আমিরুল মু‘মিনীন হযরত উসমান যিন্নূরাইন (رضي الله عنه)এর আক্বীদা
শাফায়াত করার অধিকার যারা পাবেন-
❏ আমিরুল মু‘মিনীন হযরত ‘ওসমান ইবনে আফ্ফান (رضي الله عنه) বলেন, আল্লাহর প্রিয় হাবিব (ﷺ) ইরশাদ করেন-
يَشْفَعُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ثَلَاثَةٌ: الْأَنْبِيَاءُ، ثُمَّ الْعُلَمَاءُ، ثُمَّ الشُّهَدَاءُ
-‘‘কিয়ামতের ময়দানে তিন ধরনের ব্যক্তিরা সুপারিশ করবে, প্রথমে নবীগণ, তারপর আলেমগণ, তারপর শহীদগণ।’’ ৩১
{৩১. ইমাম ইবনে মাযাহ, আস-সুনান, হা/৪৩১৩, পরিচ্ছেদ: بَابُ ذِكْرِ الشَّفَاعَةِ, ইমাম সুয়ূতি, জামেউস সগীর, হা/১৪৫৬৫, তিনি বলেন, এ হাদিসটি ‘হাসান’। ইমাম আজরী, আশ-শারিয়্যাহ, ৩/১২৪৬ পৃ. হা/৮১৫, ইমাম ইবনুল র্বা, জামিউল বায়ানুল ইলমি ওয়া ফাদ্বলিহি, ১/১৪৯ পৃ. হা/১৫২, খতিব তিবরিযি, মিশকাত, হা/৫৬১১, শায়খ ইউসুফ নাবহানী, ফতহুল কাবীর, ৩/৩৯৮ পৃ. হা/১৪৪৩৭, ইমাম ইবনে আদি, আল-কামিল, ৬/৪৬১ পৃ. ক্রমিক. ১৪০৬, মুত্তাকী হিন্দী, কানযুল উম্মাল, ১৪/৪০১ পৃ. হা/৩৯০৭২, আল্লামা আজলূনী, কাশফুল খাফা, ২/৩৯৮ পৃ. হা/৩২৫৯, মোল্লা আলী ক্বারী, মেরকাত, ৮/৩৫৭৪ পৃ. হা/৫৬১১, আল্লামা মানাভী (رحمة الله) এ হাদিস প্রসঙ্গে লিখেন- وَاِسْنَادَهُ حَسَنٌ -‘‘এ সনদটি ‘হাসান’ পর্যায়ের। (মানাভী, তাইসির, ২/৫০৮ পৃ.)}
আক্বিদা
এ হাদিস থেকে জানতে পারলাম যে হাশরের ময়দানে আমাদের নবী (ﷺ)ই শুধু নন বরং তাঁর উম্মাত থেকে অনেকেও শাফায়াত করার অধিকার লাভ করবেন।
❏ আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) লিখেন-
وَفِي الْعَطْفِ بِثُمَّ دَلَالَةٌ صَرِيحَةٌ عَلَى تَفْضِيلِ الْعُلَمَاءِ عَلَى الشُّهَدَاءِ
-‘‘এখানে প্রিয় নবী (ﷺ) আলেমদের পরে আতফ করে শহীদগণের কথা বলেছেন, এর দ্বারা এ বিষয়টি প্রমাণিত হয় যে আলেমদের মর্যাদা শহীদগণের উপরে।’’ ৩২
{ ৩২. মোল্লা আলী ক্বারী, মেরকাত, ৮/৩৫৭৪ পৃ. হা/৫৬১১}
বুঝা গেল শাফায়াত প্রমাণিত বিষয়। ৩৩
{৩৩. সম্পাদক কর্তৃক সংযোজিত।}
ইসলামে ঈদ শুধু দুটিতেই সীমাবদ্ধ নয়-
❏ ইমাম বুখারী (رحمة الله) সংকলন করেন-
قَالَ أَبُو عُبَيْدٍ: ثُمَّ شَهِدْتُ العِيدَ مَعَ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ، فَكَانَ ذَلِكَ يَوْمَ الجُمُعَةِ، فَصَلَّى قَبْلَ الخُطْبَةِ، ثُمَّ خَطَبَ فَقَالَ: يَا أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ هَذَا يَوْمٌ قَدِ اجْتَمَعَ لَكُمْ فِيهِ عِيدَانِ
