পবিত্র মিলাদ শরীফ সম্পর্কে বিরোধিদের আপত্তি ও তার জবাব, পর্ব: ০২

যে কাজ রাসূল  ﷺ করেননি সে কাজটি করা বিদআত। অতএব মিলাদ পালন করা বিদআত। যেহেতু প্রত্যেক বিদআতই হারাম, তাই মিলাদ পালন করাও হারাম। (মৌং জুনায়েদ বাবুনগরী, মিলাদ কিয়াম সুন্নাত ও বিদআত, পৃঃ-৩৪)

জবাব : আপনাদের দাবি হল মিলাদ শরীফ বিদআত। আর যা রাসূলে করিম  ﷺ-এর সময় ছিলনা তাই হল বিদআত। অতএব মিলাদও বিদআত এবং তা হারাম। (নাউযুবিল্লাহ) প্রথমেই যদি আপনাদেরকে প্রশ্ন করা হয় মিলাদের মধ্যে কোন বিষয়টি বিদআত? মিলাদ শরীফ উদযাপন করা বিদআত? নাকি মিলাদের আমলসমূহ বিদআত?

প্রথমতঃ যদি আপনারা জবাব দেন মিলাদ শরীফ উদযাপন বা পালন করাটাই বিদআত। তখন আমাদের জবাব হল মিলাদ শরীফ উদযাপন বা পালন করা বিদআত নয়। বরং এটা আপনাদের অজ্ঞতা যে মিলাদ শরীফ উদযাপন করা বিদআত বলছেন- কেননা স্বয়ং হুযুর নিজেই প্রতি সোমবার রোযা রেখে মিলাদ শরীফ উদযাপন করতেন। যেমন হাদিস শরীফে বর্ণিত হয়েছে

عن أبي قتادة الانصاري رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم سئل عن صوم الاثنين فقال فيه ولدت وفيه انزل على

অর্থ: হযরত আবু কাতাদা আনসারী হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলে পাক  ﷺ কে প্রতি সোমবারে রোযা রাখার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হল, তখন হুযুর  ﷺজবাব দিলেন, এদিন আমি রোযা রাখি কারণ এদিনই আমি জন্মগ্রহণ করেছি, আর এদিনই আমার উপর ওই বা কুরআন শরীফ নাযিল হয়েছে।"
→ক. সহীহ্ মুসলিম শরীফ,  হাদিস নং- ১১৬২,২৮০৭
খ. সুনানে আবু দাউদ,  হাদিস নং- ২৪২৮
গ. ইমাম বায়হাকী,  সুনান আল কুবরা, হাদিস নং- ৮১৮২, ৮২৫৯

সুতরাং মিলাদ শরীফ উদযাপন করা এটা স্বয়ং নবী পাকেরই সুন্নাত।


 দ্বিতীয়তঃ আপনারা যদি জবাব দেন মিলাদ শরীফ উদযাপন করা বিদআত নয়, বরং বর্তমানে মিলাদের আমলসমূহই হল বিদআত। তখন আমাদের জবাব হল মিলানে বর্তমান প্রচলিত আমলসমূহের মধ্যে তথ্য কোরআন, তেলাওয়াত, দরুদ সালাম, নাত, তাসবিহ, নবীজির আগমন বৃত্তান্ত আলোচনা, তাবারুক বিতরণ, এগুলোর মধ্যে এমন কোন আমল নেই যা নবী করিম -এর জীবদ্দশায় ছিলনা, বরং সব আমলই তখন বর্তমান ছিল। আর যে আমল রাসুল   ﷺ-এর জীবদ্দশায় ছিল তা কেমনে বিদআত হবে?

আর যদি বলেন, মিলাদ শরীফ উদযাপন করাও বিদআত নয়, আবার মিলাদের আমলসমূহও বিদআত নয়, বরং বিদআত হল মিলাদের আমলসমূহকে একসাথে আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করা। কেননা এভাবে কোরআন তেলাওয়াত, দরুদ, নাত, নবীজির আগমনের আলোচনা, তাসবিহ-তাহলিল সব আমল একসাথে হুযুর  ﷺ -এর সময় ছিলনা। যেহেতু হুযুর ﷺ  এর যুগের পদ্ধতির সাথে বর্তমান পদ্ধতির পার্থক্য রয়েছে তাই তা বিদআত।

