রমজানে করণীয় ও বর্জনীয়

<div style="text-align: justify;">রমজানে করণীয় ও বর্জনীয়</div><div style="text-align: justify;">মাওলানা মুহাম্মদ মামুন </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের ক্ষমা ও পুরস্কারপ্রাপ্তির মহিমান্বিত মুহূর্তগুলো আমাদের জীবনে বারবার ঘুরেফিরে আসে। রমজান হলো কল্যাণ ও বরকতের বসন্তকাল। এই মহিমান্বিত রমজানের উপকারিতা ও বরকত পরিপূর্ণরূপে লাভ করার জন্য এ মাসের করণীয় কাজগুলো মহব্বতের সাথে আঞ্জাম দেওয়া এবং বর্জনীয় বিষয়গুলো থেকে সতর্কভাবে বিরত থাকা জরুরি। কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে এ মাসের করণীয় বিষয়গুলো তুলে ধরা হচ্ছে।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এক. রোযা রাখা</div><div style="text-align: justify;">আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, হে ঈমানদারগণ, তোমাদের ওপর রোযা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যেন তোমরা মুত্তাকী হতে পারো।-সূরা বাকারা (০২) : ১৮৩</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">হযরত আবু হুরায়রা রাদি. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যখন তোমরা রমজানের চাঁদ দেখবে তখন রোযা রাখবে। যখন শাওয়ালের চাঁদ দেখবে তখন থেকে রোযা বন্ধ করবে। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে ত্রিশ দিন রোযা রাখবে।-সহীহ বুখারী : ১৯০৯</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অপর এক হাদীসে এসেছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, রোযা আমার জন্য, আমি নিজেই এর প্রতিদান দেবো।... কেয়ামতের দিন রোযাদারদের জন্য একটি বিশেষ হাউজ থাকবে, যেখানে রোযাদার ব্যতীত অন্য কারও আগমন ঘটবে না।-মুসনাদে বায্যার : ৮১১৫</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">রমজানের রোযা প্রত্যেক সুস্থ, মুকীম প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ এবং হায়েয-নেফাসমুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক নারীর ওপর ফরজ। শরয়ী ওযর ছাড়া এ মাসের একটি রোযাও কোনো মুসলমান ইচ্ছাকৃতভাবে না রাখলে জঘন্য অপরাধী সাব্যস্ত হবে। দীনের মৌলিক বিধান লঙ্ঘনকারী ও ইসলামের ভিত্তি বিনষ্টকারী হিসাবে গণ্য হবে এবং কঠিন শাস্তির উপযুক্ত হবে।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">হাদীস শরীফে এসেছে, হযরত আবু উসামা রাদি. বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। স্বপ্নে দেখলাম আমার কাছে দুই ব্যক্তি আগমন করেছে। তারা আমার বাহুদ্বয় ধরে এক দুর্গম পাহাড়ে নিয়ে গেল। আমাকে বলল, আপনি পাহাড়ে উঠুন।</div><div style="text-align: justify;">আমি বললাম, আমি তো উঠতে পারব না।</div><div style="text-align: justify;">তারা বলল, আমরা আপনাকে উপরে ওঠা সহজ করে দেবো।</div><div style="text-align: justify;">আমি উপরে উঠলাম। যখন পাহাড়ের সমতলে পৌঁছলাম, হঠাৎ ভয়ঙ্কর আওয়াজ শুনতে পেলাম। বললাম, এসব কিসের আওয়াজ?</div><div style="text-align: justify;">তারা বলল, এটা জাহান্নামীদের আর্তনাদ।</div><div style="text-align: justify;">তারপর আমাকে নিয়ে এগিয়ে চলল। হঠাৎ কিছু লোক দেখতে পেলাম, যাদেরকে তাদের পায়ের মাংসপেশি দ্বারা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তাদের মুখের দুই প্রান্ত ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে এবং তা থেকে রক্ত ঝরছে।</div><div style="text-align: justify;">আমি বললাম, এরা কারা?</div><div style="text-align: justify;">তারা বলল, যারা ইফতারের সময় হওয়ার আগেই রোযা ভেঙে ফেলে।-মুসতাদরাকে হাকেম : ১, হাদীস নং : ১৬০০</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">দুই. তারাবীহ নামাজ পড়া</div><div style="text-align: justify;">বরকতময় মাহে রমজানের দিন-রাত উভয়টিই মূলত ইবাদতের জন্য। দিনের ইবাদত হলো রোযা যা শরীয়তে ফরজ, আর রাতের ইবাদত হলো তারাবীহ নামাজ যা সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। এ আমল ফরজ না হলেও এর ফযীলত ও মর্যাদা অনেক। হযরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি পূর্ণ ঈমান ও বিশ্বাসের সাথে সওয়াবের আশায় রমজানের রাতে তারাবীহ আদায় করে তার পূর্ববর্তী গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।-সহীহ বুখারী : ২০০৯</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আওফ রাদি. বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলা তোমাদের ওপর রমজানের রোযা ফরজ করেছেন। আর আমি কিয়ামুল লাইল তথা তারাবীহ সুন্নত করেছি। সুতরাং যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় রমজানের রোযা ও তারাবীহ আদায় করবে সে ওই দিনের মতো নিষ্পাপ হয়ে যাবে যেদিন সে মাতৃগর্ভ থেকে সদ্য ভূমিষ্ঠ হয়েছিল। (মুসনাদে আহমদ : ১৬৬০) </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">রমজানের পূর্ণ কল্যাণ ও বরকত লাভ করতে হলে তারাবীর ব্যাপারে অবশ্যই যত্মবান হতে হবে।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">তিন. কোরআন তেলাওয়াত করা</div><div style="text-align: justify;">রোযা এবং রমজানের সঙ্গে কোরআনের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এ জন্যই রমজানে কোরআন নাযিল হয়েছে এবং এ জন্যই নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মুবারাকে কোরআন তেলাওয়াতের খুব গুরুত্ব দিতেন। এ প্রসঙ্গে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদি. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সবচেয়ে বেশি দানশীল ও বদান্য, রমজানে তাঁর দানশীলতা ও বদান্যতা অনেক বেড়ে যেত। প্রত্যেক রমজানে জিবরাঈল আ. তাঁর সঙ্গে মিলিত হতেন এবং পুরো কোরআন একে অপরকে শোনাতেন।-সহীহ বুখারী : ০৬</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">মূলত এই সুন্নতের ভিত্তিতেই তারাবীর মাধ্যমে মুসলমানরা সারা রমজানে একবার পুরো কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করে এবং শোনে। নামাজের বাইরেও নিজেরা কোরআন খতম করে। যারা রমজান মাসে কোরআন তেলাওয়াতে ব্যস্ত থাকে তাদের ব্যাপারে সুসংবাদ এসেছে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাদি. থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, রোযা এবং কোরআন কিয়ামতের দিন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোযা বলবে, হে রব, আমি তাকে খাদ্য এবং যৌন সম্ভোগ থেকে বিরত রেখেছি, অতএব তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। কোরআন বলবে, আমি তাকে রাতের ঘুম থেকে বিরত রেখেছি (অর্থাৎ না ঘুমিয়ে সে তেলাওয়াত করেছে) অতএব তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তাদের উভয়ের সুপারিশ গ্রহণ করা হবে।-মুসনাদে আহমাদ : ৬৬২৬</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">চার. সাহরী খাওয়া</div><div style="text-align: justify;">রোযার প্রস্তুতির জন্য যে আহার করা হয় তার নাম সাহরী। সাহরী খাওয়া সুন্নত। পেট ভরে খাওয়া জরুরি নয়, এক ঢোক পানি পান করলেও সাহরীর সুন্নত আদায় হয়ে যাবে। হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা সাহরী খাও। কেননা, সাহরীতে বরকত রয়েছে।-সহীহ মুসলিম : ১০৯৫</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অন্য হাদীসে এসেছে, সাহরী খাওয়া বরকতপূর্ণ কাজ। সুতরাং তা ছেড়ে দিয়ো না। যদিও তা এক ঢোক পানি দিয়ে হোক না কেন। কেননা, যারা সাহরী খায় আল্লাহ তাআলা তাদের ওপর রহমত বর্ষণ করেন এবং তাঁর ফেরেশতাগণ তাদের জন্য রহমতের দুআ করেন।-মুসনাদে আহমাদ : ১০৭০২</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">সুবহে সাদেকের কাছাকাছি সময়ে সাহরী খাওয়া মুস্তাহাব। তবে এত দেরি করা মাকরূহ- যে সুবহে সাদেক হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা হয়।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">পাঁচ. ইফতার করা</div><div style="text-align: justify;">সারা দিন রোযা রাখার পর সূর্য ডোবার সঙ্গে সঙ্গে যে আহার করা হয় তার নাম ইফতার। এটা শরীয়তে অনেক বড় একটি আমল। এ আনন্দপূূর্ণ আমলের জন্য ঘোষণা করা হয়েছে বড় পুরস্কার। ইফতার যেহেতু অনেক বরকতের তাই এই বরকতপূর্ণ আমল শুরু করতে বিলম্ব করতে নিষেধ করা হয়েছে।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, লোকেরা যতদিন প্রথম সময়ে ইফতার করার বিষয়ে যত্নবান হবে ততদিন তারা কল্যাণের পথে থাকবে।-সহীহ বুখারী : ১৯৫৭</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ইফতার খেজুর দ্বারা করা মুস্তাহাব। খেজুর না পেলে পানি দ্বারা ইফতার করবে। হযরত আনাস ইবনে মালেক রাদি. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাগরিবের নামাজ পড়ার আগে তাজা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। তাজা খেজুর না পেলে শুকনা খেজুর দ্বারা ইফতার করতেন। আর তাও না পেলে এক ঢোক পানি দ্বারা ইফতার করতেন।-জামে তিরমিযী : ৬৯২</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">সাহরী ও ইফতার তখনই বরকতপূর্ণ হবে যখন এ ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি পরিহার করে পূর্ণ সংযম রক্ষা করা হবে। কিন্তু আমাদের রমজান ও সাহরী-ইফতারের অবস্থা কী একটু চিন্তা করে দেখি!</div><div style="text-align: justify;">পানাহারের সংযমের মাসে, উপবাসের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের মাসে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য আগুনের মত দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠার কারণ কী? আমাদের সমাজে ইফতার কেন পার্টিতে রূপান্তরিত হলো?</div><div style="text-align: justify;">এখন ইফতারের সমস্ত নূর থেকে বঞ্চিত হয়, কারণ যে ইফতার ছিল আল্লাহর নবীর একটি প্রিয় সুন্নত তা আজ হয়ে পড়েছে ভোজ-অনুষ্ঠান। যেন সারা দিনের উপবাসের মূল্য এখন কড়ায়গন্ডায় উসুল করে নিতে হবে।</div><div style="text-align: justify;">স্ত্রী লোকদের অবস্থা আরও করুণ। প্রত্যেক পরিবারে স্ত্রী লোকদের আছর থেকে মাগরিব পুরো সময়টুকু চলে যায় ইফতারের আয়োজনে। এমন কি ইফতারের পূর্বে যে দুআ কবুলের সময় তখন একটু একাগ্রচিত্তে দুআ করারও তাদের অবসর হয় না। অবশ্য যে স্ত্রীলোক পুরুষের পক্ষ থেকে চাপের কারণে এটা করে তার দায় পুরুষকেই বহন করতে হবে। আর স্ত্রীলোকেরা যদি (অপারগতার কারণে) রান্না ঘরেই তাদের মাওলাকে মনে মনে ডেকে নেয় তিনি তাদের ডাকে ইনশাআল্লাহ সাড়া দেবেন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ছয়. রোযাদারকে ইফতার করানো</div><div style="text-align: justify;">হযরত যায়েদ ইবনে খালেদ রাদি. থেকে বর্র্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি কোনো রোযাদারকে ইফতার করাবে, সে তার (রোযাদারের) অনুরূপ প্রতিদান লাভ করবে। তবে রোযাদারের প্রতিদান থেকে বিন্দুমাত্রও হ্রাস করা হবে না।-সুনানে তিরমিযী : ৮০৭</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">সাত. তাওবা-ইস্তিগফার করা</div><div style="text-align: justify;">আল্লাহ তাআলা এ মাসে অসংখ্য জাহান্নামীকে মুক্তি দান করেন। যেমন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ এ মাসের প্রতিরাতে অসংখ্য জাহান্নামীকে মুক্তি দান করেন।-মুসনাদে আহমাদ : ১৮৭৯৪</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">সুতরাং আমাদের কর্তব্য তাওবা-ইস্তিগফার করা। কেননা, যে ক্ষমা চায় তাওবা করে তাকেই আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। অন্য কাউকে নয়।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">আট. দুআ করা</div><div style="text-align: justify;">রোযার মাধ্যমে মুমিন বান্দা আল্লাহর এতই নৈকট্য অর্জন করে যে, যতক্ষণ সে রোযা অবস্থায় অথবা রোযার প্রস্তুতির অবস্থায় থাকে (অর্থাৎ রাত-দিন) ততক্ষণ তার কোনো দুআ ফেরত দেওয়া হয় না, সমস্ত দুআ কবুল করা হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, প্রত্যেক মুসলিম (রমজানে) যে দুআ করে তা কবুল করা হয়।-মুসনাদে বায্যার : ৩১৪১</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এ মাস দুআ কবুলের মাস। তাই আমাদের উচিত বেশি বেশি দুআ করা।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">নয়. ইফতারের আগ মুহূর্তে দুআ করা</div><div style="text-align: justify;">ইফতারের সময় দুআ কবুল হয়। আব্দুল্লাহ ইবনে মুলাইকা বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাদি. থেকে শুনেছি তিনি বলছেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ইফতারের সময় রোযাদারের একটি দুআ কবুল করা হয়।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">আব্দুল্লাহ ইবনে মুলাইকা বলেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমরকে ইফতারের সময় এ দুআ করতে শুনেছি, আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বি রাহমাতিকা আল্লাতি ওসিআত কুল্লা শায়ইন আন তাগফিরলি’। অর্থাৎ, হে আল্লাহ, আমি তোমার দরবারে সেই রহমতের উসিলায় আবেদন করছি যা সকল বস্তুকে বেষ্টন করে রেখেছে, তুমি আমাকে মাফ করে দাও। (মুসতাদরাকে হাকেম : ১/৫২৯, হাদীস নং : ১৫৬৭) </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইফতারের সময় আল্লাহর কাছে এ দুআ করতেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং : ১৭৫৩)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">বর্জনীয়</div><div style="text-align: justify;">কোরআন-সুন্নাহ ও আসারে সাহাবার (সাহাবায়ে কেরামের বাণী) আলোকে রমজানের করণীয় উল্লেখ করা হলো। এখন বর্জনীয় বিষয়গুলো আমরা জেনে নেব। গোনাহ থেকে সর্বাবস্থায় বেঁচে থাকতে হবে। তবে রোযার অবস্থায় তা আরও বেশি জরুরি। কারণ, গোনাহের কারণে রোযার ফলাফল বরবাদ হয়ে যায়। রোযার ফরজ আদায় হয়ে যায় কিন্তু রোযার নূর ও রুহানিয়াত একেবারে বরবাদ হয়ে যায়। নিম্নে কিছু গোনাহের বিবরণ তুলে ধরা হচ্ছে যেগুলোর আলোচনা হাদীস শরীফে এসেছে।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এক.</div><div style="text-align: justify;">অশ্লীল কথা না বলা এবং শোরগোল না করা</div><div style="text-align: justify;">রোযা অবস্থায় অশ্লীল কথাবার্তা, শোরগোল ও ঝগড়া-ফ্যাসাদ থেকে বিরত থাকা জরুরি। হাদীস শরীফে এসেছে, তোমাদের কেউ যখন রোযা অবস্থায় থাকে তখন যেন অশ্লীল কথা না বলে এবং শোরগোল না করে। আর কেউ যদি তার সঙ্গে ঝগড়া করে, গালি দেয়, তা হলে সে যেন শুধু বলে দেয়, আমি তো রোযাদার। (অর্থাৎ তোমার সাথে বিবাদ করার এবং গালির জবাব দেওয়ার সুযোগ আমার নেই।)-সহীহ বুখারী : ১৯০৪</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অপর এক হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কত রোযাদার এমন আছে, (রোযা অবস্থায় অশ্লীল কথা ও কর্ম থেকে বিরত না থাকার ফলে) ক্ষুধা ও পিপাসা ছাড়া রোযা থেকে সে আর কিছু লাভ করতে পারে না। তদ্রƒপ অনেক রাত জাগরণকারী এমন আছে যে তার রাত্রিজাগরণ থেকে জেগে থাকার কষ্ট ছাড়া আর কিছু পায় না।-সুনানে ইবনে মাজাহ : ১৬৯০</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">দুই.</div><div style="text-align: justify;">মিথ্যা কথা না বলা</div><div style="text-align: justify;">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও ইরশাদ করেছেন, যে রোযা রেখেছে অথচ মিথ্যাচার পরিহার করেনি, তার এই কৃত্রিম পানাহার বর্জনের কোনো প্রয়োজন আল্লাহর নেই।-সহীহ বুখারী : ১৯০৩</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">তিন.</div><div style="text-align: justify;">অনর্থক কথা বা কাজ না করা</div><div style="text-align: justify;">হযরত আবু হুরায়রা রাদি. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, রোযা শুধু পানাহার বর্জন করার নাম নয়; বরং রোযা হলো অনর্থক কথা ও কাজ এবং অশ্লীল কথা বর্জন করা।-মুসতাদরাকে হাকেম : ১/৫৩৯, হাদীস নং : ১৬০২</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">চার.</div><div style="text-align: justify;">গীবত না করা</div><div style="text-align: justify;">হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দরবারে দুজন মহিলা উপস্থিত হয়ে (দরজার বাইরে থেকে) অভিযোগ করল, রোযার কারণে তাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। পিপাসার কারণে প্রাণ ওষ্ঠাগত প্রায়। এ অবস্থা শুনে তিনি লোকমারফতে তাদের বমি করার আদেশ দিলেন। দেখা গেল, গোশতের টুকরা ও তাজা রক্ত বের হচ্ছে। সাহাবায়ে কেরাম রাদি. অবাক হলেন। তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এরা হালাল খাদ্য দ্বারা সাহরী করে রোযা রেখেছে, কিন্তু রোযা অবস্থায় হারাম খেয়েছে। অর্থাৎ মানুষের গীবত করেছে। আর গীবত করার অর্থ হলো মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া।-মুসনাদে আহমাদ : ২৩৬৫৩</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এ হাদীস দ্বারা বোঝা যায়, গীবত ও অন্যান্য গোনাহ দ্বারা রোযার কষ্ট অনেক বেড়ে যায়। এ কারণেই দেখা যায় আল্লাহর নেক বান্দারা রোযার তেমন কোনো কষ্ট অনুভব করেন না; বরং তারা অনেক আত্মিক, এমনকি দৈহিক শান্তি লাভ করে থাকেন। পক্ষান্তরে যারা গীবত করে এবং বিভিন্ন গোনাহে লিপ্ত থাকে তারা রোযার কারণে বেশ কাহিল হয়ে পড়ে। ফলে বিভিন্ন বাহানা করে রোযা থেকে রেহাই পেতে চায়। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাঁর সন্তুষ্টি মোতাবেক রমজান কাটানোর তাওফীক দান করুন। আমীন।</div>

রমজানে করণীয় ও বর্জনীয়

রমজানে করণীয় ও বর্জনীয় মাওলানা মুহাম্মদ মামুন  আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের ক্ষমা ও পুরস্কারপ্রাপ্তির মহিমান্বিত মুহূর্তগুলো আমাদের জীবনে বারবার ...

Read more »

একনজরে মাহে রমজানে করণীয় ও বর্জনীয়

<div style="text-align: justify;">আল্লাহ তায়ালা সর্বপ্রকার শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে রমজান মাসকে মহিমান্বিত করেছেন। কিন্তু এই শ্রেষ্ঠত্বকে আমরা ক’জন অনুভব করি। একটি রমজান জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া মানে অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত হওয়া। আবার একটি রমজান লাভ করা মানে জীবনে বিশাল কিছু অর্জন করা।<br></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">রমজানের ফজিলত</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">১. আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘রমজান মাস হলো সে মাস, যাতে নাজিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্য পথযাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথনির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মধ্যে পার্থক্য বিধানকারী।’ (সুরা বাকারা : ১৮৫)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">২. এ মাসে এমন একটি রাত রয়েছে তা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। আল্লাহ বলেন, ‘শবেকদর সমন্ধে আপনি কি জানেন? শবেকদর হলো এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।’ (সুরা কদর : ২,৩)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">৩. রমজান এলে আসমানের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর শয়তানগুলোকে শিকলবন্দি করে দেওয়া হয় এবং এই মাসের প্রতি রাতে অসংখ্য জাহান্নামিকে মুক্তি দেওয়া হয়। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যখন রমজান মাসের প্রথম রাত আসে, তখন শয়তান ও অভিশপ্ত জিনদের শৃঙ্খলিত করা হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়, তার একটি দরজাও খোলা হয় না, জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, এর একটি দরজাও বন্ধ হয় না এবং একজন ঘোষক ডেকে বলেন, হে সৎকর্মপরায়ণ ব্যক্তি! অগ্রসর হও, হে অসৎকর্মপরায়ণ! থেমে যাও। আল্লাহ (রমজানের) প্রতিটি রাতে অসংখ্য লোককে জাহান্নাম থেকে নাজাত দেন।’ (বোখারি : ১৮৯৮)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">রোজাদারের ফজিলত</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">১. রোজাদারের প্রতিদান আল্লাহ নিজ হাতে দেবেন। রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, বনি আদমের প্রতিটি কাজ তার নিজের জন্যই। শুধু সওম ব্যতীত; তা আমার জন্য, আমি নিজেই তার পুরস্কার দেব। (বোখারি : ৫৯২৭)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">২. রোজাদারের জন্য জান্নাতে স্পেশাল গেট থাকবে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘জান্নাতের একটি প্রবেশদ্বার রয়েছে, যার নাম ‘রাইয়ান’। কেয়ামতের দিন ওই দ্বার দিয়ে সিয়াম পালনকারীরা প্রবেশ করবে। তারা ছাড়া আর কেউই ওই দ্বার দিয়ে প্রবেশ করবে না। সিয়াম পালনকারীরা প্রবিষ্ট হয়ে গেলে দ্বাররুদ্ধ করা হবে। ফলে সে দ্বার দিয়ে আর কেউই প্রবেশ করবে না।’ (বোখারি : ১৮৯৬)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">৩. রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর কাছে মিশক আম্বরের চেয়েও অধিক প্রিয়। রাসুল (সা.) বলেন, ‘ওই সত্তার শপথ, যার হাতে আমার জীবন, সাওম পালনকারীর মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহ তায়ালার কাছে মিশকের সুগন্ধি থেকে বেশি পছন্দনীয়। (নাসায়ি : ২২১৩)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">৪. রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দময় মুহূর্ত রয়েছে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘সিয়াম পালনকারীর জন্য দুটি আনন্দ রয়েছে। একটি হলোÑ যখন সে ইফতার করে তখন আনন্দিত হয়, অপরটি হলোÑ যখন সে মহান আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, তখন সে আনন্দিত হবে।’ (মুসলিম : ২৫৯৮)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">৫. রোজাদার শয়তানের আক্রমণ থেকে নিরাপদ থাকে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘রোজা (সব ধরনের অশ্লিল ও মন্দ কাজের) ঢালস্বরূপ।’ (বোখারি : ১৯০৪)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">৬. কেয়ামতের দিন রোজা স্বয়ং রোজাদারের জন্য সুপারিশ করবে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘কেয়ামতের দিন সিয়াম এবং কোরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে।’ সিয়াম বলবে, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমি তাকে পানাহার ও যৌনকর্ম থেকে বিরত রেখেছিলাম। সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। আর কোরআন বলবে, ‘আমি তাকে রাত্রে নিদ্রা থেকে বিরত রেখেছিলাম। সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন।’ নবীজি বলেন, ‘অতএব, ওদের উভয়ের সুপারিশ গৃহীত হবে।’ (আহমাদ : ৬৬২৬)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">৭. রোজা রাখার মাধ্যমে আগের সব গোনাহ মাফ হয়ে যায়। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানসহ সওয়াবের আশায় রমজানে সিয়াম পালন করবে, তারও অতীতের সব গোনাহ মাফ করা হবে।’ (বোখারি : ১৯০১)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">রমজান আগমনের উদ্দেশ্য</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">১. রমজানের সবচেয়ে বড় উদ্দেশ্য হলো, তাকওয়া অর্জন করা। আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদাররা! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর, যেন তোমরা পরহেজগারি অর্জন করতে পার।’ (সুরা বাকারা : ১৮৩)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ওমর (রা.) ইবনে কা’ব (রা.) কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তাকওয়া কি জিনিস? তিনি বললেন, ‘আপনি যদি কাঁটাযুক্ত কোনো পথ দিয়ে হেঁটে যান, তাহলে কীভাবে যাবেন? তিনি বললেন, খুবই সতর্কতার সঙ্গে চলব, যাতে শরীরে কাঁটা না ফুটে। তিনি বললেন, এটাই তাকওয়া।’ সুতরাং খুবই সতর্কতার সঙ্গে নিজের চোখে, কান, জিহ্বাসহ অন্য সব অঙ্গকে আল্লাহর নাফরমানি থেকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। জাবের (রা.) বলেন, তুমি যখন রোজা রাখো, তোমার কান, চক্ষু ও জিহ্বাও যেন রোজা রাখে। (ইবনে আবি শাইবা : ৮৮৫২)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">২. ধৈর্যধারণ করতে শেখা। অন্য অর্থে সংযমী হওয়া। ধৈর্য তিন প্রকার : ১. সৎকাজ পালনে ধৈর্য ধারণ। ২. অসৎকাজ থেকে বিরত থাকতে ধৈর্য ধারণ ৩. বিপদ-আপদে ধৈর্য ধারণ। রোজার মাধ্যমে তিন প্রকার ধৈর্যের অনুশীলন করে নিজের জীবনে প্রতিফলন ঘটানোর চেষ্টা করা।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">৩. কৃত গোনাহগুলো মাফ করিয়ে নেওয়া। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমার কাছে জিবরাইল (আ.) এসে বললেন, যে ব্যক্তি রমজান পেল, অথচ তার গোনাহ মাফ হয়নি, সে জাহান্নামে প্রবেশ করুক, আল্লাহ তাকে দূরে ঠেলে দিক। বলুন, আমিন। আমি বললাম, আমিন। (তারগিব : ১৬৭৯)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">রমজানে করণীয়</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">১. সবগুলো রোজা গুরুত্বের সঙ্গে যথাযথভাবে পালন করার ব্যাপারে দৃঢ়সংকল্প করা।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">২. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">৩. তারাবির নামাজ গুরুত্ব সহকারে আদায় করা। রাসুল (সা.) বলন, ‘যে ব্যক্তি রমজানে ঈমানের সঙ্গে সওয়াব লাভের আশায় তারাবির সালাতে দাঁড়াবে তার পূর্ববর্তী গোনাহগুলো মাফ করে দেওয়া হবে।’ (বোখারি : ২০০৯)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">৪. কোরআনুল কারিম শিখা-শেখানোর কাজে ব্যস্ত থাকা। হাদিসে এসেছে, রমজান শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রতি রাতেই জিবরাঈল (আ.) রাসুল (সা.) এর সঙ্গে একবার সাক্ষাৎ করতেন। আর নবীজি তাঁকে কোরআন শোনাতেন। (বোখারি : ৬)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">৫. অধিক পরিমাণে দান করা। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, নবীজি (সা.) ধন-সম্পদ ব্যয় করার ব্যাপারে সবার চেয়ে দানশীল ছিলেন। রমজানে জিবরাঈল (আ.) যখন তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন, তখন তিনি আরও অধিক দান করতেন। রমজান শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রতি রাতেই জিবরাঈল (আ.) তার সঙ্গে একবার সাক্ষাৎ করতেন। আর নবী তাকে কোরআন শোনাতেন। জিবরাঈল যখন তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন তখন তিনি রহমতসহ প্রেরিত বায়ুর চেয়ে অধিক ধন-সম্পদ দান করতেন। (বোখারি : ১৯০২)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">৬. রোজাদারকে ইফতার করানো। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করায়, সে ব্যক্তি রোজাদারের সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করে। কিন্তু এর ফলে রোজাদারের সওয়াব থেকে বিন্দুমাত্র কমানো হবে না। (তিরমিজি : ৮০৭)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">৭. বেশি বেশি দোয়া করা। বিশেষ করে ইফতারের আগে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তিন ধরনের লোকের দোয়া কখনও ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। ১. রোজাদার যতক্ষণ ইফতার না করে...। (তিরমিজি : ৩৫৯৮)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">৮. শেষ দশকে ইতিকাফ করা এবং লাইলাতুল কদর তালাশ করা। পরিপূর্ণ রূপে ইবাদতে নিমগ্ন হওয়া। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘যখন রমজানের শেষ দশক প্রবেশ করত, তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) রাতে নিজে জাগতেন, নিজ পরিজনদেরও জাগাতেন, কঠোর পরিশ্রম করতেন এবং কোমরে লুঙ্গি বেঁধে নিতেন।’ (মুসলিম : ১১৭৪)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">৯. সামাজিকভাবে রমজানের গুরুত্ব ও পবিত্রতা বিষয়ে জনসচেতনতা গড়ে তোলা।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">রমজানে বর্জনীয়</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">১. রোজাকে বোঝা কিংবা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর না ভাবা। বরং মনেপ্রাণে এ কথা বিশ্বাস করা যে, রমজান ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র; এমনকি পুরো পৃথিবীর জন্য কল্যাণের বাহক।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">২. অলসতা পরিত্যাগ করা। সুতরাং সাহরিতে উঠতে অলসতা না করা। আগে আগে মসজিদে গমন করা। সতেজ হৃদয় ও সতেজ শরীর নিয়ে প্রতিটি আমল পূর্ণ করা।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">৩. সব ধরনের হারাম কাজ থেকে বিরত থাকা। রাসুল (সা.) বলেন, ‘নিষিদ্ধ ও হারাম জিনিস থেকে বেঁচে থাক, তাহলে তুমি মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বড় আবেদ (ইবাদতকারী) গণ্য হবে।’ (আহমাদ : ৮০৯৫)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">৪. মিথ্যা পরিত্যাগ করা। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও সে অনুযায়ী আমল বর্জন করেনি, তার এ পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।’ (বোখারি : ১৯০৩)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">৫. ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত না হওয়া। রাসুল (সা.) বলেন, ‘সিয়াম ঢালস্বরূপ। তোমাদের কেউ যেন সিয়াম পালনের দিন অশ্লীলতায় লিপ্ত না হয় এবং ঝগড়া-বিবাদ না করে। যদি কেউ তাকে গালি দেয় অথবা তার সঙ্গে ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, আমি একজন রোজাদার।’ (বোখারি : ১৯০৪)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">৬. গিবত না করা। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তারা মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুত তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। (সুরা হুজুরাত : ১২)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">৭. হিংসা করা থেকে বিরত থাকা। রমজানে বিনিদ্র রাত্রিযাপন করে এবং অনাহারে দিনাতিপাত করে যদি কেউ হিংসায় লিপ্ত হয়, তার চেয়ে হতভাগা আর কেউ হতে পারে না। কারণ হিংসা সব নেক আমল ধ্বংস করে দেয়। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা অবশ্যই হিংসা পরিহার করবে। কারণ আগুন যেভাবে কাঠ বা ঘাসকে খেয়ে ফেলে, তেমনি হিংসাও মানুষের নেক আমলকে খেয়ে ফেলে।’ (আবু দাউদ : ৪৯০৩)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">সবশেষে, রোজার যে মহৎ উদ্দেশ্য; তাকওয়া, ধৈর্য-সংযম ও মাগফিরাত তা যদি অর্জন হয় তবেই আমাদের জীবনে রমজানের আগমন সার্থক। অন্যথায় রাসুল (সা.) এর সেই বাণী কতই না যথার্থ! ‘কত রোজাদার আছে যাদের রোজার বিনিময়ে ক্ষুধা ছাড়া আর কিছুই জোটে না। কত সালাত আদায়কারী আছে, যাদের রাত জাগরণ ছাড়া আর কিছুই জোটে না।’ (ইবনে মাজাহ : ১৬৯০)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">লেখক : আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ মারকাযুল লুগাতিল আরাবিয়্যাহ, বাংলাদেশ</div>

একনজরে মাহে রমজানে করণীয় ও বর্জনীয়

আল্লাহ তায়ালা সর্বপ্রকার শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে রমজান মাসকে মহিমান্বিত করেছেন। কিন্তু এই শ্রেষ্ঠত্বকে আমরা ক’জন অনুভব করি। একটি রমজান জীবন থেকে হার...

Read more »

রমজানে খাদ্যাভ্যাস ও অন্যান্য করণীয় বর্জনীয় আমল

<div style="text-align: justify;">বছর পার হয়ে আবার আমরা একটি রমজান পেয়েছি। আল্লাহ রব্বুল আলামীনের ক্ষমা ও পুরস্কারপ্রাপ্তির মহিমান্বিত মুহূর্তগুলো আমাদের জীবনে বারবার ঘুরেফিরে আসে। রমজান হলো কল্যাণ ও বরকতের বসন্তকাল। এই মহিমান্বিত রমজানের উপকারিতা ও বরকত পরিপূর্ণরূপে লাভ করার জন্য এ মাসের করণীয় কাজগুলো মহব্বতের সাথে করা এবং বর্জনীয় বিষয়গুলো থেকে সতর্কভাবে বিরত থাকা জরুরি। কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে এ মাসের করণীয় বিষয়গুলো তুলে ধরা হচ্ছে।<br></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">বছর পার হয়ে আবার আমরা একটি রমজান পেয়েছি, যে মাসে নিজের শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক সুস্থতার জন্যে করণীয়গুলো করা অনেক সহজ। পৃথিবীতে যত ধর্ম এসেছে- হিন্দু, বৌদ্ধ, ইহুদি বা খ্রিষ্ট-সব ধর্মেই রয়েছে রোজা, উপবাস বা ফাস্টিংয়ের বিধান।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">রোজার উপকার</div><div style="text-align: justify;">নবী-রাসুলরা, মুনি-ঋষি, অলি-বুজুর্গরা হাজার বছর ধরে এর উপকারের কথা বলেছেন। এখন বলছেন চিকিৎসাবিজ্ঞানী, স্বাস্থ্যবিজ্ঞানী এবং ডায়েট বিশেষজ্ঞরা। রোজা রাখলে ‘অটোফেজি’ নামক এক প্রাকৃতিক নিরাময় প্রক্রিয়া চালু হয় দেহে যা দেহকে বিষাণুমুক্ত করে। ‘অটোফেজি’ তুঙ্গে পৌঁছায় উপবাসের ১২ থেকে ১৬তম ঘণ্টায়। আর গ্রীষ্মকালীন রোজায় এবার আমরা সে সুযোগই পাচ্ছি।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ডায়াবেটিস ও অন্যান্য রোগে</div><div style="text-align: justify;">রোজা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যে ক্ষতিকর- ভুল ধারণা। আধুনিক গবেষণা বলে রোজা রেখে বিপাক ক্রিয়াকে শক্তিশালী এবং অগ্ন্যাশয়কে কর্মক্ষম করে রোজা ‘টাইপ-ওয়ান’ ও ‘টাইপ-টু’ – দুধরনের ডায়াবেটিসই নিরাময় সম্ভব। </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এসিডিটি, আলসার, উচ্চরক্তচাপ ও উচ্চ কোলেস্টেরলের মতো যে-কোনো বয়সীদের রোগ এবং আলঝেইমার, হান্টিংটন্স ও পার্কিনসন্সের মতো বয়স্কদের অসুখ-বিসুখের আশঙ্কাও কমায় রোজা। এবং এখন এই করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিকালে যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বলা হচ্ছে সবচেয়ে কার্যকর, রোজা বা উপবাস তাতেও উপকারি।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">রোজার রোগ প্রতিরোধ ও নিরাময় ক্ষমতার কারণেই আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে রাসুলুল্লাহ (স) বলেছেন- তোমরা রোজা রাখ, যেন সুস্থ থাকতে পার। এবং এ সুস্থ থাকতে তখনই পারবেন যখন নবীজী (স) রোজার যে নিয়ম বলেছেন তা মেনে আপনি রোজা রাখবেন। মুক্ত হবেন সমস্ত ভয়, আতঙ্ক, মনোবিকার থেকেও।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">না খেয়ে থাকলেই রোজা হয় না</div><div style="text-align: justify;">সারাদিন না খেয়ে থাকলেই রোজা হয় না। প্রয়োজন আত্মশুদ্ধির আপ্রাণ চেষ্টা। রমজানের প্রতিটি দিন কীভাবে অতিবাহিত করবেন তার রুটিন করুন। </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ইফতারে কী খাবেন?</div><div style="text-align: justify;">-ইফতারের সময় হলে খেজুর খেয়ে পানি পান করুন; শরীরে আসবে তাৎক্ষণিক প্রাণশক্তি। চিনির শরবতেরও প্রয়োজন নেই।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">-নামাজ পড়ে রাতের খাবার খেয়ে নিন। খাবারে ভাত, শাকসবজি, মাছ বা মাংস বা ডিম ও ডালসহ অন্যান্য সুষম খাবার, সালাদ, লেবু, ছোলা ও টক দই রাখুন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">-পেঁয়াজু, চপ, বেগুনি, পাকোড়ার মতো ভাজাপোড়া খাবেন না। হজমের অসুবিধা, বুক জ্বালাপোড়া ও এসিডিটির সমস্যা হতে পারে।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">-পোলাও, বিরিয়ানি, তেহারি, মোগলাই, হালিম, চাইনিজ, গরু ও খাসির গোশত এ মাসে যত কম খান তত ভালো।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">-ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কার এসময়ে বেশি বেশি ভিটামিন সি-যুক্ত ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">সেহরিতে কী খাবেন?</div><div style="text-align: justify;">-প্রোটিন পানির তৃষ্ণা বাড়ায়। সেহরিতে তাই মাছ-মাংস বর্জন করুন। খিচুড়ি, ডিম, ডালও খাবেন না। সামান্য ভাত-সবজি বা কলা-খেজুর বা দই-চিড়া খান।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">-তবে একেবারে কিছুই না খাওয়া, অর্থাৎ ইচ্ছাকৃতভাবে সেহরি বর্জন- এটা করবেন না।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">-সেহরি শেষে দাঁত ব্রাশ ও ওযু করে কিছুক্ষণ বজ্রাসনে বসুন। কোরআন পড়ুন বা বাংলা অর্থসহ অডিও শুনতে থাকুন। ফজরের নামাজ আদায়ের পর যতক্ষণ ইচ্ছা মর্মবাণী শুনতে বা পড়তে পারেন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">-গৃহকর্মী ও অধীনস্থদের নিয়ে পরিবারের সবাই একসঙ্গে ইফতার করুন। ইফতারের ১৫ মিনিট আগে খেজুর-পানি সামনে নিয়ে বসুন। সবাই মিলে দোয়া করুন। নিজের বা অন্যের জন্যে বিশেষ কোনো প্রার্থনা থাকলে করুন। দোয়া কবুলের এটা অন্যতম শ্রেষ্ঠ সময়।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">-রমজান খাদ্য সংযমের মাস, খাদ্য উৎসবের নয়। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে সমাজের যে বিপুলসংখ্যক মানুষ উপার্জনহীন হয়ে পড়েছেন, তাদের প্রতি সমবেদনা জানাতে নামী-দামী হোটেলের খাবার বর্জন করুন একেবারেই।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">-রোজা রাখা ও আনুষঙ্গিক ইবাদতকেই প্রাধান্য দিন। রমজান মাসের নফল ইবাদত ফরজ আদায়ের সমান সওয়াবের। আর একটি ফরজ ইবাদত ৭০টি ফরজ আদায়ের সমান সওয়াবের।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">-নামাজ আদায়ের পর নীরবে ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ, ৩৪ বার লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবর পড়ুন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">-নবীজীর (স) সুন্নত হিসেবে তারাবীহ পড়তে সচেষ্ট হোন। সেহরির আগে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় উত্তম ইবাদত।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">-নবীজী (স) বলেন–এ মাসে এমন একটি রাত (শবে কদর) আছে, যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। শেষ ১০ রমজানের বেজোড় রাতকে কদর-এর মহিমান্বিত রাত মনে করে ফজর না হওয়া পর্যন্ত ইবাদতে মগ্ন থাকুন, ডুবে যান কোরআনের মর্মবাণীর গভীরে।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">গীবত, পরচর্চা ও অপ্রয়োজনীয় কথা এবং বিতর্ক, বিবাদ ও চ্যাঁচামেচি আপনি নিজে করবেন না। অন্যরা করলেও সায় দেবেন না। বিনীতভাবে বলুন- আমি রোজাদার। </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">করোনা পরিস্থিতি এবং অন্নহীন মানুষ</div><div style="text-align: justify;">করোনা পরিস্থিতির কারণে যে মানুষেরা অন্নহীন হয়ে পড়েছে, সমমর্মিতার এ মাসে তাদের কথা মনে রাখুন। মনে রাখুন দুস্থ এতিম শিশুদের কথা। আপনার খাবার খরচ থেকে একটু বাঁচিয়ে হলেও ওদের অন্নসংস্থানে অংশ নিন। রমজান মাসে নিরন্ন ও এতিমের কল্যাণে দান ৪৯০০ (৭০X৭০) গুণ সওয়াবের।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">কোরআন ও নিরাময়</div><div style="text-align: justify;">“বিশ্বাসীর জন্যে কোরআন হচ্ছে শেফা ও রহমতস্বরূপ।” -(সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত ৮২)। অর্থাৎ বিশ্বাসীর জীবনে কোরআন কল্যাণ ও নিরাময় বয়ে আনে। এ নিরাময় শারীরিক, মানসিক, আত্মিক এবং সামাজিক।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এই রমজানে এ কোরআনের গভীরেই আপনি ডুবে যান। বাসায় বসে সপরিবারে কোরআন পড়ুন অথবা শুনতে থাকুন। পাবেন রোগব্যধি, নেতিবাচকতা, ভয়, বিকৃতি, আতঙ্ক ও মনোবিকার থেকে মুক্তি। সেইসাথে ১২৪ কোটি বছর ইবাদতের সমান নেকি।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">করোনাসহ সকল বালা-মুসিবত থেকে পরিবার থাকবে আল্লাহর রহমতের ছায়ায়। কারণ আপনি জানেন, কোরআনের জ্ঞান যেখানে অনুশীলন হয় ফেরেশতারা সেখানে আল্লাহর রহমত বর্ষণ করে। </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">জানি সদকা</div><div style="text-align: justify;">আর করোনা সংকট থেকে মুক্তি, বালা-মুসিবত থেকে নিজের ও পরিবারের সুরক্ষার জন্যে জান-ই-সদকা হিসেবে বিশেষ দান করুন। </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ভার্চুয়াল ভাইরাস</div><div style="text-align: justify;">টিভি, ইউটিউব, ফেসবুক দেখে সময় কাটানো আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কমাবে, নষ্ট করবে রোজার গুণমান, সৃষ্টি হবে নেতিবাচকতা।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">যাকাত</div><div style="text-align: justify;">এক চান্দ্র বছর আপনার কাছে ৪৫ হাজার টাকা জমা থাকলেই আপনি যাকাতদাতা। করোনা পরিস্থিতির শিকার দুঃস্থদের কথা স্মরণ করে যাকাত দিন সঙ্ঘবদ্ধভাবে। রমজানে যাকাতের অর্থ যাকাত ফান্ডে দান করুন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">শেষ রমজান</div><div style="text-align: justify;">এ রমজানকেই মনে করুন আপনার জীবনের শেষ রমজান। আত্মশুদ্ধি ও হক্কুল ইবাদে সাধ্যমতো সর্বোচ্চ প্রয়াস দিয়ে সার্থক করে তুলুন এবারের রমজান। এবারের রমজান হোক মনুষ্যত্বের বিজয়ের, শুদ্ধাচার অনুশীলনের।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এনএস/</div>

রমজানে খাদ্যাভ্যাস ও অন্যান্য করণীয় বর্জনীয় আমল

বছর পার হয়ে আবার আমরা একটি রমজান পেয়েছি। আল্লাহ রব্বুল আলামীনের ক্ষমা ও পুরস্কারপ্রাপ্তির মহিমান্বিত মুহূর্তগুলো আমাদের জীবনে বারবার ঘুরেফির...

Read more »