আমরা দাড়িয়ে ইবাদত করি শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য। যেমনিভাবে আমরা নামাজে কিয়াম করে থাকি। সুতরাং মিলাদে দাঁড়িয়ে দরুদ সালাম পড়লে তা হবে আল্লাহর সাথে শিরক। কেননা কিয়াম হল শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য।
জবাব ঃ আপনাদের আপত্তিতে দুটি বিষয় রয়েছে। প্রথমতঃ নামাজে কিয়াম করা হয় আল্লাহর জন্য তাই নবীজির জন্য দাড়িয়ে দরুদ সালাম পাঠ করা শিরক। (নাউযুবিল্লাহ)
দ্বিতীয়তঃ কিয়াম শুধু আল্লাহর জন্য। অন্যকারো জন্য কিয়াম করা শিরক। (নাউযুবিল্লাহ)
প্রথমতঃ নামাজে আমরা কিয়াম করি, তাই বলে দাড়িয়ে দরুদ সালাম পাঠ করা যাবেনা তা আপনাদের সম্পূর্ণ মনগড়া যুক্তি। কারণ নামাজে যেমন কিয়াম করি, তেমনি বৈঠকও করি। কিয়ামটা যেমন আল্লাহর জন্য করি, অনুরূপ বৈঠকও করি আল্লাহর জন্য। সুতরাং আপনাদের যুক্তি মতে নামাযের কিয়ামের কারণে যদি দাড়িয়ে দরুদ সালাম পড়া শিরক হয়, তাহলে নামাযের বৈঠকের কারণে বসেও দরুদ সালাম পড়া শিরক হবে। যা সম্পূর্ণ অবান্তর। সুতরাং আপনাদের আপত্তি সম্পূর্ণ অযুক্তিক।
দ্বিতীয়তঃ আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো সম্মানে দাঁড়ানো শিরক এ ফতোয়া আপনাদের মনগড়া। ইসলামী শরীয়তে এর কোন ভিত্তি নেই। কারণ সম্মানিত ব্যক্তির সম্মানে দাঁড়ানো এটা স্বয়ং রাসূলে পাক ﷺ এর নির্দেশ। যেমন হাদিস শরীফে এরশাদ হয়েছে
عن أبي سعيد الخدري قال لما نزلت بنو قريظة على حكم سعد بعث رسول الله اليه وكان قريبا منه فجاء على حمار فلم دنا المسجد قال رسول الله صلى الله عليه وسلم للانصار قوموا الى سيدكم
অর্থ:- হযরত আবু ছাঈদ খুদরী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, যখন বনু কুরায়জা হযরত সা'দ বিন মুআজ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর ফয়সালা মেনে নিয়ে তাদের দূর্গ হতে নেমে আসে, তখন হুযুর -ﷺ হযরত সা'দ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে আনার জন্য লোক পাঠালেন। হযরত সা'দ জে গাধার পিঠে করে আসলেন, যখন তিনি মসজিদে নববীর নিকটবর্তী হলেন, তখন নবী করিম ﷺ - আনসারগণকে সম্বোধন করে বললেন- "তোমরা তোমাদের নেতার সম্মানে দাড়িয়ে যাও।'
→ক. সহীহ বোখারী শরীফ, হাদিস নং- ৩৮০৪
খ. সহীহ মুসলিম
গ. মিশকাত শরীফ, পৃ- ৪০৩
উক্ত হাদিসে পাকে নবী করিম ﷺআনসার সাহাবাগণকে হযরত সা'দ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর সম্মানার্থে দাঁড়ানোর আদেশ করেছেন। যদি সম্মানিত ব্যক্তির সম্মানে দাঁড়ানো শিরক হতো তাহলে হুযুর ﷺ কিয়াম করার নির্দেশ কখনো দিতেননা। সুতরাং সম্মানিত ব্যক্তির সম্মানার্থে দাঁড়ানোকে শিরক বলা এ ধরণের বক্তব্য অবান্তর ও মূর্খতারই শামিল।