-‘‘তাবেয়ী আবূ উবায়দা (رحمة الله) বলেন, তারপর আমি ‘ওসমান ইবনে আফ্ফান (رضي الله عنه)-এর সাথে ঈদের দিন ঈদের নামাযে উপস্থিত হলাম, আর সে দিনটি ছিল জুম‘আর দিন। অতঃপর তিনি খুতবার পূর্বে জুম‘আর নামায পড়ালেন। তারপর খুতবা শুরু করলেন, অতঃপর বললেন, হে মানুষ সকল! নিশ্চয় মহান রব আজকে আমাদের জন্য দুটি ঈদকে একত্রিত করেছেন।’’ ৩৪
{৩৪. ইমাম বুখারী, আস-সহীহ, ৭/১০৩ পৃ. হা/৫৫৭২, ইমাম তাহাভী, শরহে মাশকালুল আছার, ৩/১৯২ পৃ. হা/১১৫৬, ইমাম বায়হাকী, আস-সুনানুল কোবরা, ৩/৪৪৫ পৃ. হা/৬২৯২, ইমাম যায়লাঈ, নাসবুর রায়্যাহ, ২/২২৫ পৃ.}
আক্বিদা
বুঝা গেল, ইসলামে দুটি ঈদই সীমাবদ্ধ নয়, জুম‘আর দিনসহ আরও অনেক ঈদ রয়েছে। তাই যারা বলে থাকেন ইসলামে দুটি ঈদ ছাড়া আর কোন ঈদ নেই তারা জাহেল বা অজ্ঞ। ৩৫
{৩৫. সম্পাদক কর্তৃক সংযোজিত।}
উম্মতে মুহাম্মাদীর মর্যাদা-
❏ ইমাম আবু দাউদ (رحمة الله)সহ আরও অনেকে সংকলন করেন-
عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ صَلَّى الْعِشَاءَ فِي جَمَاعَةٍ كَانَ كَقِيَامِ نِصْفِ لَيْلَةٍ، وَمَنْ صَلَّى الْعِشَاءَ وَالْفَجْرَ فِي جَمَاعَةٍ كَانَ كَقِيَامِ لَيْلَةٍ
-‘‘হযরত ‘ওসমান ইবনু আফ্ফান (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ইশার নামায জামা‘আতের সাথে আদায় করলো সে যেন অর্ধ রাত্রি ইবাদত করলো। আর যে ব্যক্তি ইশা এবং ফজরের নামায জামা‘আতের সাথে আদায় করলো সে যেন সারা রাত ইবাদত করলো।’’ ৩৬
{৩৬. ইমাম আবু দাউদ, আস-সুনান, ১/১৫২ পৃ. হা/৫৫৫, সহীহ ইবনে খুজায়মা, হা/১৪৭৩, সুনানে দারেমী, ২/৭৮০ পৃ. হা/১২৬০, ইমাম মুসলিম, আস-সহীহ, ১/৪৫৪ পৃ. হা/৬৫৬, পরিচ্ছেদ: بَابُ فَضْلِ صَلَاةِ الْعِشَاءِ وَالصُّبْحِ فِي جَمَاعَةٍ , ইমাম খতিব তিবরিযি, মিশকাত, ১/১৯৮ পৃ. হা/৬৩০, ইমাম বাগভী, শরহে সুন্নাহ, ২/২৩১ পৃ. হা/৩৮৫}
আক্বিদা
আমাদের নবীর পূর্বের সকল নবীর শরীয়ত ছিল যে, যে যতটুকু সময় বা বছর ইবাদত করবে সে ততটুকু সময় বা বছরই ইবাদতের সাওয়াব পাবে, কিন্তু উম্মাতে মুহাম্মাদীর বেলায় ভিন্ন। তারা অল্প ইবাদতেও অধিক সাওয়াব লাভ করে থাকেন, তার কারণ তারা সর্বশ্রেষ্ঠ নবীর উম্মত। ৩৭
{৩৭. সম্পাদক কর্তৃক সংযোজিত।}
জানাযা ‘নামায’ এবং তার তাকবীরের সঠিক সংখ্যা-
❏ ইমাম ইবনে মাযাহ (رحمة الله) সংকলন করেন-
عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ: أَنَّ النَّبِيَّ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - صَلَّى عَلَى عُثْمَانَ بْنِ مَظْعُونٍ وَكَبَّرَ عَلَيْهِ أَرْبَعًا
