মা'সআলাঃ ০১
সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত ও দ্বিপ্রহর এ তিন সময়ে কোনো প্রকার নামায পড়া জায়িয নেই, ফরয, ওয়াজিব, নফল, কাযা, তিলাওয়াতে সিজদা, সিজদায়ে সাহু কোনটিই এ সময়ে জায়িয নেই, অবশ্য যদি সে দিনের আসরের নামায না পড়ে থাকে তহলে সূর্যাস্তের সময় পড়বে নিবে, কিন্তু এতটুকু বিলম্ব করা হারাম। হাদিস শরিফে এ সময়ের নামাযকে মুনাফিকের নামায বলা হয়েছে। সূর্যোদয় বলতে সূর্যের কোণা দেখা যাওয়ার থেকে শুরু করে পূর্ণ বের হয়ে আসার পর ঐ সময় পর্যন্ত, যখন এটার উপর চোখ ঝলসে যায়। এ সময়টার পরিমাণ বিশ মিনিট । দ্বিপ্রহর বলতে শরয়ী অর্ধ দিবস থেকে শুরু করে হাকিকি অর্ধ-দিবস অর্থাৎ সূর্য ঝুকে পড়ার পূর্ব পর্যন্ত সময়টাকে বুঝায় ।
→আল্লামা মোল্লা নিযামুদ্দীন বলখী, ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া, কিতাবুস সালাত, ১/৫২ পৃ,
→ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, রুদ্দুল মুখতার,কিতাবুস সালাত, ২/৩৭ পৃ,
→ইমাম আহমদ রেজা খান, ফতোয়া ই রযভিয়্যাহ, কিতাবুস সালাত, ৫/১৩৮ পৃ,
মাসআলা নং-০২: সাধারণ জ্ঞানহীন ব্যক্তি যদি সূর্য ওঠার সময় ফযরের নামায পড়ে, তাহলে তাকে বাঁধা দেবে না; তবে নামায শেষ হলে তাকে বলতে হবে-“আপনার নামায হয় নি; সূর্য ভালোভাবে উঠে গেলে কাযা করবেন"
→আল্লামা হাসকাফী, দুররুল মুখতার, কিতাবুস সালাত, ২/৫৮ পৃ,
মা'সআলা নং- ০৩:
জানাযা যদি নিষিদ্ধ ওয়াক্ত সমূহে নিয়ে আসা হয়, পড়ে নিলে মাকরূহ হবে না । মাকরূহ সে সময় হবে, যদি পূর্ব থেকে প্রস্তুত ছিল কিন্তু দেরী করলো যার কারণে মাকরূহ ওয়াক্ত এসে গেল, তাতে মাকরূহ হবে। "
→ইমাম আবেদীন শামী, রুদ্দুল মুখতার, কিতাবুস সালাত, ২/৪৩ পৃ,
মাসআলা নং-০৪: নিষিদ্ধ ওয়াক্ত সমূহে আয়াতে সিজদা পাঠ করলে উত্তম হবে। সিজদাকে বিলম্ব করা যেন মাকরূহ ওয়াক্ত চলে না যায় এবং যদি মাকরূহ ওয়াক্তেও করে নেয় তবুও জায়েয হবে। মাকরূহ বিহীন ওয়াক্তে তিলাওয়াত করে মাকরূহ ওয়াক্তে সিজদা করলে মাকরূহে তাহরীমি হবে।
→আল্লামা নিযামুদ্দীন বলখী, ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া, কিতাবুস সালাত, ১/৫২ পৃ,
মাসআলা নং-০৫: নিষিদ্ধ ওয়াক্তে ক্বাযা নামায পড়া জায়িয হবে না। কার্যা নামায শুরু করে দিলে ভেঙ্গে ফেলা ওয়াজিব এবং মাকরূহ বিহীন ওয়াক্তে পড়ে নিবে। যদি না ভেঙ্গে পড়ে নিল, তখন ফরয রহিত হয়ে যাবে এবং গুনাহগার হবে ।
→আল্লামা মোল্লা নিযামুদ্দীন বলখী, ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া, কিতাবুস সালাত, ১/৫২ পৃ,
→আল্লামা হাসকাফী, দুররুল মুখতার, কিতাবুস সালাত, ২/৪৩ পৃ,
মাসআলা নং-০৬:
কোনো ব্যক্তি নির্দিষ্টভাবে এ সময়ে নামায পড়ার মান্নত করলো অথবা সাধারণ নামায পড়ার মান্নত করলো, উভয় অবস্থায় মান্নত পূর্ণ করা জায়েয হবে না বরং পূর্ণ ওয়াক্তের মান্নত আদায় করবে।
→আল্লামা মোল্লা নিযামুদ্দীন বলখী, ফতোয়া ই হিন্দিয়া, কিতাবুস সালাত, ১/৫২ পৃ,
→→আল্লামা হাসকাফী, দুররুল মুখতার, কিতাবুস সালাত, ২/৪৩ পৃ,
মাসআলা নং-০৭:
নিষিদ্ধ ওয়াক্তে নফল নামায শুরু করলো, ঐ নামায ওয়াজিব হয়ে গেল, কিন্তু সে সময়ে পড়া জায়িয হবে না। নামায ভেঙ্গে ফেলবে এবং পূর্ণ ওয়াক্তে ক্বাযা করবে, যদি পূর্ণ করে ফেলে গুনাহগার হবে, তখন কাযা করা ওয়াজিব হবে না।
→→আল্লামা হাসকাফী, দুররুল মুখতার, কিতাবুস সালাত, ২/৪৩ পৃ,
মাসআলা নং-০৮:
যেসব নামায মুবাহ বা মাকরূহ ওয়াক্তে শুরু করে ভেঙে দিলো, সে সকল নামাযও ঐ সময়ে পড়া জায়িয হবে না।
→আল্লামা হাসকাফী, দুররুল মুখতার, কিতাবুস সালাত, ২/৪৫ পৃ,
মাসআলা নং-০৯:
উপরোক্ত সময়ে কুর'আন শরিফ তিলাওয়াত করা উত্তম নয়, তবে যিকির ও দরুদ শরিফে নিয়োজিত থাকাই উত্তম।
→আল্লামা হাসকাফী, দুররুল মুখতার, কিতাবুস সালাত, ২/৪৪ পৃ,