যবেহ সম্পর্কিত মুস্তাহাব বিষয় সমূহের বর্ণনা
মাসআলাঃ যবেহকারী ব্যক্তির জন্য মুস্তাহাব হল- প্রাণীকে শায়িত করার পূর্বে ছুরি ধারালো করে নেয়া। উহার দলীল হল-সাদ্দাদ বিন আউস থেকে বর্ণিত যা ইমাম মুসলিম বর্ণনা করেছেন- রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন- নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক বস্তুর উপর ইহসান (দয়া) অর্থাৎ- উত্তম পদ্ধতিতে সম্পাদন করা ফরয করেছেন। সুতরাং যখন তোমরা হত্যা করবে তখন উত্তম পদ্ধতিতে হত্যা কর, যখন যবেহ করবে তখন উত্তম পদ্ধতিতে যবেহ কর এবং ছুরি ধারালো করে নিবে এবং যবেহকৃত প্রাণীকে শান্তি দাও।১৭১
➥১৭১. সহীহ মুসলিম, ৩য় খণ্ড, ১৫৪৮পৃষ্ঠা।
হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, যে হাদীসকে হাকীম মুসতাদরক এর মধ্যে বর্ণনা করেছেন যে, এক ব্যক্তি যবেহ করার উদ্দেশ্যে ছাগলকে শায়িত করলেন এবং ছুরিকে ধার দিতে লাগলেন, তখন রহমতে আলম (ﷺ) ইরশাদ করলেন- তুমি কি ঐ ছাগলকে কয়েকবার হত্যা করতে চাও। তুমি উহাকে শায়িত করার পূর্বে ছুরি ধার দিয়ে রাখনি কেন? ১৭২
➥১৭২. আল মুসতাদরাক, ৪র্থ খণ্ড, ২৩১পৃষ্ঠা।
মাসআলাঃ যবেহ করার জন্য মুস্তাহাব হল তার ছুরি যখন نخاع গলার হাড়ের পর্যন্ত পৌঁছে তখন জন্তু ঠান্ডা না হওয়ার পূর্বে উহার মাথা কর্তন করবে না।
মাসআলাঃ হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে এমন এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল- যিনি প্রাণী যবেহ করেছেন এবং বিসমিল্লাহ্ বলতে ভুলে গেছেন- উত্তর দিলেন- তার যবেহকৃত প্রাণী খাওয়া যাবে এবং অগ্নিপূজক সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল সে যবেহ করলেও বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে গেলে উত্তর দিলেন- আহার করিওনা। ১৭৩
➥১৭৩. আল মুসতাদরাক, ৪র্থ খণ্ড, ২৩৩পৃষ্ঠা।
মাসআলাঃ হজ্ব বা ওমরা এর মুহরিম (ইহরাম সম্পন্ন ব্যক্তি) এর যবেহ ও হালাল নয় অর্থাৎ যখন সে হেরমের কোন প্রাণী শিকার করে উহা মৃত্যু হিসাবে গণ্য এবং হেরমে মুতলাক (সাধারণ) যবেহ করার ব্যাপারে হালাল ও হারাম এক বরাবর। ১৭৪
➥১৭৪. ফিকহে হানাফী, মুফতী আবদুল আজীম তিরমিযী সাহেব, ৩য় খণ্ড, ১৮২ পৃষ্ঠা।
মাসআলাঃ যবেহ সহীহ হওয়ার শর্ত সমূহঃ-(১) আল্লাহর নামে যবেহ করা। (২) যবেহকারী মুসলমান বা আহলে কিতাব হওয়া।
আল্লাহর নামে যবেহ করার দলীল হল এ আয়াত: তোমরা দাড়ানো অবস্থায় যবেহ করার সময় আল্লাহর নাম স্মরণ কর। সূরা হজ্ব, যবেহ করার সময় আল্লাহর নামে যবেহ করা শর্ত, উহার দলীল এ আয়াত শরীফঃ “যখন ওরা কাত হয়ে পড়ে।” অর্থাৎ যবেহ এর পর যখন প্রাণী পতিত হয়।১৭৫
➥১৭৫. সূরা হজ্ব, আয়াত: ৩৬।
মাসআলাঃ হযরত আবু ছা’লাবা (رضي الله عنه)কে হুজুর (ﷺ) বলেছেন- যখন তোমরা স্বীয় শিক্ষিত কুকুরের সাথে শিকার কর এবং আল্লাহর নাম নিয়ে থাক তাহলে উহা আহার কর। ১৭৬
➥১৭৬. সহীহ বুখারী, ১১৮পৃষ্ঠা।
হুযুর (ﷺ) হযরত আজর বিন হাতিম (رضي الله عنه)কে এটাও বলেছেন যে, যখন তোমরা স্বীয় প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কুকুরকে শিকারের উপর ছেড়ে দাও এবং আল্লাহর নাম নিয়ে থাক এবং কুকুর তোমাদের জন্য বিরত থাকে (কুকুর নিজে না খায়) উহা আহার কর। ১৭৭
➥১৭৭. সহীহ বুখারী, ১১৮৬পৃষ্ঠা।