-‘‘হযরত উসমান ইবনে আফ্ফান (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয় নবী কারিম (ﷺ) সাহাবী উসমান ইবনে মাযউন (رضي الله عنه)-এর জানাযার নামায চার তাকবীরে আদায় করেন।’’ ৩৮
{৩৮. ইমাম ইবনে মাযাহ, আস-সুনান, ১/৪৮১ পৃ. হা/১৫০২, হাদিসটির সনদ ‘হাসান’।}
আক্বিদা
সাহাবায়ে কিরামগণের আক্বিদা ছিল জানাযা দোয়া নয় বরং নামায, এজন্যই হযরত ওসমান (رضي الله عنه) (صَلَّى) শব্দ ব্যবহার করেছেন। তাই যারা সাহাবিদের বিরোদ্ধে আক্বিদা পোষণ করেন তারা সবাই জাহান্নামী ৭২ দলের অর্ন্তভুক্ত। এ হাদিস থেকে আরও বুঝতে পারলাম যে, জানাযার নামাযের তাকবিরের সংখ্যা চারটি। ৩৯
{৩৯. সম্পাদক কর্তৃক সংযোজিত।}
পূণ্য কর্ম দ্বারা গুণাহ মিটিয়ে দেয়া-
❏ হযরত ‘ওসমান ইবনু আফ্ফান (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রিয় নবী রাসূলে আরাবী (ﷺ) বলেন-
مَنْ تَوَضَّأَ لِلصَّلَاةِ فَأَسْبَغَ الْوُضُوءَ، ثُمَّ مَشَى إِلَى الصَّلَاةِ الْمَكْتُوبَةِ فَصَلَّاهَا مَعَ النَّاسِ أَوْ مَعَ الْجَمَاعَةِ أَوْ فِي الْمَسْجِدِ غَفَرَ اللَّهُ لَهُ ذُنُوبَهُ
-‘‘যে ব্যক্তি নামাযের জন্য উত্তমভাবে ওযূ করবে তারপর ফরজ নামাযের জন্য মানুষের সাথে বা জামা‘আতের সাথে অথবা মসজিদে হেটে যাবে মহান প্রতিপালক তার গুণাহ (ছগীরা) মাফ করে দিবেন।’’ ৪০
{ ৪০. ইমাম নাসাঈ, আস-সুনান, ২/১১১ পৃ. হা/৮৫৬ এবং আস-সুনানুল কোবরা, ১/৪৪৯ পৃ. হা/৯৩১, ইমাম বায়হাকী, আস-সুনানুল কোবরা, ১/১৩১ হা/৩৮৫, ইমাম মুসলিম, আস-সহীহ, ১/২০৮ পৃ. হা/২৩২}
আক্বিদা
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আক্বিদা হল নেক আমল গুণাহকে মিটিয়ে দেয়; কিন্তু কবীরা গুণাহ এর জন্য তাওবা করা শর্ত। ৪১
{৪১. সম্পাদক কর্তৃক সংযোজিত।}
দাফনের পরে দোয়া এবং ঈসালে সাওয়াব-
❏ ইমাম আবু দাউদ (رحمة الله)সহ আরও অনেকে সংকলন করেন-
عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ، قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، إِذَا فَرَغَ مِنْ دَفْنِ الْمَيِّتِ وَقَفَ عَلَيْهِ، فَقَالَ: اسْتَغْفِرُوا لِأَخِيكُمْ، وَسَلُوا لَهُ بِالتَّثْبِيتِ، فَإِنَّهُ الْآنَ يُسْأَلُ
-‘‘হযরত ‘ওসমান ইবনু আফ্ফান (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) কোন এক মায়্যিতের দাফন কার্য শেষ করে সেখানে দাঁড়িয়ে অতঃপর তিনি বললেন, তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্য আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং দোয়া কর যেন আল্লাহ এখন তাকে (ফিরিশতাদের প্রশ্নের জবাবে) ঈমানের উপরে অটল রাখেন, কেননা এখনই তাকে প্রশ্ন করা হবে।’’ ৪২
