মানুষের মনের চিন্তা ভাবনা বলে দেয়া
হাদিস ৯:
اخرج الحاكم وصححه الطبراني، عن سلمة بن الأكوع أنه كان مع رسول الله ﷺ إذ جاءه رجل، فقال: من انت؟ قال : أنا نبي. قال: وما نبي؟ قال : رسول الله قال: متي تقوم الساعه؟ فقال: غيب ولا يعلم الغيب إلا اللّٰه. قال. أرني سيفك فأعطاه الني ﷺ سيفه فهزه الرجل ثم رده عليه، فقال رسول الله ﷺ أما أنك لم تكن تستطيع الذي اردت قال وقد كان. زاد الطبراني، ثم قال رسول الله ﷺ إن هذا أقبل فقال أتيه فاسأله ثم اخذ السيف فأقتله ثم أغمد السیف
হযরত সালামাহ ইবনে আকওয়া (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সঙ্গে ছিলেন। এক ব্যক্তি তাঁর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল? আপনি কে? তিনি বললেনঃ আমি নবী। সে প্রশ্ন করলঃ কিয়ামত কবে হবে? রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ এটা অদৃশ্যের বিষয়, যা কেবল আল্লাহ তা'য়ালাই জানেন। লোকটি বললঃ আমাকে আপনার তলোয়ারটি দেখান। তিনি তলোয়ার তাকে দিলেন। সে তলোয়ারটি নাড়াচাড়া করে ফিরিয়ে দিল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ তুমি যে ইচ্ছা করেছিলে, তার ক্ষমতা তোমার নেই । সে বললঃ আমার তাই ইচ্ছা ছিল। তিবরানীর বর্ণনায় আছে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ লোকটি মনে করেছিল যে, সে আমার তলোয়ার নিয়ে আমাকে হত্যা করবে। কিন্তু তা সে পারল না।
হাদিস ১০:
اخرج أحمد والبزار وأبو يعلى والبهقي وأبو نعيم، عن وابصة الأسدي قال: جئت لا سأل النبي ﷺ عن البر والإثم، فقال: من قبل أن أسأله عنه یا وابصة: أخبرك بما جئت تسألني عنه؟ قلت: اخبرنی یا رسول اللّٰه قال: جئت تسألني عن البر والإثم قلت : أي والذي بعثك. بالحق، فقال : "البر ما انشرح له صدرك والإثم ما حاك في نفسك وإن أفتاك عنه الناس"
হযরত ওয়াবেসা আসাদী (رضي الله عنه) বর্ণনা করেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর খেদমতে ‘বির' (সৎ কর্ম) ও ইছম' (পাপ কর্ম) সম্পর্কে প্রশ্ন করার জন্যে হাযির হলাম। তিনি বললেন : হে ওয়াবেসা, তুমি যে বিষয়ে প্রশ্ন করার জন্যে এসেছে, আমি তোমাকে তা বলে দিচ্ছি। আমি আরয করলামঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ (ﷺ)! বলুন। তিনি বললেন : তুমি সৎকর্ম ও পাপকর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে এসেছে। আমি বললামঃ আল্লাহর কসম, যিনি আপনাকে সত্য নবী করে প্রেরণ করেছেন- আমি এজন্যই এসেছি। অতঃপর তিনি বললেনঃ ‘বিরর’ সেই কাজ, যে কাজে তোমার বক্ষ উন্মুক্ত থাকে, কোনরূপ সন্দেহের কাঁটা অনুভূত হয় না। আর ইছম' সেই কাজ, যে কাজে তোমার মনে খটকা থাকে যদিও মানুষ তোমাকে (জায়েয বলে) ফতোয়া দিয়ে দেয়।
হাদিস ১১:
واخرج البيهقي وأبو نعيم، عن ابن عمر قال : كنت عند النبي ﷺ، فجاءه رجلان أنصاري وثقفي يسألان، فقال للثقفي: سل عن حاجتك، وإن شئت أنبأتك بالذي جئت تسأل عنه. قال : أنبئني فذاك أعجب إلي يا رسول اللّٰه. قال: فانك جئت تسال عن صالتك باليل وعن ركوعك وعن سجودك و عن صيامك وعن غسلك من الجنابة، فقال: والذي بعثك بالحق إن ذلك الذي جئت اسألك عنه، ثم قال الأصاري: سل وإن شئت أنبأتك بالذي جئت تسأل عنه. قال: أنبئني فذاك اعجب الي يا رسول اللّٰه قال فا انك جئت تساءل عن خروجك من بيتك تؤم البيت العتيق، وتقول: ماذا لي فيه، وعن وقوفك بعرفات، وعن حلقك رأسك، وعن طوافك بالبيت، وعن ورميك الجمار. قال: أي والذي بعثك بالحق إن هذا الذي جئت اسأل عنه، وورد مثله من حديث أنس، وقد تقدم في باب حجة الوداع ومن حديث عبادة بن الصامت أخرجه أبو نعيم
