বুর্যুগানে কিরামের হাত-পা চুমু দেওয়া ও পবিত্র বস্তুর সম্মান করা


    আল্লাহর ওলীগনের হাত-পা চুমু দেয়া, তাদের পবিত্র বস্তু, চুল, পোশাক পরিচ্ছেদ ইত্যাদির সম্মান করা ও চুমু দেয়া মুস্তাহাব। বিভিন্ন হাদীছ ও সাহাবায়ে কিরামের আমল থেকে এ সবের প্রমাণ রয়েছে। কিন্তু কতেক লোক এ গুলোকে অস্বীকার করে। তাই এই আলোচনাকেও আমি দু’টি অধ্যায়ে বিন্যস্ত করেছি। প্রথম অধ্যায়ে এর প্রমাণ এবং দ্বিতীয় অধ্যায়ে এ প্রসঙ্গে উত্থাপিত আপত্তি সমূহের উত্তর দিয়েছি।


প্রথম অধ্যায়

পবিত্র বস্তুকে চুমু দেওয়ার প্রমাণ


✧ পবিত্র বস্তুকে চুমু দেয়া জায়েয। কুরআন করীম ইরশাদ ফরমান:

وَادْخُلُوا الْبَابَ سُجَّدًا وَقُولُوا حِطَّةٌ

অর্থাৎ ওহে বনী ইসরাঈল বায়তুল মুকাদ্দিসের দরজা দিয়ে নতশিরে প্রবেশ কর। এবং বল আমাদের গুনাহ মাফ করা হোক।’’ ৩৯৭

➥397. সূরা বাক্বারা, আয়াত নং-৫৮


এ আয়াত থেকে অবগত হওয়া গেল যে আম্বিয়া কিরামের আরামগাহ বায়তুল মুকাদ্দিসকে সম্মান করানো হলো অর্থাৎ বনী ঈসরাঈলকে ওখানে নতশিরে প্রবেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ আয়াত দ্বারা এটাও বোঝা গেল যে, পবিত্র স্থান সমূহে তওবা তাড়াতাড়ি কবুল হয়। 


✧ মিশকাত শরীফের بَاب المصافحة والمعانقة অধ্যায়ের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে বর্নিত আছে:

وَعَن زارع وَكَانَ فِي وَفْدِ عَبْدِ الْقَيْسِ قَالَ: لَمَّا قَدِمْنَا الْمَدِينَةَ  فَجَعَلْنَا نَتَبَادَرُ مِنْ رَوَاحِلِنَا فَنُقَبِّلُ يَدُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرجله. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

হযরত যেরা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে, যিনি আবদুল কায়সের প্রতিনিধিভুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন: যখন আমরা মদীনা মনোয়ারায় আসলাম তখন আমরা নিজ নিজ বাহন থেকে তাড়াতাড়ি অবতরণ করতে লাগলাম। অতঃপর আমরা হুযুর আলাইহিস সালামের পবিত্র হাত-পায় চুমু দিয়েছিলেন।’’  ৩৯৮

➥398. খতিব তিবরিযি, মিশকাত, কিতাবুল আদাব, ৩/১৩২৮, হাদিস/৪৬৮৮, ইমাম আবু দাউদ, আস-সুনান, পৃষ্ঠা-৭৮৬, হাদিস-৫২২৫, ইমাম বুখারী, আদাবুল মুফরাদ, পৃষ্ঠা-২৬৫, হাদিস-১০০৪, ইমাম বায়হাকী, শু’য়াবুল ঈমান, খণ্ড-১১, পৃষ্ঠা-২৯৪, হাদিস/৮৫৬০, ইমাম বায়হাকী, দালায়েলুন নবুয়ত, খণ্ড-৫, পৃষ্ঠা-৩২৭।


✧ মিশকাত শরীফের শীর্ষক بَاب الْكَبَائِر وعلامات النِّفَاق অধ্যায়ে হযরত ছিফওযান ইবনে আসসাল থেকে বর্ণিত আছে-

فَنُقَبِّلُ يَدُ رَسُولِ اللَّهِ ﷺوَرجله 

-অতঃপর হুযুর আলাইহিস সালামের হাত-পায় চুমু দেন।’’ ৩৯৯

➥399. 