{৪২. সুনানে আবি দাউদ, ৩/২১৫ পৃ. হা/৩২২১, ইমাম বায়হাকী, আল-মা‘রিফাতুল সুনানি ওয়াল আছার, ৫/৩৩৩ পৃ. হা/৭৭৪৭ এবং আস-সুনানুল কোবরা, ৪/৯৩ পৃ. হা/৭০৬৪ এবং আস-সুনানুস সুগরা, হা/১১২২ এবং ইসবাতু আযিবিল কুবুর, ৪৭ পৃ. হা/৪০ এবং দাওয়াতুল কাবীর, ২/২৯৪ পৃ. হা/৬৩৬, ইমাম ইবনে আবদিল র্বা, আল-ইস্তিযকার, ৩/৬২ পৃ. ইমাম হাকেম, আল-মুস্তাদরাক, ১/৫২৬ পৃ. হা/১৩৭২, তিনি বলেন-
هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ عَلَى شَرْطِ الْإِسْنَادِ، وَلَمْ يُخَرِّجَاهُ
-‘‘ইমাম ইবনে সুন্নী, আমালুল ইয়াউম ওয়াল লাইলা, ৫৩৭ পৃ. হা/৫৮৫, ইমাম আহমদ, ফাযায়েলুস সাহাবা, ১/৪৭৫ পৃ. হা/৭৭৩, ইমাম মুকাদ্দাসী, আহাদিসুল মুখতার, ১/৫২২ পৃ. হা/৩৮৮, ইমাম বাগভী, শরহে সুন্নাহ, ৫/৪১৮ পৃ. হা/১৫২৩, ইবনে হাজার আসকালানী, তালখিসুল হবীর, ২/৩১০ পৃ. হা/৭৯৬, শায়খ ইউসুফ নাবহানী, ফতহুল কাবীর, হা/১৭৬০ এবং হা/৯১৫৮, ইমাম ইবনে আছির, জামেউল উসূল, ১১/১৪৯ পৃ. হা/৮৬৫৮, মুত্তাকী হিন্দী, কানযুল উম্মাল, ৭/১৫৮ পৃ. হা/১৮৫১৪ এবং ১৫/৫৫৭ পৃ. হা/৪২১৬০, ইমাম নববী, খুলাসাতুল আহকাম, ২/১০২৮ পৃ. হা/৩৬৭৪, তিনি বলেন- رَوَاهُ أَبُو دَاوُد بِإِسْنَاد حسن. -‘‘ইমাম আবু দাউদ হাদিসটি বর্ণনা করেছেন, আর সনদটি ‘হাসান’।’’ ইমাম মুনযিরী, তারগীব ওয়াত তারহীব, ৪/১৮০ পৃ. হা/৫৩৩৪, আল্লামা মানাভী (رحمة الله) লিখেন- بِإِسْنَاد حسن -‘‘এ সনদটি ‘হাসান’।’’ (মানাভী, তাইসির, ২/২৫৪ পৃ.) }
আক্বিদা
এ হাদিস থেকে বুঝা গেল দাফনের পরে দোয়া করা সুন্নাত, আর এটাই ছিল সাহাবীগণের আক্বিদা।
❏ আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) এ হাদিসের ব্যাখ্যায় লিখেন-
وَفِيهِ دَلِيلٌ عَلَى أَنَّ دُعَاءَ الْأَحْيَاءِ يَنْفَعُ الْأَمْوَاتَ خِلَافًا لِلْمُعْتَزِلَةِ
-‘‘এই হাদিস শরীফ হলো এ বিষয়ের দলিল যে, জীবিত ব্যক্তিগণের দোয়া মৃত ব্যক্তিগণের জন্য উপকারী, (এটাই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের অভিমত) মুতাযিলারা এর বিপরীত মত পোষণ করে।’’ ৪৩
{৪৩ . আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী, মেরকাত, ১/২১৬ পৃ. হা/১৩৩ এর ব্যাখ্যা।}
❏ আল্লামা সান‘আনী (رحمة الله) লিখেন-
فِيْه دَلِيْل عَلى أَنَّ الدُّعَاء نَافِع لِلْمَيِّتْ
-‘‘এ হাদিস এই বিষয়ের দলিল যে জীবিত ব্যক্তিগণের দোয়া মৃত ব্যক্তিগণের জন্য উপকার করে থাকে।’’
(সান‘আনী, তানভীর শরহে জামেউস সগীর, ৮/৪২৯ পৃ.)
