জ্ঞানার্জনের উদ্দেশ্যে দেশভ্রমণ
ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله) ইলমে হাদিস অর্জনের জন্য কূফা ছাড়াও মক্কা, মদীনা ও বসরা বহুবার গমন করেছিলেন। মূলত তৎকালে এ চারটি শহরই ছিল জ্ঞানচর্চা বিশেষত হাদিস চর্চার কেন্দ্রবিন্দু। আগেই বলা হয়েছে যে, কূফা নগরী পনেরশত সাহাবী ও অসংখ্য তাবেঈগণের পদচারণায় হাদিস চর্চার মরকযে পরিণত হয়েছিল। কূফায় এমন কোন মুহাদ্দিস বাকী ছিলেন না যাঁর ছাত্র হয়ে ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله) হাদিস শিক্ষা গ্রহণ করেননি।
হযরত ওমর (رضي الله عنه)’র নির্দেশে বসরা আবাদ হয়েছিল। কূফার ন্যায় এ শহরেও অনেক প্রখ্যাত মুহাদ্দীস ছিলেন। ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله) অনেকবার বসরা গমণ করে তাঁদের থেকে ইলমে হাদিস অর্জন করেন। ইমাম ইয়াহিয়া ইবনে শায়বান (رحمة الله) ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله) থেকে বর্ণনা করেন:
دَخَلتُ البَصَرَنِيْفًا وَعِشْرِيْنَ مَرَّةً مِنْهَا مَا اُقِيْمُ سَنَةَ وَاَقَلَّ وَاَكْثَرَ
“আমি বিশ বারের অধিক বসরায় গমণ করেছি। এতে কখনো এক বছর কখনো এর চেয়ে কম আবার কখনো এর চেয়ে বেশী সময় পর্র্যন্ত অবস্থান করেছি।”
মক্কা-মদীনায় গমনঃ
তিনি জীবনে মোট ৫৫ বার হজ্জ পালন করেন। তাছাড়া ১৩০ হিজরী থেকে ১৩৬ হিজরী পর্যন্ত তিনি মক্কা-মদীনায় অবস্থান করেন। এসব হিসাব করলে দেখা যায় তিনি প্রায় দশ বছর মক্কা-মদীনায় অবস্থান করেন। এ দীর্ঘ সময়ে সেখানে অবস্থিত প্রখ্যাত মুহাদ্দিসীনে কিরাম সহ পবিত্র হজ্জ উপলক্ষে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত বড় বড় মুহাদ্দিসীনে কিরাম থেকে ইলমে হাদিস অর্জন করেন। এ সময়ে ইমাম আওযাই ও ইমাম মকহুল (رحمة الله)’র সাক্ষাত লাভে ধন্য হন এবং এঁদের থেকে হাদিসের সনদ লাভ করেন। তাছাড়া পবিত্র মদীনায় হযরত ইমাম বাকির (رحمة الله)’র সান্নিধ্য লাভ করেন এবং দীর্ঘদিন যাবৎ তাঁর খেদমতে থেকে তাঁর থেকে ফিকহ ও হাদিসের অনেক মূল্যবান তথ্য ও জ্ঞান লাভ করেন। তিনি ইমাম বাকির (رحمة الله)’র পুত্র হযরত জাফর সাদিক (رحمة الله) থেকে ইলমে হাদিস অর্জন করেন। এভাবে তিনি চার হাজার উস্তাদ থেকে ইলমে হাদীস ও ইলমে ফিকহ অর্জন করেছেন যাঁদের মধ্যে কয়েকজন সাহাবী সহ অধিকাংশ ছিলেন প্রসিদ্ধ তাবেঈ।