(১)ইমাম তিরমিযি, আস-সুনান, পৃষ্ঠা-৭৭০, হাদিস-২৭৩৮।

(২)ইমাম তাহাভী, শরহে মা’আনীল আছার, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-২১৫, হাদিস-

(৩)ইমাম নাসাঈ, আস-সুনান, পৃষ্ঠা-৫৯৪, হাদিস-৪০৮০।

(৪)ইমাম নাসাঈ, আস্-সুনানুল কোবরা, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৩০৬, হাদিস-৩৫৪১।

(৫)ইমাম ইবনে মাযাহ, আস্-সুনান, পৃষ্ঠা-৫৫৯, হাদিস-৩৭০৫।

(৬)ইমাম ইবনে শায়বাহ, আল-মুসান্নাফ, খণ্ড-৫, পৃষ্ঠা-২৯২, হাদিস-২৬২০৭।


✧ মিশকাত শরীফে ما يقال عند من حضرت الموت শীর্ষক অধ্যায়ে তিরমিযী ও আবু দাউদ শরীফের বরাত দিয়ে বর্ণিত আছে:

وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺقَبَّلَ عُثْمَانَ بْنَ مَظْعُونٍ وَهُوَ مَيِّتٌ

অর্থাৎ হুযুর আলাইহিস সালাম হযরত উছমান ইবনে মযউনকে মৃতাবস্থায় চুমু দিয়েছেন।’’  ৪০০

➥400. 

(১)ইমাম হাকেম, আল-মুস্তাদরাক, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-২০৯, হাদিস-৪৮৪৮      

(২)ইমাম ইবনে মাযাহ, আস্-সুনান, হাদিস-১৪৫৩।

(৩)ইমাম আহমদ, আল-মুসনাদ, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৪৩।

(৪)ইমাম আবু দাউদ, আস্-সুনান, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-২০১, হাদিস-৩১৬৩, 


☞এই হাদিসটিকে আহলে হাদিসদের তথাকথিত ইমাম আলবানী যঈফ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এর জবাব জানতে আমার লিখিত ‘প্রমাণিত হাদিসকে জাল বানানোর স্বরূপ উন্মোচন’ দ্বিতীয় খন্ডের ১৫১-১৫৩ পৃষ্ঠায়। 


☞আহলে হাদিসদের ইমাম শাওকানী এই হাদিসের ব্যাখ্যায় তিনি লিখেছেন-

فِيهِ دَلَالَةٌ عَلَى جَوَازِ تَقْبِيلِ الْمَيِّتِ

-‘‘এই হাদিসই প্রমাণ করে যে ওফাতের পরেও মৃত চুমু দেয়া জায়েয।’’ (শাওকানী, নায়লুল আউতার, ৪/৩২পৃ:)


☞ইমাম ইবনে মাযাহ (رحمة الله) সংকলন করেন-

عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ مُوسَى بْنِ أَبِي عَائِشَةَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، وَعَائِشَةَ، أَنَّ ্রأَبَا بَكْرٍ، قَبَّلَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَهُوَ مَيِّتٌ

-‘‘যথাক্রমে...সুফিয়ান সাওড়ী (رحمة الله) তিনি মূসা ইবনে আবি আয়েশা (رحمة الله) থেকে তিনি উবায়দুল্লাহ থেকে তিনি হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) এবং হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন, তারা উভয়ই বলেন, ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) ওফাতের পরে রাসূল (ﷺ) কে তিনি চুমু দিয়েছেন।’’ (ইমাম ইবনে মাযাহ, আস-সুনান, ১/৪৬৮পৃ: হা/১৪৫৭) 


☞আলবানীও এই হাদিসটিকে সহীহ বলে তাহকীক করেছেন। এই হাদিসেও প্রমাণ হয়ে গেল বুজুর্গানে দ্বীন জীবিত অবস্থায় যেমন চুমু দেয়া বৈধ তেমন ওফাতের পরেও চুমু দেয়া বৈধ এবং ওফাতের পরেও মুহাব্বাতে বরকত হাসিলের জন্য চুমু দেয়া বৈধ।


✧ প্রসিদ্ধ শিফা শরীফে উল্লে­খিত আছে:

كَانَ اِبْنِ عُمَرَ يَضَعُ يَدَهُ المِنْبَرِ الَّذِىْ يَجْلِسُ عَلَيْهِ رَسُوْلُ الله ﷺ فِى الْخَطْبَةِ ثُمَّ يَضَعُهَا عَلٰى وَجْهِهِ

-‘‘যে মিম্বরে দাড়িয়ে হুযুর (ﷺ) খুৎবা দিতেন, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর সেটাতে হাত লাগিয়ে মুখে মাখতেন (চুমু দিতেন)।’’৪০১

➥401. ইমাম কাযি আয়াজ মালেকী, শিফা শরীফ, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৭০।

