বিষয় নং-: অতুলনীয় বাশার:


দেওবন্দী ওয়াহাবীরা রাসূলে করিম (ﷺ) কে নিজেদের মত বাশার বলে। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামআত বেরলবীগণ হুযুর পূর নূর (ﷺ)’ অতুলনীয় বাশার মানেন।

আল্লাহ তায়ালা কুরআন মাজীদে রাসূল (ﷺ)’ সৌভাগ্যবর্তী বিবিদেরকে দুনিয়ার সকল মহিলা থেকে অতুলনীয় বলেছেন।

যে সত্ত্বার শাদী মুবারকের সৌভাগ্য অর্জনের ফলে দুনিয়ার সকল নারী থেকে অতুলনীয় হয়েছেন, তাহলে সে স্বত্ত্বার অনুপতম সৌন্দর্যের তুলনা দুনিয়ার মধ্যে কে হবেন? (কেউ না)

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন

إِنِّي لَسْتُ مِثْلَكُمْ

-“আমি তোমাদের মত নই।43

  • ৪৩. 

ক. ইমাম বুখারী, আস-সহীহ, ৩/৩৭ পৃ. হা/১৯৬২

খ. ইমাম আবি আওয়ানাহ, মুসতাখরাজে আবি আওয়ানাহ, ২/১৮৮ পৃ. হা/২৭৯৮, 

গ.মুসনাদে আহমদ, ১০/৬২ পৃ. হা/৫৭৯৫

ঘ. বায়হাকী, আস-সুনানুল কোবরা, ৪/৪৬৬ পৃ. হা/৮৩৭৪

ঙ. নাসাঈ, আস-সুনানুল কোবরা, ৩/৩৫৩ পৃ. হা/৩২৫০

চ. ইমাম ইবনে আবি শায়বাহ, আল-মুসান্নাফ, ২/৩৩০ পৃ. হা/৯৫৮৭


হযরত সায়্যিদুনা আবু সাঈদ খুদুরী (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, ইমামুল আম্বিয়া (ﷺ) ইরশাদ করেন

إِنِّي لَسْتُ كَهَيْئَتِكُمْ

-“আমি তোমাদের কারো মত নই44

  • ৪৪. 

ক. ইমাম বুখারী, আস-সহীহ, ৩/৩৭ পৃ. হা/১৯৬৩,

খ. ইমাম আহমদ, আল-মুসনাদ, ১৭/১০৯ পৃ. হা/১১০৫৫

গ. ইমাম আহমদ, আল-মুসনাদ, ১৮/৩৪১ পৃ. হা/১১৮২২

ঘ. বায়হাকী, আস-সুনানুল কোবরা, ৪/৪৬৮ পৃ. হা/৮৩৭৯


হযরত আবু হুরাইরা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। ইমামুল আম্বিয়া (ﷺ) ইরশাদ করেন,

أَيُّكُمْ مِثْلِي

-“তোমাদের মাঝে আমার মত কে আছে?” 45

টিকা━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━

  • ৪৫. ইমাম বুখারী, আস-সহীহ, ৮/১৭৪ পৃ. হা/৬৮৫১ এবং ৯/৮৫ পৃ. হা/৭২৪২; মুস্তাখরাজে আবী আওয়ানা, ২/১৮৭ পৃ. হাদিস নং ৭২৯২, 


রাসূলে করিম (ﷺ) এর সম্পর্কে সাহাবায়ে কেরামের আকিদা ছিল কেমন তা হজরত আয়েশা (রা:) থেকে বর্ণিত এই হাদিসটির দিকে লক্ষ্য করুন-

قَالُوا إنَّا لسْنَا كَهْيَئتِكَ يَا رسولَ اللَّهِ

-“সাহাবীরা বলতেন: ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা কেহ আপনার মত না।” 