হযরত ইবনে ওমর (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে ছিলাম। তাঁর খেদমতে দু'ব্যক্তি উপস্থিত হল। তাদের একজন ছিল আনসারী, অপরজন ছকফী। তারা কিছু জিজ্ঞাসা করতে এসেছিল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ছকফীকে বললেনঃ তুমি নামায, রুকু, সেজদা, রোজা এবং জানাবতের গোসল সম্পর্কে জানতে এসেছ। সে বললঃ সেই সত্তার কসম, যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, আমি এসব বিষয়েই জ্ঞানার্জন করতে এসেছি। অতঃপর রসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আনসারীকে বললেন? তুমি প্রশ্ন কর। তুমি চাইলে আমি তোমার প্রশ্নও বলে দিতে পারি । আনসারী বললঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ্ বলুন। তিনি বললেনঃ তুমি এসেছ একথা জানতে যে, গৃহ থেকে বায়তুল্লাহ নিয়তে বের হলে তার কি ছওয়াব? তুমি আরও জানতে চাও যে, আমি আরাফাতে অবস্থান করব, মাথা মুন্ডন করব, তওয়াফ । করব এবং কংকর নিক্ষেপ করব কি না? আনসারী বললঃ সেই সত্তার কসম, যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন-আমি একথাই জিজ্ঞেস করতে এসেছিলাম ।।
হাদিস ১২:
واخرج البيهقي، عن عقبة بن عامر الجهني قال : جاء رجل من أهل الكتاب معهم مصاحف، فاستأذنوا علي النبي ﷺ، فدخلت فأخبرته، فقال : ما لي ولهم يسألوني عما لا أدري انما أنا عبد لا أعلم إلا ما علمني ربي، ثم توضأ وخرج ألي المسجد فصلي ركعتين، ثم انصرف، فقال لي و أنا أري السرور في وجهه أدخل القوم علي فدخلوا، فقال: إن شئتم اخبرتكم عما جئتم تسألوني عنه من قبل أن تكلموا. قالوا: بلي فأخبرنا. قال : جئتم تسألوني عنه ذي القرنين أن أول أمره أنه كان غلاما من الروم أعطي ملكا، فسار حتي أني ساحل أرض مصر، فا بتني مدينة يقال لها اسكندرية، فلما فرغ من بنائها بعث الله له ملكا فعرج به فاستعلي بين السماء والأرض، ثم قال له: انظر ما تحتك. قال: أرى مدينتين فاستعلي به ثانية، فقال له: انظر ما تحتك، فقال : لست أري شيئا، فقال له : المدينتين هو البحر المستدير، وقد جعل الله مسلكا تسلك به تعلم الجاهل، وتثبت العالم قال : ثم جوزه فابتني السد بين جبلين زلقين لا يستقر عليها شيء، فلما فرغ منها سار في الأرض فأتي على قوم وجوهم كوجوه الكلاب، فلما قطعهم أتي على قوم فسار، فلما قطعهم أتي على قوم من الحيات تلتقم الحية منهم الصخرة العظيمة، ثم اتى على الغرانيق، فقالوا هكذا نجد في كتابنا
হযরত ওকফা ইবনে আমের জুহানী বর্ণনা করেন, কয়েকজন ইহুদী আগমন করল। তাদের সাথে ধর্মগ্রন্থ ছিল। তারা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সাথে সাক্ষাতের অনুমতি চাইল। আমি তাঁর কাছে গেলাম এবং তাঁকে জ্ঞাত করলাম। তিনি বললেন তাদের সাথে আমার সাক্ষাতে লাভ কি? তারা আমাকে এমন বিষয়ে প্রশ্ন করতে চায়, যা আমি জানি না। আমি একজন বান্দা। আমি কেবল তাই জানি, যা আমার রব আমাকে বলে দেন। এরপর তিনি ওযু করে মসজিদে এলেন। তখন তাঁর মুখমন্ডল আনন্দের চিহ্ন প্রস্ফুটিত ছিল। তিনি বললেন, তাদেরকে আমার কাছে পাঠাও। তারা এলে তিনি বললেনঃ তোমরা ইচ্ছা করলে যে কথা জিজ্ঞেস করতে তোমরা এসেছ, তা আমি বলে দেই। তারা বললঃ হ্যাঁ, আমাদের ইচ্ছা তাই । রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ তােমরা আমার কাছে যুলকারনাইন সম্পর্কে প্রশ্ন করতে এসেছ। অতপর দুরাকাত নামাজপড়ে প্রফুল্ল মনে মসজিদের বাহিরে