  

✧ বিশ্ব বিখ্যাত ফকিহ ও মুহাদ্দিস হাফেজ ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (رحمة الله)এ বিষয়ে লিখেন-

اسْتَنْبَطَ بَعْضُهُمْ مِنْ مَشْرُوعِيَّةِ تَقْبِيلِ الْأَرْكَانِ جَوَازَ تَقْبِيلِ كُلِّ مَنْ يَسْتَحِقُّ التَّعْظِيمَ مِنْ آدَمِيٍّ وَغَيْرِهِ فَأَمَّا تَقْبِيلُ يَدِ الْآدَمِيِّ فَيَأْتِي فِي كِتَابِ الْأَدَبِ وَأَمَّا غَيْرُهُ فَنُقِلَ عَنِ الْإِمَامِ أَحْمَدَ أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ تَقْبِيلِ مِنْبَرِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَتَقْبِيلِ قَبْرِهِ فَلَمْ يَرَ بِهِ بَأْسًا ..... وَنقل عَن بن أَبِي الصَّيْفِ الْيَمَانِيِّ أَحَدِ عُلَمَاءِ مَكَّةَ مِنَ الشَّافِعِيَّةِ جَوَازَ تَقْبِيلِ الْمُصْحَفِ وَأَجْزَاءِ الْحَدِيثِ وَقُبُورِ الصَّالِحين

-‘‘কাবা শরীফের স্তম্ভগুলোর চুম্বন থেকে কতেক উলামায়ে কিরাম বুযুর্গানে দ্বীন ও অন্যান্য পবিত্র বস্তসমূহ চুম্বনের বৈধতা প্রমাণ করেন। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (رحمة الله) থেকে বর্ণিত আছে যে তার কাছে জানতে চাওয়া হল যে রাসূল (ﷺ) এর রওজা ও মিম্বার শরীফকে চুমু দেওয়া জায়েয কিনা? এতে তিনি অসুবিধার কিছু দেখেননি। আল্লামা ইবনে আবি সাইফ ইয়ামানী (رحمة الله) যিনি শাফেয়ী মাযহাবের মক্কা শরীফের বিখ্যাত ফকিহ এর একজন ছিলেন, তিনি কোরআন ও হাদিস শরীফের কিতাব এবং বুযুর্গানে দ্বীনের কবরসমূহ চুমু দেয়া জায়েয বলেছেন।’’  ৪০২

➥402.টিকাঃ ইবনে হাজার আসকালানী, ফতহুল বারী, ৩/৪৭৫পৃ: হা/১৬১১ এর আলোচনা। 


☞বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম বদরুদ্দীন আইনী (رحمة الله) এ বিষয়ে উল্লেখ করেন-

أَن الإِمَام أَحْمد سُئِلَ عَن تَقْبِيل قبر النَّبِي، صلى الله عَلَيْهِ وَسلم، وتقبيل منبره، فَقَالَ: لَا بَأْس بذلك

-‘‘নিশ্চয় ইমাম আহমদ (رحمة الله) কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল রাসূল (ﷺ)-এর রওজা শরীফ কে এবং মিম্বার শরীফ কে চুমু দেয়াতে কোন অসুবিধা আছে? তিনি বলেন এতে কোন অসুবিধা নেই।’’ (আইনী, উমদাতুল ক্বারী, ৯/২৪১পৃ:) 


☞আহলে হাদিসদের প্রসিদ্ধ ইমাম শাওকানী তার প্রসিদ্ধ গ্রন্থে লিখেন-

وَقَدْ نُقِلَ عَنْ الْإِمَامِ أَحْمَدَ أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ تَقْبِيلِ مِنْبَرِ النَّبِيِّ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - وَتَقْبِيلِ قَبْرِهِ فَلَمْ يَرَ بِهِ بَأْسًا ..... وَنُقِلَ عَنْ ابْنِ أَبِي الصَّيْفِ الْيَمَانِيِّ أَحَدِ عُلَمَاءِ مَكَّةَ مِنْ الشَّافِعِيَّةِ جَوَازُ تَقْبِيلِ الْمُصْحَفِ وَأَجْزَاءِ الْحَدِيثِ وَقُبُورِ الصَّالِحِينَ