(সহীহ্ বুখারী, হা/২০; আল-ঈমান লি’ইবনে মানদুহ, হা/২৮৮; জামেউস সহীহ লি সুনানিল মাসানিদ, ৩য় খণ্ড, ৪৮৫ পৃ:; আল মুখতাছারুন নাছিহ, হাদিস নং ২৪; আলবানী: সিলসিলাতুল সহীহা, হা/৩৫০২; শরহে ছাহিহুল বূখারী লি’ইবনে বাত্তাল, ১ম খণ্ড, ৭২ পৃ:; ইমাম ইবনে আব্দিল বার্: আত-তামহিদ, ৫ম খণ্ড, ১০২ পৃ:; ইবনে রজব: ফাতহুল বারী, হাদিস নং ২০; ইমাম আইনী: উমদাতুল ক্বারী, ১ম খণ্ড, ১৬৫ পৃ:; ইমাম কাস্তালানী: এরশাদুছ ছারী, ১ম খণ্ড, ১০৩ পৃ:; আল কাউকাবুদ দুরারী, ১ম খণ্ড, ১১২ পৃ:; আনওয়ার শাহ্ কাশ্মিরী: ফায়জুল বারী, ১ম খণ্ড, ১৬৯ পৃ.)

━━━━━━━━━━━o━━━━━━━━━


সাহাবায়ে কেরামগণের মধ্যে কেউ একথা বলেননি যে, হে রাসূল (ﷺ)! আপনি আমাদের মত মানুষ। রাসূল (ﷺ)’ হাত পা মুবারক আছে, তিনি পানাহার করেন, তাঁর আজওয়াজে মুতাহ্হারাত এবং আওলাদ পাক আছেন, এরপরেও সবাই নিশ্চুপ। রাসূল (ﷺ)’ যা বলেছেন সবাই তা মেনে নিয়েছেন। সাহাবায়ে কেরাম (ﷺ)’ কিছু বলার সাহস ছিলনা, কিন্তু দেওবন্দী দু:সাহস এতই বেড়ে গিয়েছে যে, তারা রাসূল মিম্বারে বসেই বলে যে, রাসূল (ﷺ) আমাদের মত মানুষ।

হযরত সায়্যিদুনা মাওলা আলী (رضي الله عنه) বলেন

لَمْ أَرَ قَبْلَهُ وَلاَ بَعْدَهُ مِثْلَهُ ﷺ.

-‘‘আমি আগে পরে রাসূল (ﷺ)’ মত কাউকে দেখিনি।’’ 46

  • ৪৬. ইমাম তিরমিযি, আস-সুনান, ৬/৩৪ পৃ. হা/৩৬৩৭, ইমাম হাকেম, আল-আল-মুস্তাদরাক, ২/৬৬২ পৃ. হা/৪১৯৪, ইমাম আহমদ, আল-মুসনাদ, ২/১৪৪ পৃ. হা/৭৪৬, ইমাম নাসাঈ, আস-সুনানুল কোবরা, ৮/২০৩ পৃ. হা/৫৩১৪, মুসনাদে আবি ই‘য়ালা, ১/৩০৪ পৃ. হা/৩৭০, ইমাম বাগভী, শরহে সুন্নাহ, ১৩/২২১ পৃ. হা/৩৬৪১, ইমাম খতিব তিবরিযি, মিশকাতুল মাসাবীহ, ৩/১৬১২ পৃ. হা/৫৭৯০, ইমাম বুখারী, আত-তারিখুল কাবীর, ১/৭ পৃ., ইমাম সুয়ূতি, খাসায়েসুল কুবরা, ১/১২৫ পৃ.


হযরত সায়্যিদুনা আবু হুরায়রা (رضي الله عنه)-এর বর্ণনা:

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ؓ، قَالَ: مَا رَأَيْتُ شَيْئًا أَحْسَنَ مِنْ رَسُولِ اللهِ ﷺ ، كَأَنَّ الشَّمْسَ تَجْرِي فِي وَجْهِهِ

হযরত সায়্যিদুনা আবু হুরাইরা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল (ﷺ)’ হতে অধিক সুন্দর কাউকে দেখিনি, সূর্য যেন তাঁর চেহরা মুবারকে প্রবাহমান।’’ 47

  • ৪৭. খতিব তিবরিযি, মিশকাত শরীফ, (৫১৮ পৃষ্ঠা) ৩/১৬১৪ পৃ. হা/৫৭৯৫, ইমাম আহমদ, আল-মুসনাদ, ১৪/৫০৬ পৃ. হা/৮৯৪৩, ইমাম তিরমিযি, আস-সুনান, ৬/৪২ পৃ. হা/৩৬৩৮, ইমাম ইবনে হিব্বান, আস-সহীহ, হা/৬৩০৯, ইমাম বাগভী, শরহে সুন্নাহ, ১৩/২২৬ পৃ. হা/৩৬৪৯, ইমাম সুয়ূতি, খাসায়েসুল কুবরা, ১/১২৫ পৃ.


