হযরত উমর (রা.)-র ইচ্ছা ও ফয়সালা অনুযায়ী আল-কুরআনের আয়াত নাযিল

<div style="text-align: justify;">💐মুওয়াফিকুর রা'য়ি ওয়াল কিতাব, সাইয়্যিদুনা উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহুর ইচ্ছা ও ফয়সালা অনুযায়ী কুরআনুল করিমে 20'র অধিক আয়াত নাযিল করা হয়- (সুয়ূতী: তারিখুল খুলাফা)</div><div style="text-align: justify;">في موافقات عمر بن الخطاب رضي الله عنه</div><div style="text-align: justify;">قد أوصلها بعضهم إلى أكثر من عشرين. </div><div style="text-align: justify;">أخرج ابن مردويه عن مجاهد قال : كان عمر يرى الرأي فينزل به القرآن. وأخرج ابن عساكر عن علي قال: إن في القرآن لرأيا من رأي عمر. وأخرج عن ابن عمر مرفوعاً: ما قال الناس في شيء وقال فيه عمر إلا جاء القرآن بنحو ما يقول عمر. </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">💐হযরত উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুর অভিমতের সাথে কোরআনের ঐকমত্য:</div><div style="text-align: justify;">কেউ কেউ তা বিশের অধিক আয়াত বলেছেন। </div><div style="text-align: justify;">ইমাম আবু বকর ইবনে মারদুওয়ায় ইমাম মুজাহিদ থেকে বর্ণনা করেন, হযরত উমার রাঃ যে রায় দিতেন অনুরূপভাবেই কোরআন শরিফের আয়াত অবতীর্ণ হতো । </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">🌹ইমাম ইবনে আসাকির হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুর অভিমত নকল করে লিখেছেন, কোরআন শরিফে অধিকাংশ হযরত উমরের রায় (অভিমত) উল্লেখ রয়েছে। হযরত ইবনে উমর কর্তৃক মারফুআন বর্ণিত, কতিপয় বিষয়ে লোকদের মতামতের সাথে হযরত উমর ভিন্ন মত পোষণ করলে হযরত উমরের অভিমতের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আয়াত অবতীর্ণ হতো। </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">🌹আল্লামা সুয়ূতি এরপর সাইয়্যিদুনা উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুর ইচ্ছা, রায় ও অভিমতের আলোকে কোরআনুল কারিমের যে 20টি আয়াত নাযিল হয় তার বিস্তারিত উল্লেখ করেন। এখানে আমি সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরছি।</div><div style="text-align: justify;">-------</div><div style="text-align: justify;">👉এক- মাকামে ইবরাহিমকে নামাযের স্থান বানানোর হুকুম। হযরত উমারের ইচ্ছার আলোকে আয়াত নাযিল হয়</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"> واتخذوا من مقام إبراهيم مصلی </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">👉দুই- মুসলিম মহিলাদের পর্দার বিধান। উনার অভিমত অনুসারে আল্লাহ্ পাক এরপর পর্দার আয়াত অবতীর্ণ করেন-</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"> يأيها النّبي قل لأزوجك وبناتك ونساء المؤمنين يدنين عليهن من جلابيبهن ذلك اذين أن يعرفن فلا يؤذين </div><div style="text-align: justify;">وكان الله غفورا رحیما . </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">👉তিন- হুযুর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম হযরত মারিয়া কিবতিয়াহর কাছে গেলে হুযুরের কোন কোন বিবির অপছন্দ হলে তখন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন আমি বললাম,</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">عسى ربه إن طلقكن أن يبدله أزواجا خيرا منكن </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">উমার বলেন, অতঃপর আমার উল্লিখিত শব্দগুলোই হুবহু অবতীর্ণ হয়। </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">👉চার- বদর যুদ্ধের কয়েদিদেরকে কতল করার অভিমত দিলে উনার রায়কে সমর্থন করে এই আয়াত নাযিল হয়।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">نازل ہوئی۔ ما كان لنبئ أن يكون له أسرى حتى يثخن في الأرض تريدون عرض الدنيا و الله يريد الأخرة والله </div><div style="text-align: justify;">عزیز حکیم ۔ </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">👉পাঁচ- সাইয়্যিদুনা উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু মদ ও জুয়ার ব্যাপারে হুযুরের দরবারে নির্দেশনা চাইলে আল্লাহ্ তায়ালা এই আয়াত নাযিল করেন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">يسئلونك عن الخمر الميسر قل فيهما اثم كبير </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">👉ছয়- নেশাগ্রস্থ অবস্থায় একলোক নামায পড়াচ্ছিল এবং কোরআন আয়াতে ভুল করেছিল, তখন হুযুরের দরবারে এই ব্যাপারে নির্দেশনা চাইলে এই আয়াত নাযিল হয়।