-‘‘ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (رحمة الله) সম্পর্কে বর্ণিত আছে, তাকে রাসূল (ﷺ) এর মিম্বার ও তাঁর রওজার শরীফ চুমু দেয়া প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে এতে তিনি অসুবিধার কিছু দেখখেননি। ....আল্লামা ইবনে আবি সাইফ ইয়ামানী (رحمة الله) যিনি শাফেয়ী মাযহাবের মক্কা শরীফের বিখ্যাত ফকিহ এর একজন ছিলেন, তিনি কোরআন ও হাদিস শরীফের কিতাব এবং বুযুর্গানে দ্বীনের কবরসমূহ চুমু দেয়া জায়েয বলেছেন।’’ (শাওকানী, নায়লুল আউতার, ৫/৫১পৃ:) 


☞আহলে হাদিসদের মোবারকপুরী লিখেন-

عن بعض العلماء جواز تقبيل قبره - صلى الله عليه وسلم - ومنيره وقبور الصالحين

-‘‘উলামায়ে কেরাম থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল (ﷺ) এর রওজা, মিম্বার শরীফ এবং সালেহীন (নেককারদের) কবরে চুমু দেওয়া জায়েয। (মোবারকপুরী, মের‘আত, ৯/১২৯পৃ:)


✧ প্রখ্যাত তুশেখ গ্রন্থে আল্লামা জালাল উদ্দীন সূয়ূতী (রহ.) বলেছেন:

استنبط بعض العارفين من تقبيل الحجر الاسواد تقبيل قبور الصالحين

-‘‘হাজর আসওয়াদের চুম্বন থেকে কতেক আরেফীন বুযুর্গানে কিরামের মাযারে চুমু দেয়ার বৈধতা প্রমাণ করেছেন।’’


উপরোক্ত হাদীছে, মুহাদ্দিছীন ও উলামায়ে কিরামের ইবারত থেকে প্রমাণিত হরো যে বুযুর্গানে দ্বীনের হাত, পা, ওনাদের পোশাক, জুতা, চুম মোট কথা সব কিছু পবিত্র বস্তু, অনুরূপ কাবা শরীফ, কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফের পাতা সমূহের উপর চুম্বক জায়েয ও বরকতময়। এমনকি দ্বীনের চুল, পোশাক ও অন্যান্য পবিত্র বস্তুর সম্মান করা এবং যুদ্ধকালীন ও অন্যান্য মুসিবতের সময় এগুলো থেকে সাহায্য লাভ করা কুরআন করীম থেকে প্রমাণিত আছে। 


✧ কুরআন করীম ইরশাদ ফরমান:

وَقَالَ لَهُمْ نَبِيُّهُمْ إِنَّ آيَةَ مُلْكِهِ أَنْ يَأْتِيَكُمُ التَّابُوتُ فِيهِ سَكِينَةٌ مِنْ رَبِّكُمْ وَبَقِيَّةٌ مِمَّا تَرَكَ آلُ مُوسَى وَآلُ هَارُونَ تَحْمِلُهُ الْمَلَائِكَةُ

বনী ইসরাঈলীদের তাদের নবী বলেছেন, তালুতের বাদশাহীর নির্দশন হচ্ছে তোমাদের কাছে সেই তাবুত (সিন্দুক) আসবে যেথায় তোমাদের প্রতিপালকের নিকট হতে চিত্ত প্রশান্তি এবং হযরত মুসা ও হযরত হারুনের পবিত্র বস্তু সমূহ থাকবে; ফিরিশতাগণ এটা বহন করে আনবে।’’  ৪০৩

➥403. তাফসিরে নুরুল ইরফান, সূরা বাক্বারা, আয়াত নং-২৪৮, পৃষ্ঠা-৪৯।


এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তফসীরে খাযেন. রুহুল বয়ান, মদারেক, জালালাইন ও অন্যান্য তফসীরে লিখা হয়েছে যে তাবুত হচ্ছে সীসা ও কাঠের দৈরী সিন্দুক, যেখানে নবীগণের ফটো (এ সব ফটো কোন মানুষের তৈরি ছিল না বরং কুদরতী ছিল) ওনাদের আবাসসমূহের নকশা, হযরত মুসা (عليه السلام) এর লাঠি, তাঁর কাপড়, জুতা এবং হযরত হারুন (عليه السلام) এর লাঠি, টুপি ইত্যাদি ছিল। বনী ঈসরাঈলগণ যখন শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতো, তখন বরকতের জন্য ওটাকে সামনে রাখতো এবং যখন খোদার কাছে দুআ করতো তখন ওটাকে সামনে রেখেই প্রার্থনা করতো। সুতরাং সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে বুযুর্গানে দ্বীনের পবিত্র বস্তু থেকে ফয়েয গ্রহণ এবং ওগুলোকে সম্মান করা নবীগণেরই অনুসৃত পথ। 


