পর্দার বিধান
পর্দাকে আরবিতে ‘হিজাব’ বলা হয়। ‘হিজাব’ ও ‘সতর’ এক জিনিস নয়। সতর নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য ফরয। পক্ষান্তরে ‘হিজাব’ শুধু মহিলাদের জন্য খাস। মহিলাদেরকে আরবিতে ‘আওরাত’ বলা হয়। আরবিতে ‘আওরাত’ ঢেকে রাখার, গোপন করার বস্তুকে বুঝায়- যা প্রকাশে লজ্জা অনুভূত হয়। মহিলাদের আপাদমস্তকই ঢেকে রাখার বস্তু। সুতরাং নারী মুখমণ্ডল, হাতের কব্জি ও পায়ের পাতা সতরের অর্ন্তভুক্ত না হলেও ওইসব অঙ্গ পর্দার অন্তর্ভুক্ত।
কুরআন হাদিসের আলোকে পর্দাকে তিন স্তরে ভাগ করা যায়। যথা-
১. মুখমণ্ডল ও হাতের কব্জি ব্যতিত মহিলাদের পুরো শরীরই পর্দার আওতাভূক্ত। এটা হচ্ছে পর্দার সর্বনিম্ন স্তর। এটা মূলত মহিলাদের জন্য সতরও।
২. মুখমণ্ডল ও হাত-পা সর্বাঙ্গ বোরকা দ্বারা আবৃত রাখা। এটা হচ্ছে পর্দার মাধ্যমিক স্তর।
৩. ঘরের অভ্যন্তরে অবস্থান করা এবং খুব প্রয়োজন না হলে ঘরের বাইরে বের না হওয়া। এটা হচ্ছে পর্দার সর্বোচ্চ স্তর।
প্রথম স্তর সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে-
وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَى عَوْرَاتِ النِّسَاءِ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
হে নবী! মু’মিন নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে ও তাদের লজ্জাস্থানকে সংরক্ষণ করে। তারা যেন সাধারণত প্রকাশমান অঙ্গ ব্যতিত তাদের আবরণ প্রদর্শন না করে, তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ যেন মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে, তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুষ্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, আপন নারীগণ, তাদের মালিকানাধীন দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনাহীন পুরুষ এবং নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ব্যতিত কারো নিকট তাদের আবরণ প্রকাশনা করে, তারা যেন তাদের গোপন আবরণ প্রকাশের উদ্দেশ্যে সজোরে পদক্ষেপ না করে।হে মু’মিনগণ! তোমরা সকলে আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। ২০১
২০১.সূরা নূর, আয়াত: ৩১