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">يأيها الذين امنوا لا تقربوا الصلوة وانتم سکاری ۔ </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">👉সাত- মদ, জুয়া, ভুত ও ফাঁসি সম্পর্কে আয়াত নাযিল। সাইয়্যিদুনা উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু আল্লাহর দরবারে মদ ও জুয়ার ব্যাপারে সুস্পষ্ট হুকুম বর্ণনার জন্য দুআ করতেন। উনার দুআর পরিপ্রেক্ষিতে এই আয়াত নাযিল হয়,</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">پائها الذين امنوا انما الخمر والميسر و الأنصاب والأزلم رجس من عمل الشيطن فاجتنبوه لعلكم تفلحون‘۔ </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">👉আট- আল্লাহর ঘোষণা:</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ولقد خلقنا الإنسن من سلالة من طین </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এই আয়াত নাজিল হওয়ার পর সাইয়্যিদুনা উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুর মুখে এমনিতেই উচ্চারিত হলো, </div><div style="text-align: justify;"> </div><div style="text-align: justify;">فتبرك الله أحسن الخلقين‘۔</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">-"আর আল্লাহ্ পাক উক্ত কথাকেই কোরআনুল কারিমে অন্তর্ভুক্ত করে নিলেন।"</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">👉নয়- মুনাফিক আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের জানাযা সম্পর্কে হযরত উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু হুযুর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লামাকে জিজ্ঞেস করেন, হুযুর জানাযার নামায পড়ানোর কিছুক্ষণ পর সাইয়্যিদুনা উমারের চাওয়া অনুযায়ী এই আয়াত নাযিল হয়।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ولا تصل على أحد منهم مات ابدا ولا تقم على قبره </div><div style="text-align: justify;">انهم كفروا بالله ورسوله وماتوا وهم فسقون ، </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">👉দশ- রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম একটি সম্প্রদায়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলে হযরত উমার বললেন سواء عليهم তখন হুবহু এ আয়াতটিই নাযিল হয়।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">''سواء عليهم استغفر لهم أم لم تستغفر لهم لن يغفر الله لهم إن الله لايهدي القوم الفسقين </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">👉এগার- বদরের যুদ্ধে গমনের জন্য সাহাবায়ে কিরামের সাথে পরামর্শ করা হলে হযরত উমার যুদ্ধে যাওয়ার পরামর্শ দিলে তখন এই আয়াত নাযিল হয়।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">کیا آخرجك ربك من بيتك بالحق وإن فريقا من المؤمنين تكرهون ، </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">👉বার- সাইয়্যিদাহ আয়েশা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু আনহার বিরুদ্ধে মুনাফিক গোষ্ঠী অপবাদ লেপন করলে হযরত উমার বলেছিলেন, এটা সাইয়্যিদাহ আয়েশার উপর বড় অপবাদ। আর আল্লাহ্ তায়ালা উনার কথা অনুযায়ী আয়াত নাযিল করলেন। </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ولولا إذ سمعتموة قلتم ما يكون لنا أن تتكلم بهذا سبحتك بهذا بهتان عظیم، </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">👉তের- ইসলামের শুরুতে রমাদ্বান মাসে স্ত্রী সহবাস অবৈধ ছিলো। সাইয়্যিদুনা উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু এই ব্যাপারে কিছু বললেন, তারপর থেকে স্ত্রী সহবাস বৈধ করে এই আয়াত নাযিল হয়।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">احل لكم ليلة القيام الرقتُ إلى نسائكم هن لباس لكم وأنتم لباس لهن، </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">👉চৌদ্দ- এক ইয়াহুদি হযরত জিবরীল আমিনকে দুশমন হিসেবে উল্লেখ করলে হযরত উমার তখন এই কথাগুলো বলেন,</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">من كان عدوا للہ وملئكته ورسله وجبريل وميكل فإن الله عدو الكفرين ،</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">তখন রাব্বুল আলামিন কুরআনের বাণী হিসেবে হুবহু ঐ কথাগুলো নাযিল করেন। </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">👉পনের- মুনাফিক কাব বিন আশরাফ হুযুর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লামার বিচার না মেনে উমারের কাছে গেলে হযরত উমার তাকে হুযুরের ফায়সালা না মানার কারণে হত্যা করেন। তখন হযরত উমারের কাজকে সঠিক প্রমাণ করে এই আয়াত নাযিল হয়।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">’فلا وربك لا يؤمنون حتى يحكموك فيها شجر بينهم ثم لا يجدوا في أنفسهم حرجا مما قضيت ويسلموا تسليا. </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">👉ষোল- হযরত উমার ঘরে শয়ন অবস্থায় উনার এক গোলাম অনুমতি ছাড়া ঘরে প্রবেশ করলে তিনি আল্লাহর দরবারে দুআ করেন, রাব্বুল আলামিন অনুমতি ছাড়া ঘরে প্রবেশ করা হারাম করে দিন, তখন এই আয়াত নাযিল হয়।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">”یا ایھا الذين امنوا لا تدخلوا بيوتا غير بيوتكم حتى تستأنسوا وتسلموا على أهلها ذيكم خير لكم لعلكم تذکرون “ </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">👉সতের- এক ব্যক্তির গোনাহের কারণে এই আয়াত নাযিল হলে </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">- وأقم الصلوة طرفي النهار وزلفا من اليل إن الحسنت يذهبن السيات ذلك ذکری للذکرین “ </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ঐ ব্যক্তি হুযুরকে জিজ্ঞেস করলেন, এই আয়াতের হুকুম তার জন্য খাস নাকি? তখন ফারুকে আযম বললেন, এটা তোমার জন্য খাস নয়, এর হুকুম সকলের জন্য। আর রাছূলে কারিমও তাঁর কথার সমর্থন জানালেন। খাসকে আম করে দিলেন। </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">👉আঠার- আল্লাহর ঘোষণা: </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ثلة من الأولين و قليل من الأخرين</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">-এই আয়াত শুনে হযরত উমার প্রিয় রাসূলকে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ প্রথমদের একটি পুরো গ্রুপ আর শেষের কিছু মানুষ বেহেস্তে যাবে? তখন উনার আরজি অনুসারে এই আয়াত নাযিল হয়।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"> وثلة من الأولين وثلة من الأخرين </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ প্রথমদের একটি গ্রুপ এবং শেষের একটি গ্রুপ বেহেস্তে যাবে। </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">👉উনিশ- সাইয়্যিদুনা উমার ইসলাম গ্রহণ করলে মক্কার কাফিররা বলল, আজ আমাদের শক্তি অর্ধেক হয়ে গেল, তখন আল্লাহ্ তায়ালা উনার ব্যাপারে এই আয়াত নাজিল করেন,</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"> يايها النّبي حسبك الله ومن اتبعك من المؤمنين . </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">👉বিশ- সাইয়্যিদুনা বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু ইসলামের প্রাথমিক অবস্থায় আযানে,</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"> أشهد أن لا إله إلا الالله۔</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">পর حي على الصلاة বলতেন। হযরত উমাররাঃ বললেন, বিলাল أشهد أن لا إله إلا الله۔ পরে أشهد أن محمدا رسول الله বলো। হুযুর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম তা শুনে বিলালকে বললেন, হে বেলাল উমার তোমাকে যেভাবে হুকুম দিয়েছে, সেভাবে করো। (সুবহানাল্লাহ) </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">Collected from Gias Uddin.</div><div style="text-align: justify;">🤲মহান আল্লাহ তা'আলা সবাইকে বুঝার তৌফিক দান করুন, আমিন। </div><div style="text-align: justify;">👍শব্দচয়নের ক্ষেত্রে যে সকল বন্ধুরা সুপরামর্শ দিয়েছেন তাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। অবশ্যই তাদের এই পরামর্শ অনুসরণ করা হবে ইনশাআল্লাহ।</div><div style="text-align: justify;">📢প্রচারে অধম- মুফ্তী মুহাম্মদ আলাউদ্দিন জেহাদী, নারায়ণগঞ্জ।</div>

হযরত উমর (রা.)-র ইচ্ছা ও ফয়সালা অনুযায়ী আল-কুরআনের আয়াত নাযিল

💐মুওয়াফিকুর রা'য়ি ওয়াল কিতাব, সাইয়্যিদুনা উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহুর ইচ্ছা ও ফয়সালা অনুযায়ী কুরআনুল করিমে 20'র অধিক আয়াত নাযি...

Read more »