✧ তফসীরে খাযেন, মদারেক, রুহুল বয়ান ও কবীরে বার পারার সূরা ইউসূফের আয়াত فلما ذهبوا به এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে যে, যখন হযরত ইয়াকুব (عليه السلام) হযরত ইউসূফ (عليه السلام) কে তার ভাইদের সাথে পাঠালেন, তখন ওর গলায় ইব্রাহীম (عليه السلام) এর কোর্তাকে তাবিজ বানিয়ে ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন, যাতে নিরাপদে থাকে। পৃথিবীর সমস্ত পানি আল্লাহ তাআলা সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু যমযম কূপের পানির সম্মান এ জন্যেই করা হয় যে এটা হযরত ইসমাঈল (عليه السلام) এর পবিত্র পায়ের আঘাতে সৃষ্টি হয়েছে। মকামে ইব্রাহীমের পাথর হযরত ইব্রাহীম (عليه السلام) এর সান্নিধ্যের ফলে এর ইযযত এতটুকু বৃদ্ধি পেয়েছে যে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ ফরমান-

وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى

-তোমরা ইব্রাহীম (عليه السلام) এর দাঁড়াবার স্থানকে নামাযের স্থানরূপে গ্রহণ কর।’’ ৪০৪

➥404. সূূরা বাক্বারা, আয়াত নং-১২৫।


অর্থাৎ সবার মস্তক ওই দিকে নত কর। মক্কা শরীফকে যখন হুযুর (ﷺ) এর সাথে সম্পর্কিত করা হলো, 


✧ তখন আল্লাহ তাআলা এর নামের কসম করে ইরশাদ ফরমান-

لَا أُقْسِمُ بِهَذَا الْبَلَدِ (১) وَأَنْتَ حِلٌّ بِهَذَا الْبَلَدِ

-শপথ করছি এ শহরের (মক্কা শরীফের) আর আপনি এ শহরের অধিবাসী।’’ ৪০৫

➥405. সূূরা বালাদ, আয়াত নং-১-২।


✧ অন্যত্র বলেছেন-

وَهَذَا الْبَلَاَدَ الْاِمْينِ

-এবং এ নিরাপদ শহরের (মক্কা) শপথ।’’


✧ হযরত আয়ুব (عليه السلام) প্রসঙ্গে ইরশাদ ফরমান-

ارْكُضْ بِرِجْلِكَ هَذَا مُغْتَسَلٌ بَارِدٌ وَشَرَابٌ

-তুমি তোমার পা দ্বারা ভূমিকে আঘাত কর। এ-তো গোসলের সুশীতল পানি আর পানীয় ’’ ৪০৬

➥406. সূূরা ছোয়াদ, আয়াত নং-৪২।


অর্থাৎ হযরত আয়ুব (عليه السلام) এর পায়ের আঘাতে যে পানি বের হলো, সেটা রোগ নিরাময়ের সহায়ক হলো। এতে বোঝা গে নবীদের পার ধোয়া পানি মর্যাদাবান ও রোগ নিরাময়ের সহায়ক। 


✧ মিশকাত শরীফের শুরুতে কিতাবুল লেবাসে বর্ণিত আছে যে, হযরত আসমা বিনতে আবু বকর সিদ্দীক (رضي الله عنه) এর কাছে হুযুর (ﷺ) এর আচকান শরীফ ছিল এবং মদীনা শরীফে কারো রোগ হলে, তিনি ওটা ধুয়ে তাকে সেই পানি পান করাতেন।’’ ৪০৭

➥407. 

(১)ইমাম মুসলিম, আস-সহীহ, কিতাবুল লিবাস, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-১৬৪১, হাদিস-২০৬৯।

(২)ইমাম আবু দাউদ, আস-সুনান, কিতাবুল লিবাস, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-৪৯, হাদিস-৪০৫৪।

(৩)ইমাম আহমদ, আল মুসনাদ, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩৪৭, হাদিস-২৬৯৮৭।

(৪)ইমাম বায়হাকী, আস-সুনানুল কোবরা, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৪২৩, হাদিস-৪০১০।

(৫)ইমাম বায়হাকী, শু’য়াবুল ঈমান, খণ্ড-৫, পৃষ্ঠা-১৫১, হাদিস-৬১০৮।

(৬)ইমাম তাবরানী, মু’জামুল কাবীর, খণ্ড-২৪, পৃষ্ঠা-৯৮, হাদিস-২৬৪।

(৭)ইমাম ইবনে সাদ, আত্-তবকাতুল কোবরা, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-৪৫৪।