এক সাহাবী (হযরত ইয়াযিদ বিন আসওয়াদ সুয়াই (رضي الله عنه)) বলেন

فَلَمْ أَرَ شَيْئًا كَانَ أَبْرَدَ وَلَا أَطْيَبَ مِنْ يَدِ رَسُولِ اللهِ ﷺ

-‘‘আমি রাসূলে কারিম (ﷺ)’ হাত মুবারক থেকে শীতল এবং সুগন্ধময় কোন বস্তু দেখিনি।’’ 48

টিকা━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━

  • ৪৮. ইমাম তাবরানী, মু‘জামুল কাবীর, ২২/২৩৬ পৃ. হা/৬১৯, ইমাম হাইসামী, মামযমাউয-যাওয়াইদ, ৮/২৮৩ পৃ. হা/১৪০৫৭, 


❏ ইমাম হায়সামী (রহ.) বলেন-

رَوَاهُ الطَّبَرَانِيُّ فِي الْأَوْسَطِ وَالْكَبِيرِ بِاخْتِصَارٍ وَإِسْنَادُهُ حَسَنٌ.

-‘‘ইমাম তাবরানী তার মুজামুল আওসাত এবং কাবীরে এটি বর্ণনা করেছেন, হাদিসটির মান ‘হাসান’।’’


হযরত সায়্যিদুনা আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه)-এর বর্ণনা:

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: نَهَى رَسُولُ اللَّهِ ﷺ، عَنِ الوِصَالِ قَالُوا: إِنَّكَ تُوَاصِلُ، قَالَ: إِنِّي لَسْتُ مِثْلَكُمْ إِنِّي أُطْعَمُ وَأُسْقَى

-‘‘হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন যে, রাসূল (ﷺ) সাওমে বেছাল পালন করতে নিষেধ করলে সাহাবীগণ আরয করলেন, হে রাসূল (ﷺ)! আপনি তো সাওমে বেছাল পালন করেন, তখন রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, “আমি তোমাদের মত নই, আমাকে পানাহার করানো হয়।49

  • ৪৯.

ক. ইমাম বুখারী, আস-সহীহ, ৩/৩৭ পৃ. হা/১৯৬২

খ. ইমাম আহমদ, আল-মুসনাদ, ৮/৩৪৫ পৃ. হা/৪৭২১

গ. বায়হাকী, আস-সুনানুল কোবরা, ৪/৪৬৬ পৃ. হা/৮৩৭৪

ঘ. বায়হাকী, আস-সুনানুল কোবরা, ৭/৯৮ পৃ. হা/১৩৩৮৪

ঙ. ইমাম আবু আবি দাউদ, আস-সুনান, ২/৩০৬ পৃ. হা/২৩৬০

চ. ইমাম মুসলিম, আস-সহীহ, ২/৭৭৪ পৃ. হা/১১০২


আল্লামা আহমদ কাস্তাল্লানী (رحمة الله) বলেন-

اعلم أن من تمام الإيمان به- صلى الله عليه وسلم- الإيمان بأن الله تعالى جعل خلق بدنه الشريف على وجه لم يظهر قبله ولا بعده خلق آدمى مثله

-“জেনে রেখো, রাসূলে কারীম (ﷺ)’ পবিত্র জিসিম মুবারক এমন ভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে যে, এর সদৃশ পূর্বেও ছিল না পরেও হবে না।50

  • ৫০. ইমাম কাস্তাল্লানী, মাওয়াহেবে লাদুনিয়া, ২/৫ পৃ.

Top