❏ ইমাম তাহাভী (رحمة الله) লিখেন-
(سَلُوْا)) مَعْنَى الدُّعَاءِ
-‘‘তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্য প্রার্থনা কর এর মমার্থ হলো তার জন্য দোয়া।’’
(শরহে তাহাভী, ২/৫৯৮ পৃ.)
উপরের হাদিসে পাক থেকে বুঝা গেল কবরের পাশে দাঁড়িয়ে দু‘আ করা রাসূল (ﷺ) এবং সাহাবায়ে কিরামের সুন্নাত; এ বিষয়ে আরও অনেক হাদিসে পাক দেখতে পাই। ইমাম তাবরানী (رحمة الله)সহ আরও অনেক ইমাম সংকলন করেন যে হুছাইন ইবনে ওয়াহওয়াহ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ত্বালহা ইবনু বারা (رضي الله عنه) একদা অসুস্থ হলে রাসূল (ﷺ) তাকে দেখতে এসে বলেছিলেন, ত্বালহা মৃত্যুর রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। অতঃপর তিনি রাতে মারা গেলে তাকে তাড়াহুড়া করে দাফন করে দিলেন। রাসূল (ﷺ) কে ইয়াহুদীদের ভয়ে জানালেন না এই ভয়ে যাতে তার কোন ক্ষতি করে না বসে।
فَأُخْبِرَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ أَصْبَحَ فَجَاءَ حَتَّى وَقَفَ عَلَى قَبْرِهِ فَصَفَّ النَّاسَ مَعَهُ ثُمَّ رَفَعَ يَدَيْهِ فَقَالَ اللَّهُمَّ الْقَ طَلْحَةَ يَضْحَكُ إِلَيْكَ وَتَضْحَكُ إِلَيْهِ
-‘‘অতঃপর সকাল হলে রাসূল (ﷺ) এ সংবাদ শুনতে পান। ফলে তিনি এসে তাঁর কবরের পাশে দাঁড়ান এবং লোকেরাও তাঁর সাথে কাতারবন্দি হয়ে দাঁড়ায়। তারপর তিনি তাঁর দু‘হাত তুললেন এবং দু‘আ করলেন, হে আল্লাহ! ত্বালহার জন্য বংশধর অবশিষ্ট রাখুন, যার জন্য সে আপনার প্রতি সন্তুষ্ট হবে আর আপনিও তার প্রতি সন্তষ্ট হবেন।’’ ৪৪
{ ৪৪.ইমাম তাবরানী, মু‘জামুল কাবীর, ৪/২৮পৃ. হা/৩৫৫৪, ইবনে হাজার আসকালানী, ফতহুল বারী, ৩/১১৮পৃ. }
❏ বিখ্যাত হাফেজুল হাদিস ইমাম নুরুদ্দীন ইবনে হাজার হাইছামী (رحمة الله) এই সনদ প্রসঙ্গে বলেন-
رَوَاهُ الطَّبَرَانِيُّ فِي الْكَبِيرِ، وَإِسْنَادُهُ حَسَنٌ.
-‘‘ইমাম তাবরানী (رحمة الله) এই সনদটি সংকলন করেছেন, আর এর সনদ ‘হাসান’ পর্যায়ের।’’ ৪৫
{৪৫ .ইমাম হাইছামী, মাযমাউয-যাওয়াইদ, ৩/৩৭পৃ. হা/৪১৯৪}
তাই যারা দোয়ার বিরোধীতা করছেন তারা রাসূল (ﷺ) এবং সাহাবীদের বিরোধী। ৪৬
{৪৬. সম্পাদক কর্তৃক সংযোজিত।}