ত্রিংশ অধ্যায়
সঠিক নিয়ত করা
সঠিক নিয়ত করুনঃ
‘নিশ্চয়ই সকল আমলই নিয়ত অনুযায়ী নিয়ত অনুযায়ী হয়ে থাকে, প্রত্যেকে তাই লাভ করে যা সে নিয়ত করে।’
حَدَّثَنَا الْحُمَيْدِيُّ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الزُّبَيْرِ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الأَنْصَارِيُّ، قَالَ أَخْبَرَنِي مُحَمَّدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ التَّيْمِيُّ، أَنَّهُ سَمِعَ عَلْقَمَةَ بْنَ وَقَّاصٍ اللَّيْثِيَّ، يَقُولُ سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ ـ رضى الله عنه ـ عَلَى الْمِنْبَرِ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ، وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى، فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى دُنْيَا يُصِيبُهَا أَوْ إِلَى امْرَأَةٍ يَنْكِحُهَا فَهِجْرَتُهُ إِلَى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ
‘আলক্বামাহ ইব্নু ওয়াক্কাস আল-লায়সী رحمة الله থেকে বর্ণিতঃ:
আমি ‘উমর ইব্নুল খাত্তাব رضي الله عنه-কে মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছিঃ আমি আল্লাহ ﷻ'র রাসুল ﷺ-কে বলতে শুনেছিঃ কাজ (এর প্রাপ্য হবে) নিয়ত অনুযায়ী। আর মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ী প্রতিফল পাবে। তাই যার হিজরত হবে ইহকাল লাভের অথবা কোন মহিলাকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে- তবে তার হিজরত সে উদ্দেশ্যেই হবে, যে জন্যে, সে হিজরত করেছে।
(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১, ৫৪, ২৫২৯, ৩৮৯৮, ৫০৭০, ৬৬৮৯, ৬৯৫৩; মুসলিম ২৩/৪৫ হাঃ ১৯০৭, আহমাদ ১৬৮) (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১)
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ঃ
জেনে রাখুন, ঘুমানো, খাওয়া, কাজ করা এবং অন্যান্য বৈধ কাজগুলো আল্লাহ ﷻ'র আনুগত্যের কাজ এবং তাঁর নৈকট্যের উপায় হতে পারে। একজন তার এইসব কার্যাবলীর জন্য অনেক আযর লাভ করতে পারে, যখন সে এগুলো করার সময় আল্লাহ ﷻ'র নৈকট্য অর্জনের নিয়ত করে। যেমন কেউ যদি তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যায় এই নিয়তে যে, সে যেন ক্বিয়ামুল লাইল এর জন্য জাগতে পারেন, তাহলে তার ঘুমটি ইবাদতে পরিণত হবে। এটি সকল বৈধ কাজের ক্ষেত্রেই সঠিক।
অনেক ইবাদতকে একত্রিত করণ
যে তাদের সময়কে যথাযথভাবে ব্যবহার করতে জানে সেই জানে কিভাবে একটি সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে অনেক ইবাদতকে একত্রিত করা যায়।
এখানে কিছু উদাহরণ দেয়া হলঃ
* যেমন আপনি যখন মসজিদে সলাত আদায় করতে যান পায়ে হেটে কিংবা গাড়িতে করে, এই কাজটিই স্বয়ং একটি ইবাদত। কিন্ত অনুরূপ সময়কেই আল্লাহ ﷻ'র যিকর, কুরআন তিলাওয়াতের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। ফলে একটি সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অনেক ইবাদতকে একত্রিত করা হল।
* আপনি যখন কোন ওয়ালীমাতে যান যাতে মন্দ কোন কাজ হয় না, এটিই একটি ইবাদত। কিন্তু অনুরূপ সময়েই আপনি আল্লাহ ﷻ'র স্মরণ করতে পারেন।
* একজন মহিলা ঘরে অবস্থান করা, বাড়ির লোকদের কাজ করা একটি ইবাদাত যখন সে এর মাধ্যমে আল্লাহ ﷻ'র নৈকট্য কামনা করে। অনুরুপ সময়েই সে তার সময়কে আল্লাহ ﷻ'র যিকর, ইসলামিক লেকচার ইত্যাদি শুনার মাধ্যমে অন্যান্য ইবাদত করতে পারে।
ইবনে উমার رضي الله عنه থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ যখন আমরা রাসুল ﷺ'র সাথে এক বৈঠকে ছিলাম আমরা গণনা করে দেখেছি তিনি একশতবার বলেন,
রাব্বিগ ফিরলী ওয়াতুব ‘ইলাইয়্যা ইন্নাকা আনতাত তাওয়াবুর রাহীম। (অর্থ- হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমি আপনার নিকট ফিরে আসছি। নিশ্চয়ই আপনি সবচেয়ে ক্ষমাশীল এবং সবচেয়ে দয়াময়।)
ইবনু ‘উমার رضي الله عنه থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ মাসজিদে অবস্থানকালে একই বৈঠকে একশো বার এ দু‘আ পাঠ করেছেন এবং আমরা তা গণনা করেছি : “রাব্বিগফিরলি ওয়াতুব ‘আলাইয়া ইন্নাকা আনতাত্ তাওয়াবুর রহীম।” প্রভূ হে! আমাকে ক্ষমা করে দাও, আমার তাওবাহ কবুল করে নাও, তুমিই তাওবাহ কবুলকারী ও দয়ালু।
(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ১৫১৬)
চিন্তা করে দেখুন রাসুল ﷺ কিভাবে একটি সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দু’টি ইবাদত করেন;
* আল্লাহ ﷻ'র স্মরণ এবং তাঁর ক্ষমা প্রার্থণা।
* সাহাবীদের সাথে বসা এবং তাদেরকে দ্বীন শিক্ষা দেয়া।