✧ সেই মিশকাত শরীফের কিতাবুল আতআমার ---------- শীর্ষক অধ্যায়ে উল্লে­খিত আছে যে হুযুর (ﷺ) একদা হযরত কবশা (رضي الله عنه) এর বাসায় তশরীফ নিয়ে গেলেন এবং ওর মোশকে মুখ মুবারক লাগিয়ে পানি পান করেন। তিনি (কবশা) মোশকের মুখটা বরকতের জন্য কেটে রেখে দিয়েছিলেন।’’  ৪০৮

➥408. 

(১)ইমাম ইবনে মাযাহ, আস-সুনান, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-১১৩২, হাদিস-৩৪২৩।

(২)ইমাম তিরমিযি, আল-জামিউস সহীহ, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-৩০৬, হাদিস-১৮৯২।

(৩)ইমাম ইবনে হিব্বান, আস-সহীহ, খণ্ড-১২, পৃষ্ঠা-১৩৮, হাদিস-৫৩১৮।

(৪)ইমাম হুমায়দী, আল-মুসনাদ, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১৭২, হাদিস-৩৫৪।

(৫)ইমাম তাবরানী, মু’জামুল কাবীর, খণ্ড-২৫, পৃষ্ঠা-১৫, হাদিস-৮।


✧ একই মিশকাতের কিতাবুস সালাতের المساجد অধ্যায়ের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে বর্ণিত আছে যে একদল লোক হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের। হাতে ইসলাম গ্রহণ করেন এবং আরয করেন-আমাদের দেশে ইহুদীদের একটি উপসনালয় আছে; আমরা একে ভেঙ্গে মসজিদ করার ইচ্ছে পোষণ করি। তখন হুযুর (ﷺ) একটি থালায় পানি নিয়ে ওখানে কুলি করেন এবং বলেন ওই উপাসনালয়কে ভেঙ্গে ফেল। অতঃপর এ পানি ওখানে ছিটিয়ে দাও। তারপর মসজিদ তৈরী কর।’’  ৪০৯

➥409. খতিব তিবরিযি, মিশকাত, কিতাবুুল মাসাজীদ, ১/২২৩ পৃ: হা/৭১৬, সুনানে নাসাঈ, হা/৭০১, ইমাম নাসাঈ, আস-সুনানুল কোবরা, হা/৭৮২, আলবানী বলেন, হাদিসটি ‘হাসান’।


এতে বোঝা গেল গেল হুযুর (ﷺ) এর পবিত্র থুথু অপবিত্রতা দূরীভূত করেন। 


✧ হযরত খালিদ বিন ওলীদ (রাঃ) স্বীয় টুপীতে হুযুর (ﷺ) এর এর একটি চুল মুবারক রাখতেন এবং যুদ্ধের সময় ওই টুপী নিশ্চয় তার মাথায় থাকতো।৪১০  

➥410. ইমাম কাযি আয়াজ, শিফা শরীফ, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৬১৯, দারুল কুতুব আরাবী, বয়রুত, লেবানন, আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী, উমদাতুল ক্বারী, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-৩৭, দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।


✧ মিশকাত শরীফের الستره অধ্যায়ে বর্ণিত আছে, হুযুর (ﷺ) ওযু ফরমালেন, তখন হযরত বিলাল (رضي الله عنه) হুযুরের ব্যবহৃত ওযুর পানি নিয়ে নিলেন। লোকেরা হযরত বিলালের দিকে দৌড়ে গেলেন এবং যিনি ওই পানিতে হাত ভিজাতে পারলেন, তিনি সে হাত নিজ মুখে মালিশ করে নিলেন। আর যিনি পেলেন না, তিনি অন্যজনের হাতের আদ্রতা নিজ মুখে বুলিয়ে নিলেন। 


এসব হাদীছ থেকে প্রমাণিত হয় যে, বুযুর্গানে দ্বীনের ব্যবহৃত বস্তুসমূহ থেকে বরকত লাভ করা সাহাবা কিরামের সুন্নাত। এবার ফকীহগণের বিভিন্ন উক্তির প্রতি দৃষ্টিপাত করুন। 