তাহলে তখন আমাদের জবাব হবে এভাবে একাধিক আমলসমূহ একসাথে পালন করা এটা হুযুর ﷺ এর যুগেও ছিল। আর এক্ষেত্রে ইসলামী শরীয়তে কোন নিষেধাজ্ঞাও নেই। বরং এটা আরো বরকতপূর্ণ কাজ। এরপরও যদি এভাবে একাধিক আমল একসাথে পালন করা এবং হুযুর ﷺএর যুগের সাথে হুবহু মিল না থাকার কারণে তথা দরুদের শাব্দিক পার্থক্য, কিংবা, তাসবিহর শব্দগত পার্থক্য, কিংবা নাত-কসিদার  শাব্দিক ও ছন্দগত পার্থক্য, তাবারুক বিতরণ, প্যান্ডেল-সেটইজ, তথা ঝাকজমকপূর্ণতার পার্থক্য, ইত্যাদি পদ্ধতিগত পার্থক্যের কারণে বিদআত বলা হয় তাহলে তা হল বিদআতে হাসানাহ। কেননা নেয়ামতের শোকরিয়া আদায় করা এটা নির্ধারিত ইবাদত নয়। যদি নামায, হজ্বের মত নির্ধারিত ইবাদত হতো তাহলে তা পার্থক্য হলে শরীয়তে নিষেধ হতো। কিন্তু শোকরিয়া আদায়ের ক্ষেত্রে যেহেতু নির্দিষ্ট পদ্ধতি নেই তাই তা যেকোন পদ্ধতি বা যে কোন নেক আমল দ্বারা পালন করা যাবে। আর যদি তা নাজায়েয হতো তাহলে বর্তমানে আপনাদের বিশ্ব ইজতেমা, আখেরী মুনাজাত, সিরাতুন্নবী শাব্দিক ও হুম্মগত পার্থক্য, তাবারুক বিতরণ, প্যান্ডেল-সেটইজ, তথা ঝাকজমকপূর্ণতার পার্থক্য, ইত্যাদি পদ্ধতিগত পার্থক্যের কারণে বিদআত বলা হয় তাহলে তা হল বিদআতে হাসানাহ। কেননা নেয়ামতের শোকরিয়া আদায় করা এটা নির্ধারিত ইবাদত নয়। যদি নামায, হজ্বের মত নির্ধারিত ইবাদত হতো তাহলে তা পার্থক্য হলে শরীয়তে নিষেধ হতো। কিন্তু শোকরিয়া আদায়ের ক্ষেত্রে যেহেতু নির্দিষ্ট পদ্ধতি নেই তাই তা যেকোন পদ্ধতি বা যে কোন নেক আমল দ্বারা পালন করা যাবে। আর যদি তা নাজায়েয হতো তাহলে বর্তমানে আপনাদের বিশ্ব ইজতেমা আখেরী মুনাজাত, সিরাতুন্নবী শাব্দিক ও হুম্মগত পার্থক্য, তাবারুক বিতরণ, প্যান্ডেল-সেটইজ, তথা ঝাকজমকপূর্ণতার পার্থক্য, ইত্যাদি পদ্ধতিগত পার্থক্যের কারণে বিদআত বলা হয় তাহলে তা হল বিদআতে হাসানাহ। কেননা নেয়ামতের শোকরিয়া আদায় করা এটা নির্ধারিত ইবাদত নয়। যদি নামায, হজ্বের মত নির্ধারিত ইবাদত হতো তাহলে তা পার্থক্য হলে শরীয়তে নিষেধ হতো। কিন্তু শোকরিয়া আদায়ের ক্ষেত্রে যেহেতু নির্দিষ্ট পদ্ধতি নেই তাই তা যেকোন পদ্ধতি বা যে কোন নেক আমল দ্বারা পালন করা যাবে। আর যদি তা নাজায়েয হতো তাহলে বর্তমানে আপনাদের বিশ্ব ইজতেমা আখেরী মুনাজাত, সিরাতুন্নবী, পিস কনফারেন্স, মাদ্রাসার সভা, তাফসীরুল কোরআন মাহফিল ইত্যাদি সবই হারাম হবে। কেননা বর্তমান বিশ্ব ইজতেমার পদ্ধতি হুযুরে পাক  শাব্দিক ও হুম্মগত পার্থক্য, তাবারুক বিতরণ, প্যান্ডেল-সেটইজ, তথা ঝাকজমকপূর্ণতার পার্থক্য, ইত্যাদি পদ্ধতিগত পার্থক্যের কারণে বিদআত বলা হয় তাহলে তা হল বিদআতে হাসানাহ। কেননা নেয়ামতের শোকরিয়া আদায় করা এটা নির্ধারিত ইবাদত নয়। যদি নামায, হজ্বের মত নির্ধারিত ইবাদত হতো তাহলে তা পার্থক্য হলে শরীয়তে নিষেধ হতো। কিন্তু শোকরিয়া আদায়ের ক্ষেত্রে যেহেতু নির্দিষ্ট পদ্ধতি নেই তাই তা যেকোন পদ্ধতি বা যে কোন নেক আমল দ্বারা পালন করা যাবে। আর যদি তা নাজায়েয হতো তাহলে বর্তমানে আপনাদের বিশ্ব ইজতেমা আখেরী মুনাজাত, সিরাতুন্নবী, পিস কনফারেন্স, মাদ্রাসার সভা, তাফসীরুল কোরআন মাহফিল ইত্যাদি সবই হারাম হবে। কেননা বর্তমান বিশ্ব ইজতেমার পদ্ধতি হুযুরে পাক -এর যুগের সাথে কোন মিল নেই, ইসলামী সম্মেলন, সিরাতুন্নবী মাদ্রাসার বার্ষিক সভা, তাফসীরুল কোরআন মাহফিল, পিস কনফারেন্স ইত্যাদি কোনটিরই পদ্ধতি হুযুরে পাক ﷺ  -এর যুগের সাথে মিল নেই। সুতরাং মিলাদ শরীফ উদযাপন ও আমল কোনটিই বিদআত নয়।
Top