عقائد صحابہ

আকাইদে সাহাবাহ

(সাহাবায়ে কিরামদের সাথে সুন্নি আক্বিদার সাদৃশ্য)


মূল

আল্লামা আবুল হামিদ মুহাম্মদ যিয়াউল্লাহ 

ক্বাদেরী আশরাফী (رحمة الله)


প্রকাশনায়

সাকলাইন প্রকাশন 

 

عقائد صحابہ

আকাইদে সাহাবাহ

(সাহাবায়ে কিরামদের সাথে সুন্নি আক্বিদার সাদৃশ্য)

মূল: আল্লামা আবুল হামিদ যিয়াউল্লাহ ক্বাদেরী আশরাফী (رحمة الله)।

সিয়ালকোট, পাকিস্তান।


বঙ্গানুবাদ: মাওলানা হাফেয মুহাম্মদ আতিকুর রহমান

শিক্ষার্থী, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া কামিল মাদরাসা।

বি এ অনার্স (ইসলামিক স্টাডিজ) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ৪র্থ বর্ষ।

সার্বিক তত্ত্বাবধানে: মাওলানা মুহাম্মদ সাইফুর রহমান নোমানী

খতিব, রমজান আলী চৌধুরী জামে মসজিদ, বড় কবরস্থান, বাকলিয়া, চট্টগ্রাম।


সম্পাদনায়:

মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ আলাউদ্দিন জিহাদী, ঢাকা।

মাওলানা মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ বাহাদুর


টেক্সট রেডীঃ 

মাসুম বিল্লাহ সানি, সিরাজুম মুনির তানভির।


পৃষ্ঠপোষকতায়: মাওলানা মুফতি জহিরুল ইসলাম ফরিদী

প্রতিষ্ঠাতা ও মহাপরিচালক, মাদানীয়া ওয়াইছিয়া দারুচ্ছুন্নাহ মাদরাসা, ঢাকা।

গ্রন্থস্বত্ব: প্রকাশক কৃর্তক সংরক্ষিত।

শুভেচ্ছা হাদিয়া: ২৪০/=


প্রকাশনায়:

সাকলাইন প্রকাশন, বাংলাদেশ।

০১৭২৩-৯৩৩৩৯৬


প্রথম প্রকাশ: ৩০ শে জানুয়ারী, ২০১৮ ইং।


যোগাযোগ: দেশ-বিদেশের যে কোন স্থানে বিভিন্ন সার্ভিসের মাধ্যমে কিতাবটি সংগ্রহ করতে যোগাযোগ - মোবাইল: ০১৮৪২-৯৩৩৩৯৬ , ০১৭২৩-৯৩৩৩৯৬






مَوْلَايَ صَلِّ وَسَلِّمْ دَائِمًا أَبَدًا

عَلىٰ حَبِيْبِكَ خَيْرِ الْخَلْقِ كُلِّهِم

مُحَمَّدٌ سَيِّدُ الْكَوْنَيْنِ وَالثَّقَلَيْنِ

وَالْفَرِيْقَيْنِ مِنْ عُرْبٍ وَّمِنْ عَجَمِ



صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَعَلٰى آلِه وَصَحْبِه وَبَارِكْ وَسَلَّمَ



সূচিপত্র


প্রকাশকের কথা/১২

এ কিতাব লিখার সম্পর্ক/১৭

মুখবন্ধ/১৮

লেখকের কথা/২১

১.    সায়্যিদুনা হযরত সিদ্দীকে আকবর (رضي الله عنه)’র আক্বিদা

ক. জমিন কর্তৃক সুরাকার ঘোড়া গ্রাসকরণ/২৪

খ. রাসূল (ﷺ)-এর ইলমে গায়বের মাধ্যমে ইসলাম গ্রহণ/২৫

গ. পিতা-মাতার ওফাতের পরেও সন্তানের কর্তব্য/২৭

ঘ. রাসূল (ﷺ)-এর নামের তা‘যিম/২৮


২.    আমিরুল মুমিনীন সায়্যিদিনা ফারুকে আ‘যম (رضي الله عنه)‘র আক্বিদা

ক. খাবারে বারকাতের জন্য দোয়া/৩০

খ. পৃথিবী সৃষ্টির সূচনা থেকে জান্নাত গমন পর্যন্ত সংবাদ দেয়া/৩২

গ. হযরত ওয়াইস ক্বারনি (رضي الله عنه) কে সনাক্তকরণ/৩৩

ঘ. বহু দূরের বস্তু অবলোকন এবং সাহায্য করা/৩৫

ঙ. সবচেয়ে বড় মুফাস্সির/৩৬


৩.    হযরত ‘ওসমান যিন্নূরাইন (رضي الله عنه) এর আক্বিদা

ক. শাফায়াত করার অধিকার যারা পাবেন/৩৭

খ. ইসলামে ঈদ শুধু দুটিতেই সীমাবদ্ধ নয়/৩৭

গ. উম্মতে মুহাম্মাদীর মর্যাদা/৩৮

ঘ. জানাযা নামায এবং তার তাকবীরের সঠিক সংখ্যা/৩৯

ঙ. পূণ্য কর্ম দ্বারা গুণাহ মিটিয়ে দেয়া/৩৯

চ. দাফনের পরে দোয়া এবং ঈসালে সাওয়াবের বৈধতা/৪০


৪.    আমিরুল মু‘মিনীন হযরত শেরে খোদা ‘আলী (رضي الله عنه) এর আক্বিদা

ক. হাফেযে কুরআনের সুপারিশ/৪২

খ. শবে বরাতের নামায ও রোযা/৪৩

গ. শরীয়ত প্রণেতা এবং উম্মতের দরদি/৪৪

ঘ. জানাযার নামাযের পর দোয়া করা/৪৪

ঙ. গায়বি সংবাদের মাধ্যমে মুনাফিক মহিলার পরিচয় প্রদান/৪৫


৫.    হযরত সিদ্দীকে আকবর, ফারুকে আযম, ‘ওসমান যুনূরাইন (رضي الله عنه)‘র আক্বিদা:

ক. পর্বতমালায় রাজত্ব ও অদৃশ্য জ্ঞান/৪৬

খ. সফরের উদ্দেশ্যে মাজার যিয়ারতের বৈধতা/৪৭


৬.    হযরত ‘আব্দুল্লাহ্ ইব্ন আব্বাস (رضي الله عنه) এর আক্বিদা:

ক. দান ও বদান্যতা/৪৯

খ. দানশীলতা ও অনুদান/৫০

গ. বিকৃত মস্তিস্ক শিশু/৫০

ঘ. বৃক্ষগুচ্ছ কর্তৃক নবীজিরা হুকুম মান্যকরণ/৫১

ঙ. দন্ত মোবারাকে দীপ্তের হাতছানি/৫২

চ. নামাযান্তে  উঁচুস্বরে জিকির/৫৩

ছ. বেহেশ্তি রমণী/৫৪

জ. আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত একমাত্র নাজাত প্রাপ্ত দল/৫৪

ঝ. রাসূল (ﷺ)‘র আগমনের দিনকে কেন্দ্র করে ঈদ উদ্যাপন/৫৬

ঞ. কোরআন সুন্নাহের বাহিরেও মুজতাহিদদের মানা/৫৭

ট. আল্লাহর নৈকট্যশীল বান্দা ওলীরা তাদের স্বীয় মাজারে জীবিত/৫৮

ঠ. মি‘রাজে আল্লাহর দিদার/৫৯

ড. ১২ই রবিউল আউয়াল রাসূল (ﷺ)-এর শুভাগমন/৬১


৭.    সায়্যিদুনা হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه)’র আক্বিদা:

ক. সাহাবায়ে কিরাম এর উত্তম চরিত্র এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির সংবাদ প্রদান করা/৬২

খ. পোষাক পরিধান করা অবস্থায় বিবস্ত্র/৬৩

গ. উপমাহীন নবী (ﷺ)/৬৪

ঘ. গুপ্ত ধনভান্ডারের মালিক/৬৫

ঙ. সবার উর্ধ্বে/৬৬

চ. নাবীগণের ইখতিয়ার/৬৭

ছ. খায়বার বিজয়ী/৬৮

জ. পাহাড়ের উপর শাসন এবং রাসূল (ﷺ)’র ইল্ম/৬৯

ঝ. দূর এবং কাছ থেকে শুনা/৬৯

ঞ. নেকড়ে বাঘ কর্তৃক বলা যে, নবী (ﷺ)’র নিকট অতীত-ভবিষ্যতের জ্ঞান রয়েছে/৭০

ট. শয়তানের ওযীফা বলে দেয়া/৭২

ঠ. স্মরণশক্তি দান করা/৭৪

ড. নেক আমল দ্বারা গুনাহ মাফ হওয়া/৭৫

ঢ. আল্লাহর ওলীদের স্থান/৭৫

ণ. আল্লাহর ওয়ালীদের “হ্যাঁ” সূচক বা বাস্তবিক মক্বাম/৭৬

ত. রাসূল (ﷺ) সর্বপ্রথম সৃষ্টি এবং শাফা‘আতকারী/৭৭


৮.    সায়্যিদুনা হযরত আনাস ইবনু মালিক (رضي الله عنه)‘র আক্বিদা:

ক. নবীয়ে পাক (ﷺ)’র প্রিয় বস্তুকে ভালবাসা/৭৮

খ. আঙ্গুলের মধ্যে ফায়েজ/৭৯

গ. তারকারাজীর সংখ্যার জ্ঞান/৮০

ঘ. ঘোড়ার তেজকে ধীরগতি করণ/৮১

ঙ. হাত মোবারাক থেকে বারকাত অর্জন করা/৮২

চ. চুল মোবারক এবং সাহাবায়ে কিরাম (رضي الله عنه)’র আক্বিদা/৮২

ছ. হযরত আনাস (رضي الله عنه)’র অসিয়ত/৮৪

জ. হাজাত রাওয়া রাসূল (ﷺ)/৮৫

ঝ. পবিত্র শরীর মোবারক থেকে সুগন্ধি/৮৬

ঞ. ঘাম মুবারক থেকে বারকাত হাসিল/৮৭

ট. যেটি চাও জিজ্ঞাসা করো/৮৯

ঠ. সমস্ত নাবীগণ জীবিত এবং রাসূল (ﷺ)’র ইল্ম/৯০

ড. নাবী পাক (ﷺ)’র দো‘আর বারকত/৯১

ঢ. যে যাকে ভালবাসে সে তার সাথে থাকবে/৯২

ণ. রাসূল (ﷺ)-এর দৃষ্টি শক্তির পরিসীমা/৯৩

ত. প্রত্যেক কবরে নবীজির উপস্থিতি/৯৪

থ. প্রকাশ্যে গায়বী সংবাদ দেয়ার ঘোষণা/৯৫


৯.    সায়্যিদুনা জাবির বিন ‘আব্দুল্লাহ (رضي الله عنه)’র আক্বিদা

ক. খানার উপর দো‘আ চাওয়া এবং খানার মধ্যে বারকত/৯৬

খ. উপকারি মনে করা এবং ফুঁ দেওয়া/৯৮

গ. উপমাহীন নাবী (ﷺ)/১০০

ঘ. ঘি ভর্তি পাত্র/১০১

ঞ. অসহায়ের আশ্রয়গার/১০১

চ. কাউকে ‘না’ না বলা/১০২

ছ. ছাগলের গোশ্ত কথা বলা/১০৩

জ. প্রবল ঝড় দেখে মুনাফিকের মৃত্যুর সংবাদ দেয়া/১০৪


১০.    সায়্যিদুনা আবূ মূসা আশ‘আরী (رضي الله عنه)’র আক্বিদা

ক. যা চাও জিজ্ঞাসা করো/১০৫

খ. উম্মাতের পরকালের ইল্ম/১০৬

গ. জানাযা পরেও দোয়া করা যায়/(رضي الله عنه)


১১.    সায়্যিদুনা আব্দুল্লাহ ইবনু উমর (رضي الله عنه)’র আক্বিদা:

ক. কিয়ামত দিবসে উম্মতগণ কবর থেকে উঠার ধরণ/১০৮

খ. নাজ্দ থেকে শয়তানের দল বের হবে/১১০

গ. বদ আক্বীদা সম্পন্ন রোগীর সেবা এবং মারা গেলে জানাজা না পড়া/১১২

ঘ. বিদআতীদের সালাম না দেয়া/১১৩

ঙ. সমগ্র দুনিয়া হাতের তালুতে/১১৪

চ. জানাযা শেষ হতে দেখলে যা করণীয়/১১৫

ছ. রাসূল (ﷺ)-এর রওজা যিয়ারতকারীর ফযিলত/১১৬


১২.    সায়্যিদুনা আব্দুল্লাহ ইবনু মাস‘উদ (رضي الله عنه)‘র আক্বিদা

ক. কিয়ামত পর্যন্তের অবস্থা জানা এবং দেখা/১১৭

খ. প্রত্যেক উম্মতের ভাল মন্দ দেখা/১১৮

গ. একমাত্র হযরত আদম (عليه السلام) ব্যতিত কেহই মাটির সৃষ্টি নয়/১১৯

ঘ. লাশ দাফনের পরে দু’হাত তুলে মোনাজাত/১২০


১৩.    সায়্যিদুনা আবূ যার গিফারী (رضي الله عنه)‘র আক্বিদা

ক. সমস্ত জাহান থেকে উত্তম ও মর্যাদাবান/১২১

খ. মিশর বিজয়ের সংবাদ/১২৩

গ. উম্মাতের আমাল হুযূর (ﷺ)’র সামনে পেশ করা হয়/১২৩

ঘ. কিয়ামত পর্যন্ত যা হবে সব বলে দেয়া/১২৪

ঙ. রাসূল (ﷺ) এমন কিছু দেখতেন, শুনতেন যা সাহাবায়ে কিরাম দেখেননি এবং শুনেনি/১২৪


১৪.    সায়্যিদুনা আবূ সাঈদ খুদরী (رضي الله عنه)‘র আক্বিদা

রাসূলে মুখতার (ﷺ)/১২৫

একশ ব্যক্তির হত্যাকারী এবং তাকে ক্ষমা করা/১২৬

গোস্তাখে রাসূূলের বংশধরের আলামত/১২৭

শপথ করে অদৃৃশ্যের সংবাদ দেয়া/১২৯

কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু হবে তার সংবাদ পরিবেশন/১২৯


১৫.    সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর (رضي الله عنه)‘র আক্বিদা:

ক. নামাযের পর উচ্চ স্বরে জিকির করা/১৩১

খ. ফরজ নামাযের পর দো‘আয় মশগুল হওয়া/১৩২

গ. নামাযে তাশাহুদে শুধু একবারেই আঙুল ইশারা করা/১৩৩


১৬.    সায়্যিদুনা আবদুর রাহমান বিন আবূ বকর সিদ্দিক (رضي الله عنه)‘র আক্বিদা:

ক. একটি কলিজা এবং একশ ত্রিশজন সাহাবী (رضي الله عنه)/১৩৪

খ. খাবারে বারকত/১৩৫


১৭.    সায়্যিদুনা মু‘আয ইবনে জাবাল (رضي الله عنه)‘র আক্বিদা:

ক. ঝর্ণার পানি বাগিচাগুলোকে সিক্ত করবে /১৩৭

খ. মুজতাহিদদের ইজতিহাদ মান্য করা/১৩৮


১৮.    সায়্যিদুনা ওসমান বিন হানিফ (رضي الله عنه)’র আক্বিদা:

রাসূল (ﷺ)’র দো‘আ/১৩৯


১৯.    সায়্যিদুনা ওয়াসিলাহ বিন আসকাহ (رضي الله عنه)’র আক্বিদা:

পৃথিবীর মধ্যে সর্বোত্তম/১৪১


২০.    সায়্যিদুনা সা’দ বিন ‘উবাদাহ (رضي الله عنه)’র আক্বিদা:

কোন বস্তুকে কোন ব্যক্তির দিকে সম্পর্ক করা/ ১৪২


২১.    সায়্যিদুনা সালিম (رضي الله عنه)’র আক্বিদা:

হাজত পূর্ণকারী এবং মুসিবত দূরকারী/১৪৩


২২.    সায়্যিদুনা আবু আইয়ুব (رضي الله عنه)’র আক্বিদা:

ক. কবরের আযাবের আওয়াজ শ্রবণ করা/১৪৩

খ. সাহায্যকারী/১৪৪


২৩.    সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ বিন আমর বিন আস (رضي الله عنه)‘র আক্বিদা:

মূর্খ ইমাম/১৪৪


২৪.    সায়্যিদুনা সাফওয়ান বিন আচ্ছাল (رضي الله عنه)‘র আক্বিদা:

হাত এবং পায়ে চুম্বন দেয়া/১৪৫


২৫.    সায়্যিদুনা জাবির বিন সামুরা (رضي الله عنه)‘র আক্বিদা:

নবুয়ত প্রকাশের পূর্বে পাথরের সালাম করা/১৪৬

হাত মুবারক/১৪৭


২৬.    সায়্যিদুনা ছাওবান (رضي الله عنه)’র আক্বিদা:

ত্রিশ দাজ্জাল/১৪৮

দুনিয়ার পূর্ব থেকে পশ্চিম সবই চোখের সামনে/১৪৯


২৭.    সায়্যিদুনা যুবাইর বিন মুত‘ঈম (رضي الله عنه)’র আক্বিদা:

প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (ﷺ) বড় শানদার/১৫০


২৮.    সায়্যিদুনা মুগাফ্ফাল রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর আক্বিদা:

বদ আক্বিদা পোষণকারীর সাথে মেলামেশা বর্জন করা/১৫১

    

২৯-৩১.সায়্যিদুনা আনাস, সায়্যিদুনা আবু তালহা, সায়্যিদুনা উম্মু সালামা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমের আক্বিদা:

খাবার সামনে রেখে তিলাওয়াত করা, প্রার্থনা করা এবং তার মধ্যে বারকাত হওয়া/১৫৩

   

৩২. সায়্যিদুনা বারা ইবনে আযিব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর আক্বিদা:

কুলির পানির বরকত/১৫৫

  

৩৩-৩৪. সায়্যিদুনা বারা ইবনে আযিব এবং সায়্যিদুনা আবু বুরদাহ বিন নায়্যার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমার আক্বিদা:

মুখতার নাবী (ﷺ)/১৫৬


৩৫. সায়্যিদুনা সাল্মাহ বিন আকওয়া (رضي الله عنه)‘র  আক্বিদা:

খায়বার কে বিজয় করবে?/১৫৭

পায়ের গোড়ালীর মধ্যে ফুঁৎকার দেয়ার মাধ্যমে আরোগ্য লাভ/১৫৮


৩৬. সায়্যিদুনা যারি‘ঈ ইবনে আমের ইবনে কায়েস (رضي الله عنه)‘র আক্বিদা:

হাত ও পা চুম্বন করা/১৫৯


৩৭. সায়্যিদুনা ইমরান বিন হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর আক্বিদা:

অদৃশ্যের সংবাদ দান/১৫৯


৩৮. সায়্যিদুনা ইবনে আ’ইয রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর আক্বিদা:

আক্বীদার বিশুদ্ধতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ/১৬০


৩৯. সায়্যিদুনা জারির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর আক্বিদা:

অসহায়ের আশ্রয়স্থল/১৬১


৪০. সায়্যিদুনা ইয়া‘লা বিন মাররাহ সাকাফী (رضي الله عنه)‘র আক্বিদা:

রাসূল (ﷺ)’র দরবারে উটের প্রার্থনা/১৬২


৪১. সায়্যিদুনা আবূ হুমাইদ সা’আদী (رضي الله عنه)‘র আক্বিদা:

রাতে ঘন অন্ধকার আসবে/১৬৪


৪২. সায়্যিদুনা রাবি‘আ বিন কা‘ব (رضي الله عنه)‘র আক্বিদা:

জান্নাত দান করা/১৬৫


৪৩. সায়্যিদুনা সা‘দ বিন আবি ওয়াক্কাস (رضي الله عنه)‘র আক্বিদা:

মুখের থুথু মুবারাক আরোগ্য দানকারী এবং তাঁর ইলমে গায়ব/১৬৬


৪৪-৪৫. সায়্যিদুনা যায়দ বিন আরকাম, সায়্যিদুনা আনিসা রাদ্বিয়াল্লাহুমা এর আক্বিদা:

উম্মাতগণের কাছে ভবিষ্যতে যেসব ঘটনা আসবে তার সংবাদ দেয়া/১৬৭


৪৬. সায়্যিদুনা আবূ র্যারাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর আক্বিদা:

সৃষ্টি জগত থেকে উপকার অর্জন করা/১৬৮


৪৭. সায়্যিদুনা উকবাহ বিন আমির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর আক্বিদা:

রাসূল (ﷺ)’র পর্যবেক্ষণ নির্বাচিতকরণ এবং রাসূল (ﷺ)’র ইলম/১৬৯


৪৮. সায়্যিদুনা হযরত হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান (رضي الله عنه)‘র আক্বিদা:

ক. কিয়ামত পর্যন্ত প্রতিটি ফিতনার সংবাদ/১৭১

খ. কিয়ামত পর্যন্ত প্রতিটি ঘটনার সংবাদ/১৭২


৪৯. সায়্যিদুনা আবূ হুযায়ফা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর আক্বিদা:

ক. ওজুর পানি সাহাবায়ে কেরামগণ (رضي الله عنه)’র শরীরে মালিশ করা/১৭২

খ. অতুলনীয় হাত/১৭৩


৫০. সায়্যিদুনা সাহ্ল বিন সাদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর আক্বিদা:

ক. থুথু মুবারক/১৭৪

খ. নামায অবস্থায় সাহাবায়ে কিরাম (رضي الله عنه)’র মনে রাসূল (ﷺ)’র তা’যিম খেয়াল আসা /১৭৫


৫১. সায়্যিদুনা ‘ওরওয়াহ বিন মাস‘উদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর আক্বিদা:

রাসূল (ﷺ) শ্লেষ্মা মুবারাক সাহাবায়ে কিরাম (رضي الله عنه)-এর মুখে ও শরীরে মালিশ করা/১৭৭


৫২. সায়্যিদুনা সা‘দ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর আক্বিদা:

নামাযে রাসূল (ﷺ)-এর চেহারা মুবারাকের দিকে তাকিয়ে থাকা/১৭৯


৫৩. সায়্যিদুনা আব্দুল্লাহ বিন মালেক বিন বুহাইনা (رضي الله عنه)‘র আক্বিদা:

নূরাণী বগল মুবারাক/১৭৯


৫৪. ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন বিলাল (رضي الله عنه)-এর আক্বিদা:

দূর থেকে সফর করে রওজা যিয়ারত/১৮০

সরাসরি কবরের আওয়াজের শব্দ শুনা/১৮১


৫৫. হযরত আবু দারদা (رضي الله عنه)-এর আক্বিদা:

দরূদ পাঠকারীর আওয়াজ শুনা/১৮২

সমস্ত নবীরা তাদের নিজ নিজ মাযারে জীবিত এবং রিযিকপ্রাপ্ত হন/১৮৩


দ্বিতীয় অধ্যায়

উম্মুহাতুল মু’মিনীন এবং মহিলা সাহাবীগণ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুন্নার আক্বিদা:


৫৬. হযরত ফাতেমাতুজ্জুহরা (رضي الله عنه)-এর আক্বিদা:

নির্দিষ্ট দিনে, নির্দিষ্ট মাজার যিয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর/১৮৪


৫৭. উম্মুল মু’মিনীন সায়্যিদাতুনা আয়িশা (رضي الله عنه)-এর আক্বিদা:

ক. আল্লাহর নামে জবেহ করার সময় যার সাওয়াব করা উদ্দেশ্য তার নাম নেয়ার বৈধতা/১৮৫

খ. ইখতিয়ার সমূহ/১৮৫

গ. নাবুয়তের দৃষ্টি/১৮৬

ঘ. উম্মাতের মৃত্যুর ইল্ম/১৮৬

ঙ. ওফাতের ইল্ম/১৮৭

চ. গোস্তাখানে রাসূলকে বর্জন করা/১৮৮

ছ. তারকাসমূহের সংখ্যা বরাবর নেকী/১৮৮

জ. বারকতের জন্য নবজাতককে বুযুুর্গদের নিকট নিয়ে যাওয়া/১৮৯

ঝ. নামাযে নবী (ﷺ)-এর খেয়াল এবং তা’যিম/১৯০

ঞ. রাসূল (ﷺ)-এর ইখতিয়ার/১৯১

ট. নবী ও ওলীরা তাদের মাযারে জীবিত/১৯২


৫৮. উম্মুল মু’মিনীন সায়্যিদাতুনা উম্মু সালামা (رضي الله عنه)‘র আক্বিদা:

ক. চুল মুবারাকের বারকত/১৯৩

খ. কারবালার অবস্থা অবলোকন এবং সেখানে উপস্থিত হওয়া/১৯৪


৫৯. উম্মুল মু’মিনীন সায়্যিদাতুনা মায়মূনা (رضي الله عنه)‘র আক্বিদা:

ক. নূরাণী বগলের শুভ্রতা/১৯৬

খ. দূরের অসহায় ব্যক্তির আওয়াজ শুনা এবং তাকে সাহায্য করা/১৯৬


৬০. সায়্যিদাতুনা আসমা বিনতু আবি বকর (رضي الله عنه)‘র আক্বিদা:

ক. জুব্বা মুবারক রোগদূরীভূতকারী/১৯৭

খ. রাসূল (ﷺ)-এর চোখ মোবারকের ক্ষমতা/১৯৮


৬১. সায়্যিদাতুনা উম্মু সুলাইম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহার আক্বিদা:

হযরত আনাস (رضي الله عنه)-এর জন্য দো‘আ/১৯৯


৬২. সায়্যিদাতুনা উম্মু জুনদুব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহার আক্বিদা:

মূর্খ ও উম্মাদ শিশুর আরোগ্য লাভ/২০০

প্রমাণপঞ্জী/২০২




প্রকাশকের কথা


মহান আল্লাহ তা’য়ালার দরবারে শুকরিয়া ও সিজদা আদায়ের পর দরুদ ও সালামের অগণীত নাযরানা পেশ করছি মানবতার মুক্তির একমাত্র দূত হুযূর নাবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার বরকতময় চরণযুগলে। অতিব ভক্তি ও ভালোবাসার সাথে স্বরণ করি সেসব মহাত্মা সাহাবায়ে কিরাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমদের যাঁদের প্রতিটি আকায়িদ ও আমাল আমাদের জন্যে মুক্তির পাথেয়।

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! সর্বপ্রথম ঈমান-আক্বিদা বিষয়ক জ্ঞান শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরযে আইন। অতঃপর দ্বীনের অন্যান্য জরুরী জ্ঞান শিক্ষা করা ফরয। মানুষ কতিপয় বিশ্বাসকে অন্তরে ধারণকেই আক্বিদা বলে। 


❏ ড. ইবরাহিম আনীস বলেন-


(العَقِيْدَةُ) الحُكْمَ الَّذِي لَا يَقْبَلُ الشَّكَ فِيهِ لَدَىْ مُعْتَقِدِهِ وَ (فِي الدّين) مَا يُقْصَدُ بِهِ الِاعْتِقَاد دون الْعَمَل كعقيدة وجود الله وَبَعثه الرُّسُل (ج) عَقَائِدْ


-‘‘আক্বিদা অর্থ এমন বিধান বা নির্দেশ যা বিশ্বাসীর বিশ্বাস অনুসারে কোনরূপ সন্দেহের অবকাশ রাখে না....ধর্মীয় বিশ্বাস যা কর্ম থেকে পৃথক। যেমন- আল্লাহ তা‘য়ালার অস্তিত্ব, রাসূলদের প্রেরণ। এটির বহুবচন আকায়েদ।’’ 

(আল-মুজাম আল-ওয়াসীত, ২/৬১৪পৃ.)


আক্বিদা শুদ্ধ না হলে তার কোন ইবাদতই আল্লাহ কবুল করবেন না। হাশরে ময়দানে অসংখ্য ব্যক্তি এমন হবে যে তারা অনেক আমল করেছেন; কিন্তু আক্বিদা শুদ্ধ না থাকার কারণে তাদের আমলকে আল্লাহ বাতিল বলে ঘোষণা করবেন। 


❏ যেমন মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন-


وَقَدِمْنَا إِلَى مَا عَمِلُوا مِنْ عَمَلٍ فَجَعَلْنَاهُ هَبَاءً مَنْثُورًا


-‘‘(আর) আমি (যখন) তাদের সে সব আমল (ইবাদতের) দিকে মনোনিবেশ করব, যা তারা (দুনিয়াতে) করে এসেছে, তখন আমি তা (তাদের সকল ইবাদত) উড়ন্ত ধুলিকণার মতই (ঈমান শূন্য হওয়ার কারণে) নিষ্ফল করে দিব।’’ 

(সূরা ফুরকান, আয়াত, ২৩) 


তাই ঈমান-আক্বিদা যদি শুদ্ধ না থাকে বান্দার আমল হাশরের ময়দানে ধুলার মতই উড়ে যাবে। তাই এক মাত্র সঠিক দল আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অনুসারী না হলে কোন ব্যক্তির আমলই আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না। 


❏ হযরত হুযায়ফা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন-


لَا يَقْبَلُ اللَّهُ لِصَاحِبِ بِدْعَةٍ صَوْمًا، وَلَا صَلَاةً، وَلَا صَدَقَةً، وَلَا حَجًّا، وَلَا عُمْرَةً، وَلَا جِهَادًا، وَلَا صَرْفًا، وَلَا عَدْلًا، يَخْرُجُ مِنَ الْإِسْلَامِ كَمَا تَخْرُجُ الشَّعَرَةُ مِنَ الْعَجِينِ


-‘‘আল্লাহ কোন বিদ‘আতীর (তথা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের বিপরীত কুফুরী-শিরকী আক্বিদা বিশ্বাসে নতুন বিশ্বাসী ব্যক্তির) কোনো রোযা, নামায, সদকা (যাকাত), হজ্জ, ওমরা, জিহাদ, ফরয ইবাদত, নফল ইবাদত কবুল করবেন না। সে (কুফুরী-শিরকী আক্বিদা পোষণের কারণে) ইসলাম থেকে বাহির হয়ে যাবে, যে ভাবে চুল (সহজে) আটার খমীরা থেকে বাহির হয়ে যায়।’’

(সুনানে ইবনে মাযাহ, ১/১৯পৃ. হা/৪৯, হাদিসটি ‘হাসান’।)


❏ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন-


أَبَى اللَّهُ أَنْ يَقْبَلَ عَمَلَ صَاحِبِ بِدْعَةٍ حَتَّى يَدَعَ بِدْعَتَهُ


-‘‘আল্লাহ বিদ‘আতির (আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের বিপরীত দলের অনুসারীর) কোনো ইবাদত কবুল করবেন না, যতক্ষণ না সে তার বিদ‘আত পরিত্যাগ করে।’’ 

(সুনানে ইবনে মাযাহ, ১/১৯পৃ. হা/৫০, হাদিসটি ‘হাসান’ পর্যায়ের।)


হাশরের ময়দানে যাদের ঈমান সঠিক বলে বিবেচিত হবে তারাই কেবল জান্নাতে যাবে। তাই জান্নাতে যাওয়ার জন্য সকলের পূর্বে আক্বিদা শুদ্ধ করা জরুরী। 


❏ যেমন মহান আল্লাহ তা‘য়ালা ইরশাদ করেন-


وَمَنْ يَعْمَلْ مِنَ الصَّالِحَاتِ مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَأُولَئِكَ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ وَلَا يُظْلَمُونَ نَقِيرًا


-‘‘যদি কোন পুরুষ বা মহিলা সৎকর্ম (ইবাদত) করে এমতাবস্থায় যে, সে মুমিন (অর্থাৎ ঈমানদার অবস্থায় ইবাদত করে)তাহলে সে (এবং তার মত ঈমানদার লোকেরাই শুধু মাত্র) জান্নাতে প্রবেশ করবে। (ইবাদতের পুরষ্কার দেওয়ার সময়) তাদের উপর বিন্দুমাত্র জুলুম, অবিচার করা হবে না।’’ 

(সূরা নিসা, ১২৪)


❏ হযরত উমর (رضي الله عنه) বলেন, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন-


يَا ابْنَ الْخَطَّابِ، اذْهَبْ فَنَادِ فِي النَّاسِ، أَنَّهُ لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ إِلَّا الْمُؤْمِنُونَ، قَالَ: فَخَرَجْتُ فَنَادَيْتُ: أَلَا إِنَّهُ لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ إِلَّا الْمُؤْمِنُونَ


-‘‘হে খাত্তাবের পুত্র! যাও লোকদের মাঝে ঘোষণা করে দাও যে, একমাত্র ঈমানদাররাই জান্নাতে প্রবেশ করবে। হযরত ওমর (رضي الله عنه) বলেন, অতঃপর আমি বের হলাম এবং ঘোষণা করলাম: শুণ রাখো, ঈমানদার ছাড়া কেউ জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।’’ 

(সহীহ মুসলিম, ১/১০৭, হা/১১৪)


উপরের আলোচনা থেকে বুঝা গেল আক্বিদার গুরুত্ব অত্যাধিক। রাসূল (ﷺ) থেকে সর্বপ্রথম সাহাবায়ে কিরামই আক্বিদা শিখেছেন। তাই মহান রব তা‘আলাও আমাদের আক্বিদা (বিশ্বাস) সাহাবীদের মত হওয়ার আদেশ করেছেন। 


❏ মহান রব ইরশাদ করেন-


وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ آمِنُوا كَمَا آمَنَ النَّاسُ قَالُوا أَنُؤْمِنُ كَمَا آمَنَ السُّفَهَاءُ أَلَا إِنَّهُمْ هُمُ السُّفَهَاءُ وَلَكِنْ لَا يَعْلَمُونَ


-‘‘এবং যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘ঈমান আনো যেমন অপরাপর লোকেরা (সাহাবীরা) ঈমান এনেছে, তখন তারা বলে ‘আমরা কি নির্বোধদের মতো ঈমান নিয়ে আসবো? জেনে রাখুন! তারাই হলো নির্বোধ; কিন্তু তারা জানে না।’’ 

(কানযুল ঈমান, সূরা বাক্বারা, আয়াত নং-১৩) 


আয়াতে آمَنَ النَّاسُ বলে অধিকাংশ মুফাসসিরগণ সম্মানিত সাহাবায়ে কিরাম বলেই অবহিত করেছেন। অতএব, বুঝা গেল কিয়ামত দিবসে ওইসমস্ত লোকের ঈমান আল্লাহর মহান দরবারে কবুল হবে, যাদের ঈমানের দৃঢ়তা সাহাবীদের সাথে মিল রয়েছে।


❏ নবীয়ে পাক সাহেবে লাওলাক হযরত মুহাম্মাদ (رحمة الله) এর ফরমান-


وَإِنَّ بني إسرائيل تَفَرَّقَتْ عَلَى ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِينَ مِلَّةً، وَتَفْتَرِقُ أُمَّتِي عَلَى ثَلاَثٍ وَسَبْعِينَ مِلَّةً، كُلُّهُمْ فِي النَّارِ إِلاَّ مِلَّةً وَاحِدَةً، قَالُوا: وَمَنْ هِيَ يَا رَسُولَ اللهِ؟ قَالَ: مَا أَنَا عَلَيْهِ وَأَصْحَابِي


-‘‘নিশ্চয় বনী ইসরাঈল বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছে এবং আমার উম্মত তিয়াত্তার দলে বিভক্ত হবে। তাদের সকলেই জাহান্নামে যাবে তবে একটি দল ব্যতীত। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হল, তারা কারা? রাসূল (ﷺ) উত্তর দিলেন, আমি এবং আমার সাহাবার আদর্শের ওপর যারা প্রতিষ্ঠিত থাকবে।’’ ১

{১. খতিব তিবরিযি, মিশকাতুল মাসাবিহ, ১/৬১পৃ. কিতাবুল ই‘তিসাম বিস্-সুন্নাহ, হাদিস নং.১৬১, তিরমিযি, আস্-সুনান, ৫/২৬পৃ. হাদিস, ২৬৪১, আহলে হাদিস আলবানী সুনানে তিরমিযির তাহক্বীকে হাদিসটি ‘হাসান’ বলেছেন, তাবরানী, মু‘জামুল কাবীর, ১৩/৩০পৃ. হাদিস, ৬২, ১৪/৫২পৃ. হাদিস, ১৪৬৪৬, মাকতুবাতু ইবনে তাইমিয়া, কাহেরা, মিশর, প্রকাশ.১৪১৫হি. বায়হাকি, ই‘তিক্বাদ, ১/২৩৩পৃ. বাগভী, শরহে সুন্নাহ, ১/২১৩পৃ. হাদিস, ১০৪}


নবী পাক (ﷺ)‘র এই আলোকময় বর্ণনা সম্পর্কে প্রত্যেক মুসলমানদের জেনে রাখা প্রয়োজন। যাতে করে, সাহাবায়ে কিরামদের আক্বিদা-বিশ্বাস ও মুহাব্বতের অবিকল অনুকরণ করতে পারে। 

প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন আল্লামা যিয়াউল্লাহ কাদেরী (رحمة الله)’র দরজাত বুলন্দির লক্ষে বিনম্র চিত্তে মাওলায়ে কায়িনাতের মহান দরবারে পাকে দোয়া করছি। যিনি অত্যন্ত চিন্তা-গবেষণার মাধ্যমে ‘আকাইদে সাহাবাহ’ নামক উর্দু কিতাবটি রচনার মাধ্যমে আমাদেরকে প্রজন্মের জন্য একটি জীবন্ত গাইড লাইন উপহার দিয়েছেন।


প্রিয়পাঠক! মুসলিম মিল্লাতের জন্য সর্বযুগে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ইসলামের সঠিক আকিদা। আকিদা ছাড়া কোনো ইবাদাত আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার আশা করা যায়না। তাই যুগ যুগ ধরে মুনাফিক-কাফিরদের সাথে পূণ্যবান মানুষগুলোর দ্ব›দ্ব একমাত্র আকিদা নিয়ে। ওসব বে-ইমান কাফিররা জানে যে, মুসলমানদের আকিদা যদি নষ্ট করে দিতে পারে, তাহলে তারা সব দিকে সফল। এই কু-মতলব অর্জনের জন্যে তারা মুসলিম সমাজে বিভিন্ন কৌশলে উঠে-পড়ে লেগেছে। অপরদিকে আকায়িদে আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতের অনুসারী বিজ্ঞ-আলিম-ওলামরাও দুরাচারদের স্বপ্ন যেনো বাস্তবায়ন করতে না পারে, সেই দিকে খেয়াল করে বিভিন্ন ভাবে জিহাদ চালিয়ে যাচ্ছেন। বাতিল বা ভ্রান্ত মতবাদ বিরোধী সেই রকম মুজাহিদদের অন্যতম, আল্লামা আবুল হামিদ যিয়াউল্লাহ ক্বাদেরী (رحمة الله)।


অসংখ্য কিতাবের সম্মানিত রচয়িতা ও পাকিস্তান, শিয়ালকোটের অধিবাসী বিজ্ঞ-আলিম আল্লামা কাদেরীর অনেক কিতাব ইতিমধ্যে বিভিন্নজনে বাংলা অনুবাদ করেছেন; তৎমধ্যে ‘ওহাবি মাযহাব কি হাকিকাত’ অন্যতম। তাঁর ‘আকাইদে সাহাবাহ’ কিতাবটি আমার অনেক স্বপ্নের একটি চমৎকার কিতাব। এই কিতাবটি পড়লে যে কোনো মানুষ সুন্নিদের আকিদার সাথে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার সাহাবায়ে কিরামদের আকিদার মিলখুঁজে পাবে অনায়াসে।


আমি আগ্রহী হলাম কিতাবটি অনুবাদ প্রকাশ করার জন্য। যেহেতু আমি অনুবাদের প্রতি মনোনিবেশ করি না, তাই আমার স্নেহের ভাই মাওলানা হাফেয মুহাম্মদ আতিকুর রহমান কে কিতাবটি অনুবাদ করার জন্য অনুরোধ করি এবং সে শত ব্যস্ততার মধ্য দিয়েও এটির পান্ডুলিপি তৈরী করে আমাকে দেন। যদিও তিনি চট্টগ্রাম জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়ার ছাত্র, তবুও তার অনুবাদ ও শব্দ গাঁথুনির কারিশমা অসম্ভব সুন্দর। এ কিতাবটিতে মশহুর সাহাবীদের আক্বিদা তুলে ধরা হয়েছে, অনুবাদে যথাযত হুবহু ঠিক রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে ফিতনা ফ্যাসাদের এ দুনিয়ায় যে সকল সাহাবায়ে কিরামের আক্বিদা মূল গ্রন্থকার (رحمة الله) লিপিবদ্ধ (কিতাব দীর্ঘায়িত হওয়ার আশংকায়) করেননি, কিন্তু ঐ সকল আক্বিদা না আনলেই নয় বিধায় এ ধরনের কতিপয় আক্বিদা সংযোজন করেছি। এ কিতাবের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট হলো তিনি সিহাহ সিত্তাহ ও মিশকাত এবং নির্ভরযোগ্য হাদিসের কিতাব থেকে দলিল চয়ন করেছেন। আমি অধম প্রত্যেকটি হাদিসের তাখরীজ (তথ্য সংযোজন) এবং সনদ পর্যালোচনার চেষ্টা করেছি। 


আমার শ্রদ্ধেয় মাওলানা মুফতি আবদুল আজিজ রজভি বইটির দিকে নজর দেয়ার পাশাপাশি ‘আকাইদে সাহাবাহ’ কিতাবের বাংলা নামকরণ করেছেন ‘‘সাহাবায়ে কিরামদের সাথে সুন্নি আক্বিদার সাদৃশ্য’’। গ্রন্থাকারে রূপদেয়ার পর বইজুড়ে অনুপম নজর দিয়ে আমাকে চিরদিনের জন্য কৃতজ্ঞতার পাশে আবদ্ধ করে রেখেছেন, আল্লামা মুহাম্মদ সাইফুর রহমান নোমানী। 

আমি একজন প্রকাশক ও সম্পাদকের ভূমিকায় কিতাবটি নিপূণতার লক্ষে বহু-চেষ্টা করেছি। অজানা বশত: গ্রন্থের কোনো জায়গায় যদি উল্লেখযোগ্য ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরা পড়ে তবে আমাকে জানাবেন। আপনার জন্যে দোয়া করবো। পরবর্তী প্রকাশের সময় বিশুদ্ধ করে দেবো। ইনশাআল্লাহ! 


প্রিয় পাঠক! আশা করি, নাতিদীর্ঘ এই (অনূদিত) পুস্তকটি পরোপুরি পড়ে বিবেকের আদালতে মুখোমুখি হবেন। এতে আপনার অন্তর চক্ষু খোলে যাবে, ইনশাআল্লাহ! সফলতার মুখ দেখবে আমাদের পরিশ্রম।


আরজগুজার

মাওলানা মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ বাহাদুর

প্রকাশক

সাকলাইন প্রকাশন।







এ কিতাব লিখার সম্পর্ক

আমি অধম (গ্রন্থকার) ফকীর এ কিতাবখানা বারতানিয়াতেই লিখেছি। শিয়ালকুটস্ত ‘দু দরয়ায জামি‘আ হানাফিয়া’ এর সম্মানিত প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক আমার উস্তাদজি উস্তাজুল ‘উলামা আ-হলে সুন্নাতের সূর্য, মাহতাবে ত্বরীকত, শায়খূল উলামা, জ্ঞান তাপসদের পুরোধা, শায়খুল হাদীস ওয়াত তাফসীর, আল্লামা আলহাজ্জ হাফিয মুহাম্মদ ‘আলাম সাহিব নক্সবন্দী ঐ সময়ে বারতানিয়াতে তাশরীফ আনলেন। 

১৪২০ হিজরী ১৪ রবিউল আখির অনুযায়ী ১৯৯৯ সালের জুলাই মাসের বুধবার বারতানিয়া শহরের পীরবরুতে তাঁর সভাপতিত্বে এক খানা মীলাদুন্নবী (ﷺ) কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আমি অধমও সেখানে আমন্ত্রিত হয়েছিলাম। কিতাবটির রাফ কপি আমি হযরতের কাছে পেশ করেছি। তিনি এটা অধ্যয়ন পূর্বক খুশী হয়ে বলেছেনঃ এ রূপ কিতাবের অনেক প্রয়োজনীয়তা ছিল। এ বলে তিনি অনেক দু‘আ করলেন। কিন্তু ১৪২০ হিজরী ০৮ জুমাদুল উলা রোজ শুক্রবার মোতাবেক ১৯৯৯ সালের ২০ আগস্টে তিনি বারতানিয়াতেই ইন্তিকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজি‘উন।

অধম ফকীর এ কিতাবের সম্পর্ক ঐ ব্যক্তির সাথে করার প্রয়াস পাচ্ছি। কারণ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের যে খিদমাত-ই এ অধম করছিনা কেন সবই তাঁর দু‘আ ও দেখা শুনার কারনেই করতে পেরেছি।


দু‘আ করছি আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যেন তাঁর প্রিয়তম মাহ্বুবের ওয়াসিলায় হযরত শায়খুল হাদীস (رضي الله عنه) এরম মর্যাদা বুলুন্দ করে দেন। আর তাঁর ফয়েয ও বারকাত যেন আমাদের উপর ব্যাপকভাবে দান করেন। সাথে সাথে এ অধমের সামান্য এ খিদমাতটুকু কবুল ও মানযুর করে নেন। আর একে যে আল্লাহ পাক আমার সম্মানিত বাবা-মায়ের মাগফিরাত (গুণাহ মাফ) ও সকল নিকটাত্মীয় একই বিশ্বাসে বিশ্বাসীদের গুণাহ মাফের মাধ্যম হিসেবে কবুল করে নেন।


ফকীর আবুল হামিদ যিয়াউল্লাহ ক্বাদেরী আশরাফী গুফিরালাহু।

সিয়ালকোটি।





মু খ ব ন্ধ


কোন ব্যক্তি সভ্যতার মূলে তার ‘আকিদা ও আমলের বিশেষ বিবেচনা রয়েছে। এর আলোকেই তার সভ্যতার ভালো মন্দ বিবেচনা করা হয়ে থাকে। ইসলামী সভ্যতা অধ্যয়নকারী  অবগত আছেন যে চলতি শতাব্দিগুলোতে বিস্তৃত বিশ্বময় সভ্যতার অনুশীলনকারী ও বিশ্বাসীগণ বিশ্বনবী ও সর্বশেষ নাবী হযরত মুহাম্মাদ (ﷺ)‘র সাহাবায়ে কিরাম ও পবিত্র আহলে বায়তদের কে পুরোধা মনে করে চলেছেন। 


❏ আল্লাহর বাণী-


فَإِنْ آمَنُوا بِمِثْلِ مَا آمَنْتُمْ بِهِ فَقَدِ اهْتَدَوْا


-‘‘অর্থাৎ তারা যদি তোমাদের মতো ঈমান গ্রহণ করে তবে তারা অবশ্যই হিদায়াত প্রাপ্ত হবে।’’  ২

{২. সূরা বাক্বারা, আয়াত নং-১৩৭}


এটাই এ কথার উপর সাক্ষী। এ আয়াতের ব্যাখ্যায় হাকিমুল উম্মত আল্লামা মুফ্তি আহমদ ইয়ার খাঁন (رحمة الله) বলেছেনঃ এ থেকে বুঝা গেল যার আক্বিদা সাহাবীর ‘আক্বিদার অনুরূপ সে মু‘মিন, আর যার আক্বিদা তাদের অনুরূপ নয় তারা কাফির। তারা হলো ঈমানের স্তম্ভ। 

(নুরুল ইরফান, পৃষ্ঠা-৩২)


❏ তাছাড়া আল্লাহর রাসূল (ﷺ)‘র পবিত্র বাণী-


مَا أَنَا عَلَيْهِ وَأَصْحَابِي


-‘‘ঐ দল সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত যারা আমার এবং আমার সাহাবায়ে কিরাম এর পদাংক অনুসরণ করে চলে।’’  ৩

{৩.খতিব তিবরিযি, মিশকাত, ১/৬১ পৃ. হা/১৭১, পরিচ্ছেদ: بَاب الِاعْتِصَام بِالْكتاب وَالسّنة , ইমাম তিরমিযি, আস-সুনান, ৪/৩২৩ পৃ. হা/২৬৪১, ইমাম আবু নুয়াইম ইস্পাহানি, হিলইয়াতুল আউলিয়া, ৯/২৩৮ পৃ., ইমাম তাবরানী, মু‘জামুল কাবীর, ১৩/৩০ পৃ. হা/৬২, ইমাম বাগভী, শরহে সুন্নাহ, ১/২১৩ পৃ. হা/১০৪, হাদিসটি ‘হাসান’।}


অর্থাৎ তারা আমার ও আমার সাহাবায়ে কিরামের আক্বিদা ও আমলে এর অনুসারী হবে।

উল্লেখিত আয়াতে কারিমা ও হাদিসে নববী (ﷺ)‘র প্রমাণাদীর ভিত্তিতে সাহাবায়ে কিরাম (رضي الله عنه)‘র বিশ্বাস ও আমলের গুরুত্বকে কোন মুসলমান অপছন্দ করেননি। যদি হুযুর কারিম (ﷺ)‘র সাহাবায়ে কিরামগণ থেকে সংঘটিত যে কোন ঘটনা বিশ্লেষণ করা হয়, দেখা যাবে সেটা নাবী কারীম (ﷺ)‘র দয়া, নির্দেশনা, স্বাধীনতা, সৌন্দর্য, পূর্ণাঙ্গতা, আল্লাহ প্রদত্ত ক্ষমতা ও পরিপূর্ণতার যে কোনো কিছুর সাথে মিলে যাবে।

ইশ্কে রাসূল (ﷺ)‘র উচ্চাঙ্গতার অমীয় তৃপ্তি ও সারকারে দুআলম (ﷺ)‘র শানে বেআদবির পরিমাণ যে কতটা ভয়াবহ তা উলামায়ে আহলে সুন্নাহ সব সময় অবহিত করেছেন। বিশেষত এ সম্পর্কে হযরত আল্লামা যিয়া উল্লাহ কাদেরী আশরাফী (رحمة الله)‘র লিখিত ‘আকাইদে সাহাবাহ’ নামক এ গ্রন্থটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ কিতাবটির বৈশিষ্ট হলো অভিজ্ঞ রচয়িতা প্রত্যেক বিষয়াদি সম্পর্কে বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণ উপস্থাপন করেছেন। অবশ্যয় এখানে রাসূল (ﷺ)‘র এমন কোনো শান মানের বর্ণনা নেই (নাউযুবিল্লাহ) যা সাহাবায়ে কিরামগণ হতে বর্ণিত হয়নি। কেননা, তাঁরা প্রত্যেকে সর্বোচ্চ নবী প্রমিক ছিলেন। তাদের হৃদয়ে ছিল নবী প্রেমে ভরপুর। অতএব, তাঁরা কখনও নবীজী (ﷺ)‘র মহত্ব গুণগান বর্ণনা করতে কার্পন্য বোধ করেননি। 


সম্মানিত সুধী! সাহাবায়ে রাসূল (ﷺ) থেকে কেউ যদি ‘সিহাহ সিত্তা’ গ্রন্থে উক্ত মুক্তা ঝরা বর্ণনাগুলোর দিকে দৃষ্টিপাত করে তাহলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)‘র শান ও মান মহত্বের উপর এমন এমন তাত্তি¡ক বর্ণনা রয়েছে, যা পড়লে ঈমানের দৃঢ়তা আরো বেড়ে যাবে নিশ্চিত।

কেউ যদি ‘সিহাহ সিত্তাহ’ গ্রন্থ থেকে উক্ত মুক্তাঝরা বর্ণনাগুলোর একত্রিত করে তাহলে অগণীত হাদিস শরীফ নযরে চলে আসবে। অতএব, ওলামায়েদ্বীন ও সম্মানিত ওয়ায়েযদের প্রতি আরয যেহেতু নবিজি (ﷺ)‘র শান-মানেও উক্ত ‘সিহাহ সিত্তার’ গ্রহণযোগ্য বর্ণনার হাদিসে পাক রয়েছে, সেহেতু- ওইসব বর্ণনাগুলোকে প্রাধাণ্য দেয়া  উচিত। এতে নিজের ও অপরের সর্বাধিক কল্যান সাধিত হবে। এরই ধারাবাহিকতায় অধম (মুজাদ্দেদী)‘র রচিত ‘শানে হাবিবুল বারি মিন রিওয়াইয়াতিল বুখারী’ গ্রন্থের আলোকে আল্লামা কাদিরী জটিলতা নিরসন মূলক কিতাবটি রচনা করেছেন। প্রকৃত আলিম-ওলামা ও গবেষকগণকে কিতাবাদির প্রতি উদ্বদ্ধ করছি। 


উল্লেখ্য যে, এখানে আমি শুধু মাত্র ওলামায়ে দ্বীনের জন্য এ কথাটি বলছি না যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)‘র শান-মান ও মহত্বের উপর কেবল ‘সিহাহ সিত্তার’ বর্ণনায় হাদিস রয়েছে। বরং ইমাম বুখারী ও মুসলিমের পূর্ব কিতাব মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানিফা, মুয়াত্তা ইমাম মালেকসহ নির্ভরযোগ্য বহু কিতাবে রয়েছে। বিশেষ করে, হযরত ইমাম আযম আবু হানিফা (رضي الله عنه) এমন এক সত্ত্বা যিনি সাহাবায়ে কিরাম ও তাবেয়ী (রা.) থেকে সরাসরি হাদিস বর্ণনার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। যেখানে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। 

বলতে গেলে বুখারী মুসলিমের সহীহ হাদিস সমূহের (কতিপয় রাবীর আলোচনায়) আসমাউর রিজালের মধ্যে অনেক রাবীর কড়া সমালোচনাও রয়েছে। তবুও আশ্চর্যের বিষয় হলো এই, সিহাহ সিত্তার বর্ণনার প্রতি মানুষের আস্থা রয়েছে, কিন্তু এর পূর্ববর্তী কিতাবগুলোর প্রতি অনিহা বা অনাস্থা প্রকাশ করে। অথচ ওসব কিতাবগুলোতে এমন এমন বর্ণনা রয়েছে যা ইমাম বুখারী-মুসলিমের উস্তাযের উস্তাযগণের আমল। 

অবশ্যয় ইমাম বুখারী সর্বজন স্বীকৃত ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি কিন্তু উনার চেয়ে উচ্চ সম্মানিত মর্যাদার অধীকারী হলেন, ইমাম আযম আবু হানিফা (رضي الله عنه)।

আমি অনেক খুশি হয়েছি যে, ‘কাদিমী কুতুবখানা’ সাহাবায়ে কিরামের ঈমানী আফরোজ সমৃদ্ধ কিতাব ‘আকাইদে সাহাবাহ’ কিতাব প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছেন; আল্লাহ পাক তাদেরকে এর উত্তম প্রতিদান এবং এ ধরনের কাজে আঞ্জাম দেয়ার তৌফিক দান করুন। আমিন


ধন্যবাদান্তে-

আল্লামা মুজাদ্দেদী গুফিরালাহু।






লেখকের কথা


نَحْمَدُه وَنُصَلِّى وَنُسَلِّمُ عَلٰى رَسُوْلِه الْكَرِيْم وَعَلٰى اٰلِهِ وَاصْحَابِهِ اَجْمَعِيْن اَمَّا بَعْدُ

فَاَعُوْذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ- بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ-وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ آمِنُوا كَمَا آمَنَ النَّاسُ قَالُوا أَنُؤْمِنُ كَمَا آمَنَ السُّفَهَاءُ أَلَا إِنَّهُمْ هُمُ السُّفَهَاءُ وَلَكِنْ لَا يَعْلَمُونَ


-‘‘এবং যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘ঈমান আনো যেমন অপরাপর লোকেরা ঈমান এনেছে, তখন তারা বলে ‘আমরা কি নির্বোধদের মতো ঈমান নিয়ে আসবো? শুন্ছো! তারাই হলো নির্বোধ; কিন্তু তারা জানে না।’’ (কানযুল ঈমান, সূরা বাক্বারা, আয়াত নং-১৩) 


❏ নবীয়ে পাক সাহেবে লাওলাক হযরত মুহাম্মাদ (رحمة الله) এর ফরমান-


وَإِنَّ بَنِيْ إِسْرَائِيْلَ تَفَرَّقَتْ عَلَى ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِينَ مِلَّةً، وَتَفْتَرِقُ أُمَّتِي عَلَى ثَلاَثٍ وَسَبْعِينَ مِلَّةً، كُلُّهُمْ فِي النَّارِ إِلاَّ مِلَّةً وَاحِدَةً، قَالُوا: وَمَنْ هِيَ يَا رَسُولَ اللهِ؟ قَالَ: مَا أَنَا عَلَيْهِ وَأَصْحَابِي


-‘‘নিশ্চয় বনী ইসরাঈল বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছে এবং আমার উম্মত তিয়াত্তার দলে বিভক্ত হবে। তাদের সকলেই জাহান্নামে যাবে তবে একটি দল ব্যতীত। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হল, তারা কারা? রাসূল (ﷺ) উত্তর দিলেন, আমি এবং আমার সাহাবার আদর্শের ওপর যারা প্রতিষ্ঠিত থাকবে।’’ ৪

{  ৪.খতিব তিবরিযি, মিশকাতুল মাসাবিহ, ১/৬১পৃ. কিতাবুল ই‘তিসাম বিস্-সুন্নাহ, হাদিস নং.১৬১, তিরমিযি, আস্-সুনান, ৫/২৬পৃ. হাদিস, ২৬৪১, আহলে হাদিস আলবানী সুনানে তিরমিযির তাহক্বীকে হাদিসটি ‘হাসান’ বলেছেন, তাবরানী, মু‘জামুল কাবীর, ১৩/৩০পৃ. হাদিস, ৬২, ১৪/৫২পৃ. হাদিস, ১৪৬৪৬, মাকতুবাতু ইবনে তাইমিয়া, কাহেরা, মিশর, প্রকাশ.১৪১৫হি. বায়হাকি, ই‘তিক্বাদ, ১/২৩৩পৃ. বাগভী, শরহে সুন্নাহ, ১/২১৩পৃ. হাদিস, ১০৪}


নবী পাক (ﷺ)‘র এই আলোকময় বর্ণনা সম্পর্কে প্রত্যেক মুসলমানদের জেনে রাখা প্রয়োজন। যাতে করে, সাহাবায়ে কিরামদের আক্বিদা-বিশ্বাস ও মুহাব্বতের অবিকল অনুকরণ করতে পারে। 

এইসব বিষয়াদীর প্রতি দৃষ্টিপাত করে এই ফকির (রচয়িতা) কলম ধরার মনস্থির করেছি। যেনো চিন্তাশীল প্রজন্মের জন্য কিতাবটি চলার পাথেয় হিসেবে সহায়ক হয়।

অধম গ্রন্থটি রচনাকালে যেসব বিষয়ের প্রতি বিশেষভাবে দৃষ্টি নিবন্ধ করেছি তা হলো-হাদিসের কিতাবগুলো থেকে প্রায় সিহা সিত্তাহর প্রমাণ উপস্থাপন করেছি। আর হাদিস শাস্ত্রে সর্বজন পরিচিত গ্রন্থ মিশকাতুল মাসাবীহ নামক গ্রন্থ থেকে হাওয়ালা প্রদান করেছি। এরপরও নবী বিদ্বেষীদের নিকট আক্বিদাগুলো অবিশ্বাস্য মনে হবে, কেননা এটা তাদের একটা চরম অভ্যাসে পরিনত হয়েছে। তবুও তাদেরকে বুঝানোর লক্ষে আমি প্রমাণ-পঞ্জির দিকে নিরেট খেয়াল দিয়েছি।


মনে রাখতে হবে, ইমান ও আক্বিদা একান্ত আন্তরিক বিষয়। যদি আক্বিদা বিশুদ্ধ না হয়, তবে কোনো আমল কবুল হওয়ার সম্ভবনাও নাই। এ জন্যেই মূলতঃ আমি আক্বিদার প্রতি বিশেষ খেয়াল দেই। আক্বিদার প্রতি মানুষের নম্রতার কারণে জাহান্নামে যেতে হবে। অতঃপর তখন বুঝতে পারলেও কোনো ফায়দা হবে না।

মুসলমানদের প্রয়োজন, মসজিদের ইমাম-খতিব ও ওয়ায-নসিহতে মুক্তির লক্ষে কেবল দান-খায়রাত-যাকাতের বিষয়ে আলোকপাত নয়; বরং ওইসব ওলামায়ে কিরামদের প্রতি সম্পর্ক রাখা যারা দ্বীনের সঠিক আলিম। যাদের আক্বিদা আমল নবিজি (ﷺ)‘র সম্মানিত আওলাদ ও সাহাবায়ে কিরাম (رضي الله عنه)‘র আওলিয়ায়ে কামেলিনদের সাথে মিলে। 


❏ মহান আল্লাহ সাহাবায়ে কিরামদেরকে নৈকট্যলাভে ধন্য করেছেন। আর তাঁদের প্রতি অনুপম সন্তুষ্টি ও সফলতার ব্যাপারে কুর‘আনুল কারিমে ইরশাদ করেছেন-


رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ أُولَئِكَ حِزْبُ اللَّهِ أَلَا إِنَّ حِزْبَ اللَّهِ هُمُ الْمُفْلِحُونَ


-‘‘আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। এটা আল্লাহর দল। শুনছো! আল্লাহরই দল সফলকাম।’’ 

(সূরা মুযাদালাহ, আয়াত নং-২২)


❏ মহা গ্রন্থ কুর‘আন মাজিদে সাহাবায়ে কিরামগণের ঈমানে দৃঢ়তার ব্যাপারে উদাহরণ স্বরূপ আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন-


وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ آمِنُوا كَمَا آمَنَ النَّاسُ


-‘‘এবং যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘ঈমান আনো যেমন অপরাপর লোকেরা ঈমান এনেছে।’’ 

(সূরা বাক্বারা, আয়াত নং-১৩)


আয়াতে آمَنَ النَّاسُ বলে অধিকাংশ মুফাসসিরগণ সম্মানিত সাহাবায়ে কিরাম বলেই অবহিত করেছেন। অতএব, বুঝা গেল কিয়ামত দিবসে ওইসমস্ত লোকের ঈমান আল্লাহর মহান দরবারে কবুল হবে, যাদের ঈমানের দৃঢ়তা সাহাবীদের সাথে মিল রয়েছে। আয়াতে মহান আল্লাহ এটাই বুঝিয়েছেন। এ ব্যাপারে কোন প্রকার ছাড় নেই এজন্যে آمَنَ النَّاسُ বলে অবহিত করেছেন।

অতএব, সাহাবিদের আক্বিদার সাথে যাদের আক্বিদা মিলবে, তাদের যাবতীয় আক্বিদা-আমল প্রভুর দরবারে মকবুল হবে। তাই ঈমান হচ্ছে মূল; আর ইবাদত-আমল তার শাখা-প্রশাখা। বিশ্বাস ও জ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে বর্তমান সময়ে আমরা যা দেখছি তা বড়োই নাজুক! পবিত্র দ্বীন ইসলামে বাঁচানোর প্রত্যেয় কারো নেই। আছে দ্বীন ধ্বংসের মনোভাব। অথচ অনেক তো এমনও রয়েছে- যারা ইসলামের জন্য প্রাণ বিসর্জন দিতে পারবে; সবই লৌকিক।

প্রমাণ স্বরূপ, ইবাদত বা মসজিদগুলোতো দেখি, আহলে বায়তে রাসূলের নাম নেয় মুখে। সাহাবায়ে কিরামদের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতাও প্রকাশ করে। কিন্তু আক্বিদা ও আমলের ক্ষেত্রে এসব হযরাতে কিরামদের কাছা-কাছিও নেই। আছে মনগড়া ও বানোয়াট আমলের বহু ইতিবৃত্ত। মনে রাখতে হবে, যেসব আক্বিদা সর্বোপরি সাহাবায়ে কিরামগণের বিপরিত তা নিছক হারাম ও শিরক।

এইসকল সম্মানিত বুযূর্গ দ্বীনের প্রকৃত আলোকবর্তিকা। মুসলমানদের জন্য তাঁদের আক্বিদা-আমলের বিরোদ্ধে আচরণ করে অনেক দলের নাম দিয়েছে লশকরে তাযবাহ, আহলে হাদিস, হরকাতুল জিহাদ, হরকাতুল আনসার, জামাতে ইসলাম, (হিফাযত) ইত্যাদি। 

এমন পরিস্থিতে সরলমনা মুসলমানদের ঈমান বাঁচানোর লক্ষ্যে, আমলের পথে প্রদিপ শিখা জ্বালানোর জন্যে সাহাবায়ে কিরামগণের আক্বিদা-আমলের সম্মানিত এই কিতাবটি রচনা করেছি। যাতে মুসলমানগণ কিয়ামত অবধি সঠিক দ্বীনের উপর অটল থাকার পাথেয় হয়।

মহান আল্লাহর দরবারে দু‘আ করছি প্রিয়তম রাসূলে কারিম (ﷺ)‘র উসিলায় অধমের এই মনোভাব কবুল করেন। প্রত্যেক মুসলমানের জন্য যেনো কিতাবটি কল্যান বয়ে আনে। আমিন ছুম্মা আমিন।

صَلَّى اَللهُ تَعَالٰى عَلٰى حَبِيْبِه مُحَمَّدٍ وَاٰلِهِ وَاَصْحَابِهِ اَجْمَعِيْنَ بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّحِمِيْنَ


ফক্বীর মুহাম্মদ যিয়াউল্লাহ ক্বাদিরী গুফিরালাহু

খতিব, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, আল্লামা আবদুল হাকীম (رحمة الله)

তাহসীল বাজার, সিয়ালকোট, পাকিস্তান।

Top