহর স্ত্রী। নবী করীম ইরশাদ করলেন হ্যাঁ। সে দ্বিগুণ সাওয়াব পাবে। প্রথমত আত্মীয়তার পারষ্পরিক সম্পর্কের, দ্বিতীয়ত সদকার।
অন্য এক বর্ণনায় এসেছে যে, বিদায় হজ্জের সময় রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, “হে নারীর দল! সদকা কর। চাই তা অলঙ্কার থেকে হোক না কেন। তোমাদের নারীদের অধিক সংখ্যক জাহান্নামে যাবে। তখন যয়নব এগিয়ে এলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন যে, আমার স্বামী গরিব! আমি কি তাকে দিতে পারব? নবী করীম বললেন, এমনটি করলে তুমি দ্বিগুণ সাওয়াব পাবে।” ২৮৫
২৮৫.মুজমায়া, খণ্ড. ৩; পৃষ্ঠা, ১২২
হযরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (رضي الله عنه) ছিলেন যয়নব (رضي الله عنه) -এর স্বামী। তিনি ছিলেন গরিব আর স্ত্রী ছিলেন সম্পদশালিনী। আবার ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) -এর পূর্বের স্ত্রীর সন্তানও ছিল। আর তাকে লালনপালনও করতেন যয়নব রা। এ কারণেই যয়নব (رضي الله عنه) চিন্তা করলেন যে, সেতো ঘরেরই লোক! তার জন্য খরচ করলে সাওয়াব পাওয়া যাবে কি? এ কারণেই তিনি মহানবী (ﷺ) ’র নিকটে জিজ্ঞেস করতে বলেছিলেন। প্রতিউত্তরে নবী করীম (ﷺ) বলেছিলেন, শুধু সাওয়াবই নয়; বরং দ্বিগুণ সাওয়াব পাবে। এর দ্বারা জানা যায় যে, নারী যদি তার স্বামীর জন্য কিংবা গৃহের কোনো কর্মে নিজ অর্থ সম্পদ খরচ করে তবে তার জন্যে দ্বিগুণ সাওয়াব রয়েছে। এমনিভাবে সৎসন্তানের জন্যেও খরচ করলে দ্বিগুণ সাওয়াব পাবে।
কিন্তু বড়ই দুঃখের বিষয় যে, বর্তমানে সৎসন্তানের সাথে অত্যন্ত জঘন্য আচরণ করা হয়ে থাকে। তার হক নষ্ট করা হয়, তাকে খারাপ দৃষ্টিতে দেখা হয়। নিজের সন্তানের তুলনায় তাকে কোনো সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয় না। যা খুবই খারাপ বিষয়। সৎসন্তানদেরকে কষ্ট দেয়া কবীরা গুনাহ। বিশেষ করে এর মধ্যে যেসব নারীরা লিপ্ত, কাল কেয়ামতে এসব নারীকে কঠিন শাস্তি দেয়া হবে। তাই নিজ সন্তান থেকেও তাদের সাথে অধিক উত্তম আচরণ করা প্রয়োজন।