✧ ফাতওয়ায়ে আলমগীরী কিতাবুল কারাহিয়া ملاقات الملوك শীর্ষক অধ্যায়ে বর্ণিত আছে-

إنْ قَبَّلَ يَدَ عَالِمٍ أَوْ سُلْطَانٍ عَادِلٍ لِعِلْمِهِ وَعَدْلِهِ لَا بَأْسَ بِهِ هَكَذَا ذَكَرَهُ فِي فَتَاوَى أَهْلِ سَمَرْقَنْدَ

-যদি আলিম বা ন্যায়পরায়ণ বাদশাহের হাতে চুমু দেয়া হয় ওদের ইলম ও ন্যায়পরায়ণতার কারণে, তাহলে এতে কোন ক্ষতি নেই।’’ ৪১১

➥411. নিযামুদ্দীন বলখী, ফাতওয়ায়ে আলমগীরী, ৩/৭৬পৃ:


✧ বিখ্যাত হানাফী ফাতওয়ার কিতাব ‘ফাতওয়ায়ে আলমগীরীতে’  কিতাবুল কারাহিয়াতে زيارة القبور অধ্যায়ে উল্লে­খিত আছে-

وَلَا بَأْسَ بِتَقْبِيلِ قَبْرِ وَالِدَيْهِ كَذَا فِي الْغَرَائِبِ.

-নিজের মা-বাপের কবরে চুমু দেয়ার কোন ক্ষতি নেই যেমন গরায়েবে বর্ণিত হয়েছে।’’  ৪১২

➥412. নিযামুদ্দীন বলখী, ফাতওয়ায়ে আলমগীরী, ৫/৩৫১পৃ: 


✧ সেই আলমগীরীর কিতাবুল কারাহিয়াতের ملاقات الملوك অধ্যায়ে আরও লিপিবদ্ধ আছে-

ذَكَرَ أَبُو اللَّيْثِ - رَحِمَهُ اللَّهُ تَعَالَى - أَنَّ التَّقْبِيلَ عَلَى خَمْسَةِ أَوْجُهٍ قُبْلَةُ الرَّحْمَةِ كَقُبْلَةِ الْوَالِدِ وَلَدَهُ وَقُبْلَةُ التَّحِيَّةِ كَقُبْلَةِ الْمُؤْمِنِينَ بَعْضِهِمْ لِبَعْضٍ وَقُبْلَةُ الشَّفَقَةِ كَقُبْلَةِ الْوَلَدِ وَالِدَيْهِ وَقُبْلَةُ الْمَوَدَّةِ كَقُبْلَةِ الرَّجُلِ أَخَاهُ عَلَى الْجَبْهَةِ وَقُبْلَةُ الشَّهْوَةِ كَقُبْلَةِ الرَّجُلِ امْرَأَتَهُ أَوْ أَمَتَهُ وَزَادَ بَعْضُهُمْ قُبْلَةَ الدِّيَانَةِ وَهِيَ قُبْلَةُ الْحَجَرِ الْأَسْوَدِ كَذَا فِي التَّبْيِينِ.

চুম্বন পাঁচ প্রকার আশীর্বাদসূচক চুম্বন, যেমন বাবা ছেলেকে চুমু দেয়; সাক্ষাৎকারের চুম্বন, যেমন কতেক মুসলমনান কতেক মুসলমানকে চুমু দেয়; স্নেহের চুম্বন, যেমন ছেলে মা-বাপকে দেয়; বন্ধুত্বের চুম্বন, যেমন এক বন্ধু অপর বন্ধুকে চুমু দেয়; কামভাবের চুম্বন, যেমন স্বামী স্ত্রীকে দেয়। কেউ কেউ ধার্মিকতার চুম্বন অর্থাৎ হাজর আসওয়াদের চুম্বনকে এর সাথে যোগ করেছেন।’’ ৪১৩

➥413. মোল্লা নিযামুদ্দীন বলখী, ফাতওয়ায়ে হিন্দীয়া, খণ্ড-৫, পৃষ্ঠা-৩৬৯, ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩৮৪।


✧ দুর্রুল মুখতারের পঞ্চম খণ্ড কিতাবুল কারাহিয়াতের শেষ অধ্যায় الاستبراء এর মুসাফাহা পরিচ্ছেদে বর্ণিত আছে- 

(وَلَا بَأْسَ بِتَقْبِيلِ يَدِ) الرَّجُلِ (الْعَالِمِ)........ (السُّلْطَانِ الْعَادِلِ)

আলিম ও ন্যায়পরায়ণ বাদশাহের হাতে চুমু দেয়ার কোন ক্ষতি নেই।’’  ৪১৪

➥414. ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩৮৩।


✧ এ জায়গায় ফাতওয়ায়ে শামীতে হাকিমের একটি হাদীছ উদ্ধৃত করেছে, যার শেষাংশে বর্ণিত আছে-

قَالَ: ثُمَّ أَذِنَ لَهُ فَقَبَّلَ رَأْسَهُ وَرِجْلَيْهِ وَقَالَ لَوْ كُنْت آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِأَحَدٍ لَأَمَرْت الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَاগ্ধ : وَقَالَ صَحِيحُ الْإِسْنَادِ

-হুযর (ﷺ) সেই ব্যক্তিকে অনুমতি দিয়েছেন। তাই সে তাঁর মস্তক ও পা মুবারক চুম দিলেন। অতঃপর হুযুর (ﷺ) ইরশাদ ফরমান যদি আমি কাউকে সিজদার হুকুম দিতাম, তাহলে স্ত্রীকে হুকুম দিতাম স্বামীকে সিজদা করতে।’’  ৪১৫

➥415. ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩৮৩।


✧ দুর্রুল মুখতারে সেই জায়গায় আলমগীরীর মত পাঁচ প্রকার চুম্বনের বর্ণনা দিয়েছেন। তবে নিম্নলিখিত বক্তব্যটুকু বর্ধিত করেছেন-

قُبْلَةُ الدِّيَانَةِ لِلْحَجَرِ الْأَسْوَدِ ...... تَقْبِيلُ الْمُصْحَفِ قِيلَ بِدْعَةٌ لَكِنْ رُوِيَ عَنْ عُمَرَ - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ - أَنَّهُ كَانَ يَأْخُذُ الْمُصْحَفَ كُلَّ غَدَاةٍ وَيُقَبِّلُهُ ..... وَأَمَّا تَقْبِيلُ الْخُبْزِ فَحَرَّرَ الشَّافِعِيَّةُ أَنَّهُ بِدْعَةٌ مُبَاحَةٌ وَقِيلَ حَسَنَةٌ

অর্থাৎ দ্বীনদারীর এক প্রকার চুম্বন রয়েছে, সেটা হচ্ছে হাজর আসওয়াদে চুম্বন ও কাবা শরীফের চৌকাঠে চুম্বন। কুরআন পাককে চুমু দেয়াটা কতেক লোক বিদআত বলেছেন। কিন্তু হযরত উমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি প্রতিদি সকালে কুরআনে পাক হাতে নিয়ে চুমু খেতেন এবং রুটি চুমু দেয়াকে শাফেঈ মযহাবের লোকেরা জায়েয বলেছেন। কেননা এটা বিদআতে জায়েয। অনেকে এটাকে বিদআতে হাসনা বলেছেন।’’  ৪১৬

➥416. ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩৮৪।


✧ অধিকন্তু আল্লাহ তাআলা ইরশাদ ফরমান-

وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى

-তোমরা মকামে ইব্রাহীমকে নামাযের স্থানরূপে গ্রহণ কর) ’’ ৪১৭

➥417. সূরা বাক্বারা, আয়াত নং-১২৫


মকামে ইব্রাহীম ওই পাথরকে বলা হয় যেটার উপর দাঁড়িয়ে হযরত খলীল (عليه السلام) কাবা শরীফ তৈরী করেছেন। তার পবিত্র কদমের বরকতে সেই পাথরের এ মর্যাদা লাভ হলো- সারা দুনিয়ার হাজীরা ওই দিকে মাথা নত করে। এ সব ইবারত থেকে প্রতীয়মান হলো-চুম্বন কয়েক প্রকারের আছে এবং পবিত্র বস্তুকে চুমু দেয়াটা দ্বীনদারীর আমানত। এ পযর্ন্ত সমর্থনকারীদের উক্তি সমূহ উল্লে­খিত হলো। এবার বিরোধিতাকারীদের নেতা জনাব মওলবী রশীদ আহমদ গাঙ্গুলী কি বলেন, দেখুন। তিনি তার রচিত ফতওয়ায়ে রশীদিয়ার প্রথম খণ্ড كتاب الخطر والاباحة এর ৫৪ পৃষ্ঠায় বলেছেন- দ্বীনদার ব্যক্তির সম্মানে দাঁড়ানো জায়েয এবং এ রকম ব্যক্তির পায়ে চুমু দেয়াও জায়েয, যা হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত।’’ ইতি রশীদ আহমদ।

এ প্রসঙ্গে আরও অনেক হাদীছ ও ফকীহ ইবারতে পেশ করা যায়। কিন্তু এতটুকুই যথেষ্ট মনে করি।

Top