এলেন যুলকার নাইন একজন রােমক ছিল। সে সম্রাট হয়ে গেল। সে দ্বিপ্তি জয়ে বের হয়ে অবশেষে মিশর উপকূলে উপস্হিত হল। সে একটি শহর নির্মাণ করল, যার নাম আলেক জান্ডিয়া। শহরের নির্মান সমাপ্ত হলে আল্লাহ তালা তার কাছে একজন ফেরেস্তা পাঠালেন। ফেরেস্তা একে নিয়ে আকাশে আরােহন করলাে। আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যস্থল পর্যন্ত উচু হতে ফেরেস্তা বলল নিচে দেখ কি আছে? যুলকার নাইন বলেনঃ দুটি শহর দেখা যাচ্ছে। ফেরস্তা তাকে আরো উপরে নিয়ে গেল এবং বললেনঃ নিচে কি আছে? সে বলল কিছুই দেখা যায় নাই। ফেরস্তা বললেনঃ যে দুটি শহর দৃষ্টি গােচর হল । সেটা শহর নয় মহা সাগর।আল্লাহ তালা তােমার পথ নির্দিষ্ঠ করে দিয়েছে। তুমি সে পথে চলবে। মুর্খকে জ্ঞান শিখাবে এবং জ্ঞানীকে জ্ঞানের উপর দৃঢ় রাখবে। এরপর ফেরেস্তা যুলকার নাইনকে পৃথিবীতে নামিয়ে দিলেন। সে দুপাহাড়ের মধ্যস্থলে প্রাচীর নির্মাণ করেছিল। এরপর ভূমন্ডলে পরিভ্রমণ করেছিল। সে এক সম্প্রদায়ের কাছে উপস্থিত হয়েছিল। যাদের চেহারা ছিল কুকুরের মত । এরপর আর এক সম্প্রদায়ের নিকট গমন করেছিল। ইয়াহুদিরা এ বিবরণ শুনে বলল আমাদের কিতাবাদিতে এরূপ বলাই আছে।
হাদিস ১৩:
وأخرج البهقي، عن جابر بن عبد اللّٰه قال: جاء رجل إلى النبي ﷺ، فقال يا رسول اللّٰه إن أبي يريد أن يأخذ مالي، فدعا أباه فهبط جبريل، فقال : إن الشيخ قد قال في نفسه شيئا لم تسمعه أذناه، فقال رسول اللّٰه ﷺ قلت في نفسك شيئا لم تسمعه أذناك قال: الا يزال يزيدنا الله تعلي بك بصيرة ويقبنا نعم. قال هات فانشأ يقول
হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (رضي الله عنه) বর্ণনা করেনঃ এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ, (ﷺ) এর কাছে এসে বললঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্! আমার পিতা আমার ধন সম্পদ নিয়ে যেতে চায়। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার পিতাকে ডাকলেন। ইতিমধ্যে জিবরাঈল (আঃ) এসে বললেনঃ এই বৃদ্ধকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি মনে মনে কি বলেছ? সে বললঃ আল্লাহ্ তা'আলা আপনার কারণে আমাদের অন্তজ্ঞান ও বিশ্বাস বৃদ্ধি করে দেন। আমি অবশ্যই কিছু বলেছি। অতঃপর
সে এই কবিতা আবৃত্তি করলঃ
غذوتك مولودا ومنتك يا فعا ٭ تعل بما أجني عليك وتنهل
إذا ليلة ضا قتك بالسقم لم أبت ٭ لسقمك ألا ساهرأ اتلمل
تخاف الردى نفسي عليك وانها ٭ لتعلم أن الموت حتم موكل
كأني أنا المطروق دونك بالذي ٭ طوقت به دوني فعيناي تم
فلما بلغت السن والغاية الت ٭ إليك مدى ما كنت فيكأو مكأنك أنت
المنعم المتفضل ٭ جعلت جزائي غلظة وفظاظة
فليتك إذ لم ترع حق أبوتي ٭ كما يفعل الجر المجاور تفعل
فبكى رسول اللّٰه ﷺ، وأخذ بتلبيب ابنه وقال: أنت ومالك لأبيك.
শৈশবে তাের লালন-পালন করেছি।
যৌবনে, তাের সাথে আশা আকাঙ্খা জড়িত করেছি।
তােকে সর্বপ্রকার সিক্ত ও দ্রিাতৃপ্ত করেছি।
যখন তুই রুগ্ন হতিস, তখন তাের রােগের কারণে রাত্রি কঠিন হয়ে যেত।
আমি অশান্ত ও অস্থির হয়ে
রাত্রি অতিবাহিত করতাম।
তাের বিনাশের কথা ভেবে আমার মন ভীত থাকত। অথচ
আমি জানি মৃত্যু একদিন না একদিন আসবেই
তাের অসুখ-বিসুখ আসলে আমার উপর চড়াও হত।
আমার চক্ষু থেকে দরদর অশ্রু প্রবাহিত হত ।
যখন তুই যৌবনে উত্তীর্ণ হলি, তখন রূঢ়া ভাষা ও
অসৎ আচরণ দ্বারা আমাকে প্রতিদান দিলি যেন এ যাবত তুই-ই আমাকে
স্নেহ-মমতা ও অর্থসম্পদ দিয়ে বড় করেছিস।
তুই পিতৃত্বের হকের প্রতি লক্ষ্য